উত্তর ২৪ পরগনা: ভারতের উষ্ণ গ্রীষ্মের মিষ্টি ও রসালো ফল লিচু। আমের পরেই বোধহয় লিচুর জনপ্রিয়তা। স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় এই পুষ্টিকর ফলটির কদর আছে সারা বিশ্বে। পশ্চিমী দুনিয়ার কাছে লিচু রোমান্টিক ফল হিসেবেও বিবেচিত হয়। সেই লিচু চাষের হাত ধরেই ভাগ্য ঘুরেছে বাংলার কৃষকদের।
খুব সহজেই লিচু চাষ করা যায়। হাড়োয়ায় দিন দিন বাড়ছে লিচু চাষ। বছরে একটি নির্দিষ্ট সময়ে লিচুর চাষ হলেও এর চাহিদার পাশাপাশি দামও ভাল পাওয়া যায়। আর তাই হাড়োয়ার বকজুড়ি গ্রামে বাড়িতে বাড়তি লিচু চাষ হচ্ছে। ধানের মত চিরাচরিত চাষ বাদ দিয়ে লিচু চাষের দিকে ঝুঁকছেন কৃষকরা। একটু পরিচর্যা করলেই স্বল্প খরচ ও অল্প পরিশ্রমে সহজেই লিচু চাষ করা যায়। ইতিমধ্যে সবুজ লিচুর কুঁড়ি শোভা পাচ্ছে গাছে। এবার ঝড়-বৃষ্টিও তেমন হয়নি। তাই লিচুর ফলন ভাল হবে বলে আশায় কৃষকরা। কোনও বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার লিচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: গভীর জঙ্গলে বাস, জলের কষ্ট বারোমাস
গ্রীষ্মের রসালো ফল লিচু এখন ঝুলছে হাড়োয়ার বকজুড়ি এলাকার গাছে গাছে। উৎপাদিত লিচু স্থানীয় বাজার সহ বিভিন্ন রাজ্যের ব্যবসায়ীদের কাছেও বিক্রি করছেন কৃষকরা। এলাকায় ঋতুভিত্তিক চাষের পাশাপাশি বাড়িতে বাড়তি জমি থাকলে সেখানে বিভিন্ন ফলের গাছের পাশাপাশি লিচু গাছ রোপন করে এভাবেই বাণিজ্যিকভাবে লাভের দিশা দেখছেন এলাকার মানুষ।
জুলফিকার মোল্যা
মালদহ: কীট-পতঙ্গের পরাগ সংযোগের ফলে মধু তৈরি হয় লিচুর মুকুলে। এই আঠা বা মধু আবার লিচুর ফলনের জন্য ক্ষতিকর। অর্থাৎ মুকুলে মধু থাকলে পর্যাপ্ত পরিমাণে গুটি আসে না। লিচুর ফলন কম হয়। তাই এই সময়ে লিচু চাষিদের বাগানে জল স্প্রে করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু চলতি মরশুমে লিচুর মুকুল থেকে গুটি আসার সময়ে মালদহে বৃষ্টি হয়েছে, যা লিচু চাষের পক্ষে অনুকূল।
আরও পড়ুন: ইনডোর গেম টেবিল টেনিসে ঝুঁকছে নতুন প্রজন্ম
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন এই বৃষ্টির ফলে, মুকুলের মধ্যে যে সমস্ত আঠা বা মধু ছিল তা ধুয়ে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। এতে লিচুর গুটি আসতে আর কোনও সমস্যা হবে না। এমনকি গত কয়েকদিন ধরে মালদহ জেলা জুড়ে বৃষ্টিপাত হলেও আকাশ পরিষ্কার থেকেছে। রোদ ঝলমলে পরিবেশ মাঝেমধ্যেই দেখা দিয়েছে। এই ধরনের আবহাওয়া লিচু চাষের পক্ষে অনুকূল, বলছেন উদ্যান পালন দফতরের কর্তারা। মালদহ জেলা উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক সামন্ত লায়েক বলেন, বৃষ্টির জন্য লিচুর মুকুল পরিষ্কার হচ্ছে। মধু বা আঠা ধুয়ে যাচ্ছে। এতে লিচুর গুটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। এই সময় আমরা কৃষকদের লিচু বাগানে জল স্প্রে করার পরামর্শ দিয়ে থাকি। বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় আর জল স্প্রে করতে হবে না।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
