Tag Archives: Heritage

House House: নীলদর্পণ স্মৃতিতে থাকলেও হারিয়ে যাচ্ছে দীনবন্ধু মিত্রের ভিটে 

দিন কয়েক আগেই গিয়েছে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ পরিচিত নাট্যকার ও কবি দীনবন্ধু মিত্রের জন্মদিন। তাঁর স্মৃতি বইয়ের পাতায় থাকলেও, ধ্বংসের পথে সাহিত্যিক দীনবন্ধু মিত্রের হেরিটেজ তকমা পাওয়া বাসভবন
দিন কয়েক আগেই গিয়েছে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ পরিচিত নাট্যকার ও কবি দীনবন্ধু মিত্রের জন্মদিন। তাঁর স্মৃতি বইয়ের পাতায় থাকলেও, ধ্বংসের পথে সাহিত্যিক দীনবন্ধু মিত্রের হেরিটেজ তকমা পাওয়া বাসভবন
জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে এই ভগ্নপ্রায় প্রাচীন অট্টালিকা। কিন্তু, তার প্রতিটি ইটের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে রয়েছে নানা ইতিহাস। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে জেলারই এক ঐতিহাসিক স্থান
জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে এই ভগ্নপ্রায় প্রাচীন অট্টালিকা। কিন্তু, তার প্রতিটি ইটের রন্ধ্রে রন্ধ্রে জড়িয়ে রয়েছে নানা ইতিহাস। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কালের গর্ভে হারিয়ে যেতে বসেছে জেলারই এক ঐতিহাসিক স্থান
“নীলদর্পন” বইএর লেখক দীনবন্ধু মিত্রের বাড়িটি বর্তমানে কার্যত ভুতুড়ে বাড়ির রূপ নিয়েছে। বাড়ির গা বেয়ে নেমেছে গাছের ঝুরি। হেরিটেজ হিসেবে গণ্য হলেও দেখে বোঝার উপায় নেই
“নীলদর্পন” বইএর লেখক দীনবন্ধু মিত্রের বাড়িটি বর্তমানে কার্যত ভুতুড়ে বাড়ির রূপ নিয়েছে। বাড়ির গা বেয়ে নেমেছে গাছের ঝুরি। হেরিটেজ হিসেবে গণ্য হলেও দেখে বোঝার উপায় নেই
বনগাঁ মহকুমার অন্তর্গত গোপালনগর থানার চৌবেড়িয়া গ্রামে দীনবন্ধু মিত্রের বাসভবনের অবশিষ্ট অংশ পড়ে রয়েছে তেরো কাঠা এলাকা জুড়ে। বনগাঁ শহর থেকে বাইশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চৌবেড়িয়া তাঁর জন্ম ভিটে
বনগাঁ মহকুমার অন্তর্গত গোপালনগর থানার চৌবেড়িয়া গ্রামে দীনবন্ধু মিত্রের বাসভবনের অবশিষ্ট অংশ পড়ে রয়েছে তেরো কাঠা এলাকা জুড়ে। বনগাঁ শহর থেকে বাইশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চৌবেড়িয়া তাঁর জন্ম ভিটে
দীনবন্ধু মিত্রের নামে স্কুল, রাস্তার নামকরণ হয়েছে। দীনবন্ধু মিত্রের বর্তমান বংশধররা জানান, বাড়িটি হেরিটেজ হয়েছে অনেক আগেই, তবে হয়নি বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ বা সংস্কার। অবিলম্বে সরকারের তরফ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে সংস্কার করা হোক এই সাহিত্যিকের বাসভবন, চাইছেন পরিবারের সদস্যরা
দীনবন্ধু মিত্রের নামে স্কুল, রাস্তার নামকরণ হয়েছে। দীনবন্ধু মিত্রের বর্তমান বংশধররা জানান, বাড়িটি হেরিটেজ হয়েছে অনেক আগেই, তবে হয়নি বাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ বা সংস্কার। অবিলম্বে সরকারের তরফ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখে সংস্কার করা হোক এই সাহিত্যিকের বাসভবন, চাইছেন পরিবারের সদস্যরা
হেরিটেজ বাড়িটি অবিলম্বে সংস্কার না করা হলে এক সময় হারিয়ে যাবে এই ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন, এমনটাই দাবি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি করে আসলেও স্মৃতি আগলে রাখতে এখনও কোন উদ্যোগ নেই প্রশাসনের
হেরিটেজ বাড়িটি অবিলম্বে সংস্কার না করা হলে এক সময় হারিয়ে যাবে এই ঐতিহাসিক স্মৃতিচিহ্ন, এমনটাই দাবি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদেরও। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের দাবি করে আসলেও স্মৃতি আগলে রাখতে এখনও কোন উদ্যোগ নেই প্রশাসনের

