পেঁয়াজের ঝাঁঝে নাজেহাল হতে হয় গৃহিণীদের। পেঁয়াজ কাটার সময় কেন চোখে জ্বালা করে! পেঁয়াজে থাকা সালফেনিক অ্যাসিডের কারণেই মূলত সমস্যা হয়। (রিপোর্টার– জুলফিকার মোল্যা)পেঁয়াজ কাটার পর সালফেনিক অ্যাসিড বেরিয়ে অন্য এনজাইমের সঙ্গে মিশে যায়। তাতেই তৈরি হয় সালফার গ্যাস। সেটাই চোখে গিয়ে চোখ জ্বালা করে।পেঁয়াজ কাটতে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে খোসা ছাড়িয়ে ঘণ্টা খানেক ডিপ ফ্রিজারে ভরে রাখুন। ফ্রিজ থেকে বার করে পেঁয়াজ কাটলে চোখে আর জল আসবে না।পেঁয়াজ কাটার সময়ে যত ধারালো ছুরি ব্যবহার করবেন, ততই কম কাঁদতে হবে। অবাক লাগলেও এই পদ্ধতি কাজ করে।পেঁয়াজের খোসা ছাড়িয়ে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ঠান্ডা জলে ডুবিয়ে রাখতে পারেন। এতে সালফেনিক অ্যাসিড ধুয়ে যাবে আর কাটার সময় চোখে জল আসবে না।মোমবাতি জ্বালিয়ে কিংবা গ্যাসের আঁচের সামনে রেখে পেঁয়াজ কাটুন। এতে আগুনের শিখা পেঁয়াজের সারফার গ্যাস টেনে নেবে। (রিপোর্টার– জুলফিকার মোল্যা)
শীতে গম বা আটার রুটি প্রায় সকলেই থাকে। গোল এবং নরম রুটি বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ডাল দিয়ে খাওয়া হয়।অনেকসময়, কাজ কমানোর জন্য একসঙ্গে দু-দিনের আটা বাড়িতে মেখে রাখা হয়। তখন তা ফ্রিজে রেখে দেওয়া হয়।কিন্তু এই সংরক্ষণ বেশি দিন করা সম্ভব নয়। তাই মেখে রাখা আটা দীর্ঘ সময়ের জন্য তাজা রাখার ৬টি টিপস মেনে চলুন।১. রুটির ময়দা টা মাখার সময় খেয়াল রাখবেন এতে বেশি জল যেন না মেশানো হয়। মাখার সময় সবসময় অল্প পরিমাণে জল যোগ করুন। এতে করে যখন এটি স্টোর করবেন তখন প্রায় অনেকদিন ভাল থাকবে। ২. রুটির ময়দা মাখার সময়, এতে কিছুটা তেল দিতে ভুলবেন না। তেল রুটিকে বেশিক্ষণ নরম রাখতে সাহায্য করবে। তবে, আটা মেখে সংরক্ষণ করার সময় কখনোই তেল দেবেন না।৩. আটা নরম করতে, তাতে হালকা গরম জল বা দুধ যোগ করতে পারেন। নরম গমের আটা পেতে ১০-১৫ মিনিটের জন্য ভাল করে মাখুন। তাই মেখে রাখা আটা দীর্ঘ সময়ের জন্য তাজা রাখতে চান তাহলে মাখার সময় হালকা গরম জল বা দুধ যোগ করুন।৪. মাখানো আটা কখনই রেফ্রিজারেটরে খোলা রাখা উচিত নয়, অন্যথায় এটি নষ্ট হয়ে যাবে। তা একটি এয়ার টাইট পাত্রে সংরক্ষণ করুন। আটায় গমের ব্যাকটেরিয়া থাকার কারণে ময়দা নষ্ট হওয়ার হার বেশি। তাই এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য সংরক্ষণ করার জন্য এটি একটি এয়ার-টাইট পাত্রে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।৫. ময়দা যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য এর উপর ঘি বা তেলের পাতলা স্তর লাগিয়ে ফ্রিজে রেখে দিন। ময়দা মসৃণ করলে এটি শুকনো বা কালো হবে না।
