Tag Archives: irrigation

Paddy Farmers: ডিভিসি জল ছাড়ায় স্বস্তিতে কৃষকরা

বাঁকুড়া: রুক্ষ জেলা হওয়ায় কৃষি কাজের ক্ষেত্রে বাঁকুড়ার চাষিদের দেশ সমস্যায় পড়তে হয়। বর্ষাকালে অন্যান্যবার কিছুটা সুবিধা হলেও এবার দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি চিন্তা বাড়িয়েছে। নিম্নচাপের জেরে গত কয়েকদিন দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি হলেও এখনও বিস্তর ঘাটতি রয়েছে। ফলে আমন ধান চাষ করতে গিয়ে প্রচন্ড সমস্যায় পড়ছেন বাঁকুড়ার কৃষকরা। এই পরিস্থিতি থেকে তাঁদের কিছুটা রেহাই দিতে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে সেচের জন্য জল ছাড়া শুরু করেছে ডিভিসি।

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিভিসির লেফট ব্যাঙ্ক মেন ক্যানেল ও রাইট ব্যাঙ্ক মেন ক্যানেল থেকে মোট ৬ হাজার কিউসেক জল ছাড়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে কৃষিকাজের ক্ষেত্রে জলের অভাব অনেকটাই দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন বাঁকুড়ার কৃষকরা।

আর‌ও পড়ুন: আম-কাঁঠালের দিন শেষ, বর্ষার রাজা আনারসের এই গুণগুলি জানেন?

জুলাই মাস শেষ হতেও চলল এখনও সে অর্থে ভারি বৃষ্টিপাতের দেখা নেই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে। ফলে শষ্যগোলা পূর্ব বর্ধমান সহ বাঁকুড়া, হাওড়া ও হুগলি জেলায় আমন চাষ অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। বৃষ্টির অভাবে বিস্তীর্ণ জমি এখনও অনাবাদী আছে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি ডিভিসির দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী দুর্গাপুর ব্যারেজের দু’পাশে থাকা সেচ খালে জল ছাড়া শুরু হয়েছছ।

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ছয় হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে রাইট ব্যাঙ্ক মেন ক্যানেল ও লেফট ব্যাঙ্ক মেন ক্যানেল থেকে। আপাতত ১২ থেকে ১৩ দিন ধরে এই জল ছাড়া হবে বলে জানিয়েছে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বাঁকুড়া, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়া জেলায় আমন ধান চাষ গতি পাবে বলে আশাবাদী সব পক্ষই। দেরিতে হলেও দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে সেচের জন্য প্রথম দফার জল ছাড়া শুরু হওয়ায় আশায় বুক বাঁধছে কৃষকরাও।

নীলাঞ্জন ব্যানার্জী

Farmers Crisis: মাঠেই বিদ্যুৎ চুরি করছে পাওয়ারলুম মালিকরা! পাম্প বন্ধ হয়ে ক্ষতির মুখে চাষিরা

নদিয়া: গত প্রায় এক মাস ধরে জল বন্ধ নবদ্বীপ চর ব্রহ্মনগর এলাকায়। ফলে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এর ফলে জলের পাম্প চালাতে পারছেন না। সেচের অভাবে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে চাষের। পরিস্থিতি এমন জায়গায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে যে শেষ পর্যন্ত চাষ করে আদৌ টাকা ঘরে আসবে কিনা তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।

তবে বিদ্যুৎ সঙ্কটে কারণ হিসেবে এলাকার পাওয়ারলুম মালিকদের দিকে আঙুল তুলেছেন কৃষকরা। নবদ্বীপের চর মাজদিয়া, চর ব্রহ্মনগর এলাকার চাষিদের অভিযোগ, যে ট্রান্সফরমার শুধুমাত্র চাষিদের নলকূপ মোটরের জন্য রাখা হয়েছে সেই ট্রান্সফরমার থেকেই লাইন নিয়ে চালানো হচ্ছে প্রায় ১০০ টা পাওয়ারলুমের মেশিন। যার ফলে ভোল্টেজ কম থাকায় বারবার ঐ নলকূপের মোটর পুড়ে যাচ্ছে। এর আগেও তিনবার মোটর পুড়ে যাওয়ায় ফসলে জল না দিতে পেরে ফসল নষ্ট হয়েছে। পাওয়ারলুম মালিকদের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্যুৎ চুরির অভিযোগ করেছেন চাষিরা।

