Tag Archives: Buddhadeb Bhattacharya

Buddhadeb Bhattacharya Demise: ‘আমার বিয়েতে এসেছিলেন, আজ খুব মনে পড়ছে সেদিনটা…’, বুদ্ধবাবুর প্রয়াণে স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন ঋতুপর্ণা

কলকাতা: সাতসকালেই আবারও দুঃসংবাদ৷ প্রয়াত হলেন বামশাসনের দ্বিতীয় এবং শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ মৃত্যুকালে বুদ্ধদেবের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর৷ বৃহস্পতিবার সকালে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ৮.২০ নাগাদ প্রয়াত হন তিনি। বুদ্ধদেবের মৃত্যুর খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া পড়েছে রাজনৈতিক মহলে৷

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর মৃত্যুতে একাধিক স্বনামধন্য ব্যক্তিরা শোকপ্রকাশ করেছেন৷ টলিউড অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকপ্রকাশ করে বলেছেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা, একজন স্তম্ভ চলে গেল৷ অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন৷ একদিন হাসপাতালে দেখতেও গিয়েছিলাম৷ আজ খুবই মনে পড়ছে ওই দিনটা যেদিন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এসেছিলেন আমার বিয়েতে এবং আমাকে আশীর্বাদ করে গিয়েছিলেন৷ আসলে এই সব মানুষরা বিরল, তাঁদের ত্যাগ, মানসীকতা, শিক্ষা আমাদের সমাজকে সবসময়েই উর্বর করেছে৷ আমাদের অনেক বেশি আলোকিত করেছে৷ আজকে ওঁনার মতো একজন শিক্ষিত মানুষ আজ আমাদের মধ্যে থেকে চলে গেলেন ঠিকই কিন্তু যা উনি রেখে গেছেন, যা যা অবদান উনি করে গেছেন আমাদের সবার জন্য, সেটা আমাদের কাছে বিশাল প্রাপ্তি৷ একজন ডেডিকেটেড, কমিটেড সৈনিককে আমি স্যালুট জানাচ্ছি, যিনি বহু কিছুই তৈরি করে গেছেন সকলের জন্য৷ ওনাকে প্রণাম এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি৷ আমরা সবসময় ওনাকে মনে রাখব৷ সবকিছুর মধ্যেই উনি আমাদের অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন৷’

আরও পড়ুন: দু কামরার ফ্ল্যাট, অ্যাম্বাসাডর আর ধুতি- পাঞ্জাবি৷ বুদ্ধদেব বরাবরই ব্যতিক্রমী

গত ২৯ জুলাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। গত ৯ অগাস্ট হাসপাতাল থেকে ফিরেছিলেন বুদ্ধদেব। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। এরপর ফুসফুস এবং শ্বাসনালিতে মারাত্মক রকমের সংক্রমণও ধরা পড়ে তাঁর। ফের আচমকা আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। দীর্ঘ দিন ধরেই গুরুতর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা (সিওপিডি)-তে ভুগছিলেন। গতকাল রক্তপরীক্ষাও করা হয়, রিপোর্টে সেরকরম কিছু পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার সকালে স্যাচুরেশন খুব দ্রুত কমে যাওয়ায় মীরাদেবী তাঁর পারিবারিক চিকিৎসক সোমনাথ মাইতিকে জানান। অবশেষে আর শেষরক্ষা হল না, সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বুদ্ধবাবু৷

Buddhadeb Bhattacharjee Death: ‘হে বন্ধু, হে প্রিয়…’! ‘বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল‘ ধরা গলায় বারবার বললেন বিমান বসু

কলকাতাঃ শেষ নিশ্বাস ত‍্যাগ করলেন রাজ‍্যের প্রাক্তন মুখ‍্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বামশাসনের দ্বিতীয় এবং শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বৃহস্পতিবার সকালে বুদ্ধদেবের মৃত্যুর খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ৮.২০ নাগাদ তিনি প্রয়াত হন।

পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়েছেন বামফ্রন্টের রাজ‍্য সম্পাদক এবং বুদ্ধবাবুর যুদ্ধের আর এক কাণ্ডারী বিমান বসু। শোকস্তদ্ধ বিমান বসু বলেন, ‘খবর পেয়ে উঠে দাঁড়াতে পারছিলাম না৷ বিশ্বাস করতে অসুবিধা হচ্ছিল৷  তাই আসতে এত দেরি হল৷ ৯.৩০টায় খবর পেয়েছি, তার পর অনেকক্ষণ বসেছিলাম।’ ধরা গলায় তিনি বলেন, ‘ দীর্ঘদিন পার্টির কাজ করেছেন, মানুষের স্বার্থে কাজ করেছেন।’