রান্নাঘরের অন্যতম দরকারি সবজি কাঁচালঙ্কা। নুন-মিষ্টি আর ঝাল এই তিন সঠিক মাত্রায় থাকলেই সুস্বাদু হয়ে ওঠে একটি পদ। রান্না পর্যাপ্ত ঝাল না হলে স্বাদ খোলে না।ঝাল খেতে একটু বেশি পছন্দ করেন এমন মানুষ কিন্তু কম নেই। গোটা থেকে বাটা নানা ভাবে কাঁচালঙ্কা স্বাদ নেন মানুষ। কেউ কেউ তো আস্ত চিবিয়ে খেয়ে ফেলেন ভাতের সঙ্গে। শুধু কী তাই? রান্নায় ঝাঁজ এবং রং আনতেও এর গুরুত্ব অপরিসীম।বাঙালির রান্নাঘরে কাঁচালঙ্কা লাগবেই। সব রান্নাতেই কম বেশি কাঁচালঙ্কা ব্যবহার করাই হয়। কিন্তু মুশকিল হচ্ছে লঙ্কা বেশিদিন সতেজ যেন থাকতেই চায় না। ফ্রিজে রাখলেও নেতিয়ে যায়। আবার বাইরে রাখলে পচে যায়। তবে এসব থেকে মুক্তির উপায় কিন্তু আছে। কয়েকটি ছোট্ট উপায় অনুসরণ করলেই দীর্ঘ দিন কাঁচালঙ্কা সতেজ রাখতে পারবেন। জেনে নিন টিপসগুলি:১. এবার বাজার থেকে লঙ্কা কেনার পর তা প্লাস্টিকের বাক্সে রাখার সময় প্রথমে টিস্যু পেপার বিছিয়ে নিন। কাঁচালঙ্কা রেখে উপর থেকে আরও একটি টিস্যু বিছিয়ে দিন। এতে কোনও জল থাকলে তা টিস্যু টেনে নেবে। আসলে জল থাকার কারণেই লঙ্কায় দ্রুত পচন ধরে।২. বাজার থেকে আনার পর কাঁচালঙ্কা আগে ঠান্ডা জলে ভাল করে ধুয়ে নিন। এভার টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে খোলা হাওয়ায় বা ফ্যানের তলায় বিছিয়ে শুকিয়ে নিন। তারপর লঙ্কার বোঁটা ছিঁড়ে তা কোনও এয়ার টাইট কৌটোয় ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। বাড়িতে ফ্রিজ না থাকলে তোয়ালের মধ্যে মুড়েও রাখতে পারেন।৩. চাইলে কাঁচালঙ্কা আরও বেশিদিন সংগ্রহ করতে পারবেন। এর জন্য কাঁচালঙ্কা প্রথমে বেঁটে নিন। এবার সেই বাটা কাঁচালঙ্কা একটু একটু করে বরফের ট্রে-তে ভরে রাখুন। এভাবে রাখলে টানা দু-তিন মাসও রাখা সম্ভব এই লঙ্কা। প্রয়োজন মতো রান্নার সময় একটা একটা করে কিউব রান্নায় দিয়ে দিন।৪. কাঁচালঙ্কায় রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি এটি ত্বকের জন্যও খুব উপকারী। তাই রান্নায় কাঁচালঙ্কা বেশি করে ব্যবহারের চেষ্টা করুন। কাঁচালঙ্কায় প্রভূত পরিমানে ফাইবার থাকে যা পচনতন্ত্রের জন্যও খুব ভাল। সঙ্গে কাঁচালঙ্কায় থাকা ভিটামিন এ চোখের জন্য কার্যকরী।
শীতকালে রান্নাবান্না ও খাওয়া দাওয়া মানেই ধনেপাতা৷ নানাভাবে রান্নায় ব্যবহার করা যায় এই উপকরণ৷ তবে ধনেপাতা তাজা থাকলে তবেই তার আসল স্বাদ পাওয়া যায়৷
বাজার থেকে কিনে আনা ধনেপাতা কিছু দিন পর শুকিয়ে যেতে থাকে৷ ঠিকমতো রাখলে অনেক দিন পর্যন্ত তাজা থাকে সুস্বাদু এই পাতা৷ জেনে নিন কীভাবে ধনেপাতা দীর্ঘ দিন সতেজ রাখা যায়৷
ঠান্ডা জলে খুব ভাল করে ধনেপাতা ধুয়ে নিন৷ কিচেন টাওয়েল দিয়ে শুকনো করে মুছে নিন৷ আর্দ্রতা চলে গেলে ধনেপাতার তাজাভাব বজায় থাকবে অনেক দিন৷
