জলপাইগুড়ি: রেড স্পাইডারের হামলায় নাকাল ডুয়ার্সের চা বাগান। চিন্তায় কপালে ভাঁজ পড়েছে চা শ্রমিকদের। কীভাবে হবে অর্থ উপার্জন? ভেবেই দিশেহারা অবস্থা চা বাগানের মালিক থেকে শুরু করে শ্রমিকদের। সবুজ গালিচায় যদি পাতাই না থাকে তা হলে অর্থ উপার্জনও হবে না তাদের। রোজগারের পথে ভিলেন হয়ে দাঁড়িয়েছে রেড স্পাইডার। আবহাওয়ার খামখেয়ালিতে উত্তরের চা বলয়ে ‘রেড স্পাইডারে’র হামলা শুরু। দোসর হয়েছে রাক্ষুসে‘সবুজখেকো’পোকা “লুপার”।

উত্তরে গরমের পারদ চরচড়িয়ে বাড়তেই রেড স্পাইডার এবং লুপারের হামলায় চা পাতা ধ্বংসের পথে। রোগ পোকার হাত থেকে চা বাগানকে বাঁচাতে বড় চা বাগান কর্তৃপক্ষ পোকা মোকাবিলার ব্যবস্থা নিলেও বিপাকে পড়েছেন উওরবঙ্গে হাজার ক্ষুদ্র চা চাষি। তাঁদের কথায়, কৃত্রিম সেচ এবং রাসায়নিক ওষুধ স্প্রে জরুরি হয়েছে। কিন্তু খরচ এতটাই যে চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণে, একদিকে যেমন চা পাতার উৎপাদন কমে যাওয়ার শঙ্কা বেড়েছে।

আরও পড়ুন:লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকাটা অ্যাকাউন্ট থেকে তুলতে গিয়ে হাওয়া, স্বামী এখন ২ ফুটফুটে সন্তান নিয়ে…

অন্যদিকে চা পাতার গুণমান তলানিতে পৌঁছনোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ বিষয় নিয়ে জলপাইগুড়ি কৃষি দফতরের আধিকারিক ডঃ মেহবুব আহমেদ জানান, প্রতিটি বাগানকে জল সেচের ব্যবস্থা করতে হবে এবং যেসব কীটনাশক দেওয়া দরকার সেসব কীটনাশক বিকেলের দিকে ব্যবহার করতে হবে তা হলেই একমাত্র এই সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব হবে। উত্তরের বহু চা বাগানের চা পাতার রং এখন তাপের প্রভাবে ঝলসে গেছে। একদিকে যেমন চা পাতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে অন্যদিকে, ঝলসে লাল রঙ ধরছে পাতায়।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

সুরজিৎ দে

জলপাইগুড়ি: গরমের তীব্র দাবদাহে জ্বলছে দক্ষিণবঙ্গ। বর্তমানে বহু মানুষের বাড়ির কুয়োর জল শুকিয়ে যাচ্ছে বলেই খবর আসছে অহরহ। ঠিকমত মিলছে না পানীয় জলটুকুও। এদিকে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে উত্তরের গরম, আর ঠিক তখনই জলপাইগুড়িতে জল অপচয়ের দৃশ্য উঠে এল ক্যামেরায়। জলপাইগুড়ি থেকে প্রত্যন্ত চা বলয়ে পিএইচই দফতর থেকে পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে।

জলপাইগুড়ি পৌরসভার ২২ নম্বর, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড অন্তর্গত কিছু এলাকায় জেলা জুড়ে তীব্র জল কষ্টের অভিযোগ উঠে আসছে। কিন্তু অপরদিকে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের অরবিন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন ঝা-বাড়ি সংলগ্ন বানেভাসা পাড়ায় রাস্তার ধারে কলের মুখ খোলা থাকছে ঘন্টার পর ঘন্টা। ঝর ঝর করে অপচয় হয়ে যাচ্ছে জল। হুঁশ নেই কারওর। নজর নেই প্রশাসনেরও। ঠিক এভাবেই জল অপচয় হচ্ছে দিনের পর দিন।

আরও পড়ুন:ভাতের সঙ্গে চিতল মাছের এই পদেই চেটেপুটে থালা সাফ! বানানো খুব সহজ, রইল রেসিপি

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ কলের মুখ বিকল যে কারণে কল বন্ধ করা যায় না দিনের পর দিন অঝোরে বয়ে যায় জল। তাদের কথায়, এই কল থেকে মানুষ জল নিচ্ছে, কিন্তু কলের মুখ না থাকায় জল বন্ধ করার উপায় নেই। এভাবেই জল অপচয় হয়ে যাচ্ছে দেখেও কারও কোনও উপায় নেই। বিষয়টি স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের জল অপচয়ের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। কবে এই সমস্যার সমাধান হয় তা এখন সময়ের অপেক্ষা।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

সুরজিৎ দে

জলপাইগুড়ি: বিগত ক’দিন ধরেই আন্তর্জাতিক সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছে ইরানের ইজরায়েলে ড্রোন, মিসাইল হামলার খবর। এই দু’টি দেশের মধ্যে তৈরি হাওয়া সামরিক উত্তেজনার খবর জলপাইগুড়ি শহরের রেসকোর্স পাড়ার বাড়িতে বসেই দেখেছে লিম্বু জনজাতি গোষ্ঠীর দুই অবিবাহিত যুবতী শ্রীজানা লিম্বু, বন্দনা লিম্বু।