মালদহ জেলায় রাজ্যের সবচেয়ে বেশি লিচু চাষ হয়ে থাকে। মূলত কালিয়াচক অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি লিচু চাষ হয়। কালিয়াচক-১, কালিয়াচক-২, কালিয়াচক- ৩ ও রতুয়া-১ ব্লকে জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লিচু চাষ হয়। এই বছর মালদা জেলায় মোট ১৬০০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়েছে। জেলায় মূলত বোম্বাই ও গুটি প্রজাতির লিচু চাষ হয়। গত বছর মালদহ জেলায় লিচুর ফলন হয়েছিল ১৪ হাজার ২০০ মেট্রিক টন। এই বছর জেলার আবহাওয়া অনুকূল থাকায় বাগানগুলিতে ভাল মুকুল এসেছে। এমনকি এখন পর্যন্ত আবহাওয়া লিচু চাষের পক্ষে অনুকূল। যদি কোনও প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হয় এবং আগামীতেও আবহাওয়া অনুকূল থাকে তাহলে এই বছর মালদহ জেলায় প্রায় ১৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন লিচু উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হরষিত সিংহ
পূর্ব বর্ধমান: ইতিমধ্যেই একটু একটু করে গরম পড়তে শুরু করেছে। আর কিছুদিন দিন পরেই শেষ হবে বসন্তের মরশুম। আর গরমকাল মানেই আম, জাম, কাঁঠাল-সহ আরও বেশ কিছু ফল। তবে গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে অন্যতম একটি ফল হল লিচু। কম বেশি অনেকেই আছেন যাঁরা লিচু খেতে ভালোবাসেন। গ্রীষ্মকালীন এই ফল রসালো এবং স্বাদে মিষ্টি হওয়ার কারণে অনেকেই খেতে বেশ পছন্দ করেন। তবে সাধারণত এই ফল কিনেই খেতে হয়। কিন্তু এবার আর লিচু কিনে খাওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।
স্বল্প মূল্যে বাড়িতেই বসাতে পারবেন লিচু গাছ। তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই । সাধারণত সকলেই জানেন যে লিচু গাছ আকারে বেশ বড় হয়। কিন্তু এই প্রতিবেদনে যে লিচু গাছের কথা জানানো হবে সেই গাছ খুব বেশি বড় হবে না। বাড়িতে অল্প জায়গার মধ্যেই এই গাছ লাগানো যাবে। পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার দেবারুন নার্সারিতে এই লিচু গাছ পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রসঙ্গে নার্সারির কর্ণধার দেবেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী বলেন, যে লিচু গাছ পাওয়া যাচ্ছে সেটা হল বোম্বাই এবং আতা বোম্বাই প্রজাতির লিচু গাছ। আগেকার দিনের মতবিশাল বড় আকারের এই গাছ হবেনা। মাঝারি আকারের এই গাছ হবে । ৮ ফুট উচ্চতার মধ্যে ভাল মানের লিচু পাওয়া যেতে পারে।
এই লিচু গাছ খুবই কম টাকার মধ্যেই পাওয়া যাবে। নার্সারির কর্ণধারের কথায় ৩৫ টাকা , ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫০ টাকা দামের গাছও রয়েছে। কেউ যদি এখন এই গাছ কেনেন তাহলে খুব তাড়াতাড়িতাঁরা ফলন পাবেন। কারণ বর্তমানে গাছের মধ্যে ফুল ধরেই রয়েছে। গাছের উচ্চতা খুব বেশি হবে না। বাড়ির মধ্যে ছোট্ট বালতি, টব অথবা প্যাকেটের মধ্যেই এই গাছ লাগানো যাবে। তবে গাছ ছোট হলেও জানা গিয়েছে, এই লিচু গাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে ফলন পাওয়া যাবে। এই প্রসঙ্গে নার্সারির কর্ণধার দেবেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী আরও বলেন, ৭/৮ ইঞ্চি প্যাকেটে এক গাছ এমনিতেই ভাল ফলন দেবে।
তবে যদি আরও একটু বড় প্যাকেটে লাগানো যায় তাহলে দারুণ ফলন পাওয়া যাবে এই গাছ থেকে। তবে সঠিক ভাবে পরিচর্যা করতে হবে।ইতিমধ্যেই বাজারে এই লিচু গাছের ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। কমবেশি অনেকেই এই গাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বাড়িতে। উপহার দেওয়ার জন্যও অনেকে এখন এই লিচু গাছ বেশ পছন্দ করছেন। লিচু গাছ কেনার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন 74781 59992 এই নম্বরে।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী