পুরুলিয়া: ছোট ছোট শিশু ও প্রসূতি মায়েদের জন্য তৈরি করা হয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষাদানের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয় ছোট ছোট শিশুদের। কিন্তু এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ভয়াবহ অবস্থা ভয় ধরিয়েছে অভিভাবকদের মনে। পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের কুমড়া পঞ্চায়েত এলাকার জঙ্গলের মাঝে এক পরিত্যক্ত বাড়িতে চলে গ্রামের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেটি। দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এখানেই চলছে সেটি। কিন্তু ছাউনি না থাকায় রোদ, জল, ঝড়, বৃষ্টির মধ্যেই বারান্দায় চলছে শিশু ও গর্ভবতী মায়েদের পুষ্টিকর খাবার বন্টনের কাজ।
ওই কেন্দ্রে প্রবেশ করলেই দেখা যায় মাথার উপর খোলা আকাশ। দেওয়ালে ধরেছে ফাটল, মুহুর্তেই ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। ঝোপে ঝাড়ে ভর্তি, মাঝে মধ্যেই সাপ ও বিভিন্ন বিশাক্ত পোকামাকড় ঢুকে পড়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। মাথার উপর টিনের আচ্ছাদনটুকুও নেই। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সরকারি পরিষেবা দিচ্ছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। যে কোনও সময় ঘটতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা। আতঙ্কে রয়েছেন অভিভাবকেরা।
আরও পড়ুন: ফুঁসতে থাকা অজয়ের জন্য কয়েক হাজার মানুষের জীবিকা সঙ্কটের মুখে!
এই বিষয়ে অভিভাবকেরা বলেন, তাঊরা অনেকটাই আতঙ্কের মধ্যে বাচ্চাদের এই আইসিডিএস সেন্টারে পাঠাচ্ছেন। যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে। এই বিষয়ে পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবেদিতা মাহাত বলেন, যে সমস্ত আইসিডিএস সেন্টারগুলি ভগ্নদশা হয়ে রয়েছে সেগুলির একটি তালিকা প্রস্তুত করার জন্য বিডিওদের বলা হয়েছে। সে তালিকা হাতে পাওয়ার পর আমরা খুব শীঘ্রই এই আইসিডিএস সেন্টারগুলিকে মেরামত করার উদ্যোগ নেব।
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি
নদিয়া: মামার বাড়িতে তরিবত করে শিশুদের অন্নপ্রাশনের দিন বুঝি শেষ হতে চলল। কারণ এবার থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে হবে শিশুদের অন্নপ্রাশন! ব্যাপারটা ঠিক কী? সরকারি নির্দেশে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ৭-৯ মাস বয়সী শিশুদের অন্নপ্রাশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নদিয়ার শান্তিপুর ব্লকে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের অন্নপ্রাশনের এই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শান্তিপুর ব্লকের হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ৭২ নম্বর আইসিডিএস সেন্টারে সাত মাস থেকে নয় মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে একজনের অন্নপ্রাশন আয়োজন করা হয়। সেই উপলক্ষে প্রদান করা হয় পুষ্টিকর খাবার।
আরও পড়ুন: রাতেও জঞ্জাল পরিষ্কার হবে শহরে! সাড়া ফেলতে চলেছে এই মিউনিসিপ্যালিটি
ঘটা করে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশুদের অন্নপ্রাশন আয়োজন করায় যথেষ্ট খুশি অভিভাবকরা। রীতিমত পঞ্চ ব্যঞ্জন রান্না করে পায়েস, মিষ্টি সহযোগে ঠিক মামারবাড়ির মত করে ধান-দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করে অন্নপ্রাশন উৎসব পালন করা হয়। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের পাশাপাশি ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অন্তর্গত শিশুদের অভিভাবকরা সকলেই এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
এমন অভিনব উদ্যোগ সফল করতে ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের শিক্ষিকা জয়ন্তী রায় দত্ত যে ভূমিকা রেখেছেন সকলে তার প্রশংসা করেছেন। এই উপলক্ষে পুষ্টিকর খাবার দেওয়ায় খুশি হয়েছেন সকলে।
মৈনাক দেবনাথ
দক্ষিণ দিনাজপুর: এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি দেখলে হানাবাড়ি বলে মনে হতে পারে। জীর্ণ কঙ্কাল চেহারা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পরিত্যক্ত এই বাড়ির ছাদ থেকে মাঝেমধ্যেই খসে পড়ে চাঙর। এই অবস্থার মধ্যেই চলে শিশুদের পড়াশোনা। পরিস্থিতি এমনই যে যেকোনও সময় ঘটে যেতে পারে বড়সড় দুর্ঘটনা। বালুরঘাট ব্লকের জলঘর গ্রাম পঞ্চায়েতের ভাতশালা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অবস্থা ঠিক এমনই।
