Tag Archives: Higher Secondary Result

Higher Secondary Result 2024: নম্বর বাড়তেই উচ্চমাধ্যমিকের মেধা তালিকায় ঢুকে পড়ল পুরুলিয়ার নাম

পুরুলিয়া: ছাত্র-ছাত্রীদের জীবনে দ্বিতীয় বড় পরীক্ষা হল উচ্চমাধ্যমিক। তাদের ভবিষ্যতের ভীত মজবুত হয় উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফলের উপর নির্ভর করে। ‌এই পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই ছাত্র-ছাত্রীরা সিদ্ধান্ত নেয় তারা কোন বিষয়টা নিয়ে আগামী দিনে এগিয়ে যাবে। সম্প্রতি উচ্চ মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশ হয়েছে। বিভিন্ন জেলা থেকে একাধিক কৃত ছাত্র-ছাত্রী মেধা তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। কিন্তু সেখানে নাম ছিল না পুরুলিয়ার কোন‌ও পড়ুয়ার। কিন্তু উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার স্ক্রুটিনির ফলাফল প্রকাশিত হতেই সেই বিষয়টি বদলে গেল। মেধা তালিকায় ঢুকে পড়ল এই জেলারও নাম।

সম্প্রতি হওয়া স্ক্রুটিনির পর নম্বর বেড়ে মেধা তালিকায় জায়গা করে নিল পুরুলিয়ার এক পড়ুয়া। স্ক্রুটিনির পর তার নম্বর বাড়ায় মেধা তালিকায় দশম স্থানে উঠে এসেছে রঘুনাথপুর শহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেবার্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায়। সে রঘুনাথপুরেরই মধুতটি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কলা বিভাগের পড়ুয়া।

আরও পড়ুন: ভোটের মুখে পানের ন্যূনতম মূল্য নির্ধারণের দাবি

দেবার্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের উচ্চমাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ছিল ৪৮৬। স্ক্রুটিনির পর তার ১ নম্বর বৃদ্ধি পেয়েছে। অর্থাৎ বর্তমানে তার প্রাপ্ত নম্বর বেড়ে হয়েছে ৪৮৭। বাংলায় তার এক নম্বর বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এই নম্বর বৃদ্ধির কারণেই রাজ্যের মধ্যে দশম ও পুরুলিয়া মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে দেবার্ঘ্য। তার বাবা মধুতটি হাইস্কুলের শিক্ষক।

এ বিষয়ে দেবার্ঘ্য বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আশা করেছিলেন এই ফলাফলের‌।‌ ছোটবেলা থেকে বাবার কাছেই তার পড়াশোনা করা। স্কুলের শিক্ষক ও টিউশনের শিক্ষকদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে তার এই সাফল্যের পিছনে। আগামী দিনে কলকাতার কোনও কলেজে ইতিহাসে অনার্স নিয়ে পড়তে চায়। ভবিষ্যতে আইপিএস অফিসার হতে চায়।

শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি

Higher Secondary Result 2024: সর্বভারতীয় জয়েন্টে ৪৬০ ব়্যাঙ্ক! উচ্চ মাধ্যমিকে সাফল্য বিরল রোগে আক্রান্ত ঋদ্ধিমার

মালদহ: হুইলচেয়ারে বসেই স্বপ্ন পূরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন ঋদ্ধিমা। একা কিছুই করতে পারেন না, ওঠাবসা থেকে সমস্ত কিছুর জন্য অন্যের সহযোগিতা প্রয়োজন হয়। এমনকি নিজে বই খুলে পড়তে পারেন না। তাতেও অন্যের সহযোগিতার প্রয়োজন হয়। জীবনযুদ্ধে লড়াই চালিয়ে মাধ্যমিকের পর উচ্চ মাধ্যমিকেও নজরকাড়া রেজাল্ট। ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, সর্বভারতীয় জয়েন্ট মেইনস পরীক্ষায় ৪৬০ ব়্যাঙ্ক করেছেন বিরল রোগে আক্রান্ত ঋদ্ধিমা পাল। ঋদ্ধিমা  বলেন, “আরও একটু ভাল ফল আশা করেছিলাম। অন্যান্যদের মতো আমি বেশিক্ষণ পড়াশোনা করতে পারি না। আমার মা-বাবা, দাদু সকলে আমাকে সাহায্য করেন। আগামীতে আমার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে।”

