Tag Archives: Buddhadeb Bhattacharya

Buddhadeb Bhattacharjee Death: ‘বলিষ্ঠ নেতা’, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির

কলকাতা: প্রয়াত প্রাক্তন মুখ‍্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ থাকার পর বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টা ২০ মিনিটে পাম অ্যাভিনিউয়ের নিজের ফ্ল্যাটেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ। মৃত‍্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। তার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বৃহস্পতিবার দুপুরে এক্স হ‍্যান্ডেলে পোস্ট করে নরেন্দ্র মোদি লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ‍্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের প্রয়াণে শোকাহত। একজন বলিষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে উনি রাজ‍্যের সেবা করে গিয়েছেন। উনার পরিবার এবং পরিজনদের প্রতি আমার সমবেদনা। ওম শান্তি।’’

রাজ‍্যের প্রাক্তন মুখ‍্যমন্ত্রীর জীবনাবসানে শোকবার্তা প্রকাশ করেছেন একাধিক রাজনৈতিক ব‍্যক্তিত্ব। রাজ‍্যের মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায়, জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদাপ, দিলীপ ঘোষ-সহ একাধিক রাজনৈতিক ব‍্যক্তিত্ব। শোকপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান রাজ‍্যপাল সিভি আনন্দ বোসও।

মুখ‍্যমন্ত্রী মমতা বন্দ‍্যোপাধ‍্যায় এক্স হ‍্যান্ডেলে পোস্ট করে লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আকস্মিক প্রয়াণে আমি মর্মাহত। বিগত কয়েক দশক ধরেই আমি তাঁকে চিনতাম এবং গত কয়েক বছরে তিনি যখন অসুস্থ ছিলেন তখন আমি বেশ কয়েকবার তাঁকে বাড়িতে দেখতে গিয়েছি। এই মুহূর্তে আমি অত্যন্ত দু:খিত বোধ করছি। এই শোকের সময়ে মীরাদি এবং সুচেতনের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।”

জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে শোকবার্তায় লেখেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে তাঁর পরিবার এবং সহকর্মীদের গভীর সমবেদনা জানাই। পাঁচ দশকেরও দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি মানুষের সেবা করেছেন।’’

আরও পড়ুন:  বলুন তো কোন জিনিস বাগানে সবুজ, বাজারে কালো আর ‘বাড়িতে লাল’ হয়? রান্নাঘরেই আছে কিন্তু! ৯৯% লোকজনই ভুল উত্তর দিয়েছেন

প্রসঙ্গত, বিগত বেশকিছুদিন ধরেই অসু্স্থ ছিলেন বামশাসনের দ্বিতীয় এবং শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। গত ২৯ জুলাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। গত ৯ অগাস্ট হাসপাতাল থেকে ফিরেছিলেন বুদ্ধদেব। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। এরপর ফুসফুস এবং শ্বাসনালিতে মারাত্মক রকমের সংক্রমণও ধরা পড়ে তাঁর। ফের আচমকা আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। দীর্ঘ দিন ধরেই গুরুতর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা (সিওপিডি)-তে ভুগছিলেন। ক’দিন ধরে জ্বর ছিল। গতকাল রক্তপরীক্ষাও করা হয়, রিপোর্টে সেরকরম কিছু পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার সকালে স্যাচুরেশন খুব দ্রুত কমে যাওয়ায় মীরাদেবী তাঁর পারিবারিক চিকিৎসক সোমনাথ মাইতিকে জানান। সকাল ৮ টা ২০ মিনিটে শেষ নি:শ্বাস ত‍্যাগ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

Buddhadeb Bhattacharya Last Journey Schedule: চিরবিদায়…! শেষবারের মতো পাম অ্যাভিনিউ ছাড়লেন ধবধবে সাদা ধুতি-পাঞ্জাবির ‘বুদ্ধবাবু’, রইল শেষযাত্রার কর্মসূচি

কলকাতা: প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শোকস্তব্ধ বাংলা। দুপুর দুটো নাগাদ বালিগঞ্জের পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি থেকে শেষবারের মতো বের করে আনা হল রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রবীণ কমরেডকে। দু’কামরার ফ্ল্যাট থেকে তাঁর মরদেহ নিয়ে শকট পৌঁছয় পিস ওয়ার্ল্ডে। সেখানেই শায়িত থাকবেন কিংবদন্তি-সম প্রবীণ রাজনীতিবিদ।

