কুকুর সাধারণত তাদের বিশ্বস্ততা, প্রভুভক্তি, বন্ধুত্বের জন্য পরিচিত। তবে কিছু কিছু কুকুর এইসব গুণের উপরে উঠে অবিশ্বাস্য কিছু করে ফেলে, যা তাদের ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে দেয়। টোগো, তেমনই এক কুকুর।
জাতে সাইবেরিয়ান হাস্কি এই সারমেয়টি বিখ্যাত হয়ে আছে মানবকল্যাণে তার অবদানের জন্য। লিওনহার্ড সেপলা নামক এক ডগ ব্রিডার, ট্রেইনার, মুশারের (যারা ডগ-স্লেড চালায়) স্লেজডগের লিড ডগ ছিল ছোটবেলা থেকেই বুদ্ধিমত্তা, দুরন্তপনা দিয়ে মুগ্ধ করে দেওয়া টোগো।
স্লেজ হচ্ছে আর্কটিকের বরফাচ্ছাদিত মেরু এলাকায় মালামাল পরিবহণের একমাত্র মাধ্যম। আধুনিক বরফে চলার উপযোগী ট্রাকগুলো আসার আগ পর্যন্ত। কুকুরটানা স্লেজগাড়ি একটা সময় সবচেয়ে বেশি প্রচলিত ছিল। ৬-১০টি কুকুরের একটি দল স্লেজগাড়ি টানত। স্লেজটানা দলের লিড ডগ বা দলনেতা কুকুরকে হতে হয় দলের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুতগামী, সেই সঙ্গে তীক্ষ্ণ বিচক্ষণতা সম্পন্ন।
ঘটনাটা ১৯২৫ সালের, হিমশীতল আলাস্কার ছোট্ট একটি শহর নম। হঠাৎ করে শহরে ডিপথেরিয়া রোগের মহামারী হানা দেয়। কয়েকটা বাচ্চা মারা যায়, বাকিদের অবস্থাও কাহিল। শহরের একমাত্র হাসপাতালে ডিপথেরিয়া অ্যান্টিটক্সিন মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। ৬৭৪ মাইল (১০৮৫ কিমি) দূরের শহর নুলাতো থেকে আনতে হবে সেরাম। সভ্যতা থেকে অনেক দূরে অবস্থিত এই এলাকায় এক শহরের সঙ্গে আরেক শহরের যোগাযোগের একমাত্র উপায় কুকুরচালিত স্লেজ।
এমন সময় ধেয়ে আসে ভয়াবহ তুষারঝড়। মাইনাসের নিচের তাপমাত্রা, সেই সঙ্গে তুষারঝড়, এমন বিরূপ আবহাওয়ায় বরফঢাকা পাহাড়, সাগর ডিঙ্গিয়ে সেরাম নিয়ে ফেরত আসে সেপলারের স্লেজ, যার লিডে ছিল। পুরো জার্নিটা ভাগ করে মোট ২০টা রিলে দলকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
তবে বাকি উনিশ দলের গড় জার্নি ছিল ৩১ মাইল, সেখানে টোগো তার দল নিয়ে একাই দৌড়েছিল ২৬৪ মাইল ৩ দিনে, যেটা আবার ছিল সবচেয়ে ভয়ংকর বিপদসঙ্কুল রাস্তায় যেখানে আর্কটিক সাগরের জমে থাকা বরফের উপর দিয়ে পাড়ি দিতে হয়েছে! পাড়ি দিতে হয়েছে ৫০০০ ফুট উচ্চতার বরফ ঢাকা পাহাড়। সেপলা্র পূর্বের রেকর্ড ছিল ৪ দিনে এই দূরত্ব অতিক্রম করা, সেখানে টোগোর বীরত্বে এবার প্রতিকূল আবহাওয়া সত্বেও ৩ দিনেই ফেরত আসতে পেরেছিল।
এই দুঃসাহসিক অভিযানের ফলে সেসময় নম শহরের অধিবাসীরা প্রাণে রক্ষা পায় বলে ঘটনাটি ইতিহাসে ১৯২৫ সালের সেরাম রান নামে খ্যাত হয়ে আছে। সেই সঙ্গে বিখ্যাত হয়ে আছে এই অভিযানের নায়ক টোগো। এরপর যতদিন বেঁচেছিল টোগো, খ্যাতি নিয়েই বেঁচেছিল। মৃত্যুর পরে তাকে স্টাফিং করে আলাস্কা মিউজিয়ামে রাখা হয়, হাড়গুলি আলাদাভাবে ইয়েল ইউনিভার্সিটির ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে স্থান পায়।