সেই থেকেই উৎকণ্ঠায় মোবাইল ফোন নিয়ে দুয়ারে বসে থাকছেন তাঁরা। মা বাবা হারানো তিন বোনের একজন দিব্যা লিম্বু শহরের নামী কলেজ থেকে সংস্কৃত ভাষায় স্নাতক হয়েও ছিলেন বেকার। একপ্রকার বাধ্য হয়েই প্রতিবেশীদের কাছ থেকে বিপুল অর্থ ঋণ নিয়ে সংসারের হাল ফেরাতে মাতৃভূমি ছেড়ে পাড়ি দেয় ইজরায়েলে। যুদ্ধের দামামা বেজে ওঠা দেশে রয়েছে ছোটো বোন, এই মুহূর্তে সেটাই সব থেকে বড় দুশ্চিন্তা জলপাইগুড়ির বাড়িতে থাকা বাকি দুই বোনের। ঘটনা প্রসঙ্গে ইজরায়েলে থাকা দিব্যা লিম্বুর দিদি শ্রীজানা লিম্বু জানান, আমাদের মা বাবা নেই, অনেক কষ্ট করে বোনকে এখানে সংস্কৃত ভাষা নিয়ে পড়াশুনো করালাম, কিন্তু একটা কাজও পেলেন না।

এর পর প্রতিবেশীদের কাছ থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা ঋণ করে ছোটো বোন ইজরায়েলে গিয়েছে কাজ করতে। এখন ওই বোনের পাঠানো অর্থ দিয়েই চলে আমাদের সংসার। চিন্তা হচ্ছে ছোটবোনের জন্য। বর্তমানে ইজরায়েলে হাইফা শহরে কাজ করছে জলপাইগুড়ির শহরে বড় হওয়া দিব্যা। রেসকোর্স পাড়ার বাড়ি থেকে ভিডিও কলে বার বার ছোটো বোনের মুখটা দেখার চেষ্টা করে দিদি শ্রীজানা লিম্বু। ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে দিব্যা দিদিকে জানান, তিনি ভাল আছেন। এতেই সাময়িক শান্তি আসে জলপাইগুড়ির বাড়িতে থাকা দুই দিদির মনে।

সুরজিৎ দে

জলপাইগুড়ি: পৃথু রাজা এবং বখতিয়ার খিলজীর যুদ্ধের সাক্ষী বহন করা জলাশয় আজ পানা ডোবায় পরিণত। শিলিগুড়ি থেকে উত্তরের বিভাগীয় শহর জলপাইগুড়িতে সড়ক পথে আসার সময় ক্ষণিকের জন্য হলেও সবারই চোখ খোঁজে একটি বড় জলাশয়, যার নাম ফাটা পুকুর, প্রায় ৭০ বিঘা জমি নিয়ে ১১০৪ খ্রিস্টাব্দে যখন পৃথু রাজা এবং বখতিয়ার খিলজীর যুদ্ধ হয়েছিল সেই আমলে সৈন্য দের পানীয় জলসহ নিত্যনৈমিত্তিক কাজে ব্যবহারের জন্যই এই অঞ্চলের সর্ব বৃহৎ এই পুকুরটি খনন করা হয়েছিল।

এমনটাই জানালেন উত্তরবঙ্গের অন্যতম গবেষক এবং প্রাবন্ধিক উমেশ শর্মা। যদিও কালের পরিহাসে জলপাইগুড়ি জেলারএই বৃহৎ জলাশয়টি বর্তমান একটি পানা ডোবায় পরিণত হয়েছে, জাতীয় সড়ক এর পাশে থাকা হোটেল, বাজারের আবর্জনায় ক্রমশই ঢেকে যাচ্ছে এই জলাশয়, কষ্ট করে খুঁজে পাওয়া যায় জলের অস্তিত্ব এবং তাতে ভেসে বেড়ানো কিছু পরিযায়ী পাখি দের।

আরও পড়ুন: ‘শুধু মমতাকে একবার দেখতে চাই…,’এই একটা ইচ্ছে নিয়েই ভোট দেবেন ১০১-এর এই প্রবীণ

ফাটা পুকুর স্কুল পাড়ার বাসিন্ধা কানাই দে চোখে মুখে একরাশ হতাশা নিয়ে জানান, ছোটো বেলায় দেখেছি জলে পরিপূর্ণ এই ফাটা পুকুর, কত মাছ, পাখি, আর আজ সবই শুধুই স্মৃতি, বেশ কয়েক বার পুকুরটির সংস্কারের কথা হয়েছে ঠিকই তবে হাল ফেরেনি এই জলাশয়ের। ফাটা পুকুর অঞ্চলের ওপর এক বাসিন্ধা তরোনী রায়ের সাফ জবাব, কত বার টিভিতে দেখলাম শুনলাম ফাটা পুকুরের হাল ফিরবে কিন্তু কোথায় ? আজ ফাটা পুকুর নিজেই এক দমবন্ধ অবস্থায় ক্রমশ মৃতুর পথে এগোচ্ছে, অথচ জন্মের পর থেকে দেখেছি ফাটা পুকুর ছিল এই অঞ্চলের ফুসফুস।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

সুরজিৎ দে