দক্ষিণ ২৪ পরগনা: নতুন এক পোকার উপদ্রবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন মৌমাছি প্রতিপালকরা। এই পোকার দাপটে অনেকে মৌমাছি প্রতিপালন ছেড়েও দিচ্ছেন। সম্প্রতি স্মল হাইভ বিটল বা ‘ছোট চাক পোকা’, যার বিজ্ঞানসম্মত নাম হল এথিনা টুমিডা, তার দাপটে কার্যত ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে এই জীবিকার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের। ইতিমধ্যেই এই পোকার আক্রমনের হাত থেকে মুক্তির জন্য গবেষণা শুরু করেছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা।
তবে এখনও প্রকৃত সমাধান সূত্র মেলেনি বলেই দাবি তাঁদের। আপাতত নানা ধরনের উপায় অবলম্বন করে এই পোকার আক্রমনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপরই বেশি জোর দিচ্ছেন তাঁরা। মৌমাছি পালনের মাধ্যমে মধু ও অন্যান্য উপজাত দ্রব্য উৎপাদন করে একশ্রেণির যুবসমাজ যেমন রোজগার করে আত্মনির্ভর হয়েছেন, তেমনই পরাগমিলনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনেও এই জগতের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা করে মৌমাছিরা। তাছাড়া মৌমাছিদের দ্বারা তৈরি মধুর অর্থনৈতিক মূল্য যথেষ্ট।
আরও পড়ুন: আবর্জনায় ভর্তি সরকারি হাসপাতাল, প্রতিবাদ রোগীর পরিজনদের
সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতবর্ষ বর্তমানে মধু উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ মৌমাছি পালন ও মধু উৎপাদনে দেশের প্রথম সারির রাজ্যগুলির মধ্যেই পড়ে। জঙ্গলের মধু সংগ্রহের পাশাপাশি এরাজ্যে প্রায় ১৫,০০০ মৌমাছি পালক রয়েছেন যারা প্রধানত ইউরোপিয়ান মৌমাছি এপিস মেলিফেরা অথবা ভারতীয় মৌমাছি এপিস সেরানা প্রতিপালন করেন। এখানে ১০০ টি এপিস মেলিফেরা কলোনি থেকে বছরে ৩-৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রোজগার করা সম্ভব। তাই পশ্চিমবঙ্গে মৌমাছিপালন আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় জীবিকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে স্মল হাইভ বিটল পোকার আক্রমণে সঙ্কটে পড়েছেন মৌমাছি প্রতিপালকরা। নিমপিঠ রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কৃষি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এই পোকার আক্রমণ সম্পর্কে মৌমাছি প্রতিপালকদের সজাগ থাকতে হবে। দ্রুত যাতে এই পোকার হাত থেকে পরিত্রাণের উপায় মেলে সেই চেষ্টায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষি বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
সুমন সাহা