২০১১ সালে টাইম ম্যাগাজিন টোগোর এই অবদানকে স্বীকৃতি দেয়। তাকে বিশ্বের সবচেয়ে হিরোইক অ্যানিম্যাল নামে আখ্যায়িত করে। টোগো থেকে ব্রিডিং করে যে জাত উদ্ভাবিত হয়, তার নামকরণ করা হয় সেপালা সাইবেরিয়ান স্লেজডগ নামে।
টোগোর এই বীরত্বপূর্ণ কীর্তির উপর ডিজনি সিনেমা তৈরি করেছে ২০১৯ সালে, একই নামে। মজার ব্যাপার হল সিনেমাটিতে টোগো চরিত্রে অভিনয় করেছে টোগোর ১৪ পুরুষ পরের কুকুর ডিজেল। সিনেমাটিতে ডিজেলের অভিনয় একদম নিঁখুত ছিল যে আপনি ধারণা করতে পারবেন টোগো কেমন ছিল রিয়েল লাইফে!
১৯৯৪ সালে বলিউড কাঁপিয়ে দিয়েছিল সলমান খান ও মাধুরী দীক্ষিতের ‘হাম আপকে হ্যায় কৌন’ ছবিটি। সেই ছবিতে বড় বড় তারকা অভিনেতাদের সঙ্গে নজর কেড়েছিল স্পিচ প্রজাতির সাদা একটি কুকুর টাফিও।
সুরাজ বরজাতিয়ার পরিচালনায় এই ছবি আজও দর্শকের মনে সমান জনপ্রিয়। ছবির গানগুলিও ব্যাপক হিট।
যে কোনও বিয়ের অনুষ্ঠানে দিদি তেরা দেবার দিওয়ানা গান এখনও না হলে যেন সেই বিয়ে পূর্ণই হয় না।
সলমানের চরিত্রের নাম প্রেম ও মাধুরীর চরিত্রের নাম নিশা। এই ছবি বলিউডের ইতিহাসে এক কালজয়ী সৃষ্টি বলাই বাহুল্য।
পারিবারিক এই ছবিতে বিশেষ নজর কেড়েছিল যে কুকুরটি তার নাম ছিল টাফি। সে না থাকলে সিনেমার ক্লাইম্যাক্স হয়তো হাতছাড়াই থেকে যেত।
প্রেম সলমান, নিশা মাধুরীকে আর ফিরেই পেতেন না। বাড়ির পোষ্য হিসেবে টাফিকে গোটা সিনেমায় জায়গা দিয়েছেন পরিচালক।
কখনও গানের দৃশ্যে, কখনও গাড়ি চড়ে যাওয়ার সময়, কখনও আবার ক্রিকেট ম্যাচের আম্পায়ার হিসেবে।
১৯৯৪ সালের সেই ছবির কুকুরটি এখন কোথায় আছে জানেন? কুকুরটি আসল নাম কী ছিল তা কি জানেন? আসুন আপনাকে দারুণ দুই রহস্যের সমাধান দেওয়া যাক।
সম্প্রতি কৌন বনেগা ক্রোড়পতির সেটে অমিতাভ বচ্চনের সামনে বসে মাধুরী দীক্ষিত জানিয়েছেন টাফির বিষয়ে। তিনি জানান, সিনেমার শ্যুটিং শেষ হওয়ার পর রেডো অর্থাৎ সিনেমার টাফিকে মাধুরী দত্তক নিয়েছিলেন।
বহুদিন মাধুরীর কাছেই ছিল টাফি। ২০০০ সালে ১২ বছর বয়সে মৃত্যু হয় টাফির। তবে ভারতীয় চলচ্চিত্রের দর্শকের কাছে চিরকাল বেঁচে থাকবে আদুরে টাফির কাণ্ডকারখানা।
প্রতিটি স্বপ্নের অবশ্যই কিছু অর্থ আছে। স্বপ্নে দেখা দৃষ্টিভঙ্গি একটি ভাল বা খারাপ ভবিষ্যতের ইঙ্গিত দেয়। ঘুমের মধ্যে শিশু থেকে বুড়ো সকলেই স্বপ্ন দেখেন। কখনও কখনও এমন কিছু স্বপ্ন দেখা হয় যা আমাদের ভাল বা খারাপ সময়ের ইঙ্গিত দেয়। (Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)