মালদহের ইংরেজবাজার শহরের এক নম্বর গর্ভমেন্ট কলোনী বাসিন্দা ঋদ্ধিমা পাল। শহরের বার্লো গার্লস হাই স্কুলের ছাত্রী। বাবা রাজীব পাল পেশায় পুলিশকর্মী। মা অরুণিতা পাল গৃহবধূ। তাঁদের দুই ছেলে মেয়ে। ঋদ্ধিমা বড়।জন্ম থেকেই জিনের বিরল রোগ স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফিতে আক্রান্ত ঋদ্ধিমা। নিয়মিত চিকিৎসার মধ্যে রয়েছেন। নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারেন না। এমনকি উঠতে বসতে পর্যন্ত পারেন না। হুইল চেয়ারে বসেই চলাফেরা থেকে সমস্ত কিছু করতে হয়। নিজের হুইলচেয়ার এবং টেবিলে বসেই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিলেন। মা অরুণিতা  বলেন, “মেয়ে বিরল রোগে আক্রান্ত চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে। একবার অস্ত্রোপচার পর্যন্ত হয়েছে। তারপরও মেয়ে ধারাবাহিক ভাল ফল করছে। ওর এমন সাফল্যে আমরা খুব খুশি।”

আরও পড়ুন: ক্যানসারও বাধা হতে পারেনি! মাধ্যমিকে চমক শৈবালের, চোখে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন

আরও পড়ুন: শরীরের ক্যানসারের বাস! মারণ রোগের সঙ্গে লড়াই করে মাধ্যমিক পাশ রাখির

সাধারণ পড়ুয়াদের মতো নিয়মিত পড়াশোনা করতে পারেন না। টানা এক ঘণ্টার বেশি বসে থাকতে পারেন না হুইলচেয়ারে। তাই সেভাবে পড়াশোনাও করা হয় না। কিন্তু মনের জোর ও প্রচেষ্টায় একের পর এক সাফল্য ঋদ্ধিমার। মাধ্যমিকে ৯৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছিল। তারপর উচ্চমাধ্যমিকে ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়ে পাস করেছেন। আগামীতে ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন রয়েছে। বাবা রাজীব বলেন, “মেয়ের এমন সাফল্যে আমি গর্বিত। মেয়েকে আমি সময় দিতে পারি না। এই কৃতিত্ব সম্পূর্ণ আমার স্ত্রীর।”

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পিছনে ফেলে জয়েন্ট মেইনসে ভাল ফল। নিজের শারীরিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াইয়ের পাশাপাশি জীবন যুদ্ধের লড়াই শামিল হার না মানা ঋদ্ধিমা।

হরষিত সিং

Higher Secondary Result 2024: সকালে দোকানে কাজ করে রাত জেগে পড়া, উচ্চমাধ্যমিকে ৯০% পেয়ে চমক অনুজা’র

আলিপুরদুয়ার: বাবা নেই। সংসার চালাতে সকালে দোকানে কাজ করত। ফলে দিনের শেষে পড়াশোনার সময় যে খুব বেশি পেত তা নয়। এভাবেই পড়াশোনা করে উচ্চমাধ্যমিকে তাক লাগানো ফল করল কালচিনির অনুজা বিশ্বকর্মা। ৯৩% নম্বর নিয়ে সে এবার উচ্চমাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছে। তার এমন সাফল্য সাড়া ফেলে দিয়েছে গোটা চা বলয়ে।

বাবা প্রয়াত হওয়ায় অনুজা মায়ের সঙ্গে মিলে দোকানে কাজ করে কোনওরকমে সংসার চালায়। এছাড়াও বাধ্য হয়ে অনেক সময় শ্রমিকের কাজও করতে হয়। ভয়াবহ অভাব সত্ত্বেও পড়াশোনা ছাড়েনি সে। কালচিনির হিন্দি হাইস্কুলে লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছে। তা বলে ৯৩% নম্বর পাবে তা বোধহয় সকলেরই ভাবনার বাইরে ছিল। মেয়ের এই সাফল্যে খুশি মা রীতা বিশ্বকর্মা।

আরও পড়ুন: আর ক্যান্সারের ভয় নেই, অক্ষয় তৃতীয়া থেকে মিলছে খাঁটি মশলা-ছাতু

মেয়ের স্বপ্ন সফল করতে আরও পরিশ্রম করবেন বলে জানিয়েছেন রীতা। এত পরিশ্রম সত্ত্বেও এমন তাক লাগানো সাফল্য প্রসঙ্গে অনুজা বিশ্বকর্মা বলে, দুটো টিউশন নিয়েছিলাম। স্কুলের শিক্ষকরা সাহায্য করতেন। কোন‌ওদিন স্কুল ছুটি নিইনি। দোকানে কাজ করে টিউশনের টাকা জোগাড় করতাম। ভাল ফলাফল হবে আশা করেছিলাম।

অনুজা পড়াশোনা করে ভবিষ্যতে অধ্যাপক হতে চায়। তিনি রাষ্ট্র বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনো করবেন বলে ঠিক করেছেন। আমি প্রতিষ্ঠিত হলে আর আমার মাকে কষ্ট করতে হবে না। এক‌ইভাবে টিউশন করে কলেজের পড়ার খরচ ওঠাতে চান তিনি। পাশাপাশি সরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলিতেও বসতে চান।

