![স্ট্রিট ফুড হিসেবে মোমো ইদানীং খুবই জনপ্রিয়। সস্তায় পেট ভরানোর মুখরোচক খাবার হিসেবে মোমো জুড়িহীন।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/WhatsApp-Image-20240703-at-90000-PM-2024-07-933b2c26374b680a059b6c35aeaf8db9.jpeg)
![কিন্তু জানেন কি বর্ষায় মোমো খাওয়া খুবই ক্ষতিকর। বিশেষ করে যদি রাস্তায় বিক্রি হওয়া মোমো খান, তাহলে সংক্রমণের একাধিক আশঙ্কা থাকে। বলছেন পুষ্টিবিদ লভনীত বাত্রা।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/WhatsApp-Image-20240703-at-55111-PM-2024-07-7762f8d96ce89a38bce5f92160fbdafa.jpeg)
![স্টিমড বা ফ্রায়েড-যে রকম মোমোই হোক না কেন, বর্ষায় খেলে বিপত্তি দেখা দিতে পারে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/WhatsApp-Image-20240703-at-90223-PM-2024-07-38b018e8caccc318c1b2868a23a6839d.jpeg)
![বর্ষায় আবহাওয়ায় আর্দ্রতা বেড়ে যায়। ফলে একাধিক জীবাণু এবং ছত্রাকের সক্রিয়তা তীব্র হয়। ফলে সহজেই খাবার সংক্রমিত হয়ে পড়ে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/WhatsApp-Image-20240703-at-55020-PM-2024-07-f0dcab5c6a963baaa63ebec277b2d49d.jpeg)
![বর্ষায় সহজেই দূষিত হয়ে যায় পানীয় জল। টাইফয়েড, কোলেরা, হেপাটাইটিস এ-সহ একাধিক জলবাহিত রোগের আশঙ্কা বাড়ে। রাস্তার ধারে খাবার বিক্রেতারা অনেক সময়েই পরিস্রুত জল ব্যবহার করেন না। ফলে সেই জলে তৈরি থুকপা মোমোর সঙ্গে খেলে সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/WhatsApp-Image-20240703-at-55001-PM-2024-07-ab14e981f800f620a23420a375082fe6.jpeg)
![রাস্তায় যাঁরা খাবার বিক্রি করেন, তাঁরা অনেক সময়েই স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাঁধেন না। তাই বায়ুবাহিত জীবাণুতেও সংক্রমিত হতে পারে মোমো।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/WhatsApp-Image-20240703-at-54948-PM-2024-07-c4d89f23a5fe81dc07019b92c2fa8a63.jpeg)
![বর্ষায় ই কোলি এবং সালমোনেলা-র মতো জীবাণু সহজেই সংক্রমিত করতে পারে মোমো-র মতো ফাস্ট ফুডকে। ফলে ক্র্যাম্প, ডায়ারিয়া, বমি, জ্বরের মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/WhatsApp-Image-20240703-at-54908-PM-2024-07-3042fe5f91b5f92a3c10404aa101448e.jpeg)
![বর্ষাকালে ছত্রাক সংক্রমণের জেরে মোমো খেলে ফুড পয়জনিং-এর আশঙকা থাকে।বর্ষাকালে মোমো খেতে ইচ্ছে হলে বাড়িতে তৈরি করে খাওয়াই ভাল। নয়তো এমন কোনও দোকান থেকে কিনে খান, যেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খাবার তৈরি করা হয়। তাহলে সংক্রমণের আশঙ্কা কমবে।](https://images.news18.com/static-bengali/uploads/2024/07/WhatsApp-Image-20240703-at-54937-PM-2024-07-193e559044525562e0755cdffe0738e6.jpeg)
রানিনগর: অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির দেওয়া খাবার খেয়ে রহস্যজনক মৃত্যু হল ভিক্ষাবৃত্তি করা বাবা ও ছেলের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য ছড়ায় রানিনগর থানার লোচনপুর শিশাপাড়া এলাকায়। মৃত বাবার নাম সেখ নজরুল হক ও ছেলের নাম হাসিবুল সেখ।
জানা যায়, রবিবার একজনের দেওয়া খাবারের পার্সেল নিয়ে এসে ছেলের সঙ্গে খাবারটা খান নজরুল হক। তারপরেই দু’জনে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাস্তায় নজরুল হকের মৃত্যু হয়। হাসিবুল সেখকে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ডিভোর্সের পর ফের বিয়ে! ৬৬ বছর বয়সে আবার সংসার শুরু, একই নামের দুই পুরুষকে বিয়ে জনপ্রিয় অভিনেত্রীর
