Tag Archives: East Bengal

দুবার এগিয়ে থেকেও জয় হাতছাড়া ইস্টবেঙ্গলের, কাজে এল না ক্লেটন, জার্ভিসের গোল

কলকাতা: লিগ টেবিলের ‘লাস্ট বয়’, ডার্বিতে টানা হার— একাধিক লজ্জায় মুখ পুড়েছে মশাল বাহিনীর। চলতি মরশুমেও দলের খেলায় ধারাবাহিকতার অভাব সুস্পষ্ট। ১৬ ম্যাচে স্টিফেন কনস্টানটাইনের দল জিতেছে মাত্র ৫টিতে। এই মুহূর্তে নবম স্থানে ইস্টবেঙ্গল। গত ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে অবশ্য পরিকল্পিত ফুটবল খেলে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল তারা। টানা চার ম্যাচে হারের ধাক্কা কাটায় ফুটবলারদের মধ্যে ফিরেছে আত্মবিশ্বাস।

সেই ছন্দ ধরে রেখেই টানা দু’টি জয়ের খোঁজে ছিল ইস্টবেঙ্গল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আইএসএলে পরপর দু’টি ম্যাচে তিন পয়েন্ট কখনও পায়নি লাল-হলুদ ব্রিগেড! বুধবার প্রতিপক্ষ লিগ টেবিলে সবার শেষে থাকা নর্থইস্ট ইউনাইটেড। প্রথম লেগে গুয়াহাটিতে ৩-১ ব্যবধানে জিতেছিল স্টিফেন-ব্রিগেড। ঘরের মাঠেও সেই ধারা বজায় রেখে মরশুমের ষষ্ঠ জয় তুলে নেওয়াই লক্ষ্য ছিল ক্লেটন-লিমাদের।

প্রথমার্ধে চারটে গোল। ক্লেটন সিলভার হেডে এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। ১১ নম্বর গোল হয়ে গেল তার। এরপর দুর্দান্ত দূরপাল্লার শটে গোল করে পার্থিব ১-১ করেন। জিতিন ২-১ এগিয়ে দেন নর্থ ইস্টকে। তবে একটা পেনাল্টি পেতে পারত ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার এক মিনিট আগে জেক জার্ভিস একটা ব্যাক ভলিতে দুর্দান্ত গোল করে সমতা ফিরিয়ে আনলেন ম্যাচে। যেন যাবতীয় সমালোচনার জবাব দিলেন দীর্ঘকায় স্ট্রাইকার।

ভিড়ের মধ্যে কিভাবে শরীর ব্যবহার করতে হয় দেখালেন তিনি। বিরতির পর ইস্টবেঙ্গল মরিয়া হবে জানা ছিল। ৬৩ মিনিটে বক্সের মধ্যে সিলভাকে ফাউল করেন সাজি। পেনাল্টি দিতে ভুল করেনি রেফারি। ক্লেটন অরিন্দমের বাঁদিক দিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দেন। একের পর এক আক্রমণ তুলে এনে নর্থ ইস্ট ডিফেন্সকে চাপে ফেলতে থাকে লাল হলুদ।

কিন্তু এরপর নাটক বাকি ছিল। ৮৫ মিনিটে ইমরান গোল করে আবার ম্যাচে ফিরিয়ে আনলেন নর্থ ইস্টকে। ৩-৩ হয়ে গেল। আবার সুযোগ হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল। জর্ডানের শট দুর্দান্ত বাঁচিয়ে দেন অরিন্দম। অতিরিক্ত ৬ মিনিট আর কিছু হয়নি। দুবার লিড নিয়েও জেতা ম্যাচ মাঠে রেখে ফিরল ইস্টবেঙ্গল।

জন্মদিনে ইস্টবেঙ্গলের মশাল জ্বালালেন ব্রাজিলিয়ান ক্লেটন সিলভা, কেরলকে হারাল লাল হলুদ

#কলকাতা: শুক্রবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে কেরল ব্লাস্টার্স চ্যালেঞ্জ ছিল ইস্টবেঙ্গলর সামনে। শেষ চারটি ম্যাচে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল লাল হলুদ ব্রিগেডকে। তাই এদিন কিছু পরিবর্তন হয় কিনা সেটাই দেখার ছিল। উল্লেখযোগ্য ব্যাপার আজ প্রথম থেকেই ইস্টবেঙ্গল দলের ছিলেন নতুন ব্রিটিশ স্ট্রাইকার জ্যাক জার্ভিস। তিনি কেমন পারফর্ম করেন সেটাই ছিল দেখার।