কুকুর আমাদের খুবই প্রিয় পোষ্য। কুকুরের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে গোটা বিশ্বের মানুষ মুগ্ধ হন। তাই অনেকেই বাড়িতে কুকুর পোষেন। খুবই আদুরে এই প্রাণীটি। এছাড়াও পথেঘাটে আমরা কুকুর দেখি। আপনি কি কখনও স্বপ্নে কুকুর দেখেছেন? এমন স্বপ্ন ভাল না খারাপ?
স্বপ্নশাস্ত্র জ্যোতিষশাস্ত্রেরই একটি অঙ্গ। কুকুরের স্বপ্ন দেখার বিভিন্ন অর্থ রয়েছে স্বপ্নশাস্ত্রে। জানুন স্বপ্নে কুকুর দেখার কী কী অর্থ হতে পারে।
স্বপ্নে যদি দেখেন কুকুর আপনাকে কামড়াচ্ছে? তাহলে কি এই স্বপ্নের ফল খারাপ? না একেবারেই নয়! বরং স্বপ্নে কুকুর কামড়াচ্ছে দেখলে বদলে যাবে আপনার ভাগ্য! খুব শীঘ্রই ভাল খবর পাবেন! যদি কোনও কাজ বহুদিন ধরে আটকে থাকে তবে তা সফল হবে।
আবার স্বপ্নে যদি দেখেন কুকুর খুব রেগে আছে আপনাকে দেখে তবে এর ফল খারাপ! আপনা নিজের আপনজন খুব শীঘ্রই বিশ্বাসঘাতকতা করবে! সাবধান
আবার স্বপ্নে যদি কোনও কুকুরকে খেলতে দেখেন তাহলে তা খুব শুভ! আপনার পুরনো বন্ধুর সঙ্গে দেখা হবে! সেই সঙ্গে সুখবর পাবেন! সাধারণত, কুকুর কামড়ানোর পরে, আপনার শরীরে জলাতঙ্ক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে ভয় না পেয়ে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করুন। পাগল কুকুর এবং স্বাভাবিক কুকুরের মধ্যে কিছু পার্থক্য দৃশ্যমান। তা বুঝে নেওয়া জরুরি।
জ্যোতিষ অনুসারে কালো কুকুরের সঙ্গে শনির সংযোগ রয়েছে। আপনি যদি স্বপ্নে কালো কুকুর দেখেন,তাহলে বুঝবেন যে আপনার উপর শনি ঠাকুরের আশীর্বাদ রয়েছে। এছাড়া স্বপ্নে কালো কুকুর দেখার অর্থ কালভৈরবেরও আশীর্বাদ পাওয়া।
স্বপ্নে কালো কুকুর দেখলে বুঝবেন যে আপনি কোনও ভাল খবর পেতে চলেছেন শিগগিরই। আবার এর অর্থ শিগগিরই আপনার সঙ্গে কোনও বন্ধুর দেখা হতে পারে। তবে স্বপ্নে কালো কুকুরকে দেখলে তা কিন্তু অশুভ লক্ষণ।
স্বপ্নে যদি পাগল হয়ে যাওয়া কুকুর দেখেন, তাহলে বুঝবেন যে কোনও কাজে সাফল্য পেতে আপনাকে অনেক বেশি পরিশ্রম করতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা যদি স্বপ্নে পাগল কুকুর দেখে, তাহলে বুঝতে হবে যে তাদের পড়াশোনায় আরও অনেক বেশি মনোযোগ দিতে হবে।
কুকুর যদি বিড়ালের পিছনে ধাওয়া করছে, এমন স্বপ্ন দেখেন তাহলে কিন্তু তা খারাপ বা অশুভ! এমন হলে আপনার প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাবে! বৈবাহিক জীবনে বিচ্ছেদ আসবে। হাঁটার সময় যদি আশপাশ থেকে কুকুর আপনার দিকে তেড়ে আসতে থাকে তাহলে দাঁড়িয়ে যান কিংবা হাঁটার গতি কমিয়ে ফেলুন। বোঝান, আপনি ভয়ে পালাচ্ছেন না।
আবার যদি দেখেন কুকুর আপনাকে বাঁচাতে অন্য কাউকে কামড়ে দিচ্ছে, তাহলে বুঝবেন আপনার ক্ষতি হতে পারে! আপনার সুরক্ষার দরকার! কেউ ক্ষতি করতে পারে।