বুদ্ধদেবের শকটের পিছন পিছন এদিনের যাত্রাপথে সঙ্গী ছিল সেই ২ নং সাদা অ্যাম্বাসাডর গাড়ি। লাল সেলাম কমরেড স্লোগান দিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো হয় পিস ওয়ার্ল্ডে। উপস্থিতি ছিলেন স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য ও একমাত্র সন্তান সুচেতন। আগামিকাল শুক্রবারই শেষবিদায় জানিয়ে কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আনুষ্ঠানিক শোকযাত্রা।

আরও পড়ুন: ‘মীরাদি, সুচেতনের প্রতি আমার আন্তরিক সমবেদনা…’, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের আকস্মিক প্রয়াণে মর্মাহত মমতা

বুদ্ধবাবুর দেহ সংরক্ষণ করা হবে আজ, বৃহস্পতিবার। বামফ্রন্টের বহু নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা সারাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবেন শেষবারের মত বুদ্ধবাবুকে দেখতে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচাৰ্যর দেহ রাখা থাকবে পিস ওয়ার্ল্ডে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের টিম মোতায়েন রয়েছে এখানে। চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণার জন্য দেহ দান আগেই করেছিলেন বুদ্ধবাবু। ইতিমধ‍্যেই, চিকিৎসকরা পৌঁছেছেন প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়ার প্রস্তুতিতে। চক্ষু দানের প্রক্রিয়া শেষ। কাল, শুক্রবার এনআরএস-এ দেহ দান করা হবে।

একনজরে রইল প্রয়াত কমরেড বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের শোকযাত্রার কর্মসূচী : শুক্রবার, ৯ আগস্ট, ২০২৪

১) পিস ওয়ার্ল্ড থেকে বিধানসভার উদ্দেশ্যে রওনা সকাল ১০.৩০।
২) বিধানসভা ভবন বেলা ১১-১১.৩০ মিনিট।
৩) মুজফফর আহমেদ ভবন, দুপুর ১২-৩.১৫ মিনিট।
৪) দীনেশ মজুমদার ভবন ৩.৩০-৩.৪৫ মিনিট।
৫) ৩.৪৫ মিনিট দীনেশ মজুমদার ভবন থেকে দেহদানের জন্য
নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের উদ্দেশ্যে শেষযাত্রা।
৬) দেহদান – বিকাল ৪টে ।

Buddhadeb Bhattacharjee Demise: WB06 0002-আর উঠবেন না বুদ্ধদেব, অন্তিম যাত্রাতেও শববাহী শকটের পিছনে চলল সেই সাদা অ্যাম্বাসাডর

কলকাতা: WB06 0002। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সাদা অ্যাম্বাসাডর গাড়ি। বৃহস্পতিবার সকাল ৮.২০ মিনিট থেকে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ হল এই গাড়িটির। আর কোনওদিন এই গাড়িতে উঠবেন না প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন শেষযাত্রাতেও শববাহী গাড়ির পিছন পিছন গেল সেই চেনা সাদা গাড়িটি।

নিজের গোটা রাজনৈতিক জীবন এবং মন্ত্রিত্বে থাকাকালীন সব সময় এই গাড়িতেই চড়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আর বোধহয় এই গাড়ির চাকা গড়াবে না কোনও দিন। সেই গাড়ির চালক সমর বিশ্বাসের মুখে কথা হারিয়েছে। মন থেকে যেন কিছু বলতেও চাইছেন না তিনি। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে, হাত জোর করে চলে যাচ্ছেন। বলছেন, গলা ধরে আসছে।

আরও পড়ুন: অসাধারণ এক পোর্টফোলিও হয়েও সারাজীবন সাধারণ থাকলেন বুদ্ধ-জায়া মীরা…

নিজেকে কিছুটা সামনে বুদ্ধবাবুর গাড়িচালক সমর বিশ্বাস বললেন, ‘বুদ্ধবাবু সকাল ১০:০১-এ বার হব বললে তখনই বেরোতেন। কোনও দিন অন্যথা হয়নি। অনেক স্মৃতি এখন আর বলব না।’ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের গাড়ির আরেক চালক ওসমানও এদিন পুরনো কথায় ডুবে রয়েছেন। একবার বুদ্ধদেববাবু রিজাইন করলে এই ওসমানও রিজাইন করেন৷ বলেছিলেন, ‘বুদ্ধবাবু না থাকলে, আমিও থাকব না’। জানান তাঁর ছেলে।