শুকনো করে মুছে নেওয়া ধনেপাতা রাখুন জিপলক ব্যাগে৷ দেখুন, যাতে ভিতরে বাতাস প্রবেশ করতে না পারে৷ তার পর জিপলক ব্যাগে রেখে দিন৷ অনেক দিন বজায় থাকবে এর বর্ণ ও গন্ধ৷
রোজকার কাজের তাড়াহুড়োতে অনেক সময় নুনের কৌটে জল পরে যায়। তখন নুন ফেলে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।তবে, আর না এবার নুনের মধ্যে জল পড়ে যায় তাহলে নুন ফেলে না দিয়ে এই উপায়টা ট্রাই করুতে পারেন। যাতে নুন ফেলা যাবে না।জল লেগে যাওয়া নুন ঠিক করতে মিনিট ২০ সময় লাগবে। সবার প্রথমে একটি বড় কড়াই বা প্যান নিয়ে তা গরম করুন। হালকা গরম করতে হবে।সেটায় ভেজা নুন ঢেলে দিয়ে আঁচ কমিয়ে ক্রমাগত ৫ থেকে ১০ মিনিট নাড়তে থাকবেন। ক্রমাগত না নাড়লে নিচের দিকে থাকা নুন পুড়ে যাবে। ঝুরঝুরে হওয়া অবধি নাড়তে হবে কম আঁচে।.সমস্ত লবণ গরম হয়ে গেলে জল শুষে যাবে। তারপর এটি একটি শুকনো থালায় ঢেলে ঠাণ্ডা করতে হবে ঘরের তাপমাত্রায়। সম্পূর্ণ ভাবে ঠাণ্ডা করতে হবে। একটুও যেন গরম না থাকে।তারপর নুনের পাত্রে ঢেলে নিলেই কাজ শেষ। তবে, দেখতে হবে পাত্রে যেন তাতে জল না থাকে।
রান্না করতে কম-বেশি সকলেই পচ্ছন্দ করে। কিন্তু রান্নার করার পর সবচেয়ে কঠিন কাজ হল গ্যাসের বার্নার পরিষ্কার করা। কারণ রান্নার সময় তেল, মশলা বা খাবার গ্যাসে পড়ে এবং আগুনের কারণে এসব জিনিসও পুড়ে যায়।পোড়া বার্নার পরিষ্কার করা শুধু কঠিনই নয়, পোড়া খাবার দূর করতেও অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তবে, এবার থেকে এই একটি টিপসে সাহায্যে সহজেই গ্যাস পরিষ্কার হবে।গ্যাস বার্নার পরিষ্কার না করলে তাতে ময়লা জমে এবং এটা জ্যাম হতে থাকে। এই ক্ষেত্রে, আপনি বার্নার প্রথমে সরিয়ে ফেলুন এবং এটি পরিষ্কার করুন। প্রথমে পেছন থেকে গ্যাস বন্ধ করে দিন। এবার খুব সাবধানে বার্নার খুলে ফেলুন। তারপর ডিটারজেন্ট লাগিয়ে কলের নিচে রেখে ধুয়ে ফেলুন।এছাড়াও, একটি পাত্রে ভিনেগার রাখুন এবং এটি ভিজিয়ে রেখে দিন তাতে এক ঘণ্টা। তারপরে একটি শক্ত স্পঞ্জ বা পুরানো টুথব্রাশ দিয়ে আলতো করে স্ক্রাব করুন। করার পর এটি চলমান জলের নীচে পরিষ্কার করুন। জল শুকিয়ে গেলে ভালো করে শুকনো কাপড় দিয়ে মুছুন।প্রতিদিন বার্নার ভালভাবে মুছে নিলে বেশি নোংরা হবে না। যদি এটি প্রতিদিন সম্ভব না হয় তবে সপ্তাহে অন্তত একবার একটি পুরো পরিষ্কার করুন।
শীতকাল মানেই পিঠে। আর পিঠে বানানো যথেষ্ট পরিশ্রমের কাজ। তাই একবারে সবাই একবারে অনেকগুলো বানিয়ে রাখে। কিন্তু সকালে বানালে বিকেলের মধ্যে তা শক্ত বা নরম হয়ে যায়। পিঠে সংরক্ষণের সঠিক উপায় অনেকেরই অজানা। তাই কীভাবে পিঠে সংরক্ষণ করবেন চলুন জেনে নেওয়া যাক।