অনন্য দে

Higher Secondary Result 2024: বিজ্ঞান থেকে মত বদলে কলা বিভাগে! উচ্চ মাধ্যমিকে নজরকাড়া ফল কৌশিকের

মুর্শিদাবাদ: বুধবার প্রকাশিত হল রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল। চলতি বছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাতে রাজ্যে অষ্টম স্হান অধিকার করল বহরমপুরের কৌশিক ঘোষ। গোয়ালজান রিফিউজি হাইস্কুলের কলা বিভাগের ছাত্র। তাঁর প্রাপ্ত নং ৪৮৯। বাড়ি বহরমপুরের গোপেজান নাথপাড়া রানাঘাট এলাকায়। জানা যায়, বাবা সামান্য দর্জির পেশার সঙ্গে যুক্ত। একতলা বাড়ি। আর সেই মধ্যবিত্ত পরিবারের আর্থিক টানাটানির মধ্যেও পড়াশোনা করে এবছর উচ্চ মাধ্যমিকে চমক দিলেন ছাত্র। রাজ্যে অষ্টম স্হান অধিকার করলেন কৌশিক।

একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলেও পরে মত পরিবর্তন করে কলা বিভাগে ভর্তি। আর তাতেই বাজিমাত। আগামী দিনে ইংরেজি নিয়ে পড়াশোনা করতে চান কৌশিক। তবে পড়াশুনোর পাশাপাশি খেলাধুলো করতে ভালবাসেন কৌশিক। তবে মা সব থেকে বেশি সহযোগিতা করেছেন বলে জানা যায়। কৌশিক কথায়, “আশা ছিল, এক থেকে দশের মধ্যেই থাকবে রেজাল্ট।”

বহরমপুর গোয়ালজান রিফিউজি হাইস্কুলের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন কৌশিক। আগে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বহরমপুরের জিটিআই স্কুলে পাঠরত ছিলেন। মাধ্যমিকে ৫৫০ নম্বর পেয়ে প্রথমে একাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলেও পরে মত পরিবর্তন করে কলা বিভাগে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি। মাধ্যমিক পরীক্ষাতে মেধা তালিকায় না এলেও পড়াশুনোর প্রতি আগ্রহ তৈরি করেই দিনরাত পরিশ্রম। আর তার পরেই বাজিমাত।

রাজ্যের মেধা তালিকায় একমাত্র মুর্শিদাবাদ জেলার অষ্টম স্হান অধিকার করেন কৌশিক। তবে সব সময়ই পাশে থাকতেন তাঁর মা। মলিনার কথায়, “কৌশিক খেলাধুলা করতে ভালবাসে, তবে যখন মন চাইত তখনই পড়াশোনা করত।” কৌশিকের এই রেজাল্টে বেশ খুশি প্রকাশ করেছেন জেলাবাসীরা।

কৌশিক অধিকারী

Higher Secondary Result 2024: উচ্চমাধ্যমিকে নবম স্থান অধিকার ডায়মন্ড হারবারের বিতানের! কতক্ষণ পড়াশোনা করতেন তিনি

ডায়মন্ড হারবার: উচ্চমাধ্যমিকে নবম স্থান অধিকার করে রাজ্যের মধ্যে ডায়মন্ড হারবারের নাম উজ্জ্বল করলেন বিতান আহমেদ। বিতানের প্রাপ্ত নম্বর ৪৮৮। উচ্চ মাধ্যমিকের মেধা তালিকার নবম স্থানে জায়গা করে নিয়েছে ডায়মন্ড হারবারের সরিষা রামকৃষ্ণ মিশনের মেধাবী ছাত্র বিতান আহমেদ।

জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে চান্স পেলেও নিট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে ডাক্তারি নিয়ে পড়াশোনা করতে চান তিনি। বাবা আলতাফ আহমেদ পেশায় শিক্ষক। এছাড়াও মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআরের রাজ্য সহ সম্পাদক তিনি। মা অলিনা আখন স্থানীয় হাইস্কুলের পার্শ্বশিক্ষিকা। ডায়মন্ড হারবার এক নম্বর ব্লকের কাজীপাড়া এলাকার বাসিন্দা বিতান তিন ভাই-বোনের মধ্যে ছোট।

বিতানের পড়াশোনার জন্য গোটা পরিবার সরিষাতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। ক্লাস ৫ থেকে সরিষার রামকৃষ্ণ মিশনে পড়তেন বিতান। ছোট থেকে মেধাবী তিনি। খাওয়া, ঘুমানো-সহ যেটুকু সময় অপচয় করলে নয়, সেই সময়টুকু বাদ দিয়ে বিতান সমস্ত সময়টাই পড়াশোনার পিছনে ব্যায় করতেন। যার ফলে এই সাফল্য এসেছে বলে জানিয়েছেন বিতানের পরিবারের লোকজন। বিতানের এই সাফল্যে খুশি সকলেই।

নবাব মল্লিক