বাড়িতে কুকুর পোষেন অনেকেই। কুকুরের প্রতি ভালবাসা রয়েছে বহু মানুষের। অত্যন্ত আদুরে এবং খুবই যত্নশীল এক প্রাণী কুকুর। এদের সবচেয়ে বড় গুণ বিশ্বস্ত। কিন্তু আপনি কি কখনও ভেবেছেন আপনার পোষ্য কুকুরটি নিজে কী কী ভালবাসে? জানুন বিশ্বের কোন জিনিসগুলি কুকুরদের সবচেয়ে পছন্দ। (Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)
পছন্দের মানুষের জিনিস লুকিয়ে রাখা কুকুরদের স্বভাব। আসলে নিজের প্রিয় মানুষের কোনও জিনিস অজান্তে সরিয়ে রাখাকে তারা নিজেদের পুরস্কার করার কারণ বলে মনে করে। টিভির রিমোট, মোজা সে কারণেই তারা অন্য জায়গায় লুকিয়ে রাখে।
এটি শুনলে হয়তো আপনি চমকে যাবেন। অনেকেই ভাবেন নিজে যখন খাবেন, তখনই পোষ্যকে খাওয়াবেন বা খেতে দেবেন। কিন্তু কুকুররা মনে করে খাওয়া খুবই ব্যক্তিগত একটি কাজ। ফলে একা এবং নিভৃতে খেতেই তারা পছন্দ করে।
মালিক বা মালকিনের সঙ্গেই সব সময় কুকুর থাকতে ভালবাসে। অন্য কোনও ব্যক্তির সঙ্গে সময় কাটানো তাদের খুব বেশি পছন্দের নয়। মালিক বা মালকিনের থেকে দূরে থাকলে তারা খানিকটা ভীত থাকে। এটি পোষ্য কুকুরদের প্রাথমিক অভ্যাস।
টিভি দেখতে কুকুররা ভালবাসে। আপনি যেমন টিভিতে সিনেমা, সিরিয়াল, গান দেখেন ও শোনেন, তেমনই কুকুররাও এসব খুবই পছন্দ করে। টিভির স্ক্রিনের আলো, শব্দ, রং দেখতে তারা খুবই ভালবাসে, খুশি হয়। তবে মানুষের ভালবাসার চেয়ে বেশি কখনওই নয়।
কুকুরদের আরেকটি পছন্দের কাজ হল সাঁতার কাটা। এতে আপনার পোষ্যের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে।
টিভির পাশাপাশি গানের কথা না বললেই নয়। গান শুনতেও ভালবাসে কুকুররা। বোরডম কাটাতে ও মনকে শান্ত করতে হাল্কা গানের সুর কুকুরদের পছন্দের।
মালিকের সঙ্গে বেড়াতে যেতেও খুবই ভালবাসে কুকুররা। আরও ভাল হয় পরিবারের অনেকে মিলে গেলে। এতে তারাও নিজেদের পরিবারের সদস্য বলে মনে করে।
আপনার সঙ্গে অর্থাৎ পোষ্যের মালিক বা মালকিনের সঙ্গে ঘুমনোর মতো আনন্দ আর কোনও কিছুতেই নেই কুকুরের। সবচেয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে মালিক বা মালকিনের পাশকেই বেছে নেয় পোষ্য কুকুরেরা। (Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)
মাঝেমধ্যেই আপনি নিশ্চয়ই মধ্যরাতের দিকে কুকুরের কান্নার অদ্ভুত শব্দ শুনতে পান। রাতে কুকুরের কান্নার শব্দ বেশিরভাগ লোকের কাছেই অশুভ লক্ষণ হিসাবে বিবেচিত হয়। কিছু লোক বিশ্বাস করে যে কুকুররা রাতে অশুভ আত্মা দেখলে কাঁদতে শুরু করে। একই সময়ে, কিছু লোক বিশ্বাস করেন যে কুকুর যখন কাঁদে, কেউ কয়েক দিনের মধ্যে মারা যায়। আসলেই কি তাই নাকি এর পেছনে অন্য কোনও কারণ আছে? কুকুর শুধু রাতে কেন কাঁদে জানেন?
