Tag Archives: Centre

Kavach Centre: ‘কবচ’ রক্ষা করবে সুন্দরবনের শিশুদের! কীভাবে জানেন?

দক্ষিণ ২৪পরগনা: বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ২ লাখ ৩৫ হাজার মানুষের জলে ডুবে মৃত্যু হয়। এদিকে পৃথিবীতে জলে ডুবে মৃত্যুর ১৭ শতাংশ ঘটনাই শুধুমাত্র ভারতবর্ষে ঘটে। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে প্রবণতাটা আরও বেশি। সুন্দরবনের মত পুকুর এবং নদী-নালা ঘেরা অঞ্চলে এই মৃত্যুর সংখ্যাটা অনেকটা বেড়ে যায়।

সুন্দরবনকে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবার মত অজস্র জলাশয় জালের মত ঘিরে রেখেছে। এখানে গড়ে প্রতিদিন প্রায় তিনটি করে শিশুর জলে ডুবে মৃত্যু হয়। ভবিষ্যতের এই অমূল্য প্রাণ তলিয়ে যাচ্ছে অতল জলের গভীরে, যার জন্য দায়ী অসচেতনতা এবং সদিচ্ছার অভাব। ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতবর্ষের স্বাস্থ্য মন্ত্রক জলে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধ করার বিভিন্ন ব্যবস্থাপনার কথা ঘোষণা করেছিল। সুন্দরবনের বিভিন্ন পিছিয়ে থাকা ব্লকগুলি যেমন পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, মথুরাপুর, জয়নগর-২, কুলতলির মত ব্লকে স্বাস্থ্য মন্ত্রক নির্ধারিত বেশ কিছু কর্মসূচিকে বাস্তবায়নের দায়ভার নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সর্ববৃহৎ এনজিও সিনি। যার অন্যতম লক্ষ্য হল, শিশু জলে ডুবে গেলে কীভাবে তাকে দ্রুত উদ্ধার করতে হবে এবং স্বাস্থ্য কেন্দ্রের পৌঁছনোর আগে কী ধরনের প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে।

আর‌ও পড়ুন: হিউয়েন সাং, মেগাস্থিনিস’র মত পরিব্রাজক হতে চান তারকেশ্বরের যুবক, সাইকেলে পাড়ি বাংলাদেশ

সুন্দরবনের কুলতলি ব্লকের গুড়গুড়িয়া ভুবনেশ্বরী এবং মৈপিঠ বৈকুণ্ঠপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলকার সর্ববৃহৎ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সিনির পরিচালিত দুটি কবচ সেন্টার- দ্য জর্জ ইনস্টিটিউট অফ গ্লোবাল হেলথ ইউকে থেকে মার্গি প্যাডেন, অস্ট্রেলিয়া থেকে জুগনুর জুগনুর পরিদর্শন করেন। সিনি’র তরফ থেকে ড্রাউনিং প্রোগ্রামের ইনচার্জ ও ন্যাশানাল অ্যাডভোকেসি অফিসার সুজয় রায় ও অন্যান্য এই প্রোগ্রামের সঙ্গে যুক্ত কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। জলে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে ছ’মাস থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত শিশুদের সুরক্ষিত রাখার জন্য পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতে প্রথম এই উদ্যোগ।

সারাদিন কাজের ব্যস্ততার সময় বহু শিশু বাড়ির পাশের পুকুরে পড়ে গিয়ে অকালে প্রাণ হারায়। এই অকালে শিশুদের প্রাণ যাতে না হারায় সেই উদ্যোগে এই দুটি কবচ সেন্টার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আগামী দিনে সারা সুন্দরবন জুড়ে এমনই কবচ সেন্টার নির্মিত হবে। এই কবচ সেন্টারগুলো বর্তমানে ২০ টি করে শিশুর দায়িত্ব নিয়েছে। পরিবারের ব্যস্ততার সময় শিশুরা এই সেন্টারগুলোতে সুরক্ষিত থাকার পাশাপাশি খেলাধুলার মাধ্যমে প্রাক শিক্ষা, পুষ্টি পরিষেবা ও স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাচ্ছে। এই কবচ সেন্টারগুলি বাচ্চাদের খুব ভালভাবে দেখাশোনা করে। কুলতলির বিডিও সুচন্দন বৈদ্য এবং একাধিক বিদেশীরা এসে সেন্টারের কবচ মা ও শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন। শিশুরা বিভিন্ন আর্লি চাইল্ডহুড ডেভেলপমেন্ট স্কিলগুলি তাদের সামনে প্রদর্শন করে।

