বিশ্বে বৈচিত্র্যের শেষ নেই৷ বিশ্বাস, অনুভূতি, সংস্কৃতির দিক দিয়ে প্রচুর পার্থক্য থাকে এক দেশ থেকে অন্য দেশে৷ তবে সাধারণত ক্যালেন্ডারের দিক দিয়ে এক সূত্রে বাঁধা থাকে সব দেশ৷ কিন্তু সেখানেও আছে ভিন্নতা৷ বিশ্বে এমন দেশও আছে যেখানে এক বছরে আছে ১৩ টা মাস৷ শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি৷ এখানেই শেষ নয়৷ এই দেশ ৭ বছর পিছিয়ে আছে বিশ্বের বাকি অংশের তুলনায়৷
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিও৷ সেখানে বলা হয়েছে ইথিওপিয়ার নিজস্ব ক্যালেন্ডারে আছে ১৩ টা মাস৷ ত্রয়োদশতম মাসে মাত্র ৫ দিন আছে৷ লিপ ইয়ারে থাকে ৬ দিন৷ বিশ্বের বাকি অংশে ২০২৪ এসে গেলেও ইথিওপিয়ায় নতুন বছর শুরু হবে ১১ সেপ্টেম্বর৷ এই পার্থক্যের কারণ হল ইথিওপিয়া এখনও প্রাচীন বর্ষপঞ্জী বা ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে৷ এই বর্ষগণনার হিসেব খ্রিস্টীয় ৫২৫ অব্দে তৈরি করেছিল রোমানরা৷ সেটাই এখনও মেনে চলছে আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া৷
ইতিহাসের দিক থেকেও ইথিওপিয়া বৈচিত্রপূর্ণ৷ এটা একমাত্র আফ্রিকান দেশ, যাকে কোনওদিন গ্রেট ব্রিটেন অধিকার করতে পারেনি৷ মাত্র ৬ বছরের জন্য ইতালি জয় করেছিল এই দেশকে৷ পাশাপাশি, এই দেশকে কফির জন্মস্থান হিসেবেও ধরে নেওয়া হয়৷
View this post on Instagram
যে প্রাচীন ক্যালেন্ডার নিয়ে এত আলোচনা, সেই ইথিওপিয়ান বর্ষপঞ্জীর নাম ‘গিজ ক্যালেন্ডার’৷ মাসের নামের দিক থেকেও গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের থেকে এই বর্ষপঞ্জী আলাদা৷ এই ক্যালেন্ডারের প্রথম মাসের নাম ‘মেসকেরেম’৷ গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের (যে ক্যালেন্ডার বর্তমানে পৃথিবীতে ব্যবহৃত ও প্রচলিত) ১১ সেপ্টেম্বরে নতুন বছর শুরু হয় গিজ ক্যালেন্ডারে৷ মেসকেরেম-এর পর যে মাসগুলি পর পর আসে, সেগুলি হল টিকিমট, হিদার, তাহাস, তির, ইয়াকাটিট, ম্যাগাবিট, মিয়াজিয়া, গিনবট, সেনে, হ্যামলে, নেহাসা এবং শেষ তথা ত্রয়োদশতম মাস প্যাগিউম৷
নয়াদিল্লি: সুদূর আফ্রিকার এক দেশ সিয়েরা লিওন। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে একটি খবর প্রকাশিত হয়, সিয়েরা লিওনের একটি সরকারি ভাষা নাকি বাংলা ভাষাও। কিন্তু এই তথ্যটি ভুল। News 18 Bangla-র একটি প্রতিবেদনেও এই তথ্যটি তুলে ধরা হয়েছিল। যা ঠিক তথ্য নয়। ভুল তথ্যের জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত।
ওই প্রতিবেদনগুলিতে তুলে ধরা হয়েছিল, ২০০২ সালে সিয়েরা লিওনের প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডঃ আলহাজি আহমেদ তেজান কাব্বাহ দ্বারা সিয়েরা লিওনের একটি সরকারি ভাষা হয়েছিল বাংলা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, “২০০২ সালে শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠার পরপরই, দেশটির রাষ্ট্রপতি আহমেদ তেজান কাব্বাহ ঘোষণা করেন যে বাংলাকে এখন থেকে সিয়েরা লিওন প্রজাতন্ত্রের সরকারি ভাষা হিসেবে গণ্য করা হবে শান্তি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশী সৈন্যদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ।”
আরও বেশ কয়েকটি সংস্করণে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশি সৈন্যদের শান্তিরক্ষা কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা শুধুমাত্র একটি সম্মানসূচক ভাষা হিসাবে স্বীকৃত ছিল।
কিন্তু আসলে বিষয়টা কী? সিয়েরা লিওনের পর্যটন ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ অনুসারে, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর কারণে দেশে বেশ কয়েকটি ভাষায় কথা বলা হয়। মেন্ডে, টেমনে এবং ক্রিও ভাষা সে দেশে বেশি প্রচলিত এবং ইংরেজি ভাষা স্কুল এবং সরকারি অফিসিয়াল ভাষা হিসাবে ব্যবহৃত হয়। ওয়েবসাইটে বাংলা ভাষা সম্পর্কে কিছু উল্লেখ নেই।
ইংরেজি এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা আরও বলে যে ক্রিও, ইংরেজি এবং বিভিন্ন আফ্রিকান ভাষা থেকে উদ্ভূত একটি ভাষা, যা সিয়েরা লিওনের লিঙ্গুয়া ফ্রাঙ্কা বা সর্বজনীন ভাষা। এছাড়াও ইংরেজি প্রশাসন, শিক্ষা এবং বাণিজ্যে ব্যবহৃত সরকারী ভাষা। কিন্তু সরকারি ভাষা হিসেবে কোথাও বাংলার কোনও চিহ্ন নেই।