Tag Archives: Women
Women’s Day: স্বামীর ঋণ শোধ করতে হারিয়েছেন কিডনি, প্রতিকূলতাকে হারিয়ে জীবনযুদ্ধে বিজয়িনী জয়া
বনোয়ারীলাল চৌধুরী, পূর্ব বর্ধমান, কাটোয়া: মাথায় স্বামীর করা ঋণের বোঝা, সঙ্গে একরত্তি ছেলে। বাস্তব যে কতটা কঠিন হতে পারে, হয়তো সেদিন বুঝেছিলেন এই মহিলা। তবে হাল ছাড়েননি তিনি। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছিলেন প্রতিকূল পরিস্থিতির সঙ্গে । তিনি যে থেমে যাওয়ার পাত্রী নন, সেটা বুঝিয়েছিলেন উল্টোদিকের মানুষকে। নারীশক্তির অন্যতম উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পূর্ব বর্ধমানের জয়া পাল।
বর্তমানে তিনি পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া শহরের বাসিন্দা। আজ থেকে বেশ কয়েক বছর আগে বিয়ে হয় তাঁর। এর পর জন্ম নেয় এক ফুটফুটে পুত্রসন্তান। তবে তারপরেই হয় ছন্দোপতন। আচমকাই প্রতিকূল হয়ে ওঠে তাঁর পরিস্থিতি।একদিন হঠাৎই তাঁকে ও তার ছোট্ট ছেলেটাকে রেখে চলে যান তাঁর স্বামী। রেখে যান পাহাড়প্রমাণ ঋণের বোঝা। সেই সময় কয়েক মুহূর্তের জন্য কী করবেন ভেবে উঠতে পারেন না জয়া। কিন্তু পরবর্তীতে ছেলের কথা ভেবে এবং আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচার তাগিদে ঘুরে দাঁড়ান তিনি।
জয়া পাল বলেন, ২০০৯ সালে তাঁর স্বামী অনেক টাকা ঋণ করে তাঁকে এবং তাঁর সন্তানকে ফেলে রেখে চলে যান । সেই সময় ভয়াবহ পরিস্থিতি নেমে এসেছিল তাঁর জীবনে । তবে তাঁর প্রথম থেকেই ইচ্ছা ছিল আত্মসম্মান নিয়ে বাঁচার । সেই সময় তিনি কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না । তখন তিনি একদিন পেপারে দেখতে পান একজন ব্যক্তির তাঁর স্ত্রীর জন্য কিডনির প্রয়োজন । তখন তিনি তাঁর স্বামীর করা সমস্ত ঋণ পরিশোধ করার বিনিময়ে ওই ব্যক্তিকে তাঁর কিডনি দেওয়ার চুক্তি করেন । সেইমতো তিনি কিডনি দান করেন এবং শোধ হয় স্বামীর করা সব ঋণ।
আরও পড়ুন : মুখে দুর্গন্ধ? ওজন কমছে না? সব সময় বদহজম? ভাতডালের পাতে রাখুন এই পাতা
পরবর্তীতে বিভিন্ন জায়গায় তিনি কাজ করেন এবং তারও পড়ে যুক্ত হন বিমা সংস্থার সঙ্গে । এলআইসি করেই এখন ভাল অবস্থা তাঁর । যা হয়েছে সবটাই এলআইসি এর জন্যই । যে সময় জয়ার খারাপ পরিস্থিতি ছিল তখন তাঁকে বহু জনের কাছে বিভিন্ন কটূক্তি শুনতে হয়েছে। তবে আজ কাটোয়ার জয়া পাল খুবই পরিচিত একটা মুখ। নিজের অসময়ে জয়া কাউকে পাশে না পেলেও , আজ অন্যের কষ্টের কথা শুনলেই তিনি ছুটে যান ।
প্রতিনিয়ত বিভিন্ন রকমভাবে তিনি বহু মানুষকে সাহায্য করেন । অসহায় বাচ্চাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়া থেকে শুরু করে , দুঃস্থ পরিবারের সংসার খরচ দেওয়ার মত অজস্র কাজ তিনি করেছেন এবং এখনও করেন । বর্তমানে বহু মানুষের অনুপ্রেরণা পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার জয়া পাল । একজন মহিলা হয়েও জয়া থেমে থাকেননি। অদম্য জেদ, ইচ্ছাশক্তি, আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার জেদের কারণে আজ তিনি অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন । মহিলা হয়ে তিনি যা করে দেখিয়েছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। সমাজের অন্যান্য মহিলাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন , ‘‘কষ্ট মহিলাদের জীবনের একটা অংশ । জীবনে প্রচুর সমস্যা এলেও মাথা ঠান্ডা রেখে এগিয়ে যেতে হবে । পলায়নের পথ বেছে নিলে চলবে না । মাথা ঠান্ডা রেখে সৎ পথে এগোতে হবে । সৎ পথে থাকলে ঈশ্বর তাঁদের সঙ্গ দেবেন ।’’
বর্তমানে জয়ার পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক স্বচ্ছল। সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় ঘুরে দাঁড়িয়েছেন তিনি । তবে জয়ার শরীরের অবস্থা এখন খুব একটা ভাল নেই। তবে জয়া জানিয়েছেন, তিনি যতদিন বাঁচবেন ততদিন সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবেন। একসময় যে অন্যের কাছে সাহায্য পাননি, এখন সেই মহিলা সাহায্য করেন বহু মানুষকে। নারীশক্তির এক অন্যতম উদাহরণ হলেন পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার জয়া পাল ।
South 24 Parganas News: মেয়েদের পাশে মেয়েরাই, নামখানায় নির্যাতন রুখতে এগিয়ে এল মহিলারা
