Tag Archives: GI Tag

Bangla Video: জয়নগরের মোয়া হাবে সুখবর, আসছে ইতালির অত্যাধুনিক প্যাকেজিং মেশিন

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: প্রসিদ্ধ জয়নগরের মোয়ার এমনিতেই জগৎজোড়া নাম। তারপর এই জি আই ট্যাগ পাওয়ার পর স্থানীয় মিষ্টিটি আরও নামজাদা হয়ে উঠেছে। মোয়ার প্রসার ঘটাতে উদ্যোগী খোদ রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং মোয়া হাব নির্মাণের কথা ঘোষণা করেছিলেন।

এরপরই জয়নগর-মজিলপুরে মোয়া হাবের ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করেছিল খাদি গ্রামীণ শিল্প বোর্ড। সেই কাজ শেষ হয়েছে। খাদি বোর্ডের এক আধিকারিক বলেন, ‘দু’কোটি ১২ লক্ষ টাকা খরচ করে মোয়া হাবের প্রজেক্ট হয়েছে। দোতলা বাড়ি তৈরি সম্পন্ন হয়েছে। পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া শুধু বাকি। এছাড়া ইতালি থেকে অত্যাধুনিক প্যাকেজিং মেশিন আনা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: এবার হাত ধরলে হাত ভেঙে দেবে নারীরা! দেখুন কাণ্ড

শোনা যাচ্ছে, চলতি বছর মোয়ার মরসুম শুরুর আগেই উদ্বোধন হয়ে যাবে হাবের। জয়নগর-মজিলপুর পুরসভার মাঠে সাড়ে চার কাঠা জমিতে এই মোয়া হাব নির্মাণ হয়েছে। এই হাব তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল প্রায় তিনবছর আগে। কিন্তু বারংবার জায়গা বদলের পরিকল্পনা জড়িত হওয়ায় কাজ একপ্রকার থমকে ছিল।

প্রথমে জয়নগরের সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল ও জয়নগর-মজিলপুর ও পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুজিত সরখেলের উদ্যোগে জয়নগরের মিত্রগঞ্জে জায়গা দেখা হয়েছিল। কিন্তু সেই জায়গা নিয়ে আপত্তি জানায় খাদি বোর্ড। চেয়ারম্যান সুকুমার হালদার মোয়া হাবের জন্য তিন নম্বর ওয়ার্ডে জায়গা চিহ্নিত করেন। খাদি বোর্ডের কর্তারা সেই জায়গা পরিদর্শন করেন। গত জানুয়ারি মাস থেকে কাজ শুরু হয়।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়নগরের বহডুতে সরকারি অনুষ্ঠানে এসে মোয়া হাবের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দেন। খাদি, বোর্ড সূত্রে খবর, একতলায় হয়েছে কমন ফেসিলিটি সেন্টার। সেখানে থাকবে ল্যাবরেটরি, বসবে প্যাকেজিং মেশিন। এর ফলে জয়নগর ও বহডুর কয়েক হাজার মোয়া ব্যবসায়ী উপকৃত হবেন। মোয়া ব্যবসায়ীরা বলেন, এই বিষয়ে খুব খুশি এই কাজ তাড়াতাড়ি হওয়ায়। প্যাকেজিংয়ের মাধ্যমে মোয়া বিদেশে রফতানি হবে।

সুমন সাহা

Chomchom from Belakoba: উপরে কড়া, ভিতরে তুলতুলে রসাল মৌচাক! বেলাকোবার চমচমের রহস্যময় রেসিপি এসেছিল টাঙ্গাইল থেকে

সুরজিৎ দে, জলপাইগুড়ি: সামনেই পুজো আর পুজো মানেই বাঙালির মিষ্টিমুখ হবে না তা কী হয়! আর উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়িবাসীর মিষ্টিমুখের প্রসঙ্গ এলেই সর্বাগ্রে থাকে বেলাকোবার চমচম। বহু দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন এই মিষ্টির স্বাদ নিতে। নরম তুলতুলে নয়, কড়া। উপরটা যতটা শক্ত, ভিতরটা ততটা নয়। স্থানীয়দের কথায়,মৌচাকের রসের মতোই রসাল।

তবে এই বিখ্যাত, ঐতিহ্যপূর্ণ চমচমের ইতিহাস জানেন? টাঙ্গাইল থেকে বেলাকোবা। যাত্রাটা নেহাত সহজ ছিল না। স্বাধীনতার আগে যখন মানচিত্র টুকরো হতে যাচ্ছে, তখনই যোগসূত্র তৈরি হয়ে যায় এই দুই জনপদের। তখনও টাঙ্গাইল জেলাসদর হয়নি। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে চলে যাওয়ায়, টাঙ্গাইলের ধলেশ্বরী নদীর পাড়ের বসতি ছেড়ে পরিবার নিয়ে বেলাকোবায় চলে এসেছিলেন দুই বন্ধু। তাঁদের সঙ্গেই আসে পোড়াবাড়ির চমচমের ‘রহস্যময়’ রেসিপি। পরবর্তীতে যা কিনা বেলাকোবার চমচম হিসেবে খ্যাত হয়েছে‌।

আরও পড়ুন : উপকারিতায় ঠাসা হলেও এই বিশেষ ক্ষেত্রে চরম ক্ষতি লালশাকে! জানুন কারা এই পাতা মুখে তুললেই সর্বনাশ!

