শুরু হয়ে গিয়েছে ঘূর্ণিঝড়ে প্রভাব। আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়বে জেলা পুরুলিয়াতে এমনটাই পূর্বাভাস মিলেছে আবহাওয়া দফতর সূত্রে। হলুদ সতর্কতা জারি রয়েছে জেলায়।
বৃহস্পতিবার, সকাল থেকে হালকা মেঘলা আকাশ দেখা গিয়েছে গোটা জেলা জুড়ে। মাঝেমধ্যেই ঝড়ের দাপট দেখা দিচ্ছে। প্রবল ঝড় বৃষ্টি না হলেও বিক্ষিপ্ত ঝড় বৃষ্টি হবে জেলার বিভিন্ন জায়গাতে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ভালো রকমই পড়বে জেলায় এমনটাই মনে করছে জেলার মানুষ।
তাপমাত্রার পারদও বেশ খানিকটা কমে গিয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে এই দিন পুরুলিয়া সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ থাকতে পারে ২৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পারদ থাকতে পারে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানা গিয়েছে হাওয়া অফিস সূত্রে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে পালা দিয়ে পরিবর্তন হচ্ছে তাপমাত্রার।
জেলা পুরুলিয়াতে ঘূর্ণিঝড়ের রেসথাকবে। ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব চলবে দক্ষিণের একাধিক জায়গায়। দুর্যোগ সঙ্গে করে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। প্রভাব পড়বে দক্ষিণের বেশিরভাগ জেলাতে। মারাত্মক দুর্যোগের সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণবঙ্গে। বিশেষ করে দক্ষিণের পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণায় লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
কলকাতা সহ হাওড়া, হুগলি, উত্তর ২৪ পরগণা, ঝাড়গ্রামে কমলা সতর্কতা রয়েছে। এছাড়াও দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সমস্ত জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি চলবে। স্বস্তি থাকছে না কোথাও।ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে আগামী দু-দিন ভারী বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা থাকছে।
‘দানা’র মূল প্রভাব পড়বে দিঘায়। মৎস্যজীবীদের জন্য ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর অবধি সমুদ্রে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাব পড়বে না উত্তরে। বিক্ষিপ্ত হালকা বৃষ্টিতে ভিজবে উত্তরের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি সহ কয়েকটি জেলা। ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই উত্তরে।
‘দানা’র মূল প্রভাব পড়বে দিঘায়। মৎস্যজীবীদের জন্য ২৩ থেকে ২৫ অক্টোবর অবধি সমুদ্রে যাওয়ার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাব পড়বে না উত্তরে। বিক্ষিপ্ত হালকা বৃষ্টিতে ভিজবে উত্তরের দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি সহ কয়েকটি জেলা। ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা নেই উত্তরে।
শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ‘ঝড়ের আগে কান্তি আসে’। এ শুধু কোনও প্রবাদ নয়। যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আগে সুন্দরবনবাসীর কাছে এই কথা ধ্রুব সত্যি। এবারও তিনি আসলেন ঝড়ের আগেই। এবার ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র আতঙ্কে কাপছে সুন্দরবন। ঝড় আসার আগে এসে নদীবেষ্টিত এলাকায় ঘুরলেন তিনি। কখনও বাইকে চেপে, কখনো আবার পায়ে হেঁটে পৌঁছে গেলেন বিভিন্ন এলাকায়।
বিপদে কাছের বন্ধুকে কাছে পেয়ে হাসি ফুটেছে অনেকের মুখে। পূর্বের ঝড়ের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে মানুষজনকে সচেতন করেন তিনি। কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় সকলকে ঝড় নিয়ে সচেতন করেন। তিনি জানান, আগে আয়লা ঝড় এসেছিল এরকম রাতে। সেবার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। এবারেও ঝড় আসছে রাতে তাই সকলকে সচেতন থাকতে হবে, বিপদমুক্ত থাকতে হবে।
আরও পড়ুনঃ Knowledge Story: বলুন তো, কোন মাছ লিঙ্গ পরিবর্তন করে পুরুষ থেকে নারী হতে পারে? উত্তর দিতে ব্যর্থ ৯৯ শতাংশ
