উত্তর দিনাজপুর:এই গ্রামে বিদ্যুৎ থাকা ও না থাকাটা যেন সময় ঘড়ির কাঁটা মেনে চলে। বর্ষাকাল এলেই বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে গোটা ফতেপুর গ্রাম! কখনও ১০ ঘণ্টা আবার কখনও ১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না এখানে। ফলে তীব্র তাপদাহের মধ্যে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এই গ্রামের বাসিন্দারা।
উত্তর দিনাজপুর জেলার করণদিঘি ব্লকের ফতেপুর গ্রামে বর্ষাকালে বিদ্যুৎ সঙ্কট অতি পরিচিত ছবি। এই সমস্যার সমাধানে বহুবার স্থানীয় বাসিন্দারা পথ অবরোধ করেছেন, বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুতেই হয়নি। তবে বর্ষাকালে সমস্যা বাড়লেও প্রায় সারা বছরই দিনের অর্ধেক সময় বিদ্যুৎ থাকে না এই গ্রামে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় ছোট থেকে বড় সকলকে। বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে একদিকে যেমন বাচ্চাদের পড়াশুনোয় ব্যাঘাত ঘটে, অন্যদিকে তেমনই কৃষিকাজ ব্যাহত হয়। বাড়িতে অসুস্থ রোগী থাকলে পরিস্থিতি আরও কঠিন হয়ে ওঠে।
রাতে দীর্ঘ সময় লোডশেডিং হওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাতে হয় এই গ্রামের বাসিন্দাদের। এই প্রসঙ্গে দোমোহনা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মহম্মদ সেলিম বলেন, বর্ষাকাল এলেই প্রায় দিন ঘনঘন লোডশেডিং হয়। এমন পরিস্থিতিতে ঘরে-বাইরে কোথাও যেন স্বস্তি নেই। বরং দিন দিন লোডশেডিং বাড়ছে। বারবার বিষয়টি বিদ্যুৎ দফতরকে জানিয়েও সমস্যার সুরাহা হয়নি বলে জানান তিনি। এই নিয়ে গ্রামের বাসিন্দারা রীতিমত ক্ষোভে ফুঁসছেন।
কোলাঘাট: ঝড়বৃষ্টির পর টানা ১০ দিন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন একটি গ্রামে। আর সমস্যায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। তীব্র গরম থেকে স্বস্তি দিয়েছিল ঝড়-বৃষ্টি। কিন্তু গরম থেকে ঝড় বৃষ্টি স্বস্তি দিলেও, তারপর থেকেই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আর তাতেই চরম অসুবিধার মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। ঘটনাটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কোলাঘাট ব্লকের আড়িশান্ডা চড়কতলা গ্রামের। ওই গ্রামে চলতি বছরের প্রথম ঝড়-বৃষ্টির দিন থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে আছে।
বর্তমান সময়ে যেখানে আমরা কয়েক ঘন্টা বিদ্যুৎহীন হয়ে কাটাতে পারি না। দিন কিংবা রাত্রি যেকোনও সময় বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হলে বিদ্যুৎ পরিষেবা আবার কখন চালু হবে সেই দিকে তাকিয়ে উন্মুখ হয়ে থাকি। সেখানে প্রায় ১০ দিনের বেশি বিদ্যুৎ পরিষেবা ব্যাহত হয়ে রয়েছে কোলাঘাটের ওই গ্রামে। ১৫২ টি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। জানা যায় মে মাসের ৫ তারিখ থেকে ঝড় বৃষ্টির কারণে ইলেকট্রিক পোস্ট ভেঙে যায়। এমনকী ঝড়ে ট্রান্সফরমার খুঁটি হেলে পড়ে। আর তারপর থেকেই ওই এলাকার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় গ্রামের সাধারণ পরিবারে স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হচ্ছে। পাম্প চালিয়ে পানীয় জল তোলা থেকে বাড়ির ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা সবই ব্যাহত হচ্ছে। বাধ্য হয়েই মোমবাতির আলোতে এলাকার ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা করতে হচ্ছে। এ বিষয়ে ওই এলাকায় গৃহবধূ মৌমিতা মান্না জানান, ‘ঝড় বৃষ্টিতে বেশ কয়েকটি বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে যায়। তারপর থেকেই বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে রয়েছে। অন্ধকারে মোমবাতির আলোই ভরসা। এমনকী বিদ্যুৎ না থাকায় তার সাবমার্সিবল পাম্প চালিয়ে পানীয় জল তোলা যাচ্ছে না। সবমিলিয়ে চরম অসুবিধার সম্মুখীন। প্রশাসনকে জানিয়ে এখনও পর্যন্ত সুরাহা হয়নি।’
তীব্র গরম থেকে ঝড় বৃষ্টি স্বস্তি দিলেও। তারপর থেকেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায় চরম অস্বস্তির মধ্যে রয়েছে আড়িশান্ডা গ্রামের মানুষজন। দশ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ সংযোগ অধরা ওই গ্রামে। কবে বিদ্যুৎ পরিষেবা আবার স্বাভাবিকভাবে সেই আশায় দিন গুনছে ওই গ্রামের সাধারণ মানুষ।