![এই যে বিরাট অট্টালিকাটি দেখছেন, এটি হল বাঁকুড়ার একসময়ের সবচেয়ে বড় প্রেক্ষাগৃহ। আজও এই সিনেমা হলের বিশালতা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা অসম্ভব।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/06/kusum1-2024-06-34064f3d43e0394c8fbd0eaba1dd033c.jpg)
![অট্টালিকার ঠিক উপরে এখনও ধ্যানস্ত অবস্থায় রয়েছে বুদ্ধ মূর্তি। তার একটু নিচে বাম পাশে ফিল্মি কায়দায় বড় করে লেখা রয়েছে "কুসুম", সিনেমা হলের নাম।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/06/kusum2-2024-06-b0a75451d00867d0d6c384b98c8e5a9b.jpg)
![এক সময় যে টিকিট কাউন্টারের সামনে ভিড় সামলাতে হিমসিম খেতে হত, সেই টিকিট কাউন্টার এখন ঘুঁটে দেওয়ার জায়গায় পরিণত হয়েছে!](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/06/kusum6-2024-06-cc8bb2e51cfdcf504f465f5e95f5a0e2.jpg)
![খোলা পড়ে রয়েছে এই সিনেমা হল। খুব সহজেই যে কেউ ঢুকে পড়তে পারবেন। সেই কারণেই হয়ত কেউ কেউ নিজের শিল্পী সত্তা ফুটিয়ে তুলতে বেছে নিয়েছেন পেক্ষাগৃহের দেওয়াল।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/06/kusum3-2024-06-743419e38b3f88724f076a1d071d8c30.jpg)
![সিনেমাহলের ভিতরে ঢুকলেই দেখা যাবে দেওয়াল জুড়ে নানান রঙিন ছবি। কিছু ছবির অন্তর্নিহিত মানে বোঝা গেলেও অধিকাংশই ভাসা-ভাসা।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/06/kusum4-2024-06-b45f22b11d334ebfc3037b0f7c145edf.jpg)
![তবে আজও হারিয়ে যাবেন মূল পর্দা ঘরের সামনে গেলে। বিরাট বিপুল এই ফাঁকা জায়গায় আলো আঁধারের খেলা খেলছে স্বয়ং সূর্য। এখানে দাঁড়িয়ে চোখ বুজলে আজও যেন শোনা যায় মানুষের গুনগুন আওয়াজ।ছবি ও তথ্য- নীলাঞ্জন ব্যানার্জী](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/06/kusum5-2024-06-c93f53a0ea6b747c96e32a273e1e327f.jpg)
ছবি ও তথ্য- নীলাঞ্জন ব্যানার্জী
গুরগাঁও: শেষ নিশ্বাস পর্যন্ত অভিনয়। শিল্পের প্রতি ভালবাসাই ছিল শেষ মুহূর্তের সঙ্গী। মঞ্চে অভিনয় করতে করতে লুটিয়ে পড়লেন মরাঠি বিনোদন জগতের বর্ষীয়ান শিল্পী। আর তারপরই চিরঘুমে চলে গেলেন অভিনেতা সতীশ জোশী। ভয়ে, আতঙ্কে, দুঃখে পাথর দর্শকবৃন্দ।
গতকাল, রবিবার, ১২ মে নাট্যানুষ্ঠান ছিল জোশীর। সেদিন রাত ১১টা নাগাদ গুরগাঁওয়ের ব্রাহ্মণসভায় মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। শো-এর আগে পর্যন্ত তিনি একদম সুস্থ ছিলেন। নাটকের প্রস্তুতিতে সবরকম ভাবে যোগদান করেছেন। কিন্তু অভিনয় করতে করতে হঠাৎ শরীরে অস্বস্তি হতে থাকে। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া জোশীকে। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বাংলা থেকেই তিনটি শহর! সবথেকে বেশি দূষিত শহরের তালিকায় আশঙ্কার সংকেত, কলকাতা কত নম্বরে বলুন তো!