ঘূর্ণিঝড় দানা বৃহস্পতিবার রাতের মধ্যে আছড়ে পড়বে উপকূল এলাকায়। প্রশাসনও সতর্ক রয়েছে সেজন্য। কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় নিজের মত করে একটি ক্যাম্প খুলেছেন। খুব অসুবিধা হলে সেখানে যেতে বলেছেন সকলকে। কথা বলেছেন মাঝিদের সঙ্গেও। এবার তাঁর সঙ্গে দেখা গিয়েছে অনেককেই। বিভিন্ন নদীর ঘাটে গিয়ে স্থানীয়দের ঝড় নিয়ে সচেতন কেরেছেন তিনি।
নবাব মল্লিক
শক্তি বাড়িয়ে ক্রমশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত থেকে পরের দিন শুক্রবার সকালের মধ্যে তার সম্ভাব্য ‘ল্যান্ডফল’ হতে পারে। প্রতীকী ছবি
ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময়ে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় জলোচ্ছ্বাস প্রবল থেকে প্রবলতর হতে পারে। সেই বিষয়েই সতর্ক করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ঢেউয়ের উচ্চতা পৌঁছাতে পারে সর্বোচ্চ ১৪ ফুটেরও বেশি! প্রতীকী ছবি
সমুদ্রের মধ্যে প্রতি ঘণ্টায় ১৩ কিমি প্রতি ঘণ্টা বেগে উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ‘দানা’। ঘূর্ণিঝড়ের গতিমুখ উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে৷ ২৪ অক্টোবর, বুধবার রাতেই ‘দানা’ শক্তি বৃদ্ধি করে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বা সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্মে পরিণত হয়েছে৷ প্রতীকী ছবি
আবহাওয়া দফতরের পাওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, এই মূহুর্তে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ পারাদ্বীপ থেকে মাত্র ১৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্ব দিকে অবস্থান করছে৷ ধামারা থেকে ২৮০ কিলোমিটার ও সাগর দ্বীপ থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরে এর অবস্থান৷ প্রতীকী ছবি
আবহবিদেরা জানিয়েছেন, ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে এই সিভিয়ার সাইক্লোন ‘দানা’৷ স্থলভাগে প্রবেশ করার সময় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার৷
তুমুল ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখে পড়তে পারে উপকূল অঞ্চলের মানুষেরা৷ ইতিমধ্যেই পুরী,গোপালপুর-সহ একাধিক সমুদ্র সৈকত ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
বাংলাতেও উপকূল বর্তী অঞ্চল বিশেষ করে পূর্ব মেদিনীপুরেও বিশেষ ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে৷ এই কারণে ইতিমধ্যেই বাংলায় প্রায় ১.৫ লাখ মানুষকে স্থানান্তরিত করা হয়েছে৷
কলকাতাতেও কালো মেঘে ঢেকে গিয়েছে৷ দানা স্থলভাগে প্রবেশ করার পর থেকে ক্রমশ তার শক্তি হারাবে৷ কলকাতাতে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি হতে পারে প্রায় প্রতি ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার৷ প্রতীকী ছবি
দিঘা: সময় যত বাড়ছে ততই আবহাওয়ার পরিস্থিতি অবনতির দিকে। বাড়ছে হাওয়ার গতিবেগ। উত্তাল হয়ে উঠছে নদী ও সমুদ্র। জেলা জুড়ে নদী ও সমুদ্র বাঁধ নিয়ে বাড়তি তৎপরতা জেলা প্রশাসনের। বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ক্রমশ স্থলভাগের দিকে এগিয়ে আসছে। এই ঘূর্ণিঝড় আঘাত আনবে পার্শ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশার উপকূলে।
ঘূর্ণিঝড় ওড়িশার উপকূলে আঘাত আনলেও এর প্রভাব সবথেকে বেশি পড়েছে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে। হাওয়া অফিসের রিপোর্টে জানা যায় ২৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাত থেকে ২৫ অক্টোবর শুক্রবার ভোরের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় দানা আছড়ে পড়বে উপকূলে। আছড়ে পড়ার সময় এই ঘূর্ণিঝড়ের গতিবেগ থাকবে সর্বোচ্চ ঘন্টায় ১২০ কিলোমিটার।
এই ঘূর্ণিঝড় ওড়িশার ধামরা ও ভিতরকণিকার মধ্যবর্তী স্থানে আছড়ে পড়ার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়াবিদরা। ঘূর্ণিঝড় ওড়িশায় আছড়ে পড়লেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় এর প্রভাব থাকবে। উপকূলবর্তী এই জেলায় বাড়ি থেকে অতি ভারী বৃষ্টি সঙ্গে ঝড়ের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে হাওয়া অফিস। ঘন্টায় ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড়ো হাওয়া বইবে।
