কোচবিহার: মাধ্যমিক ২০২৪ এর ফল প্রকাশের পর থেকেই কোচবিহার জেলায় বইছে খুশির হাওয়া। তবে শুধুমাত্র মেধাতালিকায় স্থান পাওয়া ছাত্র-ছাত্রীরাই নয়। নজর আকর্ষণ করছে বেশ কিছু দুঃস্থ ছাত্র-ছাত্রীরাও। এমনই এক ছাত্রী হল কোচবিহারের উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ত্রিপর্ণা দাস। এবারের মাধ্যমিকে তাঁর মোট প্রাপ্ত নম্বর ৫৭৪। পারিবারিক আর্থিক অনটন বারংবার তাঁর এই সাফল্যের মুখে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
বাবা পেশাগতভাবে একজন বাস ড্রাইভার। মা গৃহবধূ। তাই পারিবারিক আর্থিক অনটন অনেকটাই চিন্তার মুখে ঠেলে দিয়েছিল তাঁদেরকে। তবে মাধ্যমিক ২০২৪ এর ফলাফলে তার এমন সাফল্য মুখে হাসি ফুটিয়েছে পরিবারের প্রত্যেকটি মানুষের।
কৃতি ছাত্রী ত্রিপর্ণা দাস জানান, “মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতিতে কোনও খামতি রাখেনি সে। সারাদিনে মোট ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা পড়াশোনা করত ত্রিপর্ণা। শিক্ষক সংখ্যা তেমন না থাকলেও শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগেই শিক্ষক ছিল তাঁর। তবে গৃহ শিক্ষকদের পাশাপাশি স্কুলের শিক্ষকরা তাঁকে দারুণ সাহায্য করেছে। তাই এই সাফল্য সম্ভব হল। আগামী দিনে ডব্লিউবিসিএস পরীক্ষা দিয়ে ডব্লিউ বিসিএস অফিসার হতে চায় ত্রিপর্ণা। যদিও সেজন্য প্রস্তুতি সে শুরু করে দিয়েছি ইতিমধ্যেই। তবে এত কিছুর ফাঁকেও প্রায়ই পারিবারিক আর্থিক অনটন ভাবিয়ে তোলে ত্রিপর্ণাকে।”
ত্রিপর্ণার বাবা চন্দন দাস জানান, “পেশাগতভাবে তিনি একজন বাস ড্রাইভার। একটি বেসরকারি স্কুলের বাস চালান তিনি। কোনও মতে সংসার চলে। দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচ জোগাতে রীতিমতো চাপে পড়তে হয়। কিছু ক্ষেত্রে এমনও হয়, নুন আনতে পান্তা ফুরানোর যোগাড় হয়ে দাঁড়ায়! তবুও মেয়েদের পড়াশোনার ক্ষেত্রে যতটা সম্ভব সহযোগিতা করেন তিনি। আগামী দিনে মেয়ে আরও সাফল্য অর্জন করুক এমনটাই ইচ্ছে রয়েছে তাঁর। “উচ্চ বালিকা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শুচিস্মিতা চক্রবর্তী জানান, “ত্রিপর্ণার সাফল্যে দারুণ খুশি তিনি। তিনি চান আগামীতেও যেন ত্রিপর্ণা এমনভাবেই ভাল ফল করে।” আগামীতে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পড়তে চাই ত্রিপর্ণা।পড়াশোনার খরচের বিষয়ে এখন থেকেই চিন্তায় পড়েছে তাঁর পরিবার।
সার্থক পণ্ডিত