Traditional Puja: বসেছে জমজমাট মেলা, নামখানায় ‘কাঁকড়াবুড়ির পুজো’ উপলক্ষে ৫০ হাজার পুণ্যার্থীর সমাগম

নবাব মল্লিক, নামখানা: নামখানার ঐতিহ্যবাহী পুজো হল কাঁকড়াবুড়ির পুজো। প্রতি বছর এই পুজো উপলক্ষে এলাকায় উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। এক সপ্তাহ ধরে চলে মেলা। ১৩৬৪ বঙ্গাব্দে নামখানার শিবনগর আবাদে শুরু হয় এই পুজো। এলাকায় তখন বসন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। সেই রোগের হাত থেকে বাঁচতে মেদিনীপুর থেকে আসা এক তান্ত্রিক পুরোহিতের কথা অনুসারে শুরু হয়েছিল পুজো। আসলে কাঁকড়া বুড়ি আর কেউ নন, দেবা শীতলা।

কথিত, এই পুজোর প্রথম বর্ষে যখন ঘটোত্তোলন করা হচ্ছিল তখন আকাশে দেখা দিয়েছিল শঙ্খচিল, ঘটে বসেছিল কাঁকড়া। সেই থেকেই এই দেবীর এই রকম নাম হয়। সেই প্রথা পালন করা  হয় এখনও।  স্থানীয়দের দাবি, এখনও পুজোর ঘটোত্তোলনের সময় আসে কাঁকড়া। এই মন্দিরে এখনও ভক্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয় কাঁকড়াভোগ। এলাকার মানুষজনের কাছে এই কাঁকড়াবুড়ি খুবই জাগ্রত দেবী।

আরও পড়ুন : যতই ভাল লাগুক, ভুলেও মুগডাল খাবেন না এঁরা! জানুন কারা মুগডাল খেলেই সর্বনাশ! হবে বড় বিপদ

বর্তমানে এই পুজো উপলক্ষে মেলা বসে। প্রায় এক সপ্তাহ জুড়ে চলে মেলা। এ বছর প্রায় ৭০০-র বেশি দোকান ও প্রায় পঞ্চাশ হাজার পুণ্যার্থী এখানে এসেছেন। বর্তমানে নামখানা নয়, এই কাঁকড়াবুড়ির পরিচিতি ছড়িয়েছে জেলার অন্যান্য জায়গাতেও। তাহলে আর দেরি কিসের! ঘুরে আসুন নামখানার এই মন্দির থেকে।

Heritage Local Fair: হিঙ্গলগঞ্জের শতাব্দী প্রাচীন দোল মেলার পরতে পরতে জড়িয়ে ইতিহাস

উত্তর ২৪ পরগনা: দোল চলে গেলেও এখনও হিঙ্গলগঞ্জে চলছে শতাব্দী প্রাচীন দোল মেলা। আর এই মেলার সঙ্গে জড়িয়ে আছে দারুন সব ইতিহাস। আজকের এই প্রতিবেদনে হিঙ্গলগঞ্জের দোল মেলার সেই সমৃদ্ধ ইতিহাসের কথা তুলে ধরা হবে আপনাদের সামনে।

