পশ্চিম বর্ধমান: সবুজ ঘন জঙ্গল ভেদ করে চলে গিয়েছে কালো পিচের রাস্তা। এই রাস্তা ধরে পৌঁছে যাওয়া যায় কাঁকসার জঙ্গলমহলের একাধিক গ্রামে। রয়েছে একাধিক আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রাম। যাদের জীবন চালানোর মূল কেন্দ্র জঙ্গলকে নির্ভর করে। তবে সেখানেও এসেছে উন্নতির ছোঁয়া। হয়েছে রাস্তাঘাট। স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বিদ্যালয় এখন আর খুব দূরে নয়।
কিন্তু এত কিছুর পরেও সমস্ত অভাব যে মিটে গিয়েছে এমনও নয়। এই সমস্ত গ্রামের বাসিন্দাদের মূল জীবিকা কৃষিকাজ। বর্ষাকাল সহ কৃষির সময় তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় মাঠে-ঘাটে কাজ করতে যান। অন্য দিকে বাড়ির পুরুষ সদস্যরা কেউ কেউ বিভিন্ন কারখানায় কাজ করেন। আর পরিবারের মহিলা সদস্যদের এই সময় জঙ্গল থেকে পাতা সংগ্রহ করেন। তারপর সেই পাতা বাড়ি নিয়ে এসে সেলাই করেন। এরপর সেলাই করা পাতা চলে যায় সোজা বাজারে। তাতে হাতে আসে অর্থ। জীবন, জীবিকা চালানো কিছুটা সহজ হয় তাতে।
আরও পড়ুন: যন্ত্রণার নাম রেলগেট, সমাধানের ওভারব্রিজ যেন ভোটের ‘মোয়া’
শিয়রে লোকসভা নির্বাচন। গত পাঁচ বছরে জঙ্গলের মধ্যে বসবাসরত এই মানুষগুলো কী পেয়েছেন? তাঁদের দাবি কী? সেইসব খোঁজখবর করতেই আমরা পৌঁছে গিয়েছিলাম জঙ্গলমহলের এমনই একটি গ্রামে। সেই গ্রামে ঢুকতেই দেখা গেল বিভিন্ন মহিলা সদস্য এক জায়গায় বসে পাতা সেলাই করছেন। তাঁদের সমস্যা, চাহিদা নিয়ে প্রশ্ন করি আমরা। আর তাতে গভীর জঙ্গলে বসবাসরত এই সরল মানুষগুলির সহজ উত্তর, গ্রামে মাত্র একটাই সাবমারসিবল আছে। তার উপর নির্ভর করে বহু পরিবার। সকাল এবং বিকেল মাত্র এক ঘণ্টা করে জল দেওয়া হয়। এই গরমে তাতে চলে না বিকল্প ব্যবস্থা করলে খুব ভাল হয়।
আরও পড়ুন: সারনা ধর্মের স্বীকৃতি না মেলায় ভোট বয়কটের ডাক আদিবাসী সংগঠনের
তবে গত কয়েক বছরে ধীরে ধীরে এলাকার রাস্তাঘাটের উন্নতি হয়েছে। ঢালাই করা রাস্তা পেয়েছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ আগের থেকে ভাল হয়েছে। তাছাড়া বিভিন্ন সরকারি সুযোগ-সুবিধা তাঁরা পান। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দূরত্বও অল্প। কিন্তু জল নিয়ে সমস্যা যেন কিছুতেই কাটছে না। এই গরমে জলের জন্য তাঁদের হাহাকার লেগেই রয়েছে। এই ভয়াবহ গরমেও জল সঙ্কটের কারণে খুব মেপে জল খরচ করতে হয়।
নয়ন ঘোষ