সত্যি কথাই বলতে প্রথম ম্যাচ নজর টানতে ব্যর্থ তিনি। তিন থেকে চার বার সুযোগ পেয়েছিলেন বটে, কিন্তু সঠিক জায়গায় পৌঁছতে পারলেন না ব্রিটিশ স্ট্রাইকার। তাকে দেখে সম্পূর্ণ ফিট বলেও মনে হয়নি। এদিন ম্যাচের ১৫ মিনিটে অঙ্কিত মুখার্জিকে তুলে নিলেন কোচ স্টিফেন। লাল হলুদ জার্সি ছুঁড়ে ফেলে দিলেন বাঙালি ফুটবলারটি।

তার বদলি হিসেবে নেমে বরং ভাল ফুটবল খেললেন রকিপ। এমনিতে শেষ ছয়ের মধ্যে থাকতে গেলে ইস্টবেঙ্গলকে হাতে থাকা সব ম্যাচ এখন জিততে হত। তারপরেও অন্য দলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হত। বরং ব্রাজিলীয় ক্লেটন সিলভা দুর্দান্ত ফুটবল খেলেও সঙ্গীর অভাবে ফিনিশ করতে পারলেন না। সুহের নিজের পুরন ফর্মে নেই।

তিনি একটি গোল করলেও অফসাইডের কারণে বাতিল হয়। কিরিয়াকু আগে আক্রমণে সাহায্য করতেন। কিন্তু এখন সেটা পারেন না। ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক কমলজিত দেখার মত কিছু সেভ করেন। ৭৫ মিনিটে জার্ভিসকে তুলে নিলেন স্টিফেন। নামলেন সুমিত পাসি। এলেন অস্ট্রেলিয়ার জর্ডান।

এক মিনিটের মধ্যে গোল পেল ইস্টবেঙ্গল। সুমিতের একটা ফ্লিক ধরে বাঁদিক থেকে মহেশের একটা দুর্দান্ত দৌড় নড়িয়ে দিল কেরল ডিফেন্সকে। নিশু কুমারকে গতিতে হারিয়ে তিনি মাইনাস করলেন। সিলভা দানিশ ফারুক বল ক্লিয়ার করার আগে ফিনিশ করলেন। আজ ছিল ব্রাজিলিয়ান তারকার জন্মদিন। নিজের দশ নম্বর গোলটা পেয়ে গেলেন তিনি।

ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে আজ অভিষেক নতুন স্ট্রাইকারের, কেরলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ ম্যাচ লাল হলুদের

#কলকাতা: আর নতুন করে হতাশ হন না ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। কারণ তারা বুঝে গিয়েছেন জঘন্য দল থাকলে তার ফল কি হতে পারে। যেটা হওয়ার সেটাই হচ্ছে। এ যেন হারতে হারতে হারান হওয়ার অবস্থা। শেষ চারটি ম্যাচে মাথা হেঁট করে ফিরতে হয়েছে ড্রেসিং-রুমে। প্রতিপক্ষ বা ভেন্যু বদলালেও, ইস্টবেঙ্গল রয়েছে ইস্ট বেঙ্গলেই। আর কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইন এখনও অজুহাত দিতে ব্যস্ত।

কেরল ব্লাস্টার্স ম্যাচে নামার আগে বিদেশি কোচের নিশানায় কর্মকর্তারা। বললেন, শেষবেলায় বাজার করতে গেলে তাজা জিনিস মেলে না। দলগঠনে দেরি হওয়ায় এই অবস্থা। জানি, সাফল্য এনে দিতে না পারলে পরের মরশুমে চাকরি হারাব। তাই দল প্রথম ছয়ে থাকুক, এটা আমার চেয়ে বেশি কেউই চায় না। ছেলেরা ভালো পারফর্ম না করতে পারলে রাতে ঘুমোতে পারি না।

 জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডো নিয়েও ইস্টবেঙ্গলে কম জলঘোলা হয়নি। শেষবেলায় ব্যান উঠলে, জ্যাক জার্ভিসকে সই করানো হয়। এই প্রসঙ্গে স্টিফেনের মন্তব্য, ‘জ্যাক খুবই ভালো সংযোজন। কিন্তু ওকে আমি ওড়িশা ম্যাচে খেলাতে পারলাম না। এর দায় কে নেবে? তাছাড়া কনস্টানটাইন মনে করেন, তাঁর অধীনেই আইএসএলে ইস্ট বেঙ্গলের সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে।

প্রথম লেগে কলকাতার এই প্রধানকে ৩-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল কেরল। তাহলে এটা ইস্ট বেঙ্গলের কাছে বদলার ম্যাচ? ফুটবলার কিংবা কোচেদের বডি ল্যাঙ্গুয়েজে অবশ্য তা মনে হল না। স্টিফেন বললেন, বদলা হিসেবে ভাবছি না। ম্যাচটা আমাদের খেলতেই হবে। প্রথম লক্ষ্য থাকবে না হারা।

এদিকে, শুক্রবারই ইস্টবেঙ্গল জার্সিতে জ্যাক জার্ভিসের অভিষেক হবে। আপফ্রন্টে তিনি ক্লেটনকে কতটা সঙ্গত করতে পারেন, সেটাই দেখার। ইস্টবেঙ্গল অবশ্যই একটা মরণ কামড় দেবে কেরালকে হারাতে।

ইংলিশ স্ট্রাইকারকে সই করাল ইস্টবেঙ্গল, ভাগ্য বদলানোর স্বপ্ন দেখছেন কোচ স্টিফেন

#কলকাতা: দিন, মাস, বছর চলে যায়, কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের ভাগ্য বদল হয় না। সেই ব্যর্থতাই নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় সমর্থকদের। পরের সপ্তাহে হয়ত জ্যাক জার্ভিস খেলতে পারবেন ইস্টবেঙ্গল জার্সি গায়ে। প্রায় তিন সপ্তাহ আগে ভারতে চলে এলেও নিয়মে আটকে গিয়ে সই করতে পারছিলেন না তিনি। আজ সেই সমস্যা মিটে গেল।

জার্ভিস দলে যোগ দেওয়ার ফলে আক্রমণ ভাগের শক্তি বাড়বে বলাই যায়। তার সঙ্গে সিলভার বোঝাপড়া তৈরি হলে উপকৃত হবেন বাকি ফুটবলাররা। গোয়ার বিরুদ্ধে ৪-২ গোলে হারতে হয়েছে লাল হলুদকে। প্লেঅফে খেলা কার্যত অসম্ভব। ক্লাবে তৈরি হয়েছে অচলাবস্থা। এমন সময়ে ইস্টবেঙ্গলের ট্রান্সফার ব্যান তুলে দিল ফিফা।

তাতে খুশি ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন। এই মরশুমে ১১ নম্বর ম্যাচ হারল ইস্টবেঙ্গল। পরপর চারটি ম্যাচ হারল মশাল বাহিনী। পারফরম্যান্স নিয়ে কনস্ট্যান্টাইন বলেন, প্রথমার্ধে আমরা খেলতেই পারিনি। বিরতির পরে ওরা একটা ফ্রি কিক পায়। যা কাজে লাগিয়ে ওরা ৪-০ করে। আমরাও দুই গোল করেছি। হয়ত একটা পেনাল্টিও পেতে পারতাম আমরা।

কিন্তু এটাই যথেষ্ট নয়। কোনও দল দু-তিন গোলের লিড নিয়ে এগিয়ে গেলে, সেই ম্যাচে কিছু করার থাকে না। পুরো মরশুম ধরেই এমনটা চলছে। দলে বেশ কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন বলে মনে করেন স্টিফেন। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেটা করতে হবে।

