Tag Archives: beekeeping

Apiculture: প্রাচীন পন্থায় মৌমাছি প্রতিপালন, লাভের অঙ্ক বিরাট

আলিপুরদুয়ার: প্রাচীনকাল থেকে গাছের গুঁড়িতে মৌমাছি চাষ করছেন ভুটান সীমান্তের বাসিন্দারা।বছরে দু’বার মধু সংগ্রহ করছেন তাঁরা। যদিও তাঁদের এই কাজ চলছে কোন‌ওরকম সরকারি সহায়তা ছাড়া।

মৌমাছি পালন একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসা। বছরে লক্ষাধিক টাকা লাভ হয় এই ব্যবসায়। সরকারি তরফে মৌমাছি পালন ও মধু সংগ্রহকে এপিকালচারের আওতায় নেওয়া হয়েছে। আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন এলাকায় চলছে এপিকালচারের মাধ্যমে মধু উৎপাদনের কাজ।হাতিদের উৎপাত কম করতে এপিকালচারের পথ বেছে নিয়েছিল বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। হাতিকে কাবু করতে পারে মৌমাছি। এই স্বভাবকে কাজে লাগিয়েই এলাকায় হাতি ও মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান গড়ে তুলতে উদ্যোগী হল আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন।

আরও পড়ুন: সেতু না থাকায় নদী পারাপারের একমাত্র ভরসা নৌকা! সমাধান চেয়ে সুকান্তর কাছে দরবার

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গল লাগোয়া নুরপুর, মাঝের ডাবরি, কালিখোলা, জয়ন্তী এলাকায় মৌমাছি চাষ শুরু হয়েছে। স্থানীয়রাই মৌমাছি প্রতিপালন করছেন। জেলা প্রশাসন তাদের সবরকম সুবিধে দিচ্ছে। দু’বছরে ব্যবসায় লাভের মুখ দেখেছেন তাঁরা।

ভুটান সীমানার গ্রামে গাছের গুঁড়িতে হয় মৌমাছি চাষ। এটি এপিকালচারের অন্তর্ভুক্ত নয়। জেলা প্রশাসন এর খবর হয়ত জানে না। গ্রামের হাতে গোনা ১০-১২ টি বাড়িতে ২-৩ টি গাছের গুঁড়ি ঝোলানো রয়েছে টিনের চালে। এলাকার বাসিন্দারা জানান প্রথমে দু থেকে তিনটি মৌমাছি এসে জায়গা দেখে যায়। পছন্দ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ঝাঁক ধরে মৌমাছি আসে। তবে গাছের গুঁড়িতে কয়েকটি ছিদ্র দিতে হয়। এই ব্যবসা লাভজনক, কারণ ছয় মাস পর পর মধু উৎপাদন হয়। ১০ বোতল মধু মেলে। ১ বোতলে একৃ থেকে দেড় কেজি মধু থাকে।

অনন্যা দে

Beekeeping Crisis: পোকায় নষ্ট করছে মৌচাক! নতুন সঙ্কটে সুন্দরবনের মৌ-চাষ

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: নতুন এক পোকার উপদ্রবে চরম ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন মৌমাছি প্রতিপালকরা। এই পোকার দাপটে অনেকে মৌমাছি প্রতিপালন ছেড়েও দিচ্ছেন। সম্প্রতি স্মল হাইভ বিটল বা ‘ছোট চাক পোকা’, যার বিজ্ঞানসম্মত নাম হল এথিনা টুমিডা, তার দাপটে কার্যত ত্রাহি ত্রাহি রব উঠেছে এই জীবিকার সঙ্গে যুক্ত মানুষদের। ইতিমধ্যেই এই পোকার আক্রমনের হাত থেকে মুক্তির জন্য গবেষণা শুরু করেছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা।

