Tag Archives: traditional Puja

Nadia News: প্রাচীন রীতি মেনে কুমারী কন্যাকে পুজো করা হয় শান্তিপুরের রাধাগোবিন্দ মন্দিরে

মৈনাক দেবনাথ, নদিয়া: শান্তিপুর বাইগাছিপাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দিরে চলছে কুমারী পুজো। বসন্ত নবরাত্রি অর্থাৎ বাসন্তী পুজো বলা হয়ে থাকে এই পুজোয়। এই পুজোর একটি বিশেষত্ব হল কুমারী পুজো। পুজোর একদম শেষ লগ্নে এক কুমারী মেয়েকে পুজো করা হয়। সংকল্পে বলা হয় এই পুজো করার সময় যদি কোনও ত্রুটি বিচ্যুতি হয়ে থাকে তাহলে এই কুমারী পুজোর দ্বারা এই পুজো পরিপূর্ণতা লাভ করে থাকে। ১১ বছরের একটি কুমারী মেয়ে রুদ্রাণীকে এদিন পুজো করা হয় কুমারী রূপে শান্তিপুর বাইগাছি পাড়া রাধাগোবিন্দ মন্দিরে। পুজোর সময় বয়স অনুযায়ী নামকরণ করা হয় কুমারী মেয়েদের।

পূজারী মহারাজ শচীনন্দন দাস ব্রহ্মচারী জানান, যেই কুমারী মেয়েকে পুজো করা হয়ে থাকে তার জন্য থাকে একাধিক বিশেষ উপকরণ। পূজারী মহারাজ শচীনন্দন দাস ব্রহ্মচারী জানান, ১৬ টি উপাচার দ্বারা পুজো করা হয়ে থাকে কুমারী মেয়ের। বাদ্য, অর্ঘ্য আচমনি, মধুমনি, বস্ত্র, আবরণ, শাখা, গলার মালা, বিল্বপত্র, পুষ্প, গন্ধ, সঙ্গে ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য, তাম্বুল, পান, দূর্বা এবং তিনি যা যা খেতে ভালবাসেন সেই সমস্ত দ্রব্য তাকে গ্রহণ করানো হয়।

আরও পড়ুন : তাপমাত্রার দৌড়ে জয়সলমেরকে টেক্কা মেদিনীপুরের! বাংলার ১৪ জায়গায় ৪০ ডিগ্রি পার হল পারদ! দহনজ্বালা থেকে মুক্তি কবে, জানুন আপডেট

আমরা তো প্রতিটা মানবের মধ্যেই দেবীকে দর্শন করার চেষ্টা করি। বিশেষ করে বাঙালিদের ক্ষেত্রে কারণ বাঙালিরা খুবই আবেগপ্রবণ বাঙালিরা দু’বছরের একটি মেয়েকেও মা বলে থাকে আবার ৮০ বছরের একটি মেয়েকেও মা বলে ডাকে। সেই কারণে বাঙালিদের কাছে কুমারী পুজো একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

Gambhira Festival: দুই বোনের সে কী ঝগড়া! গম্ভীরা উৎসবেই শুধু এক হন চামুন্ডা ও বুড়াকালী

মালদহ: পাশাপাশি দুই পাড়ায় রয়েছে চামুন্ডা ও বুড়াকালি। স্থানীয়দের কাছে তাঁরা দুই বোন হিসাবেই পরিচিত। দুই বোন হলেও তাঁদের মধ্যে নাকি তুমুল ঝগড়া। শুধুমাত্র গম্ভীরা উৎসবেই নাকি তাঁদের দেখাহয়। এই বিশ্বাসেই আজও পুরাতন মালদহের গম্ভীরা উৎসবে চামুন্ডা ও বুড়াকালির নৃত্য দেখতে বহু মানুষ ভিড় করেন।

বহুদিন ধরে চলে আসা নিয়ম মেনে পুরাতন মালদহে পালিত হয়ে আসছে গম্ভীরা উৎসব। মালদহের প্রাচীন লোকউৎসব এই গম্ভীরা। বৈশাখ মাসের প্রথম সপ্তাহে অনুষ্ঠিত হয় এই গম্ভীরা উৎসব। গম্ভীরা উপলক্ষে পুরাতন মালদহের প্রতিটি মানুষ বাড়ি ফিরে আসেন এই সময়। গম্ভীরা উৎসবের মূল আকর্ষণ মুখা নাচের। বিভিন্ন দেব-দেবী সেজে, মুখোশ পরে নৃত্য করা হয় গম্ভীরা উৎসব উপলক্ষে। সেগুলির মধ্যে বিখ্যাত চামুন্ডা নৃত্য, বুড়াবুড়ি, পরীনৃত্য এছাড়াও বিভিন্ন রকম নাচ করা হয় গম্ভীরা উৎসব উপলক্ষে।

আর‌ও পড়ুন: ছাদ বাগানে এই পদ্ধতিতে লঙ্কা গাছ লাগালে প্রচুর ফলন, আর বাজার থেকে কিনতে হবে না

স্থানীয় বাসিন্দা পঙ্কজ কুমার সরকার বলেন, এলাকায় প্রাচীন কাল থেকে গম্ভীরা উৎসব হয়ে আসছে। বাচামারি গম্ভীরা উৎসবের মূল আকর্ষণ চামুন্ডা ও বুড়াকালি দুই বোনের নৃত্য। কথিত আছে, পুরাতন মালদহের বাচামারি এলাকায় মহানন্দা নদীর ঘাট থেকে দেবী কালীর ভিন্ন ভিন্ন সাতটি মুখ ভেসে আসে। স্থানীয় মন্দিরের পুরোহিত সেগুলি নদীর ঘাট থেকে পান। তখনই দেখা যায় চামুণ্ডা আর বুড়িকালীর মুখ যতবার পাশাপাশি রাখা হচ্ছিল, ততবারই দুটি মুখ দূরে সরে যাচ্ছিল৷ অগত্যা দুটি মুখ দুই জায়গায় রাখা হয়৷

