Tag Archives: RG Kar murder

Nabanna on Students Protest: রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ-অবরোধে সামিল স্কুল পড়ুয়ারা? বেজায় ক্ষুব্ধ নবান্ন, জারি বড় নির্দেশিকা

কলকাতা: আরজি কর-কাণ্ড বা অন্য কোনও ঘটনার প্রতিবাদ, রাস্তা অবরোধ-সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে স্কুল পড়ুয়াদের নিয়ে যাওয়া নিয়ে ক্ষুব্ধ নবান্ন। মুখ্য সচিবের কড়া নির্দেশ জেলাশাসকদের। স্কুল পড়ুয়াদের রাস্তা অবরোধ-সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়া কোনওমতেই অনুমোদনযোগ্য নয়।

নবান্নের নির্দেশ, ‘এটা নিশ্চিত করতে হবে এই ঘটনা যেন না ঘটে। খুঁজে বের করুন এরকম কোনও জায়গায় হচ্ছে নাকি, তাহলে সেটা বন্ধ করতে হবে। যারা করছেন তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করতে হবে।’ আরজি করের ঘটনা নিয়ে প্রতিবাদ রাজ্যের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। আট থেকে আশি, পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে পথে নেমেছেন। এই পরিস্থিতিতে স্কুলপড়ুয়ারা যাতে স্কুলের বাইরের কোনও কর্মসূচিতে যোগ না দেয়, সেই মর্মে নির্দেশিকা জারি করল নবান্ন।

আরও পড়ুন: নেমপ্লেট আছে, মানুষটাই আর নেই! খাঁখাঁ করছে সোদপুরের চেম্বার, হাওয়ায় শুধু ভাসছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’!

মুখ্যসচিব বলেন, ‘স্কুল পড়ুয়াদের রাস্তা অবরোধ-সহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এটা আমাদের নজরে এসেছে।’ মুখ্য সচিবের কড়া নির্দেশ জেলাশাসকদের, এই কাজ কোনও ভাবেই করা যাবে না। কিন্তু এই নির্দেশিকা নিয়ে অনেক প্রশ্ন এবং বিভ্রান্তিও তৈরি হয়েছে। অনেকের বক্তব্য, স্কুলের বাইরে পড়ুয়ারা কী করবে, কোথায় যাবে, কোন অনুষ্ঠানে থাকবে, তা নিয়ে কী ভাবে বিধিনি‌ষেধ আরোপ করতে পারে সরকার?

আরও পড়ুন: প্রতিবাদের নামে কুরুচির প্রকাশ! এবার ঘৃণ্য ঘটনার শিকার তৃণমূল নেত্রী রাজন্যা! গেলেন পুলিশে

ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুরে স্কুল পড়ুয়াদের নির্দেশ নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। স্কুল চত্বরের বাইরে স্কুলশিক্ষা দফতরের অনুষ্ঠান ব্যতীত অন্য কোনও কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারবেন না স্কুল পড়ুয়ারা বলে নির্দেশ জারি করা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ডিআই (স্কুল) এর তরফে জারি করা হয় এই নির্দেশিকা। নির্দেশিকাটি আরজি কাণ্ডের প্রতিবাদ সংক্রান্ত সমাবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্যই কিনা তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।

সোমরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়

Sandip Ghosh: সর্বনাশ! সন্দীপের বিরুদ্ধে আরও বিস্ফোরক অভিযোগ প্রকাশ্যে! ভয়ঙ্কর ঘটনা ২২-২৩ সালে

কলকাতা: আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের আরও কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে এল। জানা গিয়েছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে আরজি কর হাসপাতালে স্যালাইন সংকট দেখা দেয়। হঠাৎ করেই রাতে ট্রমা কেয়ার সেন্টারে স্যালাইন শেষ হয়ে যায়। জানা যায় যে স্যালইন সরবরাহকারী সংস্থা স্যালাইন দিত, তাদের দীর্ঘদিন ধরে টাকা বাকি। ফলে তারা স্যালাইন সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।

গোটা আরজি কর হাসপাতাল জুড়ে দেখা দেয় স্যালাইনের তীব্র সংকট। তবুও ওই সংস্থাকে টাকা না দিয়ে পাল্টা তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানান সন্দীপ ঘোষ। উঠে আসছে এমনটাই অভিযোগ। শেষমেষ কামারহাটি সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ থেকে বাড়তি স্যালাইন নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হয়।

আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গ সহ ১৮ রাজ্যের মুখ্যসচিবকে তলব সুপ্রিম কোর্টের! হাজির না হলেই ওয়ারেন্ট জারি

এখানেই শেষ নয়, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে হাসপাতালের মর্গ থেকে চারটি মরদেহ লোপাটের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগ, মৃতদের পরিবারকে না জানিয়ে মরদেহ অন্য মেডিক্যাল কলেজে ফরেনসিক মেডিসিনের ওয়ার্কশপের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। এই কাজের জন্য মৃতদেহের রেজিস্ট্রার পর্যন্ত লোপাট করা হয় বলে অভিযোগ।

সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেন তৎকালীন আরজি করের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সোমনাথ দাস। অভিযোগের পরপরই অবশ্য সোমনাথ দাসকে দ্রুত বদলি করে দেওয়া হয়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এই বিষয়ে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনে। নিজের পছন্দের যে জুনিয়ার ডাক্তার, ইন্টার্নদের দল, তাদের নিয়মিত মদ্যপানের ব্যবস্থা করা হত গেস্ট হাউসে। কলেজের ফেস্টে নিজের কাছের ছাত্রছাত্রীদের দেদার ফুর্তির ব্যবস্থা করার অভিযোগও উঠেছে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে।

এছাড়াও হাসপাতালে সিসিটিভি লাগানোর জন্য ১৪ লক্ষ টাকা খরচ দেখানো হয়। তবে আদৌ পর্যাপ্ত সিসিটিভি ছিল না বলে অভিযোগ। এমনকি যে চেস্ট মেডিসিন বিভাগে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল, সেখানেও সিসিটিভির অস্তিত্ব প্রায় ছিলই না। এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টেও আন্দোলনকারীদের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন।

RG Kar Case: স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের পর আজ রাজ্যের সর্বত্র থানা ঘেরাও কর্মসূচি বিজেপির

ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, কলকাতা: আরজি কর ইস্যুকে হাতছাড়া করতে চাইছে না বঙ্গ পদ্ম শিবির।‌ কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে পথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা, শ্যামবাজারের টানা পাঁচ দিন ধরনা অবস্থান এবং স্বাস্থ্য ভবন অভিযানের পর আজ, শুক্রবার কলকাতা-সহ রাজ্য জুড়ে সমস্ত থানার সামনে বিক্ষোভ ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করবে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ঘোষণা করেছেন, ‘‘যেভাবে রাজ্যে একের পর এক নারী নির্যাতন, খুন ধর্ষণ অরাজকতা বিশৃঙ্খলা চলছে তারই প্রতিবাদে এবং অবশ্যই আরজি কর ইস্যুতে এবং শান্তিপূর্ণ স্বাস্থ্য ভবন অভিযানে পুলিশের বাধার কারণেই শুক্রবার কলকাতা এবং রাজ্যের সমস্ত থানার সামনে বিজেপি বিক্ষোভ দেখাবে।’’

আরও পড়ুন– উত্তর বঙ্গোপসাগরে ফের ঘনীভূত ঘূর্ণাবর্ত, উইকেন্ডে বৃষ্টি ফের বাড়বে দক্ষিণবঙ্গে

লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা নেই-সহ শাসক দল এবং সরকারকে নিশানা করে দুর্নীতি ও বেনিয়মের ভুরি ভুরি অভিযোগে সরব হতে দেখা গিয়েছিল পদ্ম শিবিরকে। যদিও ভোটের ফলাফল সামনে আসার পর তৃণমূল কংগ্রেসের উপরই ভোটাররা আস্থা রাখার ছবি সামনে আসে। আর এবার আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরজি কর ইস্যু যে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপির অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে আরজি কর ঘটনাকে জিইয়ে রাখতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের।

আরও পড়ুন- দুর্গাপুজোয় সুখবর, কলকাতা রুটে অতিরিক্ত বিমান পরিষেবা চালু করছে এয়ার ইন্ডিয়া, জেনে নিন বিস্তারিত

বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বঙ্গ বিজেপির এই প্রধান দুই মুখ স্পষ্ট জানাচ্ছেন, ‘‘আমরা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চাই। আরজি করে হাড়হিম করা ঘটনার প্রতিবাদে পথে নেমে আন্দোলনের ঝাঁঝ আরও বাড়বে।’’

Suvendu Adhikari: ‘আমাকে প্রিজন ভ্যানে তুলে আধঘণ্টা…’, পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ শুভেন্দুর

কলকাতা: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে বিজেপির স্বাস্থ‍্য ভবন অভিযানকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় সল্টলেকে। ইন্দিরা ভবনের সামনে মিছিল আটকায় পুলিশ। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, শমীক ভট্টাচার্য-সহ বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতৃত্বকে আটক করেছিল পুলিশ।

পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ইতিমধ‍্যেই ঘটনার প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে সমস্ত থানার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে বিজেপি। এবার পুলিশের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন শুভেন্দু অধিকারী।

আরও পড়ুন: বলুন তো কোন প্রাণী চোখ বন্ধ করেও দিব‍্যি সব দেখতে পায়? নামটা খুব চেনা, চার পায়ে হাঁটে, ৯৯% লোকজনই ভুল উত্তর দিয়েছেন

এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আমাকে প্রিজন ভ্যানে তুলে আধঘন্টা দমবন্ধ অবস্থায় গাড়ির মধ্যে বসিয়ে রাখা হয়েছিল। পুলিশের গাড়ির চালককেও সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।’’ বিজেপির স্বাস্থ্য ভবন অভিযানকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়।

সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারীরা মিছিলে একসঙ্গে হাঁটার সময়ই শুভেন্দু অধিকারীকে পুলিশ আটক করে।‌ তাঁকে প্রিজন ভ‍্যানে তোলা হয়। শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে শমীক ভট্টাচার্য, জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও অন্যান্য নেতৃত্বকেও আটক করা হয়।

‌এরপরই পুলিশের গাড়ির চালক প্রিজন ভ্যানে উঠলে কড়া পুলিশি প্রহরায় বিধাননগর পূর্ব থানায় নিয়ে যাওয়া হয় শুভেন্দুদের। থানার বাইরে তখন চলছে বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বিক্ষোভ। দীর্ঘক্ষণ পরে প্রত্যেককে থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়।‌

আরও পড়ুন: আপনিও জিততে পারবেন লটারি! টিকিট কাটার আগে জেনে নিন গোপন কৌশল, নম্বর লাগবেই, ভাগ‍্য খুলে যাবে

তখনই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন যে, ‘‘টেনে হিঁচড়ে’’ তাঁকে এবং অন্যান্য নেতৃত্বকে তীব্র গরমের মধ্যে গাদাগাদি করে ভ্যানে তুলে পুলিশ সেই প্রিজন ভ্যানের চালককে গাড়ি থেকে নামিয়ে ‘উধাও’ করে দেয়।

বিরোধী দলনেতার দাবি, ‘‘পুলিশের মনে হয়েছিল পরিস্থিতি অশান্ত হবে। আমাদের কর্মীরা ভ‍্যান ভাঙবে জ্বালাবে। সেই জন‍্য ৩০ মিনিট বসিয়ে রেখেছিল। ওদের পরিকল্পনা সফল হয়নি।’’

RG Kar Medical College: শিরোনামে আরজি কর, এই হাসপাতালের পুরো নাম কী? প্রতিষ্ঠাতা কে জানেন? চমকে যাবেন

হাওড়া: সংবাদ শিরোনামে কলকাতার আরজি কর হাসপাতাল। জানেন আরজি কর হাসপাতালের তৈরির ইতিহাস? হাওড়ায় পৈতৃক ভিটের ফটকে জ্বল জ্বল করছে ডাক্তার আরজি কর-এর নাম।