আরও পড়ুনঃ দেহদান করাই ছিল, বুদ্ধবাবুর শেষ যাত্রা শুক্রবার! তার আগে দিনভর দেহ শায়িত থাকবে আলিমুদ্দিনে

বুদ্ধবাবুর দেহ সংরক্ষণ করা হবে আজকে। বামফ্রন্টের বহু নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা সারাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবে শেষবারের মত বুদ্ধবাবুকে দেখতে। আজ দেহ পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা হবে। কালকে সকাল ১০.৩০ থেকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থাকবে তাঁর মরদেহ। বিকেলে ৪.০০ শেষযাত্রা শুরু হবে। চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণার জন্য দেহ দান আগেই করেছিলেন তিনি। তবে, কোথায় দেহ দান করা হবে এখনও ঠিক হয়নি। কোথায় দেহ দান করা হবে তা ঠিক করতে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে৷

Mamata Banerjee on Buddadeb Bhattacharjee death: বুদ্ধদেবের প্রয়াণে আজ রাজ্য সরকারি ছুটি ঘোষণা মমতার, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায়

কলকাতা: রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে আজ রাজ্য সরকারি সমস্ত অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবে রাজ্য সরকার৷

আজ সকালেই পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ বেলা বারোটা নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়িতে পৌঁছন৷ আজই ঝাড়গ্রাম সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর৷

আরও পড়ুন: দু কামরার ফ্ল্যাট, অ্যাম্বাসাডর আর ধুতি- পাঞ্জাবি৷ বুদ্ধদেব বরাবরই ব্যতিক্রমী

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণের খবর পেয়েই এ দিন এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করে শোকপ্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আকস্মিক প্রয়াণে আমি মর্মাহত। বিগত কয়েক দশক ধরেই আমি তাঁকে চিনতাম এবং গত কয়েক বছরে তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন তখন আমি বেশ কয়েকবার তাঁকে বাড়িতে দেখতে গিয়েছি। এই মুহূর্তে আমি অত্যন্ত দু:খিত বোধ করছি। এই শোকের সময়ে মীরাদি এবং সুচেতনের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।”

মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর অসুস্থ বুদ্ধদেবকে দেখতে কখনও হাসপাতালে, এমন কি তাঁর পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটেও গিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি জানিয়েছেন, আগামিকাল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদাতেই শেষ শ্রদ্ধা জানাবে রাজ্য সরকার৷

Buddhadeb Bhattacharya Demise: ‘মীরাদি, সুচেতনের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা…’, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আকস্মিক প্রয়াণে মর্মাহত মমতা

কলকাতা: প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর প্রয়াণ নিঃসন্দেহে বাংলা তথা ভারতবর্ষের রাজনীতিতে এক বড় অঘটন। দীর্ঘদিন অসুস্থই ছিলেন বাম জমানার শেষ মুখ্যমন্ত্রী। ছিলেন পরিবার ও চিকিৎসকদের তত্ত্বাবধানে। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। ৮০ বছর বয়সে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ২০ মিনিটে পাম অ্যাভিনিউয়ের নিজের ফ্ল্যাটেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। গত কয়েকদিন ধরেই জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন বুদ্ধবাবু। এদিন সকাল থেকে শ্বাসকষ্ট বেড়েছিল। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আকস্মিক প্রয়াণে শোকাহত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্ট দিয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সহমর্মিতা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা তাঁর শোকবার্তায় লেখেন, “পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আকস্মিক প্রয়াণে আমি মর্মাহত। বিগত কয়েক দশক ধরেই আমি তাঁকে চিনতাম এবং গত কয়েক বছরে তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন তখন আমি বেশ কয়েকবার তাঁকে বাড়িতে দেখতে গিয়েছি। এই মুহূর্তে আমি অত্যন্ত দু:খিত বোধ করছি। এই শোকের সময়ে মীরাদি এবং সুচেতনের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।”

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পরিবারের পাশাপাশি সিপিআইএম দলের সকল সদস্য-সদস্যা, সমর্থক এবং তাঁর সমস্ত অনুগামীদের প্রতিও তাঁর শোকবার্তায় আন্তরিক সমবেদনা জানিয়েছেন মমতা।

Buddhadeb Bhattacharjee Death: দেহদান করাই ছিল, বুদ্ধবাবুর শেষ যাত্রা শুক্রবার! তার আগে দিনভর দেহ শায়িত থাকবে আলিমুদ্দিনে

কলকাতাঃ শেষ নিশ্বাস ত‍্যাগ করলেন রাজ‍্যের প্রাক্তন মুখ‍্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বামশাসনের দ্বিতীয় এবং শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বৃহস্পতিবার সকালে বুদ্ধদেবের মৃত্যুর খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ৮.২০ নাগাদ তিনি প্রয়াত হন।