আর‌ও পড়ুন: পাঁচ বছরে কতটা বদলাল কৃষকদের জীবন? ভোট নিয়ে কী বললেন অন্নদাতারা

দ্রুত এই সমস্যার সমাধান না হলে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হওয়া ছাড়া তাঁদের আর কোনও উপায় থাকবে না বলে কৃষকরা হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়ে দেন। এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার ট্রান্সফরমারের বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে তালা দিয়ে দেন চাষিরা।

মৈনাক দেবনাথ

Farmers Crisis: বিদ্যুতের বিল নিয়ে বিভ্রাট, টাকা দিয়েও অতান্তরে কৃষকরা! ব্যাঘাত চাষের কাজে

পূর্ব বর্ধমান: পূর্ব বর্ধমান জেলা রাজ্যের শস্য ভাণ্ডার নামে পরিচিত। বিভিন্ন সবজি, ফুল, ফল চাষের পাশাপাশি এই জেলায় ব্যাপক পরিমাণে ধান চাষ হয়। বর্তমানে অনেকে নতুন চাষের সঙ্গে যুক্ত হলেও ধান চাষের পরিমাণ সবথেকে বেশি। পূর্ব বর্ধমানের অন্যতম একটি জায়গা হল পূর্বস্থলী। এই পূর্বস্থলীর বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে পাট চাষ হয়, সবজি চাষ হয়। তবে এখানে এইসকল চাষের পাশাপাশি ধান চাষও হয় বিপুল পরিমাণে। কিন্তু এবার পূর্বস্থলীর সেই ধান চাষিরাই পড়েছেন সমস্যায়।

পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী-২ ব্লকের অন্তর্গত একটি গ্রাম হল কমলনগর। এই কমলনগর গ্রামের ধান চাষিরাই বর্তমানে ব্যাপক সমস্যায় পড়েছেন। ধান চাষের জন্য মূলত জলের প্রয়োজন হয়। সেই কারণে চাষিদের কথা মাথায় রেখে ২০১৬ সালে কমলনগর মৌজায় ‘জল সম্পদ অনুসন্ধান ও উন্নয়ন দফতর’-এর অধীনে নদী জল উত্তোলন প্রকল্প চালু করা হয়। যেখানে দুটি সাবমার্সিবেল থেকে অল্প খরচে চাষের জল পেতেন চাষিরা। কিন্তু প্রায় ৫ বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সেই সাবমার্সিবল। তাই এখন বাধ্য হয়ে বেশি দামে জল কিনে চাষ করতে হচ্ছে তাঁদের।

আর‌ও পড়ুন: গাছে পেরেক দিয়ে ভোটের ফ্লেক্স, ব্যানার টাঙানো ঠেকাতে এগিয়ে এলেন ‘ওঁরা’

এই প্রসঙ্গে এক স্থানীয় চাষিবলেন, এখানে জলের জন্য বিঘা প্রতি দেড় হাজার টাকা করে নেওয়া হত। আমরা টাকাও দিতাম। তখন শাসকদলের লোকেরা একটি কমিটি তৈরি করেছিল। তারাই সেই টাকাটা নিত। চাষিরা টাকা দেওয়ার ফলে চাষ হত, দুটো সিজেন চাষও হয়েছিল। কিন্তু তারপরে বিদ্যুৎ দফতর বলছে বিদ্যুৎ বিল না দেওয়ার কারণে আর জল দেওয়া হবে না। বিল দিলে তবেই জল দেওয়া হবে। সেই থেকে এখনও বন্ধ হয়ে পড়ে আছে সাবমার্সিবেল।

তবে চাষিদের দাবি, তাঁরা চাষের জন্য টাকা দিতেন। শাসক দলের নেতৃত্বে একটি স্থানীয় কমিটি গঠন করা হয়েছিল। সেই কমিটিকেই তাঁরা নিয়মিত টাকা দিতেন। তবে টাকা দেওয়ার কোনও রসিদ নেই চাষিদের কাছে। অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিল জমা না পড়ার কারণে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে বিদ্যুৎ দফতর। সেই থেকে শুধুমাত্র বিল না জমা হওয়ার কারণে আজও বন্ধ রয়েছে এই প্রকল্প। চাষিদের কথায় প্রায় তিন লক্ষ টাকার বিল বাকি রয়েছে কমলনগর এলাকার এই দুটি সাবমার্সিবেলের। আর সেই কারণেই বিদ্যুৎ দফতর কেটেছে বিদ্যুৎ সংযোগ।