সেই সময়ের বিলেত ফেরত একজন বিখ্যাত ডাক্তার। বিলেত ফেরত হলেও এ ডাক্তারের মধ্যে বিন্দুমাত্র নেই অহংকার বোধ। এ ডাক্তারের অধিকাংশ রোগীই দীন-দরিদ্র। গরিব মানুষের কাছে এ ডাক্তার যেন স্বয়ং ভগবানই বটে। যদিও তাঁর সঙ্গ দিয়েছেন সে সময়ের বেশ কিছু অন্য ডাক্তারও। এমনটাই জানালেন,  কর বাড়ির অন্যতম সদস্য পার্থ কর।

বর্তমানে কলকাতার আরজি কর হাসপাতাল সংবাদ শিরোনামে। ডাক্তারি ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ঘটেছে সেখানে। যে কারণে সারা বাংলা-তথা দেশ তোলপাড়। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ পথে নেমে এর সুবিচারের দাবি জানাচ্ছেন। ঐতিহাসিক এই হাসপাতালের নামের সঙ্গে জুড়ে ভয়ানক কাণ্ড। কিন্তু এই হাসপাতাল সৃষ্টি এবং স্রষ্টার ইতিহাস জানেন কি?

সম্পূর্ণ কাহিনি শুনলে অবাক হবেন। ১৯০০ সালের কাছাকছি অবিভক্ত বাংলার ব্রিটিশ শাসনাধীন। সে সময় দেশে ডাক্তারি পড়ার সুযোগ তো ছিলই না, সারা দেশে হাতে গোনা কয়েকজন ডাক্তার। স্কটল্যান্ড থেকে ডাক্তারি পাশ করে এই বাংলা তথা নিজের বাড়ি হাওড়ায় ফিরে এসেছিলেন। জানা যায়, বাবা দুর্গাদাস কর ছিলেন অভিভক্ত বাংলায় মেডিক্যাল অফিসার। তিনি ঢাকা মিডফোর্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। বেলগাছিয়া থেকে দমদম বাড়ি বাড়ি সাইকেল চালিয়ে ঘুরছেন ডাক্তার।

আরও পড়ুন: নেমপ্লেট আছে, মানুষটাই আর নেই! খাঁখাঁ করছে সোদপুরের চেম্বার, হাওয়ায় শুধু ভাসছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’!

মাথায় একটা টুপি আর সাইকেলে ঝোলানো ক্যামবিসের ব্যাগ। রোগী দেখাই শেষ নয়, নানা ভাবে সহযোগিতা এমনকী ওষুধ কেনার পয়সাও দিচ্ছেন ডাক্তারবাবু। বিলেত ফেরত ডাক্তারের দরিদ্র রোগীদের জন্য এত কদর, ভাবতে অবাক লাগার মতোই বটে। এমনও শোনা যায়, ১৮৯৯ সালে প্লেগ তখন কলকাতায় মহামারীর আকার নিয়েছে। সেই সময়ে উত্তর কলকাতার অলিতে গলিতে ঘুরে রোগীদের সেবা করে চলেছেন এক আইরিশ মহিলা।

জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক পদে নিয়োজিত এক ডাক্তারও রোগীদের বাঁচাতে উত্তর কলকাতা চষে ফেলছেন। রোগ থেকে বাঁচার পরামর্শ দিচ্ছেন। কিছুদিন পরে সেই বিদেশিনী ও চিকিৎসকের আলাপ হল। প্লেগের সংক্রমণ রুখতে ও মৃত্যুর হার কমাতে দু’জনে একজোট হয়ে কাজ করলেন তাঁরা। সেই আইরিশ মহিলা হলেন ভগিনী নিবেদিতা। আর সেই ডাক্তার কে জানেন? তিনি হলেন ডাক্তার রাধাগোবিন্দ কর।

আরও পড়ুন: পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে ঢুকবে ১,২৫,০০০ টাকা, যশস্বী স্কলারশিপ জানেন তো? কীভাবে আবেদন জানুন

কলকাতার সেরা হাসপাতালগুলির মধ্যে একটি হল আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। বিখ্যাত এই হাসপাতালের স্রষ্টা হলেন হাওড়া বেতরের ডা রাধাগোবিন্দ কর। সারা বাংলার মানুষের চিকিৎসার সুবিধার্থে একজন ডাক্তার সারাটা জীবন লড়াই করেছেন। হাওড়া জেলার রামরাজাতলা স্টেশনে থেকে সামান্য দূরত্বে বেতড়ের বিখ্যাত কর বাড়ি। ডা রাধাগোবিন্দ কর এর জন্মভিটে। ১৮৫০ সালের ২৩ অগাস্ট তাঁর জন্ম। জানা যায়, রাধাগোবিন্দ কর হেয়ার স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় পাশ করার পর চিকিৎসা বিজ্ঞানের পাঠ গ্রহণের জন্য ১৮৮০ সালে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন।