সাজসজ্জায় শুধু দেবতাকে রাঙিয়ে তোলা নয়, দোল উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে জীবনের নানা রং। এই দোলকে কেন্দ্র করে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে বসে মেলার আসর। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার হিঙ্গলগঞ্জের এই দোল উৎসব বেশ বিখ্যাত। প্রত্যন্ত সুন্দরবন এলাকার হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি সহ বিভিন্ন দ্বীপ থেকে এই মেলায় আসেন হাজার হাজার ভক্ত। এই মেলার পাশেই বৃন্দাবনচন্দ্র জিউর মন্দির অবস্থিত। সেখানে রাধা-কৃষ্ণের বিগ্রহ রেখে চলে পুজো অর্চনা ও প্রসাদ বিতরণ।

আর‌ও পড়ুন: আউশগ্রামের জঙ্গলে ভয়াবহ আগুন, অনেক বুঝিয়েও সম্বল সেই ব্যর্থতা

দোল পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে আয়োজিত শতাব্দী প্রাচীন এই মেলায় এক সময় প্রতিবছর কোলকাতার চিৎপুর থেকে নাটকের দল আসত। যদিও বর্তমানে সেই নাট্যদলের দেখা না মিললেও মেলার আভিজাত্য মোটেও কমেনি। এক সপ্তাহ ধরে এই মেলা চলে। শতাধিক স্টল বসে এই মেলায়। মেলায় এক দিকে যেমন রয়েছে বিদ্যুৎচালিত নাগরদোলা, কিংবা ছোটদের মনোরঞ্জনের হরেক উপকরণ, তেমনই অন্য দিকে পাওয়া যায় পিতলের বাসনপত্র, কসমেটিক্সের স্টল, বেতের ধামা, সাজি থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় নানান জিনিস। সব মিলিয়ে দোল উপলক্ষে সুন্দরবন এলাকায় আয়োজিত এই মেলায় দ্বীপ অঞ্চল থেকে মানুষের ভিড় দেখা যায় যথেষ্ট।

জুলফিকার মোল্লা

Rang Panchami 2024: আসছে রং পঞ্চমীর পুণ্যতিথি, কী করলে সংসারে শান্তি আসবে, দূর হবে আর্থিক কষ্ট, জানুন

রঙ পঞ্চমীতে শিবলিঙ্গতে দিন জলের সঙ্গে তিল ও গুড়। শনি ও মঙ্গল গ্রহ শান্ত হবে।জানালেন জ‍্যোতিষী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী। ( প্রতিবেদন: অনন্যা দে)
রঙ পঞ্চমীতে শিবলিঙ্গতে দিন জলের সঙ্গে তিল ও গুড়। শনি ও মঙ্গল গ্রহ শান্ত হবে।জানালেন জ‍্যোতিষী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী। ( প্রতিবেদন: অনন্যা দে)

 

কিছু জায়গায় হোলির ৫ দিন পরে রংপঞ্চমীর উৎসবও উৎসাহের সঙ্গে পালিত হয়। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে, বিশেষ করে রংপঞ্চমীতে বিশেষ আয়োজন করা হয়।
কিছু জায়গায় হোলির ৫ দিন পরে রংপঞ্চমীর উৎসবও উৎসাহের সঙ্গে পালিত হয়। মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর শহরে, বিশেষ করে রংপঞ্চমীতে বিশেষ আয়োজন করা হয়।

 

জ‍্যোতিষী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী জানান,"রঙ পঞ্চমীতে আবীর দেওয়া উচিত ইষ্ট দেবতাকে।পাশাপাশি কুন্ডলিতে শনি ও মঙ্গলের অবস্থান খারাপ হলে শিবলিঙ্গে জল অর্পণ করতে হবে।"
জ‍্যোতিষী বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী জানান,”রঙ পঞ্চমীতে আবীর দেওয়া উচিত ইষ্ট দেবতাকে।পাশাপাশি কুন্ডলিতে শনি ও মঙ্গলের অবস্থান খারাপ হলে শিবলিঙ্গে জল অর্পণ করতে হবে।”