ইস্টবেঙ্গলের সামনে আজ গোয়া, ম্যানেজমেন্টর বিরুদ্ধে তোপ দেগে ভিলেন কোচ স্টিফেন

#কলকাতা: কোচ তাড়িয়ে লাভ নেই। বরং সময় দেওয়া হোক স্টিফেনকে। এমনটাই বিশ্বাস করেন বেশিরভাগ ইস্টবেঙ্গল সমর্থক। কারণ সব দল যখন বৈজ্ঞানিকভাবে একটা পথ অনুসরণ করেছে, তখন শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়ে স্টিফেনকে কোচ করা হয়েছে। তিনি ম্যাজিশিয়ান না। করোনার জেরে গত দু’বছর গোয়ার মাটিতে দর্শকশূন্য গ্যালারিতে আয়োজিত হয়েছিল আইএসএল।

তবে চলতি আসরে যৌব সুরক্ষার বলয় থেকে বেরিয়ে চেনা ছন্দে ফিরেছে ভারতীয় ফুটবল। কিন্তু ইস্ট বেঙ্গল যে তিমিরে ছিল, সেখানেই রয়েছে। পারফরম্যান্সে তেমন কোনও পরিবর্তন ঘটেনি। ১৪ ম্যাচে মাত্র ১২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের নবম স্থানে স্টিফেন কনস্টানটাইনের দল।

আরও পড়ুন – দেনার দায় বিক্রির পথে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, মালিকানার দৌড়ে ফেসবুক এবং অ্যাপেল

প্রতি ম্যাচে গড়ে দু’টি করে গোল হজম করেছে রক্ষণ। আপফ্রন্টে ক্লেটন সিলভা ছাড়া কারও পারফরম্যান্স পাতে দেওয়ার যোগ্য নয়। এমনকী, নির্বাসনের জেরে ট্রান্সফার উইন্ডোতে নতুন কোনও ফুটবলার সই করাতে ব্যর্থ টিম ম্যানেজমেন্ট। ব্রিটিশ স্ট্রাইকার জ্যাক জার্ভিস কবে মাঠে নামবেন তা জানা নেই কারও।

এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার মারগাওয়ের ফাতোরদা স্টেডিয়ামে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে প্রিয় দল জিতবে, তা অতি বড় ইস্ট বেঙ্গল সমর্থকও আশা করেন না। এদিকে, ব্যর্থতার জন্য ঘুরিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টকে দায়ী করলেন কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইন। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, বেশ কয়েকজন ফুটবলারকে সই করানোর পরিকল্পনা ছিল।

ট্রান্সফার উইন্ডো শেষ হতে আর এক সপ্তাহ বাকি নেই। হয়তো এই দল নিয়েই আমায় চলতে হবে। একটু থেমে তাঁর সংযোজন, ‘লিগের বেশিরভাগ দলই কোর গ্রুপ ধরে রেখেছে। আর আমায় শুরু করতে হয়েছে শূন্য থেকে। মুহূর্তের ভুলে আরও বেশ কিছু পয়েন্ট হাতছাড়া হয়েছে। না হলে লিগ টেবিলে এই জায়গায় থাকতাম না। জানি, প্রথম ছয়ের মধ্যে থাকার পথ খুবই কঠিন।

আপাতত আমাদের লক্ষ্য, বাকি ম্যাচগুলিতে বেশি সংখ্যক পয়েন্ট অর্জন করা। প্রথম লেগে ঘরের মাঠে শেষ মুহূর্তের গোলে গোয়ার কাছে হারতে হয়েছিল ইস্ট বেঙ্গলকে। অ্যাওয়ে ম্যাচে পুরো পয়েন্ট তুলে নিতে মরিয়া লাল-হলুদ ব্রিগেড। এরজন্য দলের প্রতিটি ফুটবলারকে সেরাটা মেলে ধরতে হবে বলেই জানালেন কোচ স্টিফেন।

মোহনবাগানের কোচ নিয়ে ক্রমশ বিরক্ত সমর্থকরা, পদত্যাগ করতে নারাজ ইস্টবেঙ্গলের স্টিফেনও

#কলকাতা: শেষ তিনটি ম্যাচে শূন্য হাতেই মাঠ ছেড়েছেন ক্লেটন সিলভারা। কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইনের স্ট্যাটেজি নিয়ে ক্রমশ হতাশা বাড়ছে সমর্থকদের মধ্যে। ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। এমন পরিস্থিতিতে পদত্যাগের কোনও ইচ্ছে নেই ব্রিটিশ কোচ। এখনও তিনি সময়ের দোহাই দিয়ে চলেছেন। আপাতত লিগের বাকি ছ’টি ম্যাচ থেকে বেশি সংখ্যক পয়েন্ট নিয়ে সম্মানের সঙ্গে লিগের অভিযান শেষ করাই প্রধান লক্ষ্য স্টিফেনের।