আরও পড়ুন: আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব হলে প্রথম কোন লক্ষণে বুঝবেন? বড় ক্ষতির আগে অবশ্য়ই জানুন

রাজনৈতিক জীবনে সমাবেশ থেকে যে কোনও অনুষ্ঠানে এই সাদা অ্যাম্বাসাডর নিয়েই যেতেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। শেষবার যখন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন সেই সময়ও তাঁর সঙ্গী ছিল সাদা অ্যাম্বাসাডর। বুদ্ধবাবু চলে গেলেন চিরকালের মতো। তবে তাঁর সঙ্গী থেকে গেল ‘অচল’ হয়ে।

অর্ণব হাজরা

Buddhadeb Bhattacharya Demise: কান্নায় বুজে এল গলা, স্মৃতিতে ভাসছে নন্দনের দিন, বুদ্ধদেবের প্রয়াণে শোকে পাথর রূপা গঙ্গোপাধ্যায়

কলকাতা: কোনওভাবেই আর শেষরক্ষা হল না৷ সাতসকালেই আবারও এক দুঃসংবাদ৷ প্রয়াত হলেন বামশাসনের দ্বিতীয় এবং শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷ বৃহস্পতিবার সকালে পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ৮.২০ নাগাদ প্রয়াত হন তিনি। বুদ্ধদেবের মৃত্যুর খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। মৃত্যুকালে বুদ্ধদেবের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর৷ তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া পড়েছে রাজনৈতিক থেকে বিনোদন জগতে৷

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর মৃত্যুতে একাধিক স্বনামধন্য ব্যক্তিরা শোকপ্রকাশ করেছেন৷ পাশাপাশি টলিউডের তারকা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরাও শোকে ভেঙে পড়েছেন৷ অভিনেত্রী-রাজনীতিবিদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ বলেছেন৷ কথা বলার অবস্থায় নেই রূপা, কান্নায় গলা বুজে এসেছে অভিনেত্রীর৷ উনি অনেকদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন, অনেকদিন ধরেই দেখা করার ইচ্ছে ছিল, কিন্তু তা আর হয়নি৷ উনি আমাদের কাজে খুব সাহায্য করতেন৷ নন্দনে যখন কাজ করতাম, তখন মাঝেমধ্যে দেখা হতো, কাজেরও প্রশংসা করতেন৷ ওনার আত্মার শান্তি কামনা করেছেন৷

আরও পড়ুন:  দু কামরার ফ্ল্যাট, অ্যাম্বাসাডর আর ধুতি- পাঞ্জাবি৷ বুদ্ধদেব বরাবরই ব্যতিক্রমী

অভিনেতা-পরিচালক অরিন্দম শীলের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে অত্যন্ত সুসম্পর্ক ছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করে অরিন্দম শীল বলেছেন, আমার প্রচন্ড মন খারাপ হচ্ছে বুদ্ধদার প্রয়াণের খবরটা পেয়ে৷ দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেনও৷ বুদ্ধদা অসম্ভব একজন ভাল মানুষ ছিলেন৷ এবং অত্যন্ত সৌজন্যবোধ ছিলেন৷ বহুদিন আগে আমার একটা লেখা ছিল- ‘দ্য শেষ ভদ্রলোক বাঙালি বাবু’- তিনি একদম সেটাই৷ এরকম সংস্কৃতিপূর্ণ, সৌহাদ্যপূর্ণ, এত সুন্দর একটা মানুষ তিনি যা বলে শেষ করা যাবে না৷ অনেক স্মৃতি ভেসে আসছে৷ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সময়, ওনার সঙ্গে চায়ের আড্ডা, মৃণাল সেন, রূপো গঙ্গোপাধ্যায়, বুদ্ধ দা আমরা সবাই গল্প করছি, বুদ্ধদার কবিতা পড়ে শোনানো,টেকনিশিয়ান স্টুডিওতে এসে মুড়ি তেলেভাজা খাওয়া৷ এগুলো খুব মনে পড়ছে৷ বুদ্ধদার চলে যাওয়া মানে একটা জমানা চলে যাওয়া৷ এই মানুষগুলো আর ফিরে আসবে না৷ এবং পশ্চিমবঙ্গের জন্য ওনার অবদান অনস্বীকার্য৷

