আলিপুরদুয়ার: এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র পরিচালিত হয় মহিলাদের দিয়ে। কোন পুরুষ কর্মী না থাকায় দুপুর গড়ালেই বন্ধ হয়ে যায় এই স্বাস্থ্য কেন্দ্র। ভারত-ভুটান সীমান্তবর্তী এলাকা জয়গাঁতে রয়েছে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি।
এই এলাকাতে নেই কোনও হাসপাতাল। জয়গাঁবাসীদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিয়ে আসছে জয়গাঁ প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র। তবে, অবাক করার বিষয় এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালান মহিলারা। আরজি করের ঘটনার পর যেখানে মহিলাদের কর্মস্থলের সুরক্ষা নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠছে। সেখানে হয়ত এই মহিলারা দৃষ্টান্ত। জয়গাঁ এক ও দুই গ্রাম পঞ্চায়েত মিলিয়ে ৮ হাজার বাসিন্দা নির্ভরশীল এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রের উপর। হাসপাতাল না হলেও, যতটা সম্ভব প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। সবথেকে বড় বিষয় এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রটি চালিয়ে যাচ্ছেন চার জন মহিলা মিলে।
আরও পড়ুনঃ ‘স্বস্তি পেয়েছি, তবে…’ সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির পর বড় দাবি নির্যাতিতার পরিবার
স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রয়েছেন ৩ জন নার্স ও একজন মহিলা চিকিৎসক। ঘড়ির কাটায় সকাল ৯ টা বাজতেই ভিড় জমে যায় প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের গেটের সামনে। দুপুর দুটো, আড়াইটা পর্যন্ত লাগাতার কাজ। টেবিলে একবার বসলে মাথা তুলে তাকানোর সময় পর্যন্ত পান না তাঁরা। শিশুদের টিকা, গর্ভবতী মহিলার স্বাস্থ্য পরীক্ষা, অন্যান্য শারীরিক অসুবিধা নিয়ে আসা মানুষদের সঙ্গে কথা বলা, ওষুধ বুঝিয়ে দেওয়া সবটা সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে ওঠেন নার্সরা।
এই বিষয়ে নার্স প্রিয়াঙ্কা মঙ্গরাতি জানান, “আমার দীর্ঘদিনের কর্মজীবনে যতটুকু জানি সব রোগী এক নয়। পরিজনেরা কখনও সমান হন না। কিছু রোগী একটু বুঝিয়ে দিলেই বোঝে, বাকিদের হাজারবার বললেও বুঝবে না। উল্টে তর্ক করবে, নিয়ম মাফিক চলবে না পরে কিছু হলে আমাদের উপর দোষ দিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ঝামেলা শুরু করে।”
আরও পড়ুনঃ ভাঙবে সব রেকর্ড! ধেয়ে আসছে ঘাতক ‘এল নিনো’! তছনছ হবে গোটা দেশ? জানুন আপডেট
জয়গাঁও প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র যেখানে অবস্থিত সেখানে সুরক্ষার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। মাঝে মধ্যে চুরির ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার জয়গাঁ ব্রাঞ্চের পক্ষ থেকে এই প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বসানো হয়েছে ৬ টি সিসি টিভি ক্যামেরা। যার জন্য একটু নিশ্চিন্ত চিকিৎসক থেকে শুরু করে নার্সরা। এই প্রসঙ্গে চিকিৎসক নম্রতা বিশ্বাস জানিয়েছেন, “এই প্রান্তিক এলাকার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজ করাটা চ্যালেঞ্জিং। আমরা কীভাবে কাজ করে যাচ্ছি, সেই অভিজ্ঞতাগুলি একান্তই আমাদের। আমাদেরও নরমে গরমে রোগী ও পরিজনদের সঙ্গে কথা বলতে হয়।”
Annanya Dey