শিলিগুড়ি: গণেশের প্রিয় লাড্ডুতে এবার জ্বালাতে পারবেন আলো। অবাক কাণ্ড! আসলে গণেশ পুজো উপলক্ষ্যে লাড্ডুর সুগন্ধি মোমবাতি বানিয়েছেন শিলিগুড়ির মোমবাতি শিল্পীরা। এই লাড্ডু মোমবাতি এবার পুজোয় ট্রেন্ডিং। গণেশ পুজো আসতে আর বেশি দেরি নেই। আর গণেশ পুজো মানেই লাড্ডু। ঠিক সেই ভাবনা থেকেই এবার লাড্ডু তৈরি করেছেন রিমা, পিঙ্কিরা।
এবার লাড্ডু মোমবাতির চাহিদা কিন্তু দারুণ। উত্তরবঙ্গ তো বটেই, দক্ষিণবঙ্গেও তাঁদের এই লাড্ডু মোমবাতির চাহিদা তুঙ্গে রয়েছে। এই নতুন ধরনের মোমবাতি তৈরি করে সকলকে চমকে দিয়েছেন শিলিগুড়ির এই মহিলারা। শিলিগুড়িতে তৈরি এই মোমবাতি এখন পাড়ি দিচ্ছে দেশবিদেশ-সহ বিভিন্ন জায়গায়। ইতিমধ্যেই মালয়েশিয়া, গোয়া, কলকাতা, দুবাই-সহ বিভিন্ন জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে এই মোমবাতি।
আরও পড়ুন: উদ্বোধন হল Jio Brain, AI Adoption-কে স্ট্রিমলাইন করার জন্য নয়া উদ্যোগ সংস্থার
‘টেগোর অ্যাপ্রিসিয়েশন সোসাইটি ও ওয়েস্ট বেঙ্গল এসসি-এসটি-ওবিসি ডেভেলপমেন্ট ও ফাইন্যান্স কর্পোরেশন’-এর উদ্যোগে সমাজের অনগ্রসর শ্রেণির মহিলাদের স্বনির্ভর করতে ‘লাক্সারি ক্যান্ডেল মেকিং প্রোগ্রাম’ শুরু করা হয়। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে অনেক মহিলাই সুগন্ধি মোমবাতি তৈরি শিখে ব্যবসা করছেন। এবার লাড্ডু মোমবাতি তৈরি করে সকলকে চমকে দিয়েছেন তাঁরা।
লাড্ডু মোমবাতি প্রস্তুতকারী রিমা দাস বলেন, ”গণেশের প্রিয় জিনিস হচ্ছে লাড্ডু, আমরা গণেশ পুজো মানেই প্রসাদ হিসেবে লাড্ডুকে বেছে নিই সবার আগে। সেই ভাবনা থেকেই এই লাড্ডু মোমবাতি তৈরি করেছি। পুজোতে যেমন প্রসাদ হিসেবে লাড্ডু থাকবে, তেমনই লাড্ডুর মোমবাতি ব্যবহার করতে পারবেন সকলে।” খুবই সামান্য খরচে আপনার বাড়িতেও এবার এই লাড্ডু মোমবাতি পৌঁছে যেতে পারে।
অনির্বাণ রায়
শিলিগুড়ি: আর মাত্র কিছুদিন বাদেই গণেশ পুজো। একটা সময় শহর শিলিগুড়িতে হাতে গোনা কয়েকটি গণেশ পুজো হত। তবে এখন সেখানে জাঁকজমকভাবে পূজিত হন গণপতি বাপ্পা। তবে এবছর শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গের সবথেকে বড় গণেশ প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের আদলে তৈরি হচ্ছে বিশালাকার গনেশ প্রতিমা। শিলিগুড়ির প্রধান নগর গণেশ পুজো কমিটির এবার চতুর্থ বর্ষপূর্তি। এবার ৩০ ফুটের মূর্তি বানাচ্ছে শিলিগুড়ির এই ক্লাব। এখানকার শিল্পীরাই তৈরি করছে এই গণেশ মূর্তি। এর সঙ্গে আলোকসজ্জাতেও থাকছে চমক।
আরও পড়ুন: অভিনেতার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ! বাড়িতে ডেকে ঘরবন্দি করে হেনস্থা অভিনেত্রীকে
২০২১ সাল থেকে প্রধান নগর এলাকার কিছু যুবক মিলে এই গণেশ পুজোর সূচনা করেছিলেন। শুরু থেকেই তাঁদের মাথায় ছিল যে কোনওদিন তাঁরা বড় আকারে মহারাষ্ট্রের মতো গণেশ পুজোর আয়োজন করবেন। তাই এ বছর বাজেট বাড়িয়ে করা হয় পাঁচ লক্ষ টাকা। প্রধান নগর এলাকার বাসিন্দারা তো বটেই, আশেপাশের বহু লোক এই পুজোয় তাঁদের সাহায্য করেছেন। দীর্ঘ এক মাস ধরে চলছে মূর্তি তৈরির কাজ। বাঁশের চাঙর লাগিয়ে শিলিগুড়ি কুমোরটুলির শিল্পীরাই গণেশ মূর্তি গড়ছেন। তাঁদের বিশ্বাস, এবার তাঁদের পুজো শিলিগুড়ির বাকি সমস্ত পুজোকে ছাপিয়ে যাবে।