সেই মতো মঙ্গলবার অ্যাওয়ে ম্যাচ খেলতে গোয়া পৌঁছল ইস্টবেঙ্গল। ১৫ ম্যাচে ২৩ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের পঞ্চম স্থানে রয়েছে এফসি গোয়া। শেষ ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্সকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে কার্লোস পেনার দল। ফলে বৃহস্পতিবার ফাতোরদা স্টেডিয়ামে লড়াইটা যে সহজ হবে না তা ভালোভাবেই জানেন লাল-হলুদের দুর্গপ্রহরী কমলজিৎ সিং।

তবে ভালো পারফরম্যান্স মেলে ধরতে মরিয়া পাঞ্জাব তনয়। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার আরও এক কঠিন লড়াই আমাদের সামনে। এফসি গোয়া দারুণ ছন্দে রয়েছে। প্রথম লেগে ওদের বিরুদ্ধে শেষ মুহূর্তের গোলে হারতে হয়েছিল। এবার সেই ভুল শুধরে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এদিন দলের সঙ্গে গোয়া পৌঁছন জ্যাক জার্ভিস। তবে আগামী ম্যাচেও তাঁর খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে।

এদিকে, মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ওমেদ সিংয়ের বকেয়া মেটানো সম্ভব হয়নি। মুম্বইয়ের বিরুদ্ধে হারের গত ম্যাচে চেন্নাইয়ের কাছে পয়েন্ট খুইয়েছে এটিকে মোহনবাগান। ফলে লিগ টেবিলে প্রথম দুয়ের মধ্যে থাকার সম্ভাবনা অনেকটাই ক্ষীণ সবুজ-মেরুনের। যদিও কোচ হুয়ান ফেরান্দো আশা ছাড়ছেন না।

আপাতত শনিবার ওড়িশা এফসি’র বিরুদ্ধে জয়ের সরণিতে ফিরতে মরিয়া তিনি। মঙ্গলবার থেকে দল নিয়ে প্রস্তুতিতে নেমে পড়লেন স্প্যানিশ কোচ। এদিন পুরোদমে অনুশীলন করলেন সদ্য দলে যোগ দেওয়া গ্লেন মার্টিন্স। মরশুমের শুরু থেকেই স্ট্রাইকার সমস্যায় ভুগতে হয়েছে মোহন বাগানকে। লিগের অন্তিম পর্বে এসেও সেই ধারা অব্যাহত।

ওড়িশার বিরুদ্ধে তাই পেত্রাতোসের সঙ্গে গালেগোকে শুরু থেকে খেলাতে পারেন ফেরান্দো। সেক্ষেত্রে ম্যাকহাগকে বসতে হবে বেঞ্চে। হুয়ান ফেরান্ডোকে নিয়েও এবার হতাশ হচ্ছেন মোহনবাগান সমর্থকরা। এফসি গোয়া এবং মোহনবাগানের কোচিং করা এক নয়, সেটা বুঝবে নাকি এতদিন সময় লেগে গেল তার। এই জায়গায় এসে স্প্যানিশ কোচের এমন অজুহাত মানতে নারাজ সমর্থকরা।

ইস্টবেঙ্গলের সামনে কলকাতায় আজ শক্তিশালী হায়দারাবাদ! হিসেব বদলাতে মরিয়া লাল হলুদ ব্রিগেড

#কলকাতা: সময় বদলায়, বছর বদলায় কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের বদল হয় না। শেষ তিন বছর ধরে এক গল্প। সমর্থকরাও যেন হতাশ হতে হতে সহ্য করে নিয়েছেন। চলতি আইএসএলে ১৩ ম্যাচের মধ্যে ৯টিতে হেরেছে ইস্ট বেঙ্গল। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এর মধ্যে তিনটিতে লিড নিয়েও ধরে রাখতে ব্যর্থ লাল-হলুদ ডিফেন্স। অপর তিনটিতে শুরুটা ভালে করেও দুম করে তাল কাটে। স্বাভাবিকভাবেই ফুটবলারদের মানসিকতা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