রাতে কুকুরের কান্নার অনেক কারণ রয়েছে। জনপ্রিয় বিশ্বাস অনুসারে, কুকুররা যে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা আগে থেকেই বুঝতে পারে। এই কারণে তারা রাতে কান্নাকাটি শুরু করে। প্রায়শই গ্রামে এবং শহরে, কুকুর যখন বাইরে বসে কাঁদতে শুরু করে, তখন সেখানে বসবাসকারী লোকেরা চিন্তিত হতে শুরু করে। সাধারণত, রাতে কুকুরের কান্না নেতিবাচক লক্ষণ হিসাবে ধরা হয়। জনপ্রিয় বিশ্বাসের বিপরীতে, রাতে কুকুরের কান্না অসুস্থ স্বাস্থ্য বা আঘাতের কারণেও হতে পারে।
কুকুরের কান্নার বিষয়ে অনেক গবেষণায় রিপোর্ট করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে যে যখন একটি কুকুর তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয় বা অন্য কোনও লোকালয়ে চলে যায় তখন তারা কাঁদতে শুরু করে। হতাশায় রাতে জোরে জোরে কাঁদতে শুরু করে। গবেষণা অনুসারে, এটি একই ধরণের আচরণ যা ঘটে যখন একটি মানব শিশু তার পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়। সহজ কথায়, মানুষ ও প্রাণীর আচরণ একই রকম।
একটি কুকুর যখন তার দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অন্য কোথাও চলে যায়, তখন রাতে জোরে ঘেউ ঘেউ করে তার সঙ্গীদের কাছে তার অবস্থানের সংকেত পাঠায়। একই সঙ্গে অন্য কোনও স্থান থেকে কোনও কুকুর কোনও এলাকায় এলে ওই স্থানে বসবাসকারী কুকুরের দলও রাতে কান্নাকাটি শুরু করে। এতে করে তারা আশেপাশে উপস্থিত তাদের বন্ধুদের জানায় যে একটি অচেনা কুকুর তাদের এলাকায় প্রবেশ করেছে।
কুকুরটি তার পাশের কুকুরকে জোরে ঘেউ ঘেউ করে তার উপস্থিতি এবং সমস্যা সম্পর্কে জানতে দেয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, কুকুররা রাতে অসুস্থ বোধ করলে বা আহত হলে কান্না শুরু করে। কুকুর যখন ব্যথা বা অস্বস্তিতে থাকে, তারা কান্নাকাটি করে তাদের পার্টনারকে বা দলকে কাছে ডাকতে চেষ্টা করে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, রাতে কুকুরের কান্নার অন্যতম কারণ হল তাদের ক্রমবর্ধমান বয়স। কুকুর যখন বয়সের সঙ্গে দুর্বল হয়ে পড়ে, তখন তারা আরও একাকী বোধ করতে শুরু করে। এ কারণে তাদের বিষণ্ণতা ঘিরে ধরে। রাতে যখন এই একাকীত্ব ও বিষাদ বেড়ে যায় তখন তারা চিৎকার করে কান্নার মাধ্যমে তাদের কষ্ট প্রকাশ করে। কিছু কুকুর এমনকী তাদের মৃত সঙ্গীদের স্মরণ করে কাঁদে। যদি একটি কুকুর একটি বাড়িতে প্রতিপালিত হয় এবং কোন কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তবে এটি আরও একাকী বোধ করে এবং রাতে কাঁদতে শুরু করে।