ইতিমধ্যেই দিঘা সহ পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় জুড়ে শুরু হয়েছে বৃষ্টি, বইছে দমকা ঝড়ো হাওয়া। উত্তাল হয়ে উঠেছে নদী ও সমুদ্র। নদী ও সমুদ্র বাঁধ নিয়ে তৎপরতা লক্ষ্য করা গেল প্রশাসনের মধ্যে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানা যায় পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় সমুদ্র ও নদী বাঁধ মিলিয়ে এই মুহূর্তে চারটি জায়গা অত্যন্ত দুর্বল হয়ে রয়েছে। রামনগর এক ব্লকের একটি সমুদ্র বাঁধ। নন্দীগ্রামের একটি নদী বাঁধ। সুতাহাটায় হুগলি নদীর বাঁধ। এবং মহিষাদলের বাড় অমৃতবেড়িয়া এলাকায় রূপনারানের বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত রয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলিতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কালো ত্রিপল দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে যাতে জল না প্রবেশ করতে পারে। এমনকি প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত না বাঁধগুলিতে নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোনও দিকে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলি নিয়ে ঘুম উড়েছে উপকূলবর্তী এলাকার মানুষজনদের, ‘রূপনারায়ণের তীরবর্তী বাড় অমৃতবেড়িয়া ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ নিয়ে এলাকাবাসী জানান, দু’মাস আগে কোটালের রূপনারায় নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই সময় প্রাথমিকভাবে মেরামতি করা হয়েছিল। কিন্তু পুরোপুরি কাজ হয়নি।
সময় যত গড়াচ্ছে দানার প্রভাব আরও ভালোভাবে পড়তে শুরু করেছে জেলায়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন উপকূলবর্তী জনজীবনকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে তৎপর। উপকূলবর্তী এলাকায় চলছে লাগাতার মাইকিং। সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে সাধারণ মানুষকে আশ্রয় শিবিরে। উত্তাল সমুদ্র রীতিমত আঁতকে ওঠার মত। সব মিলিয়ে দানার দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলবর্তী অঞ্চলে সজাগ দৃষ্টি প্রশাসনের। (প্রতিবেদন- সৈকত শী)
শক্তি বাড়িয়ে ক্রমশ উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে তার সম্ভাব্য ‘ল্যান্ডফল’ হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আছড়ে পড়ার সময়ে পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী এলাকায় জলোচ্ছ্বাস প্রবল থেকে প্রবলতর হতে পারে। সেই বিষয়েই সতর্ক করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। ঢেউয়ের উচ্চতা পৌঁছাতে পারে সর্বোচ্চ ১৪ ফুটেরও বেশি! প্রতীকী ছবি
সমুদ্রে ১৩ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে উপকূলের দিকে এগোচ্ছে ‘দানা’। ঝড়ের অভিমুখ মূলত উত্তর পশ্চিম। আবহবিদেরা জানিয়েছেন, ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যে ‘দানা’ আছড়ে পড়তে পারে। প্রতীকী ছবি
আলিপুর থেকে শেষ প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, ‘দানা’ ওড়িশার পারাদ্বীপ থেকে ১২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব, ধামারা থেকে ২১০ কিলোমিটার দক্ষিণ দক্ষিণ-পূর্ব এবং পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ থেকে ২৭০ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে রয়েছে। প্রতীকী ছবি
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক কর্তা জানান, পশ্চিমবঙ্গে সরাসরি ‘ল্যান্ডফল’ না হলেও ‘দানা’র প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। প্রতীকী ছবি