আর‌ও পড়ুন: অজ গ্রামের স্কুলে এলে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকবেন

যে সমস্ত বাড়িতে শিশু আছে তারা যাতে জল পড়ে না যায় তার জন্য বিভিন্ন বাড়িতে পরীক্ষামূলকভাবে বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তাও পরিদর্শন করেন। তারপর পরিদর্শকরা কুলতলি ব্লকের জাল দিয়ে ঘিরে রাখা পুকুর পরিদর্শন করেন এবং গত ছয় মাসে জলে ডুবে শিশু মৃত্যুর ঘটনা না ঘটায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। পরিদর্শনের শেষে পরিদর্শকরা কুলতলি বিডিও অফিসে সিভিল ডিফেন্স ভলেন্টিয়ারদের ‘জলে ডুবে যাওয়ার প্রতিরোধে প্রাথমিক উদ্ধার ও সিপিআর প্রদানের বিষয় প্রশিক্ষণ’ পরিদর্শন করেন এবং ট্রেনিংয়ে অংশগ্রহণ করা সিভিল ডিফেন্স কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।

সিনির পক্ষ থেকে ড্রাউনিং প্রোগ্রামের ইনচার্জ ও ন্যাশানাল অ্যাডভোকেসি অফিসার সুজয় রায় জানান, এই উদ্যোগ শিশু মৃত্যু কমিয়ে আনবে এবং সম্পূর্ণ ভারতে এই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার বিষয় তিনি আশাবাদী বলে জানান।

সুমন সাহা

ICDS Centre: অঙ্গন‌ওয়াড়ি কেন্দ্র না পার্টি অফিস? খোলা আকাশের নিচেই শিশুদের রান্না

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: খোলা আকাশের নিচে রান্না হচ্ছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। ১৭৫ জন শিশু ও গর্ভবতী মহিলার খাবার প্রতিদিন এভাবেই অস্বাস্থ্যকর উপায়ে রান্না করা হয়। ঘটনাটি বারুইপুরের। এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটির বেহাল দশার কথা জানাজানি হতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।।

রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময় দেখা গিয়েছে আইসিডিএস সেন্টারগুলির বেহাল দশার ছবি। কখনও খাবারের মধ্যে কোন‌ও বিষাক্ত জিনিস পড়ে আছে, আবার কখনও কখনও খারাপ খাবার দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন সময় গন্ডগোলের ছবি উঠে আসে। আর এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের মল্লিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ফরিদপুর আইসিডিএস সেন্টারের বেহাল ছবি ধরা পরল। এখানে ঢোকার সময় মনে হতেই পারে এটা শাসক দলের দলীয় কার্যালয় বুঝি!

আর‌ও পড়ুন: ভারতীয় ভূখণ্ডে পরাধীনের মত বসবাস! তবু ভোট দেয় গদাইচর

আইসিডিএস সেন্টারের নামের পাশেই জ্বলজ্বল করছে শাসক দলের প্রতীক চিহ্ন। ভিতরে দুটি ঘর রয়েছে। ঘরের মধ্যে পাখা থাকলেও নেই কোন‌ও আলোর ব্যবস্থা। তাই ঘরের ভিতরটা প্রায় অন্ধকার বললেই চলে। তারপর আসা যাক আইসিডিএস সেন্টারের রান্নাঘরে। রান্নাঘরে উনুন আছে, কিন্তু নেই মাথার ছাদ। খোলা আকাশের নিচেই রান্না করতে হয় এখানকার কর্মীদের। ফলে যে কোন‌ও মুহূর্তেই রান্না হওয়ার সময় খাবারের মধ্যে বিষাক্ত কিছু পড়ার সম্ভাবনা আছে।

দীর্ঘ ৬ মাস ধরে এভাবেই খোলা আকাশের নিচে রান্না হচ্ছে। বিষয়টি পঞ্চায়েতকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। লোকসভা ভোটের মুখে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এমন বেহাল ও বিপজ্জনক অবস্থা নিয়ে স্বভাবত‌ই আলোচনা শুরু হয়েছে।

সুমন সাহা