তবে এখনও প্রকৃত সমাধান সূত্র মেলেনি বলেই দাবি তাঁদের। আপাতত নানা ধরনের উপায় অবলম্বন করে এই পোকার আক্রমনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উপরই বেশি জোর দিচ্ছেন তাঁরা। মৌমাছি পালনের মাধ্যমে মধু ও অন্যান্য উপজাত দ্রব্য উৎপাদন করে একশ্রেণির যুবসমাজ যেমন রোজগার করে আত্মনির্ভর হয়েছেন, তেমনই পরাগমিলনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনেও এই জগতের জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে সহায়তা করে মৌমাছিরা। তাছাড়া মৌমাছিদের দ্বারা তৈরি মধুর অর্থনৈতিক মূল্য যথেষ্ট।

আর‌ও পড়ুন: আবর্জনায় ভর্তি সরকারি হাসপাতাল, প্রতিবাদ রোগীর পরিজনদের

সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতবর্ষ বর্তমানে মধু উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ মৌমাছি পালন ও মধু উৎপাদনে দেশের প্রথম সারির রাজ্যগুলির মধ্যেই পড়ে। জঙ্গলের মধু সংগ্রহের পাশাপাশি এরাজ্যে প্রায় ১৫,০০০ মৌমাছি পালক রয়েছেন যারা প্রধানত ইউরোপিয়ান মৌমাছি এপিস মেলিফেরা অথবা ভারতীয় মৌমাছি এপিস সেরানা প্রতিপালন করেন। এখানে ১০০ টি এপিস মেলিফেরা কলোনি থেকে বছরে ৩-৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত রোজগার করা সম্ভব। তাই পশ্চিমবঙ্গে মৌমাছিপালন আজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয় জীবিকা হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

এমন পরিস্থিতিতে স্মল হাইভ বিটল পোকার আক্রমণে সঙ্কটে পড়েছেন মৌমাছি প্রতিপালকরা। নিমপিঠ রামকৃষ্ণ আশ্রম কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের কৃষি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে এই পোকার আক্রমণ সম্পর্কে মৌমাছি প্রতিপালকদের সজাগ থাকতে হবে। দ্রুত যাতে এই পোকার হাত থেকে পরিত্রাণের উপায় মেলে সেই চেষ্টায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কৃষি বিজ্ঞানীরা গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

সুমন সাহা

Beekeeping: সীমান্তে চোরাচালান রুখবে মৌমাছি!

নদিয়া: মৌমাছির সাহায্যে আন্তর্জাতিক সীমান্তে চোরাচালান ঠেকাবে বিএসএফ! নদিয়া জেলার ভারত-বাংলাদেশ হেমন্ত চোরাচালনের জন্য বহুদিন ধরে কুখ্যাত। সেই চোরাচালানে রাশ টানতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীদের উদ্যোগে সীমান্তের কাঁটাতারে পালন করা হচ্ছে মৌচাক।

এদিকে সীমান্তের কাঁটাতারে মৌমাছির লালন পালনে একদিকে যেমন সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত হচ্ছে অন্যদিকে তেমনই উপার্জনের পথ খুলে গিয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী কাদিপুর সীমান্তে বিএসএফের ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়নের পক্ষ থেকে বিশ্ব মৌমাছি পালন দিবস পালন করা হল সম্প্রতিI বিএসএফএ ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ান আসার পর নদিয়া জেলায় প্রথম কাদিপুর বিওপিতে তারা মৌমাছি পালন শুরু করে ওই এলাকার উন্নয়নের জন্যI এই ব্যাটেলিয়ান আসার পর গ্রামের বিভিন্ন মহিলা এবং পুরুষরা এই কাজে যুক্ত হয় এবং তাঁরা এর মাধ্যমে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হয়ে উঠছেন।

