পশ্চিম মেদিনীপুর: ঘাটাল এবং বন্যা পারস্পরিক সমার্থক। প্রতিবছর বর্ষার সময় এলেই দুশ্চিন্তার কালো মেঘ জমে থাকে এখানকার বাসিন্দাদের মনে।প্রতিবছর নদীগর্ভে চলে যেত বসতবাড়ি। বাঁধের ধস ধীরে ধীরে আতঙ্কিত করত এলাকার মানুষকে। এবার স্বস্তির খবর দিল প্রশাসন।
আরও পড়ুন: খেলার মাঠ দখল করে পার্কিং জোন! তারপর যা হল…
শিলাবতী নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে নদী বাঁধ। কয়েকদশক ধরে এই নদী বাঁধ মেরামতের দাবি জানিয়ে আসছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এই নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন থেকে জেলা, এমনকি রাজ্যস্তরেও বিভিন্ন দফতরে ভাঙন রোধে আবেদন করা হয়। তবে সম্প্রতি লক্ষাধিক টাকা ব্যয়ে চন্দ্রকোনার রাধানগরে শিলাবতী নদীর ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। কয়েকদশক পর নদী ভাঙন রোধে কাজ শুরু হওয়ায় বর্ষায় ভাঙনের আশঙ্কা ও দুঃশ্চিন্তা থেকে রেহাই পেতে চলেছেন এলাকার বাসিন্দারা। আর এতেই খুশি ছড়িয়েছে এলাকায়।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা-২ ব্লকের বসনছোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রাধানগর গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলাবতী নদী। তিন দশকেরও উপর এই শিলাবতী নদীর বাঁধের ভাঙন দেখে আসছেন রাধানগর গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের দাবি, দশকের পর দশক ধরে রাধানগর গ্রামে শিলাবতী নদীর পাড় বন্যার সময়ে ধসে যায়। বর্তমানে বসতবাড়ির দোরগোড়ায় এসে পৌঁছেছে নদী। বাসিন্দাদের দাবি, আগে নদীর ধারে রায়ত জায়গা ছিল। তাতে বসতবাড়ি থেকে কৃষি জমিও ছিল। কিন্তু প্রতিবছর বন্যায় নদীর পাড় ধসে গিয়ে নদী গর্ভে চলে গিয়েছে। গিয়েছে বসতবাড়ি থেকে কৃষি জমি।রাধানগর এলাকার বিপজ্জনক এই নদীর বাঁধ বাঁধার জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা স্থানীয় প্রশাসন থেকে জেলা, এমনকি রাজ্য প্রশাসন পর্যন্ত জানিয়েছিলেন। তবে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের তরফে একশো দিনের কাজে মাঝে মধ্যে নদী বাঁধে মাটি ফেলে সাময়িক মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা টেকেনি। অবশেষে রাধানগর গ্রামে শিলাবতী নদীর ভাঙন ঠেকাতে উদ্যোগী হল সেচ দফতর। ব্লক প্রশাসন সূত্রে খবর, রাজ্যের অনুমোদন পাওয়ার পর গড়বেতা, আমলাগোড়া সেচ দফতর, চন্দ্রকোনার রাধানগর গ্রামে শিলাবতী নদীর ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেছে। ১৫০ মিটার বাঁধ বাঁধার জন্য প্রায় ৫৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
নদী বাঁধ বাঁধার কাজ আগে হয়নি কখনও। বহু বছর পর সরকার নদী ভাঙন রোধে উদ্যোগী হওয়ায় খুশি বাসিন্দারা। তবে বোল্ডার, মোরাম ব্যবহার করে এই বাঁধ মেরামত করা হলে তাতে মেরামতের কাজ আরও পাকাপোক্ত হত বলে জানাচ্ছেন বাসিন্দারা। এলাকাবাসীর দাবি, বহু বছর ধরে এই নদীর পাড় ধসে গভীর খাদে পরিণত হয়েছে। তার উপরে রয়েছে কয়েকটি বসতবাড়ি ও কৃষি জমি। এই বাঁধ মেরামতের কাজ সম্পন্ন হলে তারা রেহাই পাবেন।আর সামান্য কয়েক মাস পরেই শুরু হবে বর্ষাকাল। স্বাভাবিকভাবে এর আগে কিছুটা স্বস্তি নদীর পাড়ের মানুষজনের।
রঞ্জন চন্দ