প্রতি ম্যাচেই একই ভুলের পুনরাবৃত্তি হলেও বিন্দুমাত্র তাপ-উত্তাপ নেই ইভান-লিমাদের মধ্যে। তাই বৃহস্পতিবার অনুশীলনের শুরুতে ফুটবলারদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিতে দেখা গেল কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইনকে। মাঠের মাঝেই মিনিট দুয়েকের বৈঠক সারলেন তিনি। সাংবাদিক বৈঠকেও লাল-হলুদ ব্রিটিশ কোচের সাফ কথা, ইস্টবেঙ্গল জার্সির বিশেষ মর্যাদা রয়েছে।

এর ওজন বইতে না পারলে দলে জায়গা নেই। প্রতি ম্যাচে নিজেদের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে। শুক্রবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ইস্ট বেঙ্গলের প্রতিপক্ষ হায়দরাবাদ এফসি। প্রথম লেগে নিজামের শহরে ০-২ গোলে বশ মেনেছিল লাল-হলুদ ব্রিগেড। শুরুটা দারুণ লড়াই করলেও দ্বিতীয়ার্ধে স্নায়ুর চাপে ভুগেছিলেন সুহেররা।

শুধু হায়দরাবাদ নয়, প্রতি ম্যাচেই একই ভুলের চালচিত্র। গোল করে দলকে এগিয়ে দিচ্ছেন ক্লেটন সিলভা। তবে বাকিরা তা ধরে রাখতে ব্যর্থ। তাই শুক্রবার সতীর্থদের থেকে আরও একটু বেশি তাগিদ চাইছেন লাল-হলুদ অধিনায়ক। ক্লেটনের কথায়, ‘দল হিসেবে আমরা সেরাটা মেলে ধরতে পারছি না।হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে জিততে হলে মানসিকতায় পরিবর্তন আনা খুবই দরকার।

গোল যে কেউ করতে পারে। কিন্তু তা ধরে রাখার জন্য সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে হবে। চোটের জন্য হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে নেই অঙ্কিত মুখার্জি। তবে ইভান গঞ্জালেসের খেলা নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। লাল-হলুদ জার্সিতে এখনও সেভাবে ভরসা জোগাতে ব্যর্থ এই স্প্যানিশ ডিফেন্ডার। তবে শুক্রবার হায়দরাবাদের ওগবেচেকে রোখার জন্য আরও একবার তাঁর উপরই ভরসা রাখতে চলেছেন স্টিফেন।

ইস্টবেঙ্গলের চ্যালেঞ্জ আজ জামশেদপুরের সঙ্গে! ওড়িশা হার ভুলে জয় চায় লাল হলুদ

#কলকাতা: ইস্টবেঙ্গল আবার কবে জয় ফিরবে? এটাই আজ সবচেয়ে বড় প্রশ্ন সমর্থকদের মনে। জামশেদপুর এফসি’র বিরুদ্ধে প্রথম লেগে অ্যাওয়ে ম্যাচে ৩-১ গোলে জিতেছিল ইস্টবেঙ্গল। জোড়া গোল পেয়েছিলেন ক্লেটন সিলভা। শুক্রবার ঘরের মাঠে জয়ের জন্য আরও একবার এই ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকারের দিকে তাকিয়ে লাল-হলুদ অনুরাগীরা। তবে কোচ স্টিফেন জানান, জয়ের জন্য প্রত্যেককে সেরাটা মেলে ধরতে হবে।

আরও সংঘবদ্ধ হতে হবে ডিফেন্ডারদের। বৃহস্পতিবার অনুশীলনে ইভান-জেরিদের সেটাই বোঝানোর চেষ্টা করলেন ব্রিটিশ কোচ। চোটের জেরে গত কয়েকটি ম্যাচে অনিয়মিত ছিলেন চারালাম্বোস কিরিয়াকৌউ। তবে জামশেদপুরের বিরুদ্ধে মাঝমাঠে তাঁর অন্তর্ভুক্তি কিছুটা হলেও চিন্তা কমাবে কোচ স্টিফেনের। গত ম্যাচে ওড়িশার বিরুদ্ধে স্ন্যাচারের অভাবে ভুগতে হয়েছে ইস্টবেঙ্গলকে।