সেখানে বৃহস্পতিবার রাত থেকে ঝড়ের গতি হতে পারে ১০০ কিলোমিটারের বেশি। সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইতে পারে পূর্ব মেদিনীপুরে। এ ছাড়া, সুন্দরবন-সহ দক্ষিণ ২৪ পরগনার কিছু অংশ ‘দানা’র তাণ্ডবের সাক্ষী থাকবে। ঝড়ের গতি হতে পারে ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার। কলকাতায় ঝড় বইতে পারে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার বেগে। সতর্কতা জারি করা হয়েছে হলদিয়া এবং কলকাতা বন্দরেও। প্রতীকী ছবি
কলকাতা: মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং উত্তর বঙ্গোপসাগর সংলগ্ন এলাকায় তীব্র ঘূর্ণিঝড় বা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ঘূর্ণিঝড় দানা। ২৪ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে আগামিকাল সকালের মধ্যে সিভিয়ার সাইক্লোন হিসেবে ল্যান্ডফলের সম্ভাবনা। ওড়িশার ভিতরকণিকা ও ধামারার কাছে ল্যান্ড ফল করার প্রবল সম্ভাবনা। যার প্রভাব পড়তে চলেছে বাংলাতেও।
দানা আতঙ্কে তটস্থ ধামারা থেকে দীঘা। আতঙ্কে ভুগছে কলকাতার আলিপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষও। তীব্র ঘূর্ণিঝড়ে চিড়িয়াখানায় পশুপাখিদের নিরাপত্তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় কর্তৃপক্ষ। জরুরী ভিত্তিতে বৈঠক ডাকা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ল্যাপটপ, কম্পিউটারের কি-বোর্ডে F এবং J অক্ষরের উপর দাগ থাকে কেন বলুন তো? কারণটা জানলে মাথা ঘুরে যাবে
সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে পশু চিকিৎসক থেকে চিড়িয়াখানার কর্মীদেরও। গাছপালা ভেঙে এনক্লোজারে পড়া কিংবা বৈদ্যুতিন তারে গাছ ভেঙে শর্ট সার্কিট হওয়ার মতো একাধিক সমস্যা দেখা দিতে পারে ঝড়ের সময় এবং ঝড়ের পরে। তাই একরকম আতঙ্কে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: কুকারের সিটি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ছে জল, চাল, ডাল! ঢাকা লাগানোর আগে শুধু করুন ছোট্ট কাজ…ঝামেলা থেকে মুক্তি
দানার প্রভাবে পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা। তবে কলকাতাতেও এর আংশিক প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে৷ আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে বৃহস্পতিবার সন্ধেতে শহরে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হবে ঘণ্টায় প্রায় ৮০ কিলোমিটার৷
দানার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়তে চলেছে৷ ফণি থেকে আমপান বারো বছর ধরে উড়িশা বার বার ঘূর্ণিঝড়ের ভয়াবহতা টের পেয়েছে৷ এবারও ঝড়ের সম্ভাব্য ল্যান্ডফলের খবরে আতঙ্কিত ওড়িশাবাসী৷
আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ‘দানা’ ওড়িশার ভিতরকণিকা ও ধামারার ভিতর দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করার সম্ভাবনা রয়েছে৷ সেই সময় ঝড়ের গতি হতে পারে প্রায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার৷ সর্বোচ্চ গতি পৌঁছতে পারে ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার৷
ভুবনেশ্বরের আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে মূলত তিন জেলায় ঝড়ের তাণ্ডব সবচেয়ে বেশি দেখা যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷
জানা যাচ্ছে এখনও অবধি ঝড়ের যা গতিবেগ তাতে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, বালেশ্বর, ভদ্রক এবং কেন্দ্রাপাড়া৷ মনে করা হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগের প্রবেশ কালে এই তিন জেলায় ঝড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত৷
প্রবল ঝড়ের সঙ্গে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে এই তিন জেলায়৷ কেবল ওড়িশা নয়, বাংলাতেও বিশেষ করে পূর্ব মেদিনীপুরে এর প্রভাব দেখা যেতে পারে৷ কলকাতাতেও দানার প্রভাবে বৃহস্পতিবার ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে৷
আসছে সুপার সাইক্লোন। ইতিমধ্যেই ‘দানা’র প্রভাব শুরু হয়ে গিয়েছে। দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে একাধিক জায়গায় সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। জেলা পুরুলিয়াতেও রয়েছে সতর্কতা জারি। পুরুলিয়া জেলাতে দানার কতখানি প্রভাব পড়বে সে বিষয়ে আশঙ্কায় রয়েছে জেলা প্রশাসন।