খবর পেয়েই, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বাড়িতে উপস্থিত হন সিপিআইএমের রাজ‍্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তিনি বলেন, ‘আজ সকালে আমাদের প্রিয় নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য প্রয়াত হয়েছেন৷ দীর্ঘদিন ধরেই অসুস্থতার মধ্যে ছিলেন৷ চিকিৎসকরা দেখছিলেন৷ আজ সকালে অবস্থার অবনতি হয়, তার পরই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।’

তিনি জানান, ‘বৌদির সঙ্গে কথা হয়েছে। বুদ্ধবাবুর দেহ সংরক্ষণ করা হবে আজকে। আমাদের বহু নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা সারাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবে শেষবারের মত বুদ্ধবাবুকে দেখতে। আজ দেহ  পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা হবে। কালকে সকাল ১০.৩০ থেকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থাকবে তাঁর মরদেহ। বিকেলে ৪.০০ শেষযাত্রা শুরু হবে।’  তিনি আরও বলেন, ‘চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণার জন্য দেহ দান আগেই করেছিলেন তিনি। তাঁর শেষ ইচ্ছেপূরণ করা হবে। তবে, কোথায় দেহ দান করা হবে এখনও ঠিক হয়নি। কোথায় দেহ দান করা হবে তা ঠিক করতে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে৷’

Buddhadeb Bhattacharjee: দু কামরার ফ্ল্যাট, অ্যাম্বাসাডর আর ধুতি- পাঞ্জাবি৷ বুদ্ধদেব বরাবরই ব্যতিক্রমী

কলকাতা: দু কামরার ছোট্ট ফ্লাট৷ নিজে যে ঘরে থাকতেন, সেটি আরও ছোট৷ মেঝে ছিল স্যাঁতস্যাঁতে৷ চিকিৎসকরা পরামর্শ দিয়েছিলেন যে সিওপিডি-র সমস্যা থাকায় ওই স্যাঁতস্যাঁতে ঘর তাঁর জন্য ঠিক নয়৷

যদিও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য চিকিৎসকদের সেই পরামর্শ কানে তোলেননি৷ আজীবন পাম অ্যাভিনিউয়ের যে দু কামরার ফ্ল্যাটে কাটিয়েছেন, সেই ফ্ল্যাট ছেড়ে অন্যত্র যেতে রাজি হননি তিনি৷ শুধু শারীরিক সমস্যার ক্ষেত্রেই নয়, মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর নিরাপত্তার কথা ভেবেও পাম অ্যাভিনিউয়ের ওই ফ্ল্যাট ছাড়তে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল বুদ্ধদেবকে৷ তখনও রাজি হননি তিনি৷

আরও পড়ুন: বুদ্ধদেবের প্রয়াণে আজ রাজ্য সরকারি ছুটি ঘোষণা মমতার, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষ বিদায়

ধুতি-পাঞ্জাবি পরে রাজনীতি, সাদা অ্যাম্বাসাডর গাড়ি চড়ে যাতায়াত, সাধারণ জীবনযাপন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে যেন সমর্থক হয়ে গিয়েছিল৷ রাজনীতিতে বরাবরের সৌজন্য বজায় রাখা কম কথার, প্রচার বিমুখ মানুষটি আজীবন নিজের এই নীতি বজায় রেখেছেন৷ বর্তমান বঙ্গ রাজনীতিতে যা বিরল৷ বুদ্ধদেবের প্রয়াণে তাই একটা যুগের অবসান হল, একথা বলাই যায়৷

বর্তমান বাম নেতাদের অনেকের বিরুদ্ধেই ক্ষমতা আঁকড়ে রাখার অভিযোগ ওঠে৷ কিন্তু ২০১১-য় নিজের এবং দলের পরাজয়ের পর রাজনীতি থেকেই নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন বুদ্ধদেব৷ যাদবপুর থেকে পরাজিত হওয়ার পর আর নির্বাচনী লড়াইয়ে নামেননি তিনি৷ অভি যদিও দলের প্রয়োজনে সবসময় সাড়া দিয়েছেন৷ অসুস্থ শরীরে ব্রিগেড সমাবেশে এসে গাড়িতে বসে থেকেছেন৷ নির্বাচন হোক বা দলের সমাবেশ, নিজে সশরীরে উপস্থিত হতে না পারলেও লিখিত বিবৃতি দিয়েছেন৷ ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পার্ক সার্কাসে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির সঙ্গে একই সমাবেশে উপস্থিত হয়ে অনুজ কংগ্রেস নেতাকে সাদরে বরণ করে নিয়েছিলেন৷

মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে পরে কখনও বুদ্ধদেবের বিরুদ্ধে কোনও দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে পারেননি কেউ৷ ২০১১ সালে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরেও সৌজন্যের অভাব আসেনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে৷ রাজ ভবনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও হাজির হয়েছিলেন তিনি৷ বুদ্ধদেব তাই ছিলেন বরাবরের ব্যতিক্রমী৷