 

এই বছর রঙপঞ্চমী ২০২৪ সালের ৩০ মার্চ পালিত হবে। চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চমী তিথি ২৯ মার্চ ২০২৪ রাত ০৮ টা ২০ মিনিটে শুরু হবে এবং ৩০ মার্চ ২০২৪-এ পঞ্চমী তিথি শেষ হবে রাত ৯ টা ১৩ মিনিটে। এই অবস্থায় উদয় তিথি অনুযায়ী ৩০ মার্চ রঙপঞ্চমী উদযাপন করা উপযুক্ত হবে।
এই বছর রঙপঞ্চমী ২০২৪ সালের ৩০ মার্চ পালিত হবে। চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের পঞ্চমী তিথি ২৯ মার্চ ২০২৪ রাত ০৮ টা ২০ মিনিটে শুরু হবে এবং ৩০ মার্চ ২০২৪-এ পঞ্চমী তিথি শেষ হবে রাত ৯ টা ১৩ মিনিটে। এই অবস্থায় উদয় তিথি অনুযায়ী ৩০ মার্চ রঙপঞ্চমী উদযাপন করা উপযুক্ত হবে।

 

Heritage Tea Stall: বোলপুরের কালোর চা দোকানে গিয়েছেন? কবিগুরুর সঙ্গে সিংহল গিয়েছিলেন এই চা দোকানি

বীরভূম: বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রিয় লাল মাটির বোলপুর, শান্তিনিকেতন। এই পাশাপাশি দুই জায়গার আনাচে কানাচে লুকিয়ে রয়েছে কবিগুরুর বহু ইতিহাস। অনেকের কাছেই তা জানা, আবার অনেকের কাছে তা অজানা হয়ে রয়ে গিয়েছে। অনেকের মতো আপনিও হয়ত বোলপুরে বহুবার গিয়েছেন। কিন্তু কোন‌ও দিনঘুরে দেখেছেন কালোর চায়ের দোকান?

চায়ের দোকানের নাম শুনে মনে হতেই পারে এ আবার দেখার কী আছে! তবে এই চায়ের দোকানের মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে নানান অজানা ইতিহাস। শান্তিনিকেতনের রতনপল্লীর বেশ ভিতর দিকে অবস্থিত ‘কালোর দোকান’। সকালে এবং রাত্রে নিয়ম করে রোজ এই দোকানে চা বিক্রি হত এক সময়। চা বলতে শুধু লিকার চা। আর ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী মাঝে মাঝে লেবু চা। কয়েকটি বেঞ্চ আর টেবিল না থাকলে অবশ্য চায়ের দোকান বলে ঠাওর করা যেত না। কারণ, সেখানে রয়েছে বসবাস যোগ্য দুটি ঘর। যদিও সেখানে কেউ বাস করে না। দীর্ঘদিনের পুরানো বলে ঘরগুলিতে এখন জীর্ণতার ছাপ। কিন্তু, দুটি ঘরেই প্রবীণতার নানাবিধ বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। রবি ঠাকুরের প্রিয় এই ‘কালোর দোকান’।

আরও পড়ুন: আবার ধরা পড়ল চিতাবাঘ, একই চা বাগানে পরপর চারটে

কালোর উদ্দেশ্যে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতাও লিখেছিলেন। ১৯১৮ সালে ‘কালোর দোকান’ যাত্রা শুরু করেছিল শান্তিনিকেতন আশ্রমে। ওই আশ্রমে কবিগুরুর বৈঠকে চা সরবারহ করতেন কালিপদ দলুই ওরফে কালো। রবি ঠাকুরের নির্দেশেই তিনি আশ্রমের মধ্যেই খোলেন চায়ের দোকান। দেশ-বিদেশ থেকে কবিগুরুর কাছে আগত বহু গুণীজনকে তৃপ্তি দিয়েছে এই ‘কালোর চা’। অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর, রামকিঙ্কর বেজ, নন্দলাল বসু প্রমুখেরা ছিলেন কালিপদবাবুর নিয়মিত খদ্দের।