ক্লাব সম্পাদক দেবরাজ পাল বলেন, ”গত চার বছর ধরে আমরা এই গণেশ পুজো করে আসছি। এবার শহরবাসীকে একটু মহারাষ্ট্রের গণেশ পুজোর আনন্দ দিতে চাই। তাই এই বিশালাকার প্রতিমা তৈরি হচ্ছে। ৬ই সেপ্টেম্বর আমাদের পুজোর শুভ উদ্বোধন হবে।” পুজোর কয়েকদিন গরিব দুঃস্থদের সেবা প্রদান-সহ প্রতিদিন ভোগ দেওয়া হবে। এছাড়াও আরও কিছু কর্মসূচি করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ভিড় এড়ানোর জন্য পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে সব রকম ব্যবস্থা থাকবে। তাঁরা আশাবাদী যে, তাঁদের পুজো শহরবাসীর মন জয় করে নেবে।
অনির্বাণ রায়
দক্ষিণ দিনাজপুর: হাতে গোনা আর মাত্র কয়েক দিন, তারপরই গণেশ চতুর্থী। সিদ্ধিদাতা গণেশের বন্দনায় গোটা দেশ মেতে উঠবে। বিশেষ করে মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, গোয়া সহ ভারতের দক্ষিণের রাজ্যগুলিতে জনপ্রিয় গণপতির পুজো। ৭ সেপ্টেম্বর প্রতি ঘরে ঘরে পূজিত হবেন গণপতি বাপ্পা। এছাড়াও দক্ষিণের রাজ্যগুলিতেও বিশাল আকারে ১০ দিন ধরে গণেশ পুজো চলে, যা বিশাল উৎসবের চেহারা নেয়। সেই গণেশ পুজো উপলক্ষে বুনিয়াদপুর কুমারটুলিতে এবার হই হই কাণ্ড।
দক্ষিণ দিনাজপুরের এই কুমোরটুলিতে তৈরি ছাঁচের গণেশ এই প্রথম পাড়ি দিচ্ছে মহারাষ্ট্র ও ওড়িশায়। সেই কারণে বিগত তিন মাস ধরে চরম ব্যস্ততার মধ্যে রয়েছে বুনিয়াদপুর পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কোইল পালপাড়ার রীতা শিল্পালয়।
আরও পড়ুন: কবে আবার স্থায়ী উপাচার্য পাবে বিশ্বভারতী? উত্তর অজানা
তিন মাস আগে ওড়িশার কটকের সম্বল পাল বুনিয়াদপুরে এসে রীতা শিল্পালয়ে বরাত দিয়েছিলেন। বিভিন্ন সাইজের ৬০০০ গণেশ মূর্তি চেয়েছিলেন। সময় কম হওয়ায় প্রথম বার ৪০০০ বিভিন্ন সাইজের গণেশ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে কাজে নেমে পড়েন সংস্থার কর্ণধার তাপস পাল। এই প্রথম তাঁদের তৈরি ছাঁচের গণেশ যাবে ওড়িশা ও দক্ষিণ ভারতের বাজারে। জানা গেছে, তাপস পালকে সহযোগিতা করছেন তাঁর মতন নিপুণ কিছু দক্ষ শিল্পীরা।
রীতা শিল্পালয়ের কর্ণধার তাপস পাল জানিয়েছেন, দক্ষিণ ভারত থেকে এবার প্রথম বরাত পেয়ে খুশি হয়েছেন। বুনিয়াদপুরের মত ছোট্ট একটা জায়গা থেকে এই মূর্তিগুলো গণেশ চতুর্থী উপলক্ষে এতটা দূরে যাচ্ছে। এই মাটির মূর্তি তৈরি করতে লেবার, মাটি, রঙের জন্য প্রচুর টাকা লাগে। তবে, সরকারি দিক থেকে আর্থিক সাহায্য পেলে আগামী বছরে আগে থেকে আরও বেশি করে গণেশ বানিয়ে মহারাষ্ট্রে পাঠাতে পারবেন এবং এতে এলাকার দক্ষ শিল্পীদের কাজে লাগিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ করা যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সুস্মিতা গোস্বামী