১. ভাপা পিঠে যেভাবে স্টোর করবেনঃ ভাপা পিঠা বানানোর পর ঠাণ্ডা করে বক্সে ভরে ফ্রিজে রাখতে হবে। তারপর যখন খাওয়ার ইচ্ছে হবে মিনিট দশেক আগে বের করে রাখতে হবে। এবার একটা রাইস কুকার বা প্রেশার কুকারে কাপড় প্যাচিয়ে দিয়ে পিঠে ভাঁপে বসিয়ে দিন। তেমন কিছু না থাকলে পাত্রে জল দিয়ে উপরে পিঠের বাটি রেখে ভাপ দিতে পারেন। এটি ৫-৬ মিনিটের জন্য করবেন। আপনার ভাপা পিঠাও একদম আগের মত খেতে লাগবে।২. তেলের পিঠে সংরক্ষণঃ তেলের পিঠা সংরক্ষণ করা খুবই সহজ। তেলের পিঠা বানিয়ে টিস্যু পেপারে রেখে ঠাণ্ডা করে বক্সে করে ফ্রিজে রাখুন। নর্মাল গ্যাসে প্যান বসিয়ে এগুলোকে ফ্রিজ থেকে বের করার মিনিট ১০ পরে গরম করে খেতে পারবেন। তাই এবার থেকে তিলের পিঠা বানালে একবারে অনেকটা বানিয়ে রেখে দিন।৩. চিতই পিঠে সংরক্ষণঃ বানিয়ে ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করবেন। চিতই পিঠে নরম করতে হলে এটি ভাপে বসিয়ে গরম করুন। তবে অনেকেই আছেন যারা এই পিঠার নিচের দিকটা শক্ত রাখতে চাইলে চিতই পিঠে গ্রিলে বসিয়ে কিছুক্ষণ এপিঠ ওপিঠ সেঁকে নিলেই হবে। একদম তাজা বানানো পিঠা বলে মনে হবে। চাইলে চিতই পিঠা ডিপ ফ্রিজে রেখে দিয়েও সংরক্ষণ করতে পারেন।৪. সেদ্ধ পিঠেঃ সেদ্ধ পুলি-পিঠা বানানোর পর তা ঠাণ্ডা করে ফ্রিজে রেখে দিন। সেদ্ধ পুলি-পিঠা নরম করতে ভাপে গরম করুন। এই ভাবে পুলি-পিঠা দ্রুত তাজা করা যায়।
শীতকালে বেশি জল ঘাঁটলে হাত শুকিয়ে যায়, রুক্ষ হয়ে যায় এবং মাঝে মাঝে চুলকানি অনুভব হয়। মূলত নিয়মিত থালা-বাসন ধুয়ে থাকলে বাড়িতে এই সমস্যাগুলি হয়।কিছু মানুষের ত্বক সংবেদনশীল এবং তরল সাবানে উপস্থিত রাসায়নিকগুলির ফলে জ্বালা সৃষ্টি করতে পারে। তাই, বাসন মাজার সময় সহজ টিপসগুলো মাথায় রাখলে দারুণ কাজে হবে।১. এক জোড়া মোটা ডিশ গ্লাভসঃ বাসন মাজার সময় হাতে মোটা ডিশ গ্লাভস পরতে হবে। যাতে থালা ধোয়ার সাবান হাতের সংস্পর্শে না আসে। তবে এই গ্লাভস কিন্তু দারুন কাজ করে। হাতে এক বিন্দু সাবান লাগবে না। ফলে হাত শুকিয়ে যাওয়া বা চুলকানি হওয়ার সম্ভবনা থাকবে না।২. ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন বাসন মাজার আগেঃ পাত্র ধুতে যাওয়ার আগে, ময়েশ্চারাইজারের একটি পুরু স্তর হাতে প্রয়োগ করুন। বিশেষত এমন কিছু যাতে শিয়া বাটার থাকে। ফলে অতিরিক্ত জল আর সাবান হাতে লাগলেও কোন ভয় নেই। তাছাড়া এতে করে হাত যথেষ্ট নরম ও সুন্দর থাকে।৩. গরম জল ব্যবহার করুনঃ বাসন ধোয়ার পরে ভাল করে হালকা গরম জলে হাত ধুয়ে নিন। তারপর হাত মুছে একদম শুকিয়ে নেবেন। যেকোনও ক্রিম হাতে লাগিয়ে ভাল করে ঘষে নিন। দেখবেন হাত শুষ্ক হচ্ছে না বা চুলকাচ্ছে না। রোজ গাদা গাদা ঘরের বাসন মাজার পর শীতকালে তো এটা করলে আরাম পাবেন।অনেকেই, পেট্রোলিয়াম জেলির আশ্রয় নেয় শুষ্কতাকে কাটানোর জন্য। যদিও এটি ক্ষণস্থায়ী সুরক্ষা প্রদান করতে পারে, কিন্তু ত্বকের ক্ষতি করে। এটি দীর্ঘমেয়াদে শুষ্কতাকে কমায় না বরং ত্বকে খারাপ করে।