Buddhadeb Bhattacharjee: হাসপাতালে যেতে পছন্দ করতেন না, এবার আর সময়ই পাওয়া গেল না! বাড়িতেই চিরঘুমে বুদ্ধদেব

কলকাতা: দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন ফুসফুসের সংক্রমণে৷ পরিস্থিতি সামান্য হলে প্রত্যেকবারই তাঁকে দক্ষিণ কলকাতার নামী এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে দেওয়া হত৷ কিন্তু এবার আর সেই সময়টুকুও পাওয়া গেল না৷ বৃহস্পতিবার সকালে পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷

সূত্রের খবর, গত কয়েকদিন ধরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শরীর কিছুটা খারাপ ছিল৷ জ্বর সহ শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়৷ কিন্তু চিকিৎসকরা প্রাথমিক পরীক্ষার পর জানিয়েছিলেন, বাড়িতেই যা ব্যবস্থা আছে তা দিয়েই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে৷ গতকাল রাতেও তাঁকে পরীক্ষা করে চিকিৎসক জানিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে৷

আরও পড়ুন: বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জীবনাবসান… ৮০ বছর বয়সে প্রয়াত বাম জমানার শেষ মুখ্যমন্ত্রী

কিন্তু এ দিন ভোরের দিক থেকেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে, বাড়ে জ্বর৷ সকালে অবশ্য তিনি প্রাতঃরাশও করেন৷ এর পরেই পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে থাকে৷ বেড়ে যায় শ্বাসকষ্টের সমস্যা, কমতে থাকা শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা৷ দ্রুত পৌঁছন বুদ্ধবাবুকে দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসক৷ খবর পেয়ে দক্ষিণ কলকাতার হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরাও পৌঁছে যান পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে৷ চলে আসে ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্সও৷ কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আর পাওয়া যায়নি৷ শেষ পর্যন্ত এ দিন সকাল ৮.২০ নাগাদ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷

হাসপাতালে যাওয়া বরাবরই অপছন্দের ছিল বুদ্ধদেবের৷ জোর করে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও বেশিদিন সেখানে থাকতে চাইতেন না তিনি৷ ফলে পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটেই ছোটখাটো হাসপাতালের মতো ব্যবস্থা তৈরি করে ফেলা হয়েছিল প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর জন্য৷ ওই ছোট্ট ঘরই ছিল তাঁর জগৎ৷ সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন বুদ্ধদেব৷

Lok Sabha lection 2024: চেয়ারে বসে কথা বলছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, দিচ্ছেন ভোটের বার্তা, সিপিএমের অভিনব প্রচার

হুগলি: সিপিআইএমের ভোটের ময়দানে নতুন অস্ত্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। প্রযুক্তি ব্যবহারের দিক থেকে এক সময় বাম সমর্থিত দলগুলি নাকচ করলে ও বর্তমান সময়ে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারে সমস্ত রাজনৈতিক দলের থেকে এক ধাপ এগিয়ে বামেরা। এবার ভোটের ময়দানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স দিয়ে তারা নিয়ে এসেছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে।

বুদ্ধবাবু এখন শয্যাশায়ী , কিন্তু বাম সমর্থক বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের কাছে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এক বিশেষ আবেগ। সেই আবেগকেই এবার নিয়ে আসা হয়েছে ভোটের ময়দানে। অবিকল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মতো গলা! উচ্চারণ ভঙ্গি, কথা বলার ধরণ পুরোটাই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর মতো। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের গলায় শোনা যাচ্ছে ভোটের আগে সন্দেশখালি নির্বাচনী বন্ড সমস্ত কিছু নিয়ে বক্তব্য দিতে। দুই মিনিটের একটি ভিডিও বার্তা যেখানে একযোগে বুদ্ধবাবু আক্রমণ করছেন তৃণমূল ও বিজেপিকে। ভোটের ময়দানে অভিনব এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন অনেকই।

এই বিষয়ে শ্রীরামপুর লোকসভার বাম প্রার্থী দীপ্সিতা ধর তিনি বলেন , টেকনোলজি যতদিন মানুষের কাজে লাগবে ততদিন সেই টেকনোলজিকে সঙ্গে নিয়ে চলাই উচিত। তার উপরে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য তরুণ প্রজন্মের কাছে এক আবেগ। ভোটের ময়দানে বুদ্ধবাবু নিজে থাকলেও তিনিও হয়তো এই একই বার্তাই দিতেন। বর্তমান সময়ে রাজ্যর যা অবস্থা তাই ফুটে উঠেছে এআই বুদ্ধবাবুর গলার স্বরে।

রাহী হালদার