হাওড়া: পুলিশের সহযোগিতায় পুজোর উৎসব আরও আনন্দের হয়ে উঠেছে দামু, সহেলী, সঙ্গীতাদের! ওদের কারও বয়স ৮ ,১০ বা ১২, ১৪ বছর। ওদের কাছে সারা বছর অপেক্ষার এই দিন। বাঙালির বারো মাসে তেরো উৎসবের শ্রেষ্ঠ বাঙালির প্রাণের উৎসব দুর্গাপুজো। এই উৎসবে এত আনন্দ হয়ত আগে কখনও ওদের জীবনে ধরা দেয়নি। ‘সঞ্চার’ এর ব্যবস্থাপনায় এবং হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের সহযোগিতায় প্রতি বছর ওদের জন্য পুজো পরিক্রমা। ২০১৮ সালে প্রথমবার ‘ সঞ্চার’ এই পুজো পরিক্রমার শুরু। সেই প্রথম পুজোর আনন্দ রোশনিমা ও মুসকানদের জীবনে। তারপর প্রতিবছর অধীর আগ্রহে থাকা এই পুজো পরিক্রমার। যদিও করোনা আবহে ওদের পুজোর আনন্দের ছেদ পরে দু’বছর। তারপর আবার পুরনো ছন্দে ওদের প্রাণের পুজো পরিক্রমা। পুজো পরিক্রমা মানে অন্য একটা দিন ওদের কাছে। সেই দিক গুরুত্ব রেখে পুলিশের পক্ষ থেকে খাওয়া-দাওয়া থেকে বিশেষ নিরাপত্তায় বাসে চড়ে পুজো পরিক্রমা। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু এবং তাদের পরিবার সদস্যরা মিলে এবার মোট ১৩০ জন পুজো পরিক্রমায় অংশগ্রহণ করে।
এদিন সকাল থেকে দারুণ উৎসাহের সঙ্গে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশ কার্যালয়ের সামনে ওরা হাজির। সেখানেই পরপর দুটি এসি বাস ওদের জন্য অপেক্ষারত। তা দেখেই ওদের চোখে মুখে ভেসে উঠল খুশির জোয়ার। হাওড়া গ্রামীণের জাতীয় সড়ক সংলগ্ন মণ্ডপ গুলিতে পৌঁছবে ওরা। যাত্রা শুরুর আগেই পুলিশ কর্মীরা ওদের হাতে তুলে দেন কেক, চকলেট। যা আরও আনন্দের ওদের কাছে। পাঁচলা পানিয়ার এসপি অফিস থেকে যাত্রা শুরু। তারপর প্রথমেই উলুবেরিয়া মনসাতলার একটি মণ্ডপে। এখান থেকে জাতীয় সড়ক ধরে উলুবেড়িয়া হয়ে বাগনান পৌঁছবে। এরপর পাঁচলা মোড় নেতাজি সংঘে এসে সমাপ্ত হয় পুজো পরিক্রমা।
আরও পড়ুন-৫০ বছর পর মহাঅষ্টমীতে অতি বিরল মহাসংযোগ…! ৪ রাশিকে দু-হাত ভরিয়ে দেবেন মা দুর্গা, কাঁপবে গোটা ত্রিভুবন, কাটবে ফাঁড়া, সোনার মতো চমকাবে ভাগ্য
এ প্রসঙ্গে ‘ সঞ্চার ‘ এর সহ পরিচালক সুতপা চক্রবর্তী জানান, এই দিনের অপেক্ষায় ওরা দিন গোনে। এই সমস্ত ছেলে মেয়ের মুখে হাসি ফোটাতে ‘সঞ্চার’ নানা ভাবে কাজ করে চলেছে। অন্যতম হল পুজো পরিক্রমা। এই পুজো পরিক্রমা ওদের কাছে দারুণ আনন্দের। দারুন হাসিখুশির মধ্য কয়েক ঘণ্টা কাটানো। পুলিশের পক্ষ থেকে যেভাবে সুব্যবস্থা রাখা হয় ওদের জন্য তাতে দারুণ খুশি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ছেলে মেয়ে এবং তাদের পরিবার।
এ প্রসঙ্গে হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডা. জর্জ জন জানান, ২০১৮ সাল থেকে এই পুজো পরিক্রমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ওদের জীবনে আরও বেশি করে পুজোর আনন্দ পৌঁছে দেওয়াই মূল লক্ষ্য। এর মাধ্যমে আলাপচারিতা ওদের মধ্যে সাধারণ জ্ঞানের সঞ্চার করা।
আরও পড়ুন- ৩ দিন পরই ঘুরবে ভাগ্যের চাকা…! শুক্রের বিরাট চালে ‘গোল্ডেন টাইম’ শুরু ৬ রাশির, লটারি লাগলেই ‘মালামাল’, পাবে কুবেরের ধন
প্রাণ খুলে আনন্দ করার একটা দিন। পুজো পরিক্রমা, সে সঙ্গে নতুন নানা অভিজ্ঞতা সঞ্চারের অন্য একটা দিন। আর এই সমস্ত অভিজ্ঞতাকে মনে করে আরও একটা বছরের শুরু। আবার অপেক্ষা এই দিনের। আমরা কি পারি না! এই একটা দিনের আনন্দকে বাকি ৩৬৪ টা দিন ধরে রাখতে। ওদের কাছে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে, যাতে ভবিষ্যতের সমাজ আরও সুন্দর হয়। ওরা ফিরে পাক ওদের অধিকার। সদা হাসি লেগে থাকুক ওদের মুখে।
রাকেশ মাইতি