কুকুররা যখনই তাদের বিচ্ছিন্ন মালিকদের সঙ্গে দেখা হয় তারা কান্নাকাটি করে। বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর বিপথগামী কুকুররা আবার তাদের দলে যোগ দিলে একই রকম কিছু ঘটে। আবার দেখা হলে, কুকুরগুলি তাদের মালিকদের চাটতে শুরু করে বা এমনকী তাদের স্নেহ দেখানোর জন্য তাদের সঙ্গে খেলতে শুরু করে। বিজ্ঞানীরা গবেষণায় দেখেছেন পোষা কুকুর বেশিদিন তাদের মালিকের কাছ থেকে দূরে থাকতে পারে না। পাঁচ ঘণ্টা দূরে থাকার পর দেখা হলে কুকুরের চোখ থেকে কান্নার জল বেরিয়ে আসে।
বছর দেড়েক আগের ঘটনা৷ উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউতে ঘটেছিল সেই বীভৎস ঘটনা৷ নিজেরই মালকিনের উপরে হামলা করে ছিঁড়েখুঁড়ে মেরে ফেলেছিল তাদেরই পোষা কুকুর৷ ওই বৃদ্ধ মহিলা ও তার ছেলের সঙ্গেই থাকত পিটবুল প্রজাতির কুকুরটি৷ কিন্তু, ঘটনার দিন ওই কুকুরটি তাঁর মালকিনকে প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে আঁচড়ে-কামড়েছিল বলে জানা গিয়েছিল৷
শুধু ওই লখনউয়ের ঘটনাই নয়, ভারতের নানা প্রান্তে বারবার সামনে এসেছে এমন নৃশংস ঘটনা৷ সেই কারণে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ভয়ঙ্কর এবং আক্রমণাত্মক স্বভাবের কারণে ২৩টি প্রজাতির বিদেশি কুকুরের পালন, প্রজনন এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ করার জন্য। প্রতিটি রাজ্যকে এই মর্মে নির্দেশিকাও পাঠানো হয়েছে৷ আসুন দেখে নেওয়া যাক এমন ৫টি প্রজাতির কুকুর যার পালন, প্রজনন এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷
Rottweiler: এটি একটি জার্মান জাতের কুকুর। Rottweilers যতটা অনুগত, তারাও সমান বিপজ্জনক। Rottweilers সাধারণত শান্ত দেখায়, কিন্তু যদি তারা রেগে যায় বা কাউকে আক্রমণ করে তবে তাদের খপ্পর থেকে পালানো অসম্ভব। Rottweiler বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক কুকুর মধ্যে গণ্য করা হয়৷
pitbull: পিটবুল আমেরিকান কুকুরের একটি জাত। এটি একটি মাঝারি আকারের, বুদ্ধিমান এবং ছোট লোমযুক্ত কুকুর। পুরুষ পিটবুল কুকুর যখন দাঁড়ায়, তখন তার উচ্চতা ১৮ থেকে ২১ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়, যখন এর গড় ওজন ২৮ থেকে ৩০ কেজি হয়। বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক কুকুরের মধ্যে এদের গণ্য করা হয়। যদি কোনও পিটবুল কোনও মানুষকে বা প্রাণীকে আক্রমণ করে, এর থেকে পালানো কঠিন।
Bull Terrier: আমেরিকান হেয়ারলেস টেরিয়ার একটি অত্যন্ত স্মার্ট কুকুর৷ এর শরীরে লোম কম৷ তবে লোমশ ভ্যারিয়্যান্টেরও খোঁজ মেলে। এই অত্যন্ত সতর্ক প্রকৃতির, তার মালিকের চারপাশের সমস্ত বিষয়ের উপরে কড়া নজর রাখে। যখন টেরিয়ার দাঁড়ায়, তখন এর উচ্চতা ১২ থেকে ১৬ ইঞ্চির মধ্যে হয়। তাদের স্বাভাবিক ওজন ১২ কেজি পর্যন্ত। এরা ১৪ থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত বাঁচে।