এই বেহাল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সন্তানদের পাঠাতে ভয় পান অভিভাবকরা। এই প্রসঙ্গে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা ও শিক্ষিকার দাবি, বারবার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও লাভ হয়নি। স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে অভিভাবকদের মধ্যে। বালুরঘাট ব্লকের জলঘর পঞ্চায়েতের চকভাতশালার ১৫৯ নম্বর সুসংহত শিশু বিকাশ সেবা প্রকল্প কেন্দ্র বা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অবস্থা বেহাল। এখানে ৩০ জনের বেশি পড়ুয়া আছে।
আরও পড়ুন: প্রচন্ড গরমে এই টম্যাটো চাষ করলেই হবে উপরি রোজগার
গ্রামের একমাত্র অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এটি৷ এর দেওয়ালে ফাটল ধরেছে। কিন্তু সংস্কারের অভাবে যত দিন যাচ্ছে সেই ফাটল তত বেড়ে চলেছে। সেন্টারের উপরের টিনও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যার ফলে বৃষ্টি হলেই জল পড়ে ঘরে। সেদিন অলিখিতভাবে ক্লাস ছুটি হয়ে যায়। দুটি ঘরের একটিতে রান্না ও একটিতে পড়াশোনা করনো হয়। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সহায়িকা জানান, তাঁরা সুপারভাইজার সহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বারবার বিষয়টি জানিয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হয়নি। স্কুল চত্বরে একটি মার্ক-টু টিউবওয়েল থাকলেও সেটা প্রায় চার বছর হয়ে গেল অকেজো। রান্নার জল গ্রামবাসীদের বাড়ি থেকে আনতে হয়। এমন বেহাল অবস্থার কারণে এখানে দিন দিন পড়ুয়ার সংখ্যা কমছে।
সুস্মিতা গোস্বামী
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: খোলা আকাশের নিচে রান্না হচ্ছে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের। ১৭৫ জন শিশু ও গর্ভবতী মহিলার খাবার প্রতিদিন এভাবেই অস্বাস্থ্যকর উপায়ে রান্না করা হয়। ঘটনাটি বারুইপুরের। এই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটির বেহাল দশার কথা জানাজানি হতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।।
রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময় দেখা গিয়েছে আইসিডিএস সেন্টারগুলির বেহাল দশার ছবি। কখনও খাবারের মধ্যে কোনও বিষাক্ত জিনিস পড়ে আছে, আবার কখনও কখনও খারাপ খাবার দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন সময় গন্ডগোলের ছবি উঠে আসে। আর এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরের মল্লিকপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ফরিদপুর আইসিডিএস সেন্টারের বেহাল ছবি ধরা পরল। এখানে ঢোকার সময় মনে হতেই পারে এটা শাসক দলের দলীয় কার্যালয় বুঝি!
আরও পড়ুন: ভারতীয় ভূখণ্ডে পরাধীনের মত বসবাস! তবু ভোট দেয় গদাইচর
আইসিডিএস সেন্টারের নামের পাশেই জ্বলজ্বল করছে শাসক দলের প্রতীক চিহ্ন। ভিতরে দুটি ঘর রয়েছে। ঘরের মধ্যে পাখা থাকলেও নেই কোনও আলোর ব্যবস্থা। তাই ঘরের ভিতরটা প্রায় অন্ধকার বললেই চলে। তারপর আসা যাক আইসিডিএস সেন্টারের রান্নাঘরে। রান্নাঘরে উনুন আছে, কিন্তু নেই মাথার ছাদ। খোলা আকাশের নিচেই রান্না করতে হয় এখানকার কর্মীদের। ফলে যে কোনও মুহূর্তেই রান্না হওয়ার সময় খাবারের মধ্যে বিষাক্ত কিছু পড়ার সম্ভাবনা আছে।
দীর্ঘ ৬ মাস ধরে এভাবেই খোলা আকাশের নিচে রান্না হচ্ছে। বিষয়টি পঞ্চায়েতকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। লোকসভা ভোটের মুখে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের এমন বেহাল ও বিপজ্জনক অবস্থা নিয়ে স্বভাবতই আলোচনা শুরু হয়েছে।
সুমন সাহা
ফের শিশুদের খাবার চুরি। এবার দেগঙ্গায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে উত্তেজনা। চাল চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়লেন ICDS কর্মী। অভিযুক্তকে ঘিরে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের। স্কুটারের ডিকিতে উদ্ধার চালের বস্তা। দীর্ঘদিন ধরেই সন্দে হওয়ায় আজ তৈরি ছিলেন গ্রামবাসীরাও। ICDS সেন্টারের রান্নাঘরে স্কুটার ঢুকিয়ে কারসাজির সময় মোবাইল ক্যামেরায় সেই ছবি তোলেন বাসিন্দারা। এরপরেই চড়ে উত্তেজনার পারদ। তবে বিক্ষোভের মুখেও অভিযোগ অস্বীকার করেন অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সহায়িকা। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ।
Just another WordPress site