আরও পড়ুন: হাসপাতালে গাড়ি রেখে চোখ ফেরালেই ভ্যানিশ! এখানে এলে সাবধান

এই উদ্যোগের পাশাপাশি মৌমাছি পালন করার ফলে সীমান্তে সুরক্ষার বিষয়টিও অনেকটা জোরদার করা সম্ভব হয়েছে। বিএসএফের মতে, সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দারা আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হয়ে উঠলে চোরাচালানে রাশ টানা সহজ হবে।

প্রায় এক বছর ধরে বিএসএফের ৩২ নম্বর ব্যাটেলিয়ান কাদিপুর গ্রামের বিভিন্ন যুবক-যুবতীদের নিয়ে এই মৌমাছি পালন করে চলেছে। এলাকার সাধারণ মানুষের এই কাজে উৎসাহ উদ্দীপনা বিশেষ লক্ষ্য করা গেছে। এদিনের এই অনুষ্ঠানে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতি ছিল যথেষ্ট চোখে পড়ার মত। বিএসএফের এই উদ্যোগে খুশি এলাকার সাধারণ মানুষ।

মৈনাক দেবনাথ

World Bee Day: জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এই পেশায় থাকতে চান ওঁরা, বংশপরম্পরায় চাকভাঙা যেন নেশা!

কোচবিহার: জীবন-জীবিকা নির্বাহ করতে গিয়ে বহু মানুষ বিভিন্ন ধরনের পেশায় নিযুক্ত হন। আবার অনেকে বিভিন্ন ধরনের পেশা খুঁজেও নেন। তবে আজকে যে মানুষগুলির কথা আপনাদের সামনে তুলে ধরব তাঁরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বংশ-পরম্পরায় এই বিশেষ কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছেন। দীর্ঘ সময় ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই কাজ করে সংসার প্রতিপালন করছেন। এদিকে ঝুঁকি থাকলেও এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে চান না।

বাণিজ্যিকভাবে আজকাল বহু জায়গায় মৌমাছির চাষ করা হয়। পাশাপাশি অতীতের মত প্রাকৃতিক উপায়েও বহু জায়গায় মৌমাছি নিজের চাক তৈরি করে। এই প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি মৌ চাক থেকে প্রাপ্ত মধুর গুনাগুন ও উপকারিতা অনেকটাই বেশি হয়। আর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই মৌচাক ভেঙেই বেশ কিছু মানুষ নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করেন।

আরও পড়ুন: বৃষ্টির অভাবে সঙ্কটে পাট চাষ, নবাবের জেলায় ভয়াবহ অবস্থা

মধু সংগ্রহকারী দুই ব্যক্তি পঙ্কজ ধামী ও সাগর ধামী জানান, বাপ-ঠাকুরদার সময় থেকে এভাবেই মধু সংগ্রহ করে আসছেন তাঁরা। এই কাজ করেই সংসার চলে। দীর্ঘ সময় ধরে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে মধু সংগ্রহ করে বিক্রি করেন তাঁরা। প্রাকৃতিকভাবে যে সমস্ত জায়গায় মৌমাছি চাক তৈরি হয় সেই জায়গাগুলি অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ, অনেকটাই উঁচু জায়গায় ও মানুষের নাগালের বাইরে এই চাকগুলি তৈরি করে মৌমাছি। তাই ঝুঁকি নিয়েই এই চাকগুলো থেকে মধু সংগ্রহ করতে হয়।

এছাড়া মৌমাছির কামড়ের ভয় ও আশঙ্কা তো আছেই। তবুও এই বিপদের মধ্যেই ওঁরা যেন বেঁচে থাকার আনন্দ খুঁজে পান। ক্রেতাদের মধ্যেও প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি মৌচাক ভাঙা মধুর অন্যরকম একটা চাহিদা আছে। চিকিৎসকরা ওই খাঁটি মধু খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সেই স্বাস্থ্যকর খাঁটি মধুর যোগান দেওয়াটাই যেন এই মানুষগুলো পেশার পাশাপাশি নেশা হয়ে উঠেছে।

সার্থক পণ্ডিত