অভিনেতার বন্ধু রাজেশ দেশপাণ্ডে ফেসবুকে শোকবার্তা জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমার সিনিয়র, বন্ধু এবং অভিনেতা সতীশ জোশী মঞ্চেই প্রয়াত হয়েছেন। শেষ নিঃশ্বাস নেওয়ার আগে পর্যন্ত তিনি পারফর্ম করে গিয়েছেন। ওম শান্তি ওম।’
মরাঠি শিল্পের প্রবীণ অভিনেতা তাঁর অভিনয় দক্ষতার জন্য জনপ্রিয় ছিলেন। বড়পর্দার পাশাপাশি থিয়েটার সার্কিটেও তিনি সম্মানিত। ‘ভাগ্যলক্ষ্মী’ ছবিতে তাঁর অভিনয় সমালোচকদের কাছে প্রবল প্রশংসিত হয়েছিল।
পশ্চিম মেদিনীপুর: অসহায় বাবার চরিত্র থেকে রাজার পাঠ, সামাজিক থেকে পৌরাণিক নাটক কিংবা যাত্রার যে কোনও চরিত্রে অভিনয় করেছেন। এই ৮৫ বছর বয়স পেরিয়েও গলায় সেই অতীতের জোর বিদ্যমান। নাটক যেন তাঁর রক্তে মিশে আছে। স্বাধীনতা সংগ্রামী বাবাকে দেখেই নাট্য জগতে পা রেখেছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদার বাসিন্দা প্রাক্তন শিক্ষক যুগজিৎ নন্দ।
আরও পড়ুন: ১ টাকায় দুপুরের পেট ভরা খাবার! মেনুতে মাছ-মাংস’ও থাকছে
এই নাট্য শিল্পীর বর্তমান বয়স ৮৭ বছর। এই বয়সেও অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের আবেগের স্রোতে ভাসিয়ে নিয়ে যান। তবে অবসর সময় যা করেন এই প্রাক্তন শিক্ষক তা জানলে অবাক হবেন। যুগজিৎ নন্দ প্রধান শিক্ষক হিসেবে সামান্য বেতনে সবং-এর খড়িকা বিবেকানন্দ বিদ্যায়তনে শিক্ষকতা করতেন। এরপর নছিপুর হাইস্কুলে প্রধান শিক্ষক এবং বেলদা গঙ্গাধর অ্যাকাডেমিতে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন এবং পরে সেখান থেকেই অবসর নেন।
১৯৬২ থেকে ৫ বছর তিনি বেলদা কলেজ ও মেদিনীপুর কলেজে এনসিসির প্রশিক্ষক হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। এই প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকা থেকে দিল্লির রাজপথে কুচকাওয়াজে যোগ দেওয়ার কৃতিত্ব আছে তাঁর। সেখানে পারদর্শিতা দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির বাসভবনে বিশেষ অনুষ্ঠানেও যোগ দেন।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
ছোট থেকেই বাবার কাছে নাট্যচর্চায় হাতে খড়ি। অভিনয় করেছেন বিভিন্ন নাট্যদলে। স্কুল-কলেজ জীবনে বিভিন্ন নাটক যাত্রাতে অংশ নিয়েছেন তিনি। তবে বর্তমানে স্কুল জীবন থেকে অবসর নিয়ে বাড়িতেই একাধিক নাটক লিখেছেন যুগজিৎবাবু। বাংলার পাশাপাশি হিন্দিতেও লিখেছেন একাধিক নাটক। পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যেও ছড়িয়ে দিয়েছেন নাটকের নেশা। বর্তমানে তাঁর ছেলেরাও নাটকে অভিনয় করেন। শুধু তাই নয়, তিনি লিখেছেন অনুগল্পও। শিক্ষকতার জীবনে তিনি বেশ কয়েকটি পাঠ্য বইও লিখেছেন। যাত্রা শিল্পের সেকাল-একাল নিয়ে লিখেছেন বইও।
তবে এত বয়সে এসে আর নিজে লিখতে পারেন না যুগজিৎবাবু। পরিবারের সদস্যদের কাছে বসে তিনি অনবরত সংলাপ বলে চলেন, আর তাঁরা সেটা খাতায় লিখে দেন। এভাবেই লেখা হয়ে চলেছে একের পর এক নাটক।
রঞ্জন চন্দ