সাইপ্রাসের ফুটবলারটিও মাঠে নামতে তৈরি। ১২ ম্যাচে মাত্র চারটি জয়। আটটিতে হার। ১২ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে ন’নম্বরে রয়েছে দল। অতীতে এমন পরিস্থিতিতে কোচ বদলের রব উঠত ইস্টবেঙ্গলে। এখন পরিস্থিতি অবশ্য বদলেছে। তবে এমন চলতে থাকলে তাঁর চাকরিও যে সুরক্ষিত নয়, তা ভালোভাবেই জানেন স্টিফেন।

East Bengal looks to secure maximum points against Jamshedpur FC tonight in Indian super leagueতাই অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে শুক্রবার জামশেদপুরের বিরুদ্ধে জয় পেতে মরিয়া লাল-হলুদ কোচ। জামশেদপুরের পারফরম্যান্স গ্রাফ অনেকটাই পড়েছে। ১৩ ম্যাচে মাত্র ৬ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলে দশম স্থানে এডি বুথরডের দল। তিনি মানছেন ইস্টবেঙ্গল যতই খারাপ ফর্মে থাক, আজ যুবভারতীতে মরিয়া হবে লাল হলুদ ব্রিগেড।

ইস্টবেঙ্গলের সামনে আজ ওড়িশা, প্রতিশোধ নেওয়ার অপেক্ষায় লাল হলুদ

#ভুবনেশ্বর: শেষবার যখন যুবভারতীতে ওড়িশার মুখোমুখি হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল দু গোলে এগিয়ে থেকেও চার গোল হজম করে হেরেছিল ম্যাচটা। কিভাবে এমনটা হতে পারে ভেবে কূলকিনারা পাননি অনেকেই। চলতি আইএসএলে টানা দু’টি ম্যাচে জিততে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। গত ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসি’কে হারিয়ে ঘরের মাঠে প্রথম জয় পাওয়ার পর লাল-হলুদ শিবিরে তৈরি হয়েছে আত্মবিশ্বাসের ফানুস।

শনিবার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ইস্ট বেঙ্গলের সামনে ওড়িশা এফসি। কলকাতায় জোসেফ গোমবাউয়ের প্রশিক্ষণাধীন দলের কাছে লাল-হলুদ ব্রিগেডকে হারতে হয়েছে ২-৪ ব্যবধানে। সেই পরাজয়ের ক্ষত স্পষ্ট লাল-হলুদ শিবিরে। তাদের দলে এখন একটাই স্লোগান, ‘প্রথম ছয়ে শেষ করা।’

কোচ স্টিফেন কনস্টানটাইন কথায় কথায় গত মরশুমের উদাহরণ টেনে নিজেকে সফল প্রমাণিত করার চেষ্টায় রয়েছেন। এই দলের অধিকাংশ ফুটবলার বেছেছেন স্বয়ং কোচ। তাই পারফরম্যান্স খারাপ হলে দায় তিনি কর্তাদের দিকে ঠেলতে পারবেন না। পরিসংখ্যান বলছে, শেষ তিনটি ম্যাচের মধ্যে দু’টিতে হার। একটিতে জয়। লাল-হলুদ জনতা তাই এই দল নিয়ে স্বপ্ন দেখাই ভুলে গিয়েছেন।

বলতে দ্বিধা নেই, কোচের ভুলের খেসারত দিতে হচ্ছে শতাব্দীপ্রাচীন ক্লাবকে।ওড়িশা ১২ ম্যাচে ১৯ পয়েন্ট সংগ্রহ করে টেবিলে রয়েছে ষষ্ঠ স্থানে। ইস্টবেঙ্গলের ১১ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট। ১৩ গোল দিয়ে হজম করেছে ২০ গোল। ফিটনেস সমস্যায় ভুগছে গোটা দল। অনেকেরই অল্পবিস্তর চোট-আঘাত রয়েছে। ব্রাজিলীয় ফরওয়ার্ড ক্লেটন সিলভা এই দলটার সম্পদ।

অন্য ব্রাজিলীয় এলেক্স লিমা আগের মত ছন্দে নেই। নতুন বিদেশি জার্ভিস এসে গেলেও এই ম্যাচে তার খেলার সম্ভাবনা নেই। কিরিয়াকু পারবেন কিনা কেউ জানে না। নিজেদের ঘরের মাঠে ওড়িশা অবশ্য পুরো পয়েন্ট পেতে অল আউট খেলবে।

ফিরতি ডার্বিতে প্রথমবার মোহনবাগানকে হারানোর প্রতিজ্ঞা ইস্টবেঙ্গলের সিলভার

#কলকাতা: ইস্টবেঙ্গল দলটার প্রধান চালিকাশক্তি তিনি। একমাত্র বিদেশি যিনি প্রতিপক্ষ শিবিরকে চিন্তায় রাখতে পারেন। ফুটবল সম্রাট পেলের শহর মিনাস গেরাইসেই জন্ম ক্লেটন সিলভার। তাই কিংবদন্তির প্রয়াণ কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না ইস্টবেঙ্গলের ব্রাজিলিয়ান ফুটবলার। ঘুরেফিরে বারবার তাঁর কথাবার্তায় উঠে এসেছে পেলের স্মৃতিচারণ।

পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে ক্লেটন বলছিলেন, বৃহস্পতিবার রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। পরের দিন সকালে দুঃসংবাদ পাই। পেলে শুধু ব্রাজিলের নয়, গোটা বিশ্বের। তাঁর দেখানো পথ ধরেই নিজেকে উন্নত করতে চাই। আইএসএলের লিগ টেবিলে আট নম্বরে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল।

আরও পড়ুন – আইপিএলের অর্ধেক নয় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ! মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে বিদেশি ক্রিকেটাররা

আর ক্লেটনের গোলের সংখ্যা আপাতত ৭। গোলদাতার তালিকায় যুগ্মভাবে শীর্ষে রয়েছেন তিনি। যদিও তাঁর লক্ষ্য, প্রথম ছয়ে লিগ শেষ করা। তাঁর সংযোজন, সর্বাধিক গোলদাতার থেকেও সুপার সিক্সে শেষ করতে পারলে খুশি হব। আগামী দু’টি ম্যাচ আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।

বেঙ্গালুরু এফসি থেকে আসা এই ব্রাজিলিয়ানের চোখ ২৫ ফেব্রুয়ারি আইএসএলের দ্বিতীয় ডার্বির দিকে। বললেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে এখনও পর্যন্ত এটিকে মোহন বাগানকে হারাতে পারিনি। তাই ওদের হারিয়ে আত্মবিশ্বাস গড়ে তোলার পথে হাঁটতে হবে। আশা করি, এবার ডার্বিতে তিন পয়েন্ট পাব।

ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরাই ক্লেটনের প্রেরণা। গত ম্যাচে ক্লেটনের দু’গোলে বেঙ্গালুরু এফসি’কে হারিয়ে অক্সিজেন পেয়েছে লাল-হলুদ ব্রিগেড। এর মধ্যে ফ্রি-কিকে তাঁর দ্বিতীয় গোলটি সেরা গোলের আর্কাইভে স্থান পেয়েছে। এই প্রসঙ্গে ৩৫ বছর বয়সি এই স্ট্রাইকার বলেন, প্র্যাকটিসেই বারবার এমন ফ্রি-কিক মেরে নিজেকে ধারালো করেছি। লেফট উইঙ্গার নাওরেম মহেশ সিংয়ের সঙ্গে আমার খুব ভালো বোঝাপড়া। ও তুখোড় ড্রিবলার।

হতাশা বড় ম্যাচ জিতে কাটাতে চান তাঁরা। দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি হওয়া লাল-হলুদ রক্ষণের স্তম্ভ মিজোরামের লালচুননঙ্গা বলছেন, ওদের পেত্রাতোস, লিস্টন ও আশিক কুরুনিয়ন বিপজ্জনক ফুটবলার। তবে ইভান গঞ্জালেজের সঙ্গে আমার বোঝাপড়া ওদের থামানোর পক্ষে যথেষ্ট।

ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন অবশ্য মনে করেন ছেলেদের মাঠে আরও ধারাবাহিক থাকতে হবে। হাতে রয়েছে দুদিন সময়। তারপর খেলতে হবে ওড়িশার বিরুদ্ধে। শনিবারের ওই ম্যাচের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে লাল হলুদ।