ইতিমধ্যেই হাওয়া অফিস সূত্রে খবর জেলা পুরুলিয়াতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। জেলাবাসী যাতে কোনও রকম সমস্যা সম্মুখীন না হয় তার জন্য খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। সতর্কতামূলক ব্যবস্থায় কোনরকম খামতি থাকছে না প্রশাসনিকভাবে। ২৪ অক্টোবর, ২৫ অক্টোবর ও ২৬ অক্টোবর এই তিন দিন লাগাতার তিন শিফটে ৭২ ঘন্টা ধরে স্পেশাল কন্ট্রোল রুম খুলে রাখছে বিদ্যুৎ দফতর।
ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইলেক্ট্রিসিটি ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড তাদের পুরুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ে খুলেছে কন্ট্রোল রুম। মানুষের সুবিধার্থে দেওয়া হয়েছে ফোন নম্বরও। যে কোনও সময় এই ফোন নং ৮৯০০৭৯৯৪২৬ – এ যোগাযোগ করা যাবে। এছাড়াও আরও বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করছে জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে , জেলা জুড়ে একাধিক কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সরকারি বিভিন্ন দফতেরর কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে। সাব ডিভিশন গুলিতে ও ব্লক স্তরেও কন্ট্রোল রুম থাকছে। তিনটি ব্লক মিলিয়ে প্রায় ৫ হাজার জনকে ত্রাণ শিবিরে রাখা যাবে এমন বন্দোবস্ত করা হয়েছে। জেলা প্রত্যেকটি ব্লক, মহকুমায় একাধিক কন্ট্রোল রুম করা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের নম্বরও প্রকাশ করেছে প্রশাসন।
সেই সঙ্গে বিভিন্ন দফতরেরও আলাদা করে একটি কন্ট্রোল রুম রয়েছে।বৃহস্পতি, শুক্র, শনি এই কন্ট্রোল রুম খোলা থাকবে। এছাড়াও জেলার প্রত্যেকটি ব্লক হাসপাতালে জেনারেটরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রত্যেকটি ব্লকে ব্লকে পর্যাপ্ত ত্রিপল ও জামা কাপড় রাখা থাকছে। দানার দাপটে বাতিল করা হয়েছে বেশ কিছু ট্রেন।
দক্ষিণপূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনে বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ট্রেন বাতিলের ঘোষণা করা হয়েছে। সুপার সাইক্লোন ডানার কারণে আদ্রা দিয়ে যাতায়াত করা প্রায় ২১ টি ট্রেন বাতিল থাকছে। ২৩ অক্টোবর, ২৪ অক্টোবর, ২৫ অক্টোবর ও ২৬ অক্টোবর ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে। যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে শাখার আদ্র ডিভিশনের এই সিদ্ধান্ত।
দানার প্রভাব পড়ছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে। দক্ষিণের একাধিক জেলায় সর্তকতা জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। বিভিন্ন জেলার পাশাপাশি জেলা পুরুলিয়াতে একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে সরকারিভাবে । ‘দানা’র সঙ্গে মোকাবিলা করতে সমস্ত দিক থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা প্রশাসন। (প্রতিবেদন- শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি)
গতি কমেছে, তবে আরও শক্তি বেড়েছে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র। বুধবার মধ্যরাতেই সেটি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। গত কয়েক ঘণ্টায় উপকূলের দিকে আরও এগিয়েছে ‘দানা’। আবহাওয়া দফতরের পক্ষ থেকে এ বার উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে সাগরদ্বীপ থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি। প্রতীকী ছবি
‘দানা’র সবথেকে কাছে রয়েছে ওড়িশা রাজ্য। সেখানকার পারাদ্বীপ থেকে মাত্র ২৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে এবং ধামারা থেকে ২৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে ‘দানা’। প্রতীকী ছবি
হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, সাগরের উপর গতি কমেছে ‘দানা’র। ঘণ্টায় ১২ কিলোমিটার বেগে গত ছ’ঘণ্টায় পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে ক্রমশ সরেছে এই ঘূর্ণিঝড়টি। আবহবিদদের অনুমান, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে এটির ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া অর্থাৎ স্থলভাগে প্রবেশের প্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রতীকী ছবি
উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদদের অনুমান, মূলত ওড়িশার ভিতরকণিকা থেকে ধামারার মধ্যেই আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়টি। এই ‘ল্যান্ডফল’-এর সময় ‘দানা’র গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় প্রায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত। দমকা হাওয়ার গতি সর্বোচ্চ প্রায় ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত পৌঁছতে পারে। প্রতীকী ছবি।
ইতিমধ্যেই পুরী,গোপালপুর-সহ একাধিক সমুদ্র সৈকত ফাঁকা করে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে পর্যটকদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতীকী ছবি।
*সাইক্লোনের দোসর জোয়ার ভাটার এফেক্ট। আজ বৃহস্পতিবার বিকাল ৫.৫০ মিনিট নাগাদ গঙ্গার জলস্তর হতে পারে ৪.০৪ মিটার (১৩.২৫ ফুট)। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে গঙ্গার ঘাটের ধারের লকগেটগুলি দুপুর ৩.৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা আট’টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। প্রতিবেদনঃ রাহী হালদার। ফাইল ছবি।
*তীব্র ঘূর্ণিঝড় বা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় বা সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম দানা উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে দুর্বার গতিতে। এই মুহূর্তে পারাদ্বীপ থেকে ২১০ কিলোমিটার দক্ষিণ পূর্বে, ধামরা বন্দর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বে এবং সাগরদ্বীপ থেকে ৩১০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান। মধ্যরাত থেকে শুক্রবার সকালের মধ্যে ল্যান্ডফল। ফাইল ছবি।
*ঘূর্ণিঝড় দানার প্রকোপ শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই রাজ্যজুড়ে। হুগলি জেলাতেও পড়েছে দানার প্রকোপ। জেলা জুড়ে জারি করা হয়েছে কমলা সর্তকতা। ঘূর্ণিঝড় এর ল্যান্ড ফলের আগেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলাতে প্রস্তুত জেলা প্রশাসন। একাধিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। ফাইল ছবি।
*ঘূর্নিঝড় দানা মোকাবিলায় হুগলি জেলায় একাধিক কন্ট্রোল রুম থেকে নজরদারি। ১৮,০০০ পরিবার চিহ্নিত করে সরিয়ে শিবিরে রাখার সিদ্ধান্ত। শতাধিক শিবির করা হয়েছে খবর জেলা প্রশাসন সূত্রে। ফাইল ছবি।
*জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের আধিকারিক মাসুদুর রহমান জানান, ঝড়ের গতিপ্রকৃতি জানতে, দুর্যোগে প্রভাব কতটা জানতে চুঁচুড়ায় জেলাশাসক দফতরে সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পাশাপাশি চারটে মহকুমা হেড কোয়ার্টারে চারটি, তেরোটি পুরসভা এবং আঠারোটি ব্লকেও কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ফাইল ছবি।
*শুকনো খাবার, শিশুদের খাদ্য, কমিউনিটি কিচেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দানার প্রভাবে হুগলিতে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় নীচু এলাকার বাসিন্দাদের সতর্ক করা হয়েছে। ফাইল ছবি।
*যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবেই একাধিক ট্রেন বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে পূর্ব রেলওয়ে। ২৫ তারিখ থেকে হাওড়া থেকে বাতিল থাকবে ২৫ লোকাল ট্রেন, ব্যান্ডেল থেকে বাতিল থাকবে ১২টি লোকাল ট্রেন, বর্ধমান থেকে বাতিল থাকবে ৫টি লোকাল ট্রেন, শেওড়াফুলি থেকে বাতিল থাকবে ৬টি লোকাল ট্রেন। ফাইল ছবি।
*শ্রীরামপুর থেকে ২টি, কাটোয়া থেকে ২টি, মেমারি থেকে একটি এবং আরামবাগ, গোঘাট, তারকেশ্বর, বারুইপাড়া, চন্দনপুর, পান্ডুয়া, গুরাপ, মশাগ্রাম, সিঙ্গুর, বেলুড়মঠ থেকে ১৫টি লোকাল বাতিল থাকবে। ফাইল ছবি।
Posts navigation
Just another WordPress site