১৮৮৩ সালে ডাক্তারি পড়তে কলকাতা ছেড়ে স্কটল্যান্ডে পাড়ি দেন রাধাগোবিন্দ। ১৮৮৭ সালে এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চিকিৎসাবিদ্যার শ্রেষ্ঠ অলংকারে ভূষিত হলেন MRCP হয়ে। বিদেশে ডাক্তারি করার সুযোগ থাকলেও তিনি ফিরে এলেন এই বাংলায়। একজন বিলেত ফেরত ডাক্তার হয়ে এ বাংলার অসহায় গরীব মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন। সেই সময় চিকিৎসাবিদ্যা পড়াশোনা হত ইউরোপীয় চিকিৎসা শিক্ষাব্যবস্থায়। বাঙালি সন্তানরা ডাক্তারি পড়তে সমস্যায় পড়তেন। চিকিৎসা স্বাস্থ্যের একাধিক বই তিনি লেখেন। ১৮৭১ সালে প্রকাশিত তাঁর প্রথম বই ‘ভিষগবন্ধু’।

এর পরবর্তীতে ভাবেন। এদেশের মানুষের জন্যে একটি হাসপাতাল তৈরি করবেন। হাসপাতালের অর্থ সংগ্রহ করতে সে সময় এই বিলেত ফেরত ডাক্তার ভিক্ষা পর্যন্ত করেছেন। তখনকার দিনে কলকাতার বড়লোকদের কাছে হাত পেতে ভিক্ষা করেছেন। বড়লোক বাড়িতে কোনও আনন্দ অনুষ্ঠান হলে সেই বাড়ির গেটের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতেন ভিক্ষা চাইতেন ‘অনুরোধ, কিছু টাকা পয়সা যদি সাহায্য করেন, খুব উপকার হয়, সবার জন্য একটা হাসপাতাল তৈরি করতে পারি’।

চিকিৎসক হিসেবে অর্জিত অর্থের সমস্তটাই দান করে গিয়েছেন মেডিক্যাল স্কুল ও হাসপাতাল স্থাপনে। বেলগাছিয়ায় ১২ বিঘে জমি কিনে নেন ডাক্তার কর। সেখানেই গড়ে ওঠে হাসপাতাল। আত্মপ্রকাশ করে বেলগাছিয়া মেডিক্যাল কলেজ। কিন্তু সেই নাম বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। ১৯১৬ সালের ৫ জুলাই মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতল ভবনের উদ্বোধন করেন লর্ড কারমাইকেল। তাঁর সম্মানে বদলে যায় নাম। দেশ স্বাধীন হওয়া পর্যন্ত কারমাইকেল মেডিক্যাল কলেজ হিসেবেই পরিচিত ছিল এই চিকিৎসা শিক্ষাকেন্দ্রটি। ১৯৪৮ সালে তীব্র আর্থিক সঙ্কটের সময় ফের নাম বদলের দাবি ওঠে।

পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধানচন্দ্র রায় অবশ্য তা হতে দেননি। তাঁর উদ্যোগেই ডা রাধাগোবিন্দ করের নামেই কলেজের নাম রাখা হয় ‘আর জি কর’। যদিও বর্তমান সময়ও দু’জন ডাক্তার রয়েছেন এই কর বাড়িতে। সেকাল থেকে একাল সমাজ ও সাধারণ মানুষের জন্য হাওড়ার কর পরিবারের নানা কর্মকাণ্ড জারি রয়েছে। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনা প্রসঙ্গে পরিবার সদস্য পার্থ কর জানান, ‘আমরা কোন প্রশ্নের উত্তর চাইছি না, আমরা চাইছি এই বর্তমান সমস্যার দ্রুত সমাধান। যে মহান উদ্দেশ্য নিয়ে এই হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এই হাসপাতাল বাংলার মানুষের সেবায় থাকুক। পরবর্তী সময়ে কোনও ভাবে এমন সমস্যার সম্মুখীন না হয় হাসপাতাল।’

(রাকেশ মাইতি)

Abhishek Banerjee: ফের আরজি কাণ্ডে আসরে অভিষেক, তুললেন বড় দাবি! দেখুন ভিডিও

Abhishek Banerjee: ফের অভিষেকের কড়া আরজি। আর জি করের ঘটনায় আর জি করের ঘটনায় । কড়া আইন আনতে কেন্দ্রের উপর চাপ বাড়ানোর দাবি অভিষেকের। পিছিয়ে পড়া প্রশাসনিক ব্যবস্থা থেকে রাজ্যকে মুক্ত করার আরজি। ঘনিষ্ঠ মহলে বার্তা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের।

Mamata Banerjee: মমতার চিঠি মোদিকে! ধর্ষণ-খুনের বিচারে চাইলেন কঠোর আইন

ধর্ষণ-খুনে দ্রুত বিচার। দ্রুত বিচার চেয়ে PM Modiকে চিঠি West Bengal CM এর । চিঠিতে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি। কড়া আইনের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি। ১৫ দিনের মধ্যে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে বিচারের দাবি মুখ্যমন্ত্রীর

RG Kar Doctor Chamber: নেমপ্লেট আছে, মানুষটাই আর নেই! খাঁখাঁ করছে সোদপুরের চেম্বার, হাওয়ায় শুধু ভাসছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’!

উত্তর ২৪ পরগনা: এখনও সোদপুরের মেডিক্যাল চেম্বারে টাঙানো চিকিৎসকদের নামের তালিকায় জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম। অল্প কিছু দিনের মধ্যেই চিকিৎসক হিসেবে সুনাম অর্জন করে নিয়েছিলেন আরজি কর-কাণ্ডে নিহত চিকিৎসক তরুণী।

গরিব কোনও পেশেন্ট আসলে তাঁদের ফি মুকুব করে দিতেন। এখনও যেন ডাক্তার দিদির সেই সব কথা ভুলতে পারছেন না এলাকার লোকেরা। মুখে থাকত হাসি, রোগীদের কথা শুনতেন মন দিয়ে। হাসিমুখেই দিতেন পরামর্শ। তাই ডাক্তার দিদিমণির কাছেই চিকিৎসার জন্য আসতে চাইতেন অনেকে। ডাক্তার দিদিমণির এভাবে মৃত্যু যেন মেনে নিতে পারছেন না চেম্বারে কর্মরত মালিক, স্বাস্থ্যকর্মীরা-সহ চিকিৎসা পরিষেবা নিতে আসা রোগীরা।

আরও পড়ুন: মিথ্যে বলছে না তো? সঞ্জয়ের পর এবার সন্দীপ, সঙ্গে আরও ৪ চিকিৎসকের পলিগ্রাফ পরীক্ষার প্রস্তুতি CBI-এর

ঘটনার পর বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও, সোদপুরের ওই মেডিক্যাল চেম্বারে জ্বলজ্বল করছে তাঁর নাম। প্রথমে জেনারেল ফিজিশিয়ান হিসেবে রোগী দেখা শুরু করেন। কয়েক মাস হল চেস্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে দেখছিলেন রোগীদের। মঙ্গল-বুধ-শুক্র-শনি এই তরুণী চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে রীতিমতো ভিড় জমাতেন বহু রোগী। শেষ যেদিন আসার কথা ছিল, সেদিন সকালেও তিনজন রোগী নাম লিখিয়ে গিয়েছিলেন।

আরও পড়ুন: আরজি কর-কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয়ের সঙ্গে কী সম্পর্ক ‘দৌড়বাজ’ ASI অনুপের? পরিবার-প্রতিবেশীর দাবি শুনলে চমকে যাবেন!

কিন্তু, তাঁদের আর দেখানো হল না শারীরিক ভাবে ভরসার ওই তরুণী চিকিৎসকে। চেম্বারে কর্মরত এক কর্মী জানান, এত হাসিখুশি, পজিটিভ ডাক্তার দিদিমণির যে এরকম হতে পারে তা যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। পেট ও বুকের সমস্যা নিয়ে নিয়মিত ওই তরুণীর কাছে চিকিৎসা করাতেন সুদেব ঘোষ। তরুণী চিকিৎসকের ওষুধে ধীরে ধীরে সুস্থও হয়ে উঠছিলেন। ওষুধের দোকানের মালিক বলেন, “ম্যাডাম মারা যাওয়ার খবরে সুদেববাবু আমাকে ফোন করে কান্নাকাটি জুড়ে দেন। রোগীদের কাছে তাঁর ব্যবহারেই প্রিয় হয়ে উঠছিলেন উনি।”

সুদেববাবু জানান, কোনও কারণে চেম্বারে আসতে না পারলে, প্রয়োজনে ফোনেও ডাক্তার দিদি অ্যাডভাইস দিতেন। আগে বাবার স্কুটিতে চেপে চেম্বার করতে আসলেও, মাস কয়েক আগে গাড়ি কেনায়, গাড়ি নিয়ে আসতেন চেম্বারে। ফি ছিল মাত্র ২৫০ টাকা। তরুণী চিকিৎসকের এমন ভয়াবহ মৃত্যুতে যেন মানসিক ভাবে অনেকটাই ভেঙে পড়েছেন তাঁর কাছে চিকিৎসা করাতে আসা রোগী-সহ রোগীর পরিজনেরা। প্রিয় চিকিৎসকের রোগীরাও তাই এখন চাইছেন জাস্টিস।

Rudra Narayan Roy

Polygraph Test in RG Kar Case: মিথ্যে বলছে না তো? সঞ্জয়ের পর এবার সন্দীপ, সঙ্গে আরও ৪ চিকিৎসকের পলিগ্রাফ পরীক্ষার প্রস্তুতি CBI-এর

কলকাতা: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় পলিগ্রাফ পরীক্ষা করাতে তৎপর কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআইযের। আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে নিয়ে শিয়ালদহ আদালতে যায় সিবিআই। তাঁর পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন জানানো হয়েছে। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে।

সন্দীপ ছাড়াও আরও পাঁচ জনের পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন জানিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন আরজি কর হাসপাতালের চার জন চিকিৎসক পড়ুয়া, যাঁরা সেই রাতে তরুণী চিকিৎসকের সঙ্গে ডিনার করেছিলেন বলে দাবি। এ ছাড়া, আরজি কর-কাণ্ডে ধৃতের এক ঘনিষ্ঠের পলিগ্রাফ পরীক্ষাও করতে চেয়েছেন গোয়েন্দারা।

আরও পড়ুন: ‘১৫ দিনে শাস্তি’! আরজি কর-কাণ্ডের মধ্যেই মোদির কাছে বিশেষ আইনের দাবি মমতার, পাঠালেন চিঠি

বৃহস্পতিবারই সন্দীপ ঘোষ-সহ ওই চার জন পড়ুযা চিকিৎসকের গোপন জবানবন্দিরও আবেদন করে সিবিআই। শিয়ালদহ আদালত সেই আবেদনও মঞ্জুর করে নেয়। এবার মঞ্জুর হল পরিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদনও। এর আগে ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রাইয়েরও পলিগ্রাফ পরীক্ষার আবেদন মেনে নিয়েছে আদালত।

আরও পড়ুন: ওই রাতে হাসপাতালে ঠিক কী হয়েছিল? নিহত ডাক্তারের সঙ্গে ডিনার করা ৪ জনের গোপন জবানবন্দি CBI-এর

পলিগ্রাফ টেস্ট বা লাই ডিটেকটর পরীক্ষা হল সন্দেহভাজনের বলা কথা কতটা সত্যি বা মিথ্যা, তা ধরার একটি পরীক্ষা। এই টেস্টে চার থেকে ছয়টি সেন্সর ব্যবহার করা হয়। পলিগ্রাফ পরীক্ষা নেওয়ার জন্য একটি মেশিন ব্যবহার করা হয়। সেখানে এই সেন্সর থেকে একাধিক সংকেত কাগজের একটি স্ট্রিপে গ্রাফ আকারে রেকর্ড করা হয়।

অর্পিতা হাজরা