নামখানা: ক্রমবর্ধমান নারী নির্যাতন রুখতে নামখানায় এগিয়ে এল মহিলারাই। ২৫ শে নভেম্বর থেকে ১০ই ডিসেম্বর পর্যন্ত নারী নির্যাতন রুখতে বিশ্বব্যাপী কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তারই অঙ্গ হিসাবে নামখানায় মহিলাদের একটি কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ দিবস। এদিন থেকে শুরু হয়ে ১০ ডিসেম্বর, বিশ্ব মানবাধিকার দিবস পর্যন্ত ১৬ দিনব্যাপী পালিত হয় নারী ও শিশুদের প্রতি নির্যাতন ও সহিংসতা প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক প্রচারাভিযান পক্ষ।
আরও পড়ুন: চলছে বাঘ গণনা, দক্ষিণরায়ের গতিবিধির নজরদারি করছে প্রায় দেড় হাজার ক্যামেরা
১৯৯১ সালে ওয়মেন গ্লোবাল লিডারশিপ ইনস্টিটিউট প্রথম এই কর্মসূচির উদযাপন শুরু করে। সারা বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সুন্দরবন এলাকতেও চলছে এই কর্মসূচি। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গিয়েছে এই সমস্ত এলাকায় নারী নির্যাতনের হার বেড়েছে। আর সেকারণে নামখানা পঞ্চায়েত এলাকার ছয় জায়গায় এই মিছিল করা হয়। এই মিছিলে এক হাজারেরও বেশি মহিলা অংশগ্রহণ করে।
আরও পড়ুন: দেশি থেকে চাল ভাজা! এখানেই পাবেন হরেক রকমের মুড়ি, শতবর্ষ ছুঁই ছুঁই ‘এই’ মুড়ির হাট! কোথায় জানেন?
২৫ জন মহিলাকে নিয়ে এক একটি দল তৈরি করা হয়। এই দলগুলি থেকে ২৫০ জন মহিলা এক একটি মিছিলে অংশগ্রহণ করে। এই মিছিলের নেতৃত্ব দেন, প্রেয়সী গায়েন। তিনি জানান, “বর্তমান সময়ে মেয়েদের উপর যে অত্যাচার করা হয় তারই প্রতিবাদে আমাদের এই মিছিল। মেয়েরা অত্যাচারিত হলে আমরা যাতে সবাই একই সঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারি, সেই অত্যাচারের বিরুদ্ধে সরব হতে পারি তারই জন্য এই মিছিল। এই মিছিলের মাধ্যমে আমরা শপথ নিলাম।মেয়েদের ওপর অত্যাচার হলে আমরা সবাই একসঙ্গে ঝাঁপিয়ে পড়ব।”
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
আগামীতে আরও বড় আকারে আন্দোলন সংগঠিত করার কর্মসূচি রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
নবাব মল্লিক
Women Empowerment: প্রশিক্ষণ শেষ, এ বার বাড়ির লক্ষ্মীদের হাত ধরেই ভরবে সংসারের ভাণ্ডার
রঞ্জন চন্দ, পশ্চিম মেদিনীপুর: আর বসে থাকা নয়, বাড়িতে নানা খাদ্যসামগ্রী বানিয়ে স্বনির্ভর হতে পারবেন গৃহবধূরা।উপার্জন করতে পারবেন অর্থও। ঘরের কাজ, রান্নার পাশাপাশি দুগ্ধজাত নানা সামগ্রী বানিয়ে স্বনির্ভর হতেপারবেন প্রান্তিক এলাকার গৃহবধূ ও অন্যান্য মহিলা।
দুধ থেকে প্যাঁড়া, সন্দেশ, রসগোল্লা, পনির, রাবড়ি বানিয়ে উপার্জন করতে পারবেন মহিলারা। মহিলাদের স্বনির্ভর করতে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হল পশ্চিম মেদিনীপুরে প্রান্তিক ব্লক দাঁতনে। এক সপ্তাহ ধরে গাভী প্রতিপালনপ্রশিক্ষণের পর দুগ্ধজাত সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণ শিবির হল দাঁতনে। দাঁতন মানব কল্যাণ কেন্দ্রের উদ্যোগে এবং নাবার্ডের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় মহিলাদের। মহিলাদের গাভী প্রতিপালন পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশিক্ষণের পর দুধ থেকে বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
দুধ থেকে ছানা, রসগোল্লা, সন্দেশ, দই, রাবড়ি, পনির বানানো শেখানো হয় এই শিবিরে। গাভী প্রতিপালনের প্রশিক্ষণ কুড়িজন মহিলাকে দেওয়া হয় সাতদিন ধরে। এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর প্রায় তিরিশ জন মহিলাকে দুগ্ধজাত দ্রব্য তৈরির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মহিলারা কী ভাবে দুধ থেকে দুগ্ধজাত বিভিন্ন সামগ্রী বানিয়ে বাজারে বিক্রি করে স্বনির্ভর হতে পারবেন, তা হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন : এসেছিলেন স্বয়ং মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য, রাসপূর্ণিমায় আসুন ঘরের কাছে এই পুণ্যভূমিতে
প্রসঙ্গত বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকায় বাড়িতেই রয়েছে গাভী। তা থেকে পাওয়া দুধ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতে হত। বিভিন্ন সময়ে তা বিক্রি না হলে নষ্ট হত। স্বাভাবিকভাবে এই প্রশিক্ষণের পর তারা দুগ্ধজাত নানান খাদ্যসামগ্রী বানিয়ে স্বনির্ভর হতে পারবেন। গৃহবধূ এবং মহিলারা বাড়িতে বসেই এ বার রোজগার করতে পারবেন।