১৯৪০ সালে শান্তিনিকেতনে এসেছিলেন মহাত্মা গান্ধি। সেই সময় আতিথেয়তা রক্ষার্থে জাতির জনককে এই কালোর দোকানের চা খাইয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথ। সেই সময়ের ছবি এখনও ফ্রেমবন্দি হয়ে রয়েছে ‘কালোর দোকানে’র একটি ঘরে। ফ্রেমবন্দি কবিগুরু এবং জাতির জনক। বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চালু হওয়ার পর ১৯৫২ সালে আশ্রম থেকে রতনপল্লীতে স্থানান্তরিত হয় ‘কালোর দোকান’। এখন কালিপদবাবু আর ইহলোকে নেই। গুরুদেবের নির্দেশে চালু হওয়া দোকানটি অবশ্য কয়েক বছর আগেও রমরমিয়ে চলেছে।। কালিপদবাবুর জ্যেষ্ঠপুত্র মদন মোহন দলুই এই দোকানটি। কালিপদ দলুইয়ের চার ছেলের মধ্যে একমাত্র মদনবাবু ছাড়া আর কারোরই এই চায়ের দোকানের প্রতি তেমন আকর্ষণ ছিল না।

তাহলে প্রায় শতাব্দী প্রাচীন ‘কালোর দোকানে’র ভবিষ্যৎ এখন কী? সুমিতেন্দ্রনাথ ঠাকুর পাঠভবনে অমর্ত সেনের থেকে এক ক্লাস উঁচুতে পড়তেন। তাঁর লেখায় উল্লেখ পাওয়া যায় বিশ্বভারতীর কো-অপারেটিভ স্টোরের কথা, যা ‘কোয়াফ’ নামে পরিচিত ছিল। এই কোয়াফ-এর গায়ে একটা ছোট্ট মাটির ঘর ছিল। এক সময় সেটি ছিল হাবুর দোকান।এ ছাড়া আর কোনও দোকান সেই সময় ছিল না। পরে এই হাবুর দোকানের আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। শান্তিনিকেতনে সেই সময় সকলের আড্ডার জায়গা ছিল কালোর দোকান। তবে এই কালো কে?

জানা যায় কালো দলুই ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহচর। ভুবনডাঙার বাসিন্দা। রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সিংহল ভ্রমণও করেছেন। কালো’দা দোকান শুরু করেন -১৯১৮ সালে। এখন কালোর দোকান রতনপল্লীতে। কিন্তু কালোর দোকানের শুরু শ্রীসদন হস্টেলের পিছনে। তবে বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই পুরানো সেই দোকান দেখেননি। এখন তাঁরা দেখেছেন রতন পল্লীর কালোর দোকান। দুটো ঘর, বারান্দা আর সামনের অংশটুকু খড়ের চালা। সেখানে কতকগুলো বেঞ্চ আর টেবিল একপাশে উনুন আর মাটির জালা।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

বেঞ্চ আর টেবিল প্রতি বছর পৌষ মেলার সময় রং করা হত। তবে কালো’দা নেই বহুদিন হয়ে গেল। এখনও আড্ডা বসে। আগের জৌলুস নেই ঠিকই, কিন্তু রতনপল্লীতে কালো’দার নামের দোকান আজও আছে তবে, সেটা ধ্বংসাবশেষ। কালিপদবাবুর নাতি অমিত দলুই জানান, ১০০ বছরের পুরানো এই দোকান। গত তিন বছর ধরে তা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। তিনি ২০০৬ সাল পর্যন্ত বোলপুরের পৌষ মেলায় এই দোকানের স্টল খুলেছিলেন। কিন্তু কাজের ব্যস্ততায় আর চালু রাখা সম্ভব হয়নি। তিনি চান রাজ্য সরকার, কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এবং যে কোনও সংস্থা নিজেদের প্রয়াসে তাঁদের এই দোকানটি চালু করুক। কারণ এই দোকানের সঙ্গে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য জড়িয়ে আছে।