আরও পড়ুন:  ‘আমার বিয়েতে এসেছিলেন, আজ খুব মনে পড়ছে সেদিনটা…’, বুদ্ধবাবুর প্রয়াণে স্মৃতি হাতড়াচ্ছেন ঋতুপর্ণা

পরিচালক রাজ চক্রবর্তী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর প্রয়াণে গভীরভাবে শোকাহত৷ সোশ্যাল মিডিয়ায় শোকজ্ঞাপণ করে লিখেছেন- ‘আজ একটি দুঃখের দিন; শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য স্যারের মৃত্যু সত্যিই হতাশাজনক। তার আত্মার শান্তি কামনা করি’।

গত ২৯ জুলাই আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করানো হয়েছিল দক্ষিণ কলকাতার আলিপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে। গত ৯ অগাস্ট হাসপাতাল থেকে ফিরেছিলেন বুদ্ধদেব। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। এরপর ফুসফুস এবং শ্বাসনালিতে মারাত্মক রকমের সংক্রমণও ধরা পড়ে তাঁর। ফের আচমকা আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। দীর্ঘ দিন ধরেই গুরুতর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা (সিওপিডি)-তে ভুগছিলেন। গতকাল রক্তপরীক্ষাও করা হয়, রিপোর্টে সেরকরম কিছু পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার সকালে স্যাচুরেশন খুব দ্রুত কমে যাওয়ায় মীরাদেবী তাঁর পারিবারিক চিকিৎসক সোমনাথ মাইতিকে জানান। অবশেষে আর শেষরক্ষা হল না, সকলকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন বুদ্ধবাবু৷

Buddhadeb Bhattacharya Meera Bhattacharya: অসাধারণ এক পোর্টফোলিও হয়েও সারাজীবন সাধারণ থাকলেন বুদ্ধ-জায়া মীরা…

কলকাতা: ৫৯এ, পাম অ্যাভিনিউ-এর ছোট্ট ফ্ল্যাট, বিলাস থেকে শতহস্তে দূরে থাকা মীরা ভট্টাচার্য। রূপান্তরকামী এক সন্তানের মা, যিনি আবার রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী। অর্থাৎ, অসাধারণ এক পোর্টফোলিও হয়েও সারাজীবন সাধারণ হয়ে থাকাতেই বিশ্বাসী বুদ্ধ-জায়া। মুখ্যমন্ত্রী স্বামীর সঙ্গে বরাবরই এক অনাড়ম্বর জীবন কাটালেন মীরা ভট্টাচার্য। ৮ অগাস্ট ২০২৪, সকাল ৮.২০-তে জীবনাবসান হয় বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের। পরিবারে রইলেন স্ত্রী মীরা ও সন্তান সুচেতন।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কথা ঘুরেফিরে এলেই, একজন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সাদামাটা জীবনযাপনের কথাই এসেছে। পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটের বাইরে এখনও সেই পুরনো লেটার বক্স। প্রাক্তন হয়ে গেলেও, লেটার বক্সের উপর আজও সাঁটানো আছে সেই পুরনো কাগজ। যেটা মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন লাগানো হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় থেকে প্রাক্তন হওয়ার পরেও ওই দু’কামরার ফ্ল্যাটেই শেষদিন পর্যন্ত রইলেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও তাঁর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য। পরিবার সূত্রে খবর, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুও তাঁকে এই ছোট্ট ফ্ল্যাট ছেড়ে অন্যত্র যেতে বলেছিলেন। কিন্তু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এখান থেকে যেতে চাননি। মীরা ভট্টাচার্য বলেন, “কোনও দিন চেঞ্জ করার কথা মনে হয়নি। উনি চেঞ্জ করতে চাননি।’’

আরও পড়ুন: বলুন তো কোন ফলের বীজ পেটে চলে গেলে আপনি মরেও যেতে পারেন? অবশ্যই জেনে রাখুন

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ইচ্ছে থাকলেও শরীর সায় না দেওয়ায় ভোট দিতে যাননি বুদ্ধদেব। পাঠভবন স্কুলে গিয়ে ভোট দেন স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য ও সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। ভোট দিয়ে বেরিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী জানিয়েছিলেন, ভোট দেওয়ার মতো শারীরিক অবস্থায় নেই বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। আজই প্রথম আমরা বাড়ির বাইরে বেরলাম। ‘এতদিন একসঙ্গে ভোট দিতাম, এবার মন খারাপ’, বলেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন: দু কামরার ফ্ল্যাট, অ্যাম্বাসাডর আর ধুতি- পাঞ্জাবি৷ বুদ্ধদেব বরাবরই ব্যতিক্রমী

