Tag Archives: Indipendence Day

Cooch Behar News: প্রথমে স্বাধীন ভারতের অংশ ছিল না কোচবিহার! কীভাবে বাংলার জেলা হল এই রাজন্য স্টেট, জানুন চমকপ্রদ ইতিহাস

সার্থক পণ্ডিত, কোচবিহার: ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ইংরেজ শাসন থেকে সম্পূর্ণ রূপে মুক্তি পায় ভারতবর্ষ। দুই শতকের বেশি সময়ের ইংরেজ শাসনের সমাপ্তি ঘটে ওইদিন। তবে বর্তমান ভারতের বেশ কিছু অঞ্চল কিন্তু তখনও পর্যন্ত স্বাধীন ভারতের অন্তর্ভুক্ত ছিল না। পরবর্তী সময়ে সেই সমস্ত জায়গায় সংযুক্তি ঘটে ভারতের মধ্যে। এই সমস্ত জায়গার মধ্যে তৎকালীন কোচবিহার রাজ্যেরও নামও রয়েছে। এখনকার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জেলা কোচবিহার আগে কিন্তু একটি স্বাধীন রাজ্য ছিল। কোচবিহারের তৎকালীন মহারাজার সঙ্গে ভারত সরকারের মার্জার এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর হয় ১৯৪৯ সালে ২৮শে অগাস্ট। এই এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে কোচবিহার রাজ্য ভারতের কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল রূপে স্থান নেয় স্বাধীন ভারতের মধ্যে।

কোচবিহারের ইতিহাস অভিজ্ঞ এক ব্যক্তির ঋষিকল্প পাল জানান, “১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট ভারতের ইংরেজ শাসনের অবসান ঘটে। রেড ফোর্টের মধ্যে উত্তোলন করা হয় স্বাধীন ভারতের তেরঙা পতাকার। তবে তৎকালীন কোচবিহার রাজার রাজ্য কোচবিহার স্বাধীন ভারতের সঙ্গে যুক্ত হয়নি সেই সময়। পরবর্তী সময়ে ভারত সরকারের সঙ্গে মার্জার এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে কোচবিহার রাজ্য স্বাধীন ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। মোট নয়টি পয়েন্ট নিয়ে এই মার্জার এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর হয় ১৯৪৯ সালের ২৮ আগস্ট। তবে আবার ৩০ আগস্ট সেই এগ্রিমেন্টের স্ক্রুটিনি করা হয় এবং তখন মোট ১৪টি পয়েন্ট করা হয় এই এগ্রিমেন্টের মধ্যে।”

আরও পড়ুন : ঝাঁঝরা হবে শরীর! এই খাবারগুলির সঙ্গে উচ্ছে বা করলা খেলেই দফারফা সুস্থতার! তেতোর সঙ্গে ভুলেও মুখে দেবেন না কী কী, জানুন

তিনি আরও জানান, “প্রথমে কোচবিহার রাজ্য স্বাধীন ভারতের একটি কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল রূপে স্থান নেয় ভারতে। তারপর পরবর্তী সময়ে কোচবিহারকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের জেলা ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে তাই কোচবিহারকে একটি জেলা রূপেই দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়াও কোচবিহারের রাজ পরিবারের সদস্যদের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বার্ষিক অর্থ প্রদান করা হত সেই সময়। সেই অর্থের পরিমাণ নেহাত কম ছিল না সেই সময়ের হিসেবে।”

East Medinipur News: পরাধীন ভারতবর্ষে সাধারণ মানুষের প্রথম স্বাধীন সরকার! বাংলার এই বিস্মৃত ইতিহাস জানেন কী?

তমলুক: পরাধীন ভারতে প্রথম গড়ে উঠেছিল সাধারণ মানুষের স্বাধীন সরকার। ভারতবর্ষের তমলুকেই প্রথম গড়ে ওঠে স্বাধীন সরকার। ১৯৪২ সালের ভারত ছাড়ো আন্দোলন বা অগাস্ট আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতবর্ষের নানা জায়গায় মহাভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন সরকার গঠিত হয়। ভারতবর্ষের বেশ কিছু জায়গায় স্বাধীন জাতীয় সরকার গঠিত হয়।

মহারাষ্ট্রের সাতারা, উত্তরপ্রদেশের বলিয়া ও বাংলার বুকে তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। অবিভক্ত মেদিনীপুর জেলার তমলুক মহকুমাতে গঠিত হয় তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার। ১৯৪২ সালের আগস্ট আন্দোলনের পটভূমিকায় তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়।

আরও পড়ুন: মিইয়ে যাচ্ছে মুড়ি? ২ মিনিটেই হবে কুড়কুড়ে, এই টিপস মনে রাখলে মাসের পর মাস থাকবে মুচমুচে

ভারত তথা বাংলাকে স্বাধীনতা সংগ্রামে পথ দেখিয়েছে অবিভক্ত মেদিনীপুরের মাটি। মেদিনীপুরের মাটি বরাবরই স্বাধীনতাকামী। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের আঁচ দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ে মেদিনীপুর জুড়ে। সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই আন্দোলনে যোগদান করে।

এই আন্দোলনে স্বদেশী নেতারা সিদ্ধান্ত নেন ইংরেজদের থানা নিজেদের দখলে আনার। ১৯৪২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থানা দখলের দিন ধার্য হয়। ঐদিন তমলুক মহকুমার বিভিন্ন থানায় দখল করতে গিয়ে শহীদ হন বহু মানুষ। তমলুকে শহীদ হন মাতঙ্গিনী হাজরা সহ ১২ জন। মহিষাদলে দখল অভিযানে গিয়ে শহীদ হন ১৬ জন।

ভারত ছাড়ো আন্দোলন সমগ্র মেদিনীপুর জুড়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামে পরিণত হয়। এই আন্দোলনে সাধারণ মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। ফলে দিকে দিকে ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন আরও শক্তিশালী হয়।

এই অগাস্ট আন্দোলনের পটভূমিকায় প্রতিষ্ঠিত হয় তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার। যার প্রথম সর্বাধিনায়ক ছিলেন সতীশচন্দ্র সামন্ত। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার ভারতের স্বাধীনতার ইতিহাসের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে।

আরও পড়ুন: সারাবিশ্বে JCB মেশিনের রং সবসময় হলুদ হয় কেন? JCB-র নামেও আছে বড় রহস‍্য, ৯৯% লোকজনই আসল কারণ জানেন না

পরাধীন ভারতবর্ষের প্রায় দু’বছর স্বাধীনভাবে সরকার চালানোর গৌরব অন্য কোন জাতীয় সরকারের নেই। তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার গঠিত হয়েছিল মানুষের ঐকান্তিক ইচ্ছায়। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের সরকার হয়ে উঠেছিল তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার। ২১ মাস সুষ্ঠু স্বাধীনভাবে তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার কার্যকলাপ চালিয়ে যায় নেতারা। গান্ধিজির নির্দেশে ১ সেপ্টেম্বর ১৯৪৪ সালে কংগ্রেস নেতারা তাম্রলিপ্ত জাতীয় সরকার ভেঙে দেয়।

সৈকত শী