সৌভিক রায়

Indian Heritage: সেতু তবে এর কোন‌ও পিলার নেই! নৌকায় ভাসা ইংরেজ আমলের ঐতিহ্য আজও বহমান ঘাটালে

পশ্চিম মেদিনীপুর: আপনারা হয়ত সকলে কংক্রিট কিংবা বাঁশের সাঁকো দেখেছেন। কিন্তু সেই পুল বা সেতু যদি পিলার বিহীন বা কংক্রিটবিহীন হয়, তবে একটু অবাকই হতে হয়। এমনই একটি সেতু আছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায়। যা শুধু এই জেলার নয়, গোটা বাংলার মানুষের কাছে এক আশ্চর্যের নিদর্শন।

আরও পড়ুন: জল যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে ভূগর্ভস্থ নর্দমা চম্পাহাটিতে

নৌকোর উপর পাটাতন বিছানো। তার উপর দিয়ে দিব্যি হেঁটে চলেছে মানুষজন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে রয়েছে নৌকো দিয়ে নির্মিত ভাসাপুল। ঘাটাল শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিলাবতী নদী। সেই নদীর উপর বেশ কয়েকটি নৌকো দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে এমন‌ই একটি আস্ত সেতু। এটাই শুধু যাতায়াতের পথ নয়, গবেষকদের গবেষণা, এমনকি ভ্রমণপিপাসু মানুষদের কাছে এক আশ্চর্যের ঠিকানা।

ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, ইংরেজ আমলে শিলাবতী নদীর পশ্চিম পাড়ে ইংরেজ শাসক ওয়াটসন রেশম কুঠি নির্মাণ করেছিলেন। আর পূর্ব পাড়ে ছিল ইংরেজদের আবাসন। শিলাবতী নদীকে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য ব্যবহার করত ইংরেজ শাসকেরা। স্বাভাবিকভাবে নিত্যদিন নদী পারাপার একটি ঝক্কির ঘটনা ছিল। তখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে শিলাবতী নদীর উপর নৌকার দিয়ে সাঁকো বানানো হবে। সেই সময়ে আধুনিক প্রযুক্তি, কংক্রিটের ব্যবহার সে অর্থে না থাকায় নদীর উপর নৌকো দিয়ে তৈরি করা হয় এই ভাসাপুল। যা আজও বহাল তবিয়তে রয়ে গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, শিলাবতী নদীতে ৯-১০ টি নৌকোর উপর পাটাতন বিছিয়ে এই বিশেষ পুল তৈরি করা হয়। নদীর জলস্রোতের প্রবাহ ও জলস্তরের কারণে পুলটি ভাসমান অবস্থায় উঠানামা করার কারণে তার নাম ভাসাপুল। তবে ইংরেজ আমলে এই বিশেষ সেতু দিয়ে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের অনুমতি ছিল না। ভারতীয়দের মধ্যে সেই সময় একমাত্র ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এর উপর দিয়ে যেতে পারতেন। পরবর্তীতে ১৯০০ সালের প্রথম দিকে সাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় এই ভাসাপুল।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

১৭০ বছরেরও বেশি পুরানো এই ভাসাপুল ঘাটালবাসী সহ বিভিন্ন মানুষের পায়ে পায়ে জড়িয়ে রয়েছে। আবেগ, ঐতিহ্য নিয়ে এখনও তার স্মৃতি বজায় রেখেছে এই সাঁকো। বর্তমানে ঘাটাল পুরসভা এই সাঁকোর রক্ষণাবেক্ষণ করছে। ঘাটালের আবেগ, ঐতিহ্য যুগের পর যুগ বাঁচিয়ে রেখেছে স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসন। এটি আজও এলাকাবাসীদের গর্বিত করে।

রঞ্জন চন্দ