বরাবরই নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে ব্যক্তিগত করে রাখতেই পছন্দ করেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ইন্টারনেটে প্রচুর খোঁজাখুঁজি করেও তাঁদের বিয়ের দিন বা কীভাবে বিয়ে হয় তা জানতে পারা যায় না। তবে বিভিন্ন সময় মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পাশে দেখা গিয়েছে তাঁকে। ভোট দেওয়া এবং বিশেষ করে অসুস্থতার সময় সব সময়ই পাশে থেকেছেন মীরা ভট্টাচার্য। ঘরের দেওয়াল জুড়ে কাল মার্কস, লেনিন, রবীন্দ্রনাথ, কাকা সুকান্ত ভট্টাচার্যর ছবি। সঙ্গে রয়েছে সারি সারি বই। আগে ছোট চৌকিতে ঘুমোতেন বুদ্ধদেব, সেটা বদল করে চিকিৎসার স্বার্থে আনা হয়েছিল খাট। আলমারি ভর্তি বই, পড়াশোনা নিয়েই থাকতে ভালবাসতেন বুদ্ধদেব। তবে শেষ দিনগুলিতে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হওয়ায়, কেউ পড়ে দিলে উনি শুনতেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য জানিয়েছিলেন, “ওঁকে শোনাতে হয়, দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়েছে।’’

আরও পড়ুন: আপনার শরীরে ভিটামিন ডি-র অভাব হলে প্রথম কোন লক্ষণে বুঝবেন? বড় ক্ষতির আগে অবশ্য়ই জানুন

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের সময়ও শারীরিক অসুস্থতার কারণে ভোট দিতে যাননি তিনি। অসুস্থতার কারণে ব্রিগেড সমাবেশেও আসেননি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। বরং সমাবেশের আগের দিন একটি লিখিত বার্তা পাঠিয়েছিলেন বামপন্থী জনতার উদ্দেশে। পরে একটি অডিও বার্তা দিয়েছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ভাবে অসুস্থ বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বালিগঞ্জের পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়ি থেকে কার্যত কোথাও বেরোননি তিনি। আর তাঁর ছায়সঙ্গী হয়েই শেষদিন পর্যন্ত থেকে গেলেন স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য।

Buddhadeb Bhattacharjee Death: ‘অন্তরগ্লানি সংসারভার পলক ফেলিতে কোথা একাকার’- সংসার থেকে বুদ্ধের মুক্তি, তবু বামপন্থার ধ্বজা তাঁরই হাতে…

কলকাতাঃ পাম এভিনিউয়ের সাদামাটা, দু-কামরার প্রিয় ঘরই শেষ বাসস্থান হল রাজ‍্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের৷ সংস্কৃতিমনস্ক, সুবক্তা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের যেদিন থেকে অসু্স্থ সেদিন থেকেই প্রর্থনার ঢল ওঠেছিল সোশ‍্যাল মিডিয়া জুড়ে। তবে, বইয়ে আবিষ্ট দু-কামরার ঘরে শেষ নিশ্বাস ত‍্যাগ করলেন বুদ্ধবাবু।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের জন্ম উত্তর কলকাতা ১ মার্চ ১৯৪৪। তাঁর পিতা নেপাল চন্দ্র ভট্টাচার্য। ১৯৬১ সালে বুদ্ধদেব কলকাতার শৈলেন্দ্র সরকার বিদ্যালয় থেকে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হন। এরপর ভর্তি হন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজে (অধুনা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়)। ১৯৬৪ সালে প্রেসিডেন্সি থেকে বাংলা নিয়ে স্নাতক হন বুদ্ধদেব। স্কুল ও কলেজ জীবনে এনসিসি-র ক্যাডেট ছিলেন তিনি। পরর্বতী সময়, একটি সরকারি স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। আর কলেজ জীবনেই ছাত্র রাজনীতির সূত্রে সিপিআই(এম)-এ যোগ দেন তিনি।

কাকা সুকান্ত ভট্টাচার্যের থেকে পারিবারিক সূত্রে পাওয়া বামপন্থী ভাবনা থেকেই রাজনীতিতে যোগদান করেন তিনি। বই ছিল তাঁর জীবনের শ্রেষ্ঠ দোসর। কাকা সুকান্ত ভট্টাচার্যের রেখে যাওয়া বই পড়েই বামপন্থা নিয়ে প্রবল আগ্রহ তৈরি হয় তাঁর। আর সেই থেকেই শুরু ‘সর্বহারা’ দলের প্রতিনিধিত্ব করা।

প্রথমে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও সিপিআই(এম)-এর পলিটব্যুরো সদস্যও হন। তারপর, ১৯৭৭-এ প্রথম বামফ্রন্ট সরকার প্রতিষ্ঠার সময়ই পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মন্ত্রিসভায় তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্ব গ্রহণ করেন বুদ্ধদেব। নভেম্বর ৬, ২০০০ সাল, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে প্রথম বারের জন্য বসেন তিনি। তবে, তা ছিল জ্যোতি বসুর অসুস্থতার কারণে বসা। কিন্তু ২০০১-এর ১৮ মে ত্রয়োদশ পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

রাজনীতির সঙ্গে সঙ্গে পারিবারিক জীবন নিয়েও খুবই সচেতন ছিলেন তিনি। কয়েক দশক ধরে উত্তর কলকাতার পাম এভিনিউতে স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য ও মেয়ে সুচেতনা ভট্টাচার্যকে নিয়ে থাকতেন। সম্প্রতি, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং মীরা ভট্টাচার্যের একমাত্র সন্তান ‘সুচেতন’ ভট্টাচার্য’ হয়েছেন। তিনি তাঁর লিঙ্গ রূপান্তরিত করেছেন। তিনি, ঘর বেঁধেছেন তাঁর সঙ্গী সুচন্দার সঙ্গে। সুচেতন ভাট্টাচার্য একটি ইন্টারভিউ-তে বলেন যে, শারীরিক লিঙ্গ পরিচয় যাইহোক না কেন, ছোটবেলা থেকেই নিজেকে ছেলে মনে করা সুচেতন। ছোটবেলা থেকে পেয়েছে পারিবারিক প্রেরণা। তাঁর বাবাই তাঁকে ছোটবেলায় গালে সাবান লাগিয়ে দাড়ি-গোঁফ কামিয়ে দিতেন।

২০১১ সালে মণীশ গুপ্তের কাছে পরাজয়ের পর, মিডিয়া, মানুষ পার্টি থেকে বহু দূরে চলে গেলেও তাঁর বিশ্বাষ ছিল বামপন্থার কোনও বিকল্প হয় না। তাঁর স্বপ্ন, তাঁর মূল‍্যবোধ বাঁচিয়ে রেখেছিল একটা গোটা যুব সমাজকে। নিজের সন্তানের জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত সমর্থন করে তিনি প্রমাণ করেন তাঁর প্রগতিশীল চেতনার। মুখ‍্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য-কে নিয়ে সমালোচনা হয়েছে বারবার তবে, মানুষ বুদ্ধদেব কতটা খাঁটি তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার অবকাশ পায়নি কেউ।

কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া লোকসভা ভোটের সময়ও বারবার সোশ‍্যাল মিডিয়া জুড়ে একটাই আকুতি ছিল বামমনস্ক মানুষদের, দলের একটি মুখ প্রয়োজন। কারণ বাম থেকে ডানের বিশ্বাস বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বিকল্প মুখ তৈরি করতে অক্ষম বামেরা। সেই, শূন‍্যস্থান আজ স্থায়ী, সব দায়িত্ব থেকে মুক্তি নিলেন তিনি। হঠাৎ, দূরে থেকে ভেসে আসছে ‘অন্তরগ্লানি সংসারভার পলক ফেলিতে কোথা একাকার’।

বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বাধ্য হয়ে ক্রিকেট ছেড়েছিলেন, ছিল একটা বড় কারণ, মন খারাপ করা

কলকাতা: পরিচ্ছন্ন প্রশাসনের স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। সেই স্বপ্ন কতটা সার্থক করতে পেরেছিলেন, তার মূল্যায়ণ আর আজ জরুরি বিষয় নয়। তবে তিনি ছিলেন, অভিভাবক হয়ে, এটাই ছিল সব থেকে বড় স্বস্তি। আজ তিনি নেই, অভিভাবকহীন বাম রাজনীতি। এটাই এখন সব থেকে বড় সত্যি।

সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভ্রাতুষ্পুত্র তিনি। কিন্তু গোড়া থেকে ছাত্র রাজনীতির মূলস্রোতে ততটা সম্পৃক্ত ছিলেন না। একটা সময় চুটিয়ে কবাডি খেলতেন। খেলতেন ক্রিকেটও।

আরও পডুন- স্পোর্টস আর্বিট্রেশন কোর্টে ভিনেশ ফোগট, রুপো আসবে শেষ অবধি? ভাগ্য নির্ধারণ আজই

চোখের সমস্যার জন্য তাঁকে ক্রিকেট খেলা ছাড়তে হয় তাঁকে। সময়-সুযোগ পেলে ক্রিকেট নিয়ে মেতে থাকতেন। খোঁজ-খবর রাখতেন ক্রিকেটের বিভিন্ন টুকিটাকির। কিন্তু পরে সময়ের অভাবে ও রাজনীতিতে অতি সক্রিয়তার কারণে সেই খোঁজ নেওয়া কমে গিয়েছিল।

ক্রিকেট নিয়ে রোম্যান্টিসিজম তাঁকে ছেড়ে যায়নি কখনও। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর সখ্যতার অন্যতম কারণ হয়েছিল ক্রিকেট। বলাই যেত- ক্রিকেট রোম্যান্টিক বুদ্ধদেব।

আর যে বুদ্ধদেব বঙ্গ ক্রিকেটকে ‘অশুভ শক্তি’র হাত থেকে মুক্ত করতে চেয়ে কার্যত প্রকাশ্যেই সিএবি-র নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে পড়েছিলেন প্রয়াত জগমোহন ডালমিয়ার সঙ্গে। তিনি ক্রিকেটের আঙিনাতেও  পরিচ্ছন্ন প্রশাসন গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন।

আরও পড়ুন- ‘মা, কুস্তি জিতে গেল, আমি হেরে গেলাম’-অবসর নিয়ে নিলেন ভিনেশ ফোগট,আর যা লিখলেন

বৃহস্পতিবার সকালে প্রয়াত হয়েছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। দীর্ঘদিনের রোগভোগে কষ্ট পাচ্ছিলেন। শ্বাসকষ্টের সমস্যা তাঁকে বহুদিন ধরে কষ্ট দিচ্ছিল। একাধিকবার হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছিলেন।

১৯৪৪ সালে উত্তর কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ১৯৬৪ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষায় স্নাতক হন।

কলেজ জীবনে সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য হয়েছিলেন। এর পর সিপিআই(এম) কেন্দ্রীয় কমিটি ও সিপিআই(এম)-এর পলিটব্যুরোর সদস্য হন।

 ১৯৭৭ থেকে ১৯৮২, বাম সরকারের তথ্য ও জনসংযোগ বিভাগের দায়িত্ব নেন। ১৯৯৯ সালে উপমুখ্যমন্ত্রী। ২০০০ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ থেকে ২০০৬ এবং ২০০৬ থেকে ২০১১, পর পর দুবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন প্রয়াত বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।

Buddhadeb Bhattacharjee Death: শেষ চক্ষুদানের প্রক্রিয়া! আজ দেহ পিস ওয়ার্ল্ডয়ে, শুক্রতে NRS-এ বুদ্ধদেবের দেহদান

কলকাতাঃ শেষ নিশ্বাস ত‍্যাগ করলেন রাজ‍্যের প্রাক্তন মুখ‍্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বামশাসনের দ্বিতীয় এবং শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বৃহস্পতিবার সকালে বুদ্ধদেবের মৃত্যুর খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ৮.২০ নাগাদ তিনি প্রয়াত হন।

বুদ্ধবাবুর দেহ সংরক্ষণ করা হবে আজকে। বামফ্রন্টের বহু নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা সারাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবে শেষবারের মত বুদ্ধবাবুকে দেখতে। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচাৰ্য দেহ আনা হবে পিস ওয়ার্ল্ডয়ে। ইতিমধ্যেই কলকাতা পুলিশের টিম মোতায়েন পিস ওয়ার্ল্ডয়ে। আজ, দেহ যেখানে রাখা হবে সেখানে সব রকম ভাবে প্রস্তুতি চলছে।  চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণার জন্য দেহ দান আগেই করেছিলেন তিনি। ইতিমধ‍্যেই, চিকিৎসকরা এসেছেন। চক্ষু দানের প্রক্রিয়া শেষ। কাল, শুক্রবার এনআরএস-এ দেহ দান করা হবে।