হরষিত সিংহ

Traditional Puja: বসেছে জমজমাট মেলা, নামখানায় ‘কাঁকড়াবুড়ির পুজো’ উপলক্ষে ৫০ হাজার পুণ্যার্থীর সমাগম

নবাব মল্লিক, নামখানা: নামখানার ঐতিহ্যবাহী পুজো হল কাঁকড়াবুড়ির পুজো। প্রতি বছর এই পুজো উপলক্ষে এলাকায় উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। এক সপ্তাহ ধরে চলে মেলা। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে নামখানার শিবনগর আবাদে শুরু হয় এই পুজো। এলাকায় তখন বসন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। সেই রোগের হাত থেকে বাঁচতে মেদিনীপুর থেকে আসা এক তান্ত্রিক পুরোহিতের কথা অনুসারে শুরু হয়েছিল পুজো। আসলে কাঁকড়া বুড়ি আর কেউ নন, দেবা শীতলা।

কথিত, এই পুজোর প্রথম বর্ষে যখন ঘটোত্তোলন করা হচ্ছিল তখন আকাশে দেখা দিয়েছিল শঙ্খচিল, ঘটে বসেছিল কাঁকড়া। সেই থেকেই এই দেবীর এই রকম নাম হয়। সেই প্রথা পালন করা  হয় এখনও।  স্থানীয়দের দাবি, এখনও পুজোর ঘটোত্তোলনের সময় আসে কাঁকড়া। এই মন্দিরে এখনও ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয় কাঁকড়াভোগ। এলাকার মানুষজনের কাছে এই কাঁকড়াবুড়ি খুবই জাগ্রত দেবী।

আরও পড়ুন : যতই ভাল লাগুক, ভুলেও মুগডাল খাবেন না এঁরা! জানুন কারা মুগডাল খেলেই সর্বনাশ! হবে বড় বিপদ

বর্তমানে এই পুজো উপলক্ষে মেলা বসে। প্রায় এক সপ্তাহ জুড়ে চলে মেলা। এ বছর প্রায় ৭০০-র বেশি দোকান ও প্রায় পঞ্চাশ হাজার পুণ্যার্থী এখানে এসেছেন। বর্তমানে নামখানা নয়, এই কাঁকড়াবুড়ির পরিচিতি ছড়িয়েছে জেলার অন্যান্য জায়গাতেও। তাহলে আর দেরি কিসের! ঘুরে আসুন নামখানার এই মন্দির থেকে।

Old Rituals: বাবা পঞ্চাননের আশীর্বাদে মনস্কামনা পূরণে মাথায় মালসা রেখে ধুনো পোড়ান ভক্তরা

সুমন সাহা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। দুর্গা পূজা, কালী পুজো , লক্ষ্মীপুজো এই ধরনের পুজো আমরা জানি তবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার অন্যতম এক লৌকিক দেবতা হলেন বাবা পঞ্চানন। আর এই পঞ্চানন বাৎসরিক পুজোতে মানুষের মানত পূর্ণ করতে মাথার উপর মালসা দিয়ে ধুলো পুড়িয়ে দেবতাকে নিবেদন করেন বিভিন্ন ভক্তরা।

কেনই বা এই ধুলো পোড়ানো বা এই ধুনো কি? ধুনো শব্দের অর্থ গন্ধ দ্রব্য বিশেষ যা শালগাছের নির্যাস। রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের সমকালীন, জনপ্রিয় বনেদি বাড়ির পুজো জলেশ্বরীর পুজো প্রসঙ্গ এলেই ‘ধুনো পোড়া’-র কথা শোনা যায়। এই পুজোর ঐতিহ্যে এক বিশেষ আকর্ষণ ‘ধুনো পোড়া’। ভক্তরা বাবা পঞ্চাননের কাছে মানত করেন ধুনো দেওয়ার, আর মানত পূরণ হলে দেবীকে ধুনো অর্পণ করেন।

আরও পড়ুন : বিধিনিষেধ পেরিয়ে বৈদিক রীতি মেনে উপনয়নে পৈতে পরল ছকভাঙা চিকিৎসক দম্পতির মেয়ে

ভক্তদের মানত পূরণ হলে তাঁরা সরা নিয়ে বসেন বাবা পঞ্চাননের সামনে। এই সরায় আগুনে দেওয়া হয় ধুনো। ধুনোর আগুন যত উঁচুতে ওঠে, ততই শুভ বলে মনে করা হয়। প্রতি বছর এই ধুনো পোড়া স্বচক্ষে দেখতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলার বিভিন্ন স্থানে থেকে এই বাবা পঞ্চাননের মন্দিরে ভিড় করেন হাজার হাজার মানুষ। দক্ষিণ ২৪ পরগনার এই পঞ্চানন বাস্তু দেবতা বলে প্রচলন আছে। মহিলারা ধুনো পোড়া প্রথা পালন করতে – দু হাতে দুটি সরা ও মাথায় একটি মালসা, কূল কাঁটায় আগুন জ্বেলে তাতে ধুনো দিতে থাকেন ব্রাহ্মণ। পুরোহিত বা ব্রাহ্মণ ধুনো পোড়া অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি করেন একটি মালসা ও দুটি সরায় কুল কাঁটার ছোট ছোট টুকরো ভর্তি করে। এভাবেই আজও এই মানত পূরণের কথা চলে আসছে।