আর‌ও পড়ুন: উল্টোদিকে ঘুরছে চাকা, ফ্লেক্স-ব্যানার ফেলে কার্টুন-ছড়ায় ভরছে এই কেন্দ্রের দেওয়াল

সেই সময় থেকে ধান চাষের মরশুমে জল না পেয়ে, অধিক পয়সা খরচ করে জল কিনে চাষ করতে হচ্ছে কমলনগর এলাকার চাষিদের। ফলে ব্যাপক সমস্যার মধ্যে পড়ছেন স্থানীয় তাঁরা। শাসকদলের পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধক্ষ্য ঝন্টু ঘোষ বলেন, চাষিরা বিল মেটায়নি বলেই বিদ্যুৎ দফতর থেকে লাইন কাটা হয়েছে।

বনোয়ারীলাল চৌধুরী

Organic Sugarcane Cultivation: সেচের অভাবে হারিয়ে যেতে বসেছে সিরকাবাদের ঐতিহ্যবাহী আখ চাষ

পুরুলিয়া: গরমে তৃষ্ণা মেটাতে ও শরীর ভাল রাখতে আখের বিকল্প হয় না। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জায়গাতে আখ চাষ হলেও জেলা পুরুলিয়ার সিরকাবাদের আখ বিখ্যাত।‌ এই আখের শুধু এই রাজ্যেই নয়, ভিন রাজ্যেও যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। ‌কোনওরকম রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে এখানে আখ চাষ করা হয়। তার ফলে সিরকাবাদ-এর আখের স্বাদ একেবারেই অন্যরকম হয়। এর থেকে যে গুড় তৈরি হয় তার স্বাদও অনেকটা আলাদা হয়ে থাকে অন্যান্য জায়গার তুলনায়।

পুরুলিয়ার আড়ষা ব্লকের সিরকাবাদের চাষিরা কয়েক পুরুষ ধরে আখ চাষের উপর নির্ভর করেই নিজেদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে চলেছেন। ‌এখানে আখ চাষের উপর নির্ভরশীল এলাকার ১০ থেকে ১২ টি গ্রামের মানুষ। তবে বর্তমানে এই আখ চাষ করে তেমন একটা লাভ করতে পারছে না চাষিরা। এই এলাকায় নেই যথাযথ সেচের ব্যবস্থা। যার ফলে চাষের ক্ষেত্রে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় চাষিদের। এই বিষয়ে এলাকার চাষিরা বলেন, আখের ফলন মোটামুটিভাবে হয়েছে। এই আখের মান ভীষণই ভাল। এইরকম আখ পশ্চিমবঙ্গের অন্য কোথাও আর পাওয়া যায় না। কিন্তু আগে মত এখন আর আখ বিক্রি হয় না। কারণ ভিন রাজ্য থেকে আখ এই জেলায় আসছে। তাই এখানকার আখের কদর কমে যাচ্ছে। যদি তাঁদের জন্য সেচের ব্যবস্থা করা হয় তবেই একমাত্র এখানকার আখ চাষকে বাঁচানো যাবে।

আর‌ও পড়ুন: নদীর গ্রাসে তলিয়ে যাচ্ছে বাড়িঘর, রাস্তাঘাট! কলকাতার কাছে বলাগড়ে ভয়াবহ অবস্থা

আখ বিক্রির পাশাপাশি এখানকার চাষিরা অনেকেই আখের রসও বিক্রি করে থাকেন। গরমে সেই আখের রস খেতে অনেকেই তাঁদের দোকানে যান। তেমনই এক ক্রেতা বলেন, সিরকাবাদের আখের রস খুবই সুস্বাদু। অন্যান্য জায়গায় আখের রস খেয়ে থাকলেও এইরকম সুস্বাদু আখের রস আর অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বাড়াতে সহায়তা করে আখের রস। কিডনি, লিভার ভাল রাখার পাশাপাশি পেটের বহু রোগ নির্মূল করতেও সাহায্য করে এই আখ। একাধিক গুনাগুন রয়েছে আখে। আর সিরকাবাদের আখের যথেষ্টই সুনাম রয়েছে। তাই চাষিরাও চায় তাদের এই আখ চাষ আগামী দিনেও থাকুক।

শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি