Tag Archives: shola artist

Malda News: পুজোর কাজ করেই জোটে সারা বছরের রোজগার! শোলা শিল্পীদের সোনালী সেই দিন এখন অতীত

মালদহ: আধুনিকতার দাপটে কাজ হারাচ্ছেন শোলা শিল্পীরা। একটা সময় ছিল বছর ভোর নানান কাজ মিলতো। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে আর কাজ তেমন পাচ্ছেন না মালদহ জেলার শোলা শিল্পীরা। একসময় শোলার বিভিন্ন সাজ তৈরি করেই সংসার চলেছে। কিন্তু এখন আর সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাইতো দুর্গা পুজোর দিকেই চেয়ে বসে থাকতে হচ্ছে শিল্পীদের।

ছোটবেলা থেকেই এই কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ায় অন্য কোন পেশার সঙ্গেও যুক্ত হতে পারছেন না শিল্পীরা। তাই বাধ্য হয়েই এক বছর অপেক্ষায় থাকতে হয় মালদহের এই শোলা শিল্পীদের। তবুও আগের মত আর এখন কাজ মেলে না। কারণ অধিকাংশই প্রতিমার সাজ এখন রেডিমেড বাজারে কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। অপরদিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে মিলছে না শোলা। তাই দিনের পর দিন চাহিদা কমছে এই শোলা শিল্পীদের। নিজেদের পেট চালাতে তাই সাজের কাজের সঙ্গে মন্ডপ সজ্জার কাজ করছেন এই শিল্পীরা।

শিল্পী ধর্ম দাস বলেন,”এখন পুজোর কাজের জন্যই অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে আমাদের। পুজো আসলে কিছু কাজ মিলছে। তবুও পর্যাপ্ত পরিমাণে কাজ মিলছে না। তাই আমরা মন্ডপের কাজ করছি। কারণ প্রতিমার সাজের কাজ পর্যাপ্ত পরিমাণে মিলছে না। হাতেগোনা দুই থেকে একটি প্রতিমার সাজ শোলার কাজের হচ্ছে। বাকি অধিকাংশ পুজা উদ্যোক্তারা আধুনিক সাজে সাজিয়ে তুলছে দুর্গা প্রতিমাকে।”

এমন পরিস্থিতিতে চরম দুর্দশার মধ্যে পড়েছেন এই শিল্পীরা। তবে কাজ বাঁচানোর তাগিদে তারাও ধীরে ধীরে নিজেদের পেশার পরিবর্তন করতে শুরু করেছেন। একসময় শুধুমাত্র শোলার কাজ করতেন। এখন এই শিল্পীরা বাধ্য হয়েছেন মন্ডপ সজ্জার কাজ করতে। মন্ডপ তৈরি সময় যে সমস্ত থার্মোকলের কাজগুলি হয়ে থাকে। সেই কাজগুলি এখন এই শিল্পীরা করছেন। এতে কিছুটা হলেও আয় বাড়ছে শিল্পীদের। শিল্পী প্রতাপ কুমার দাস বলেন,”৪০ বছর ধরে এই কাজ করছি। এখন আর কাজ তেমনি মিলছে না। জানিনা আর কতদিন এই কাজ করতে পারব।”

আরও পড়ুনঃ  Cristiano Ronaldo: ৯০০ গোলের পর এবার এমন রেকর্ড গড়লেন রোনাল্ডো, যা বিশ্বে কারও নেই

পুজোর প্রায় দুই মাস আগেই যেটুকু সাজের কাজ মেলে তা শেষ করে শিল্পীরা লেগে পড়ছেন মন্ডপ সজ্জার কাজে। এই করেই বর্তমানে সংসার চলছে মালদহ জেলার একসময়ের বিখ্যাত শোলা শিল্পীদের। তবুও এখনও তারা তাকিয়ে থাকেন দুর্গাপুজোর দিকে। কারণ পুজো আসলেই কাজের সুযোগ মেলে। বছরের অন্যান্য সময় এখন আর কাজ প্রায় নেই বললেই চলে এই শিল্পীদের।

হরষিত সিংহ

Shola Artist: অন্নপ্রাশন, বিয়ে ও ঠাকুরের মুকুট! এই শিল্পীর শোলার কাজ করেই চলে সংসার

কোচবিহার: বেশকিছু শোলা শিল্পী কোচবিহার জেলার ভেটাগুড়ির এলাকা বসবাস করেন। তাঁরা বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের শোলার জিনিস তৈরি করে বিক্রি করেন। তবে বছরের এই বিশেষ সময়ে শোলার জিনিসের দাম ও চাহিদা বেড়ে ওঠে। তাইতো এই সময়ে শিল্পীদের কর্মব্যস্ততাও বেড়ে ওঠে অনেকটাই। ভেটাগুড়ির এক শোলা শিল্পী দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর ধরে এই কাজ করেই সংসার প্রতিপালন করে আসছেন। এছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ও তাকে অর্ডার অনুযায়ী জিনিস বানিয়ে দিতে হয়। তবে এই সময়ে শোলার মুকুটের বেশ অনেকটাই চাহিদায় থাকে।

শিল্পী অশোক বর্মন জানান, দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর আগে তাঁর এই কাজের হাতেখড়ি হয় শচিন মালাকার নামে এক ব্যক্তির কাছে। তারপর থেকেই তিনি এই কাজ করে যাচ্ছেন। দীর্ঘ সময় কেটে গিয়েছে। তবে এই পেশা দিয়েই তিনি সংসার সামলাচ্ছেন। বছরের অন্যান্য সময়ে উপার্জন কিছুটা কম হয়। তাই এই মরসুমে যতটা সম্ভব উপার্জন করে নিতে হয় তাঁকে। তবে তাঁদের তৈরি এই মুকুট দিয়ে বিয়ে থেকে শুরু করে ঠাকুর সাজানোর কাজে লাগে বলে আনন্দিত হন তিনি।”

আরও পড়ুন: নদীতে ভেসে যাওয়ার সময় উদ্ধার বীর আজ অনেক পরিণত, চলছে কুনকি করার প্রশিক্ষণ

তিনি আরও জানান, “একটা সময় ছিল যখন কোচবিহারে প্রচুর শোলা পাওয়া যেত। তবে এখন ভালো মানের শোলা বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়। তাইতো এখন শোলার দাম পড়ে যায় অনেকটাই বেশি। সেজন্য এখন শুধুই শোলা দিয়ে মুকুট বানাতে অনেক খরচ হয়। তাই আর্ট পেপার এবং জরি ব্যবহার করে থাকেন তাঁরা, মুকুটের খরচ কিছুটা কমাতে। চলতি বছরে পুজোর মুকুট থেকে শুরু করে অন্নপ্রাশন এবং প্রচুর বিয়ের মুকুটের অর্ডার এসেছে তাঁর কাছে। সেজন্য বেশ অনেকটাই কর্মব্যস্ততা রয়েছে তাঁর।”

নতুন প্রজন্ম এই কাজের প্রতি কম ঝুঁকছে। তবে জেলার এই শিল্পীরা আজও দীর্ঘ সময়ের পুরনো ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। যতদিন তিনি পারবেন ততদিন তিনি এইভাবেই শোলার জিনিস বানিয়ে যাবেন এমনটাই জানিয়েছেন এই শিল্পী।

সার্থক পন্ডিত

Shola Garland Artists: পুজো আসতেই ব্যস্ততা তুঙ্গে, এখন থেকেই দিনরাত এই কাজ করছেন শিল্পীরা

কোচবিহার: দুর্গাপুজোর আর মাত্র কিছুটা সময় বাকি। ইতিমধ্যেই বাঙালিদের মধ্যে পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই কর্মব্যস্ততা বেড়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রের শিল্পীদের। এই শিল্পীদের মধ্যে অন্যতম হল শোলা দিয়ে মালা তৈরির শিল্পীরা। এই শিল্পীদের সারা বছর খুব একটা বেশি চাপ চোখে পড়ে না। তবে দুর্গাপুজোর আগে তাঁদের কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় অনেকটাই।

বর্তমানে যতই প্লাস্টিক সহ বিভিন্ন ধরনের মালার প্রচলন বাড়ুক না কেন দুর্গাপুজোয় শোলার তৈরি সাবেকি মালার চাহিদা আজও যথেষ্ট। কোচবিহারের ভেটাগুড়ি এলাকায় এমনই বেশ কিছু শোলা শিল্পী আছেন। তাঁদেরই অন্যতম সোনামনি রায় জানান, দীর্ঘ সময় ধরে পারিবারিকভাবে এই কাজ করে আসছেন। আগে সারা বছর এই মালার চাহিদা থাকলেও বর্তমানে তা থাকে না। বর্তমান সময়ে শুধুমাত্র দুর্গাপুজোর সময় এই মালার চাহিদা বাড়ে। একেবারে পরিবেশবান্ধব এই শোলা দিয়ে তৈরি মালা বহু মানুষ আজ‌ও কিনতে পছন্দ করেন। তাইতো দুর্গা পুজোর আগে তাঁদের সকলের কর্মব্যস্ততা অনেকটা বেড়ে যায়। বেশি করে মালা তৈরি করে মজুদ করে রাখতে হয় তাদের দুর্গা পুজোর জন্য। বাড়ির মহিলারাই এই কাজের সঙ্গে বেশি যুক্ত থাকেন।

আর‌ও পড়ুন: এই মারাত্মক ভাইরাসের থাবা বাংলায়! বাদুড়িয়ার গোটা গ্রাম প্রবল জ্বরে আক্রান্ত

এলাকার আরও দুই শিল্পী বুলবুলি বর্মন ও যুথিকা মালাকার জানান, বিভিন্ন রঙের রকমারি মালা তৈরি করতে হয় এই সময়। শুকনো রঙ দিয়ে মালা তৈরি করতে খুব একটা বেশি সময় লাগে না। তবে যেগুলি ভেজা রঙ দিয়ে তৈরি করতে হয়, সেই মালা গুলিতে সময়ের প্রয়োজন পড়ে অনেকটাই বেশি। তাইতো পুজোর সময় তৈরি করতে বসলে মালা তৈরি করা সম্ভব নয়। মূলত এই কারণেই পুজোর আগে থেকেই এই মালা তৈরির কাজ শুরু করেন তাঁরা। প্রচুর পরিমাণ মালা তৈরি করে মজুত করে রাখেন।

সার্থক পণ্ডিত

Bangla Video: শোলার কাজ করেই স্বনির্ভর গ্রামের মহিলারা

উত্তর দিনাজপুর: ক্ষুদ্র হলেও কোন‌ও কাজই তুচ্ছ নয়। আজকাল গ্রাম বাংলার মহিলারা নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য নানা রকমভাবে পরিশ্রম করে চলছেন। আর তাতে যা উপার্জন হচ্ছে তা দিয়ে সংসারের কিছুটা হলেও অভাব মিটছে। উত্তর দিনাজপুর জেলার কালিয়াগঞ্জের বাঘন বটতলির একটি পাড়া জুড়ে বেশিরভাগ মহিলারাই শোলার কাজের সঙ্গে যুক্ত।

শোলার কাজ করে এখানকার মহিলারা স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন। পাইকারদের কাছ থেকে শোলা সংগ্রহ করে নিয়ে এসে নিজেরা বাড়িতে বসে ফুল সহ শোলার বিভিন্ন ধরনের কাজ করছেন। বর্তমানে এই অঞ্চলের বহু গ্রামের মানুষজন শোলার উপর ভর দিয়ে পায়ের তলার মাটি শক্ত করেছেন। এখানকার শিল্পীরা জানান, ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে যুগ যুগ শোলার ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই পাইকরাদের কাজ থেকে শোলা কিনে নিয়ে এসে নিজেদের অবসর সময় তাঁরা একত্রিত হয়ে বিয়ের টোপর, দেব দেবীর সাজ, চাঁদমালা, চালির নকশা, মুকুট, মালা, কদম ফুল, নব প্রতিমার পট, ঘটকাপালি সহ আরও বিভিন্ন ধরনের শোলার কাজ করেন।

আরও পড়ুন: বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় ভোটের বড়সড় প্রভাব পশ্চিম বর্ধমানে! সীমান্তে যা হচ্ছে…

এই শোলার কাজ করে তাঁরা মাসিক বাড়িতে বসে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা উপার্জন করেন। তেমনই একজন শিউলি সরকার রায় জানান, সংসারের কাজের পর বাড়তি সময়ে শোলার জিনিস তৈরি করি। এখান থেকে যা উপার্জন হয় তা সংসারের জন্য অনেকটা কাজে লাগে। প্রায় সাত বছর ধরে এই শোলার কাজ করে আসছি। তবে এখানকার শোলা শিল্পীরা জানিয়েছেন, সরকারের কিছুটা সহযোগিতা পেলে পেশাগত ক্ষেত্রে তাঁদের আরও সুবিধা হত।

পিয়া গুপ্তা