কিন্তু এখনও মেলেনি এই চমচমের জি.আই ট্যাগ। এর আগে জিআই ট্যাগ পেয়েছে সরভাজা। অনেক আগেই ট্যাগ পেয়েছিল রসগোল্লা।আর দীর্ঘদিন ধরে চমচম তৈরি করেও এখনও জিআই ট্যাগ মেলেনি জলপাইগুড়ির এই ব্যবসায়ীদের। খানিক মুখ ভার হলেও এখনও তাঁরা আশাবাদী, হয়তো তাদেরও মিলবে ভৌগোলিক ইঙ্গিত ট্যাগ।রহস্যময় এই চমচমের রেসিপি এখনও পর্যন্ত বাইরে কোথাও কেউ জানে না। ফলে জিআই তকমা পাওয়ার ষোলআনা দাবিদার তাঁরাই। এখন অপেক্ষা কবে তাদের এই আশা পূর্ণ হয়!

Babarsa Sweets: নামের সঙ্গে জড়িয়ে সম্রাট বাবর থেকে বর্গী! দুধ, ময়দা, ঘি, কাজুবাদামের পাকে তৈরি মুচমুচে এই মিষ্টির স্বাদে মিশেছে ইতিহাস

রঞ্জন চন্দ, পশ্চিম মেদিনীপুর: বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ধরনের দেখার জায়গা, খাবারের জন্য প্রসিদ্ধ। সেই খাবারই দেশের কাছে সেই জায়গার নাম পরিচিতি এনে দিয়েছে। বিপ্লবের মাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলারও নানান খাবার দেশের কাছে জেলার নাম উজ্জ্বল করেছে। মানুষের মুখে মুখে প্রচলিত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের মিষ্টির নামও। এমনই এক প্রচলিত মিষ্টি ক্ষীরপাই-এর বাবরসা। নামের সঙ্গে এবং এই মিষ্টির উৎপত্তি নিয়ে নানান মত প্রচলিত থাকলেও স্বাদে এবং গুণে ভরপুর এই মিষ্টি। বেশ কয়েকশো বছর ধরে তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে দেশবিদেশে। বেশ মুচমুচে এবং অনন্য স্বাদের বাবরসার প্রধান উপকরণ হল দুধ, ময়দা আর চিনি। গরম ঘিয়ের উপর নির্দিষ্ট ছাঁচে ফোঁটা ফোঁটা ময়দা ঢেলে তৈরি হয় বাবরসা।

কেউ কেউ আবার কাজুবাদামের গুঁড়ো মেশান। তেলে ভাজা হয়ে গেলে তাকে সামান্য রসে চুবিয়ে পরিবেশন করা হয়। প্রতিটি পিস ১০ টাকা দরে বিক্রি হয়। একবার খেলে জিভে জল আনবে। স্বাদে এবং গুণে যেন অমৃত। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই-এর প্রসিদ্ধ বাবরসা ইতিহাসচর্চিত এক অনন্য স্বাদের মিষ্টি।

স্থানীয় ইতিহাস গবেষক অখিলবন্ধু মহাপাত্র বলেন, ‘‘ ১৭০০ খ্রিস্টাব্দের পাঁচের দশকে বর্গীরা বাংলার বিভিন্ন জায়গায় আক্রমণ করত। লুটপাট করে মানুষকে সর্বস্বান্ত করে চলে যেত। ১৭৪৮ থেকে ১৭৫৩ সালের কোনও এক সময়ে বর্ধমান থেকে বর্গীরা আক্রমণ করতে করতে ক্ষীরপাই-এর দিকে আসছিল। স্থানীয় মানুষ ভয় পেয়ে তৎকালীন ক্ষীরপাইয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইংরেজ অফিসার এডওয়ার্ড বাবর্সকে অনুরোধ করেন বর্গী আক্রমণ থেকে  রক্ষা করার জন্য। এডওর্য়া বাবর্স ক্ষীরপাইয়ের  কাছেই  বর্গীদের আটকে দেন। এই ঘটনার স্মারক ও কৃতজ্ঞতাস্বরূপ পরান আটা নামে জনৈক মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী ময়দা, দুধ, ঘি, মধু দিয়ে নতুন এক মিষ্টি তৈরি করে এডওয়ারস বাবর্সকে উপহার দেন। তারপর থেকেই তাঁর নাম অনুসারে ‘বাবরসা’ নামটি এসেছে।’’

আরও পড়ুন : আদালত চত্বরে শৌচালয়ের কর্মী মা, সেখানে বসেই পড়াশোনা করে তাঁর স্কুলপড়ুয়া মেয়ে

গবেষক অখিলবন্ধু মহাপাত্র তুলে ধরেন একটি অন্য মতও। সেই  ভিন্নমত অনুযায়ী এলাকার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ী মুঘল সম্রাট বাবরকে খুশি করতে গাওয়া ঘি, ময়দা, দুধ ও মধুর সংমিশ্রণে এক নতুন ধরনের মিষ্টি তৈরি করে মুঘল সেনাপতির মাধ্যমে বাবরকে উপহার হিসাবে পাঠান।

জনশ্রুতি, স্বয়ং বাবর এই মিষ্টি খেয়ে প্রশংসা করেন। তাঁর নাম অনুসারেই বাবরসা নামটি এসেছে বলে মনে করা হয়। যে মিষ্টির সঙ্গে এমন ইতিহাস ও জনশ্রুতি মিশে আছে, সেটা তো জনপ্রিয় হবেই। বর্তমানে বাবরসা ক্ষীরপাই ছাড়িয়ে ভিন রাজ্যেও পাড়ি দিচ্ছে। ক্ষীরপাই পুর এলাকার মিষ্টান্ন ব্যবসায়ীরা বহু কষ্টে পরম্পরায় এই মিষ্টিকে আজও টিকিয়ে রেখেছেন।পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ক্ষীরপাই এলাকায় এই মিষ্টি বেশ বিখ্যাত। ধীরে ধীরে সুখ্যাতি বেড়েছে এই মিষ্টি। জিআই ট্যাগ পাওয়ার জন্য চলছে চেষ্টা।