আরও পড়ুনঃ ‘হে বন্ধু, হে প্রিয়…’! ‘বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল‘ ধরা গলায় বারবার বললেন বিমান বসু

চিকিৎসক সপ্তর্ষি বসু বলেন, ‘ওনাকে কাছ থেকে দেখার, চিকিৎসার সুযোগ হয়েছিল৷ একেবারেই অন্যধরনের মানুষ ছিলেন৷ বার বার সিওপিডি-র সমস্যা হত৷ উনি ফাইটার ছিলেন৷ আগে অনেক বার সুস্থ হয়ে ফিরে এসেছেন৷ এবার আর আমাদের সেই সুযোগ দিলেন না৷’

Buddhadeb Bhattacharjee Death: ‘প্রয়োজনে বকাও দিয়েছেন…’! প্রিয় বুদ্ধমামার স্মৃতিচারণায় শ‍্যামল-কন্যা উষসী

কলকাতাঃ শেষ নিশ্বাস ত‍্যাগ করলেন রাজ‍্যের প্রাক্তন মুখ‍্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বামশাসনের দ্বিতীয় এবং শেষ মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বৃহস্পতিবার সকালে বুদ্ধদেবের মৃত্যুর খবর জানান তাঁর সন্তান সুচেতন ভট্টাচার্য। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে ৮.২০ নাগাদ তিনি প্রয়াত হন।

বুদ্ধদেবের বাড়িতে গিয়ে, সিপিআইএম নেতা শ‍্যামল চক্রবর্তীর কন‍্যা ঊষসী চক্রবর্তী জানান,  ‘আমার মা ছিল না বলে সবার কাছেই ছোট থেকে প্রশ্রয় পেয়েছি৷ ভাল, খারাপ সময়ে পাশে থেকেছেন৷ প্রয়োজনে মৃদু বকাও দিয়েছেন৷ ভাল কিছু অ্যাচিভ করলে ফোনে প্রশংসা করেছেন৷ সৎ রাজনীতির যে ট্র্যাডিশন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এবং তাঁর সঙ্গীরা চালু করেছিলেন, সেই ধারা যেন মুছে দেওয়ার চেষ্টা না হয়৷ আমার কাছে বুদ্ধমামা হয়ে তিনি আজীবন থাকবেন।’

আরও পড়ুনঃ ‘হে বন্ধু, হে প্রিয়…’! ‘বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছিল‘ ধরা গলায় বারবার বললেন বিমান বসু

বুদ্ধবাবুর দেহ সংরক্ষণ করা হবে আজকে। বামফ্রন্টের বহু নেতা, কর্মী, সমর্থকেরা সারাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আসবে শেষবারের মত বুদ্ধবাবুকে দেখতে। আজ দেহ পিস ওয়ার্ল্ডে রাখা হবে। কালকে সকাল ১০.৩০ থেকে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থাকবে তাঁর মরদেহ। বিকেলে ৪.০০ শেষযাত্রা শুরু হবে। চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণার জন্য দেহ দান আগেই করেছিলেন তিনি। তবে, কোথায় দেহ দান করা হবে এখনও ঠিক হয়নি। কোথায় দেহ দান করা হবে তা ঠিক করতে স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে৷

প্রাতঃরাশের পরই আচমকা শরীরের অবনতি, চিরঘুমে বুদ্ধদেব! দেখুন ভিডিও

এ দিন ভোরের দিক থেকেই প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে, বাড়ে জ্বর৷ সকালে অবশ্য তিনি প্রাতঃরাশও করেন৷ এর পরেই পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে থাকে৷ বেড়ে যায় শ্বাসকষ্টের সমস্যা, কমতে থাকা শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা৷ দ্রুত পৌঁছন বুদ্ধবাবুকে দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা এক চিকিৎসক৷ খবর পেয়ে দক্ষিণ কলকাতার হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকরাও পৌঁছে যান পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটে৷ চলে আসে ক্রিটিক্যাল কেয়ার অ্যাম্বুল্যান্সও৷ কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ আর পাওয়া যায়নি৷ শেষ পর্যন্ত এ দিন সকাল ৮.২০ নাগাদ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য পাম অ্যাভিনিউয়ের ফ্ল্যাটেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য৷