Wolf dogs: Wolf dogs হল নেকড়ে এবং কুকুরের মিশ্রণে তৈরি একটি প্রজাতির কুকুর। এরা দেখতে দুর্দান্ত। এই প্রজাতির কুকুররা আকারে বড়, সঠিকভাবে যত্ন না নিলে এরাও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে।
Mastiffs: মাস্টিফসকে বিদেশের অনেক দেশেই পারিবারিক কুকুর হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এরা শান্ত প্রকৃতির৷ তবে যে সমস্ত বাড়িতে শিশু বা প্রবীণ সদস্যেরা থাকেন না, সেই বাড়ির জন্যই এই প্রজাতির কুকুররা ভাল৷ এদের বিশাল শরীরই এদের বিপজ্জনক করে তোলে। গৃহপালিত হওয়ার আগে, এগুলি শিকার এবং প্রাণীদের রক্ষার জন্য ব্যবহৃত হত।
নয়ডা: পোষ্য কুকুর নিয়ে ফের অশান্তি। নয়ডার বহুতলের লিফটে কুকুরের মালকিনের সঙ্গে মারাত্মক ঝামেলায় জড়িয়ে পড়লেন এক প্রাক্তন আইএএস অফিসার। এমনই গন্ডগোল যে, তা হাতাহাতি পর্যন্ত গড়ায়। গোটা ঘটনা লিফটের সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই ভিডিওটি।
ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, লিফটে আগে থেকেই এক তরুণী পোষ্য কুকুরকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেখানে গেটের সামনে ঝগড়া চলছে মহিলা ও প্রাক্তন সরকারি কর্মীর। আচমকাই বচসার মাঝে মহিলা এবং ওই ব্যক্তি একে অপরের মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। আর তারপরেই শুরু হয় হাতাহাতি।
আরও পড়ুন: স্তন ক্যানসার রুখতে সচেতন হোন! এই ভাবে নিজেকে পরীক্ষা করুন, রইল বিশেষজ্ঞের টিপস
আরও পড়ুন: খুব ইচ্ছে ছিল পার্থর, বাধ সাধেন জ্যোতিপ্রিয়! গ্রেফতার দুই নেতার ?লড়াইয়ে? নেত্রী হওয়া হল না অর্পিতার
নয়ডা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। লিফটের মধ্যে কুকুরকে নিয়ে যাওয়ার সময় ঝগড়া শুরু। তারপরে ওই প্রাক্তন কর্মী মোবাইলে তা রেকর্ড করতে শুরু করেন। পরে স্ত্রীকে মারধরের দাবি নিয়ে অশান্তিতে যোগ দেন কুকুরের আরেক মালিক। প্রাক্তন সরকারি কর্মীকে তিনিও লিফটের ভিতর ঢুকে মারধর করেন। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে সেটিও।
বাধা দিতে গিয়ে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ওই মহিলা। তারপরেই প্রবল কথা কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি লেগে যায়। কুকুরকে লিফটে নিয়ে ওঠানামা করানো নিয়েই সম্ভবত অশান্তি হয় দুপক্ষের। তবে কী কারণে এমন মারামারি ঘটল তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
Just another WordPress site