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অভাবের সংসারে ভিক্ষাবৃত্তি করেই কোনওরকমে পেট চালাতেন সেখ নজরুল হক। প্রতিদিনের মতো রবিবার ভিক্ষাবৃত্তি করতে বেরিয়ে সেখপাড়া বাজার এলাকায় একজন অচেনা ব্যক্তি খাবারের পার্সেল দেয় নজরুল হককে। খাবারের পার্সেল বাড়ি নিয়ে এসে ছেলের সঙ্গে খাবারটা খান নজরুল হক। আর খাবারটা খাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই দু’জনে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গেলে রাস্তাতেই মৃত্যু হয় নজরুল হকের। হাসিবুল সেখকে বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। বাবা ও ছেলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া পরিবারজুড়ে। প্রতিবেশী মুজিবর রহমান বলেন, ‘‘নজরুল হক ভিক্ষাবৃত্তি করেই সংসার চালাত। কারও কাছে কিছু খাবার পেলে বাড়ি নিয়ে এসে খেত। আমরা এই মৃত্যু মানতে পারছি না। আমরা চাই যে বা যারা এই খাবার দিয়েছিল পুলিশ তদন্ত করে তাদের গ্রেফতার করুক।’’
মৃত নজরুল হকের স্ত্রী আসমাতারা বিবি বলেন, ‘‘দুপুরে খাবারটা নিয়ে এসে বাড়িতে ছেলের সঙ্গে বসে খেল। তারপরেই দুজনে অসুস্থ হয়ে পড়ল। শেষরক্ষা করতে পারলাম না। আমার স্বামী ছেলে দু’জনেই চলে গেল।’’
জিয়াউল আলম, মিনাখাঁ: মিনাখাঁর বাউখোলা এলাকায় অনুষ্ঠান বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করে অসুস্থ শতাধিক। মিনাখাঁ থানার অন্তর্গত কুমারজোল গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্য বাউখোলা এলাকায় রবিবার সকালে এক অনুষ্ঠান বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করেন এলাকার শতাধিক বাসিন্দারা। খাওয়া দাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই এলাকার বাসিন্দাদের শুরু হয় অসহ্য পেটে যন্ত্রণা।
পেটে যন্ত্রণার সঙ্গে সঙ্গে পায়খানা বমির উপসর্গ দেখা দেয় তাদের। সঙ্গে সঙ্গে তাদের এক এক করে ভর্তি করা হয় মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে। রবিবার বিকেল পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, প্রায় ৬০ জনকে মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন সুস্থ হয়ে যাওয়ায় তাদেরকে আবার হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় ভয়ঙ্কর দৃশ্য! বহুতলের ১৪ তলা থেকে কী পড়ল ওটা! কাছে যেতেই দেখা গেল, রক্তে মাখা যুবতী!
পাশাপাশি এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্প করে প্রায় ৮০ জন মানুষকে চিকিৎসা করানো হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলার পাশাপাশি এলাকায় এখনও পর্যন্ত মেডিকেল ক্যাম্প করে চিকিৎসা চালাচ্ছে মিনাখাঁ গ্রামীণ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা।
প্রচন্ড গরমে খাবারে বিষক্রিয়ার ফলে এই ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক অনুমান চিকিৎসকদের। তবে সবাই বিপদ মুক্ত রয়েছেন বলে জানা গিয়েছে হাসপাতালে সূত্রে।
মুর্শিদাবাদ: মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানার অন্তর্গত ধুলাউড়িতে দিয়ার ফতেপুর মিশনে জল খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লেন একসঙ্গে ১৪জন পড়ুয়া। ১৪জন পড়ুয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে লালগোলার কানাপুকুর প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ও পরে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে চিকিৎসার জন্য।
জানা গিয়েছে, পাইওনিয়ার মিশন নামক স্কুলে শুক্রবার সকালে পড়ুয়ারা অন্যান্য দিনের মতোই জল পান করেছিল। আর সেই জল খেয়েই ঘটে বিপত্তি। অসুস্থ হয়ে পড়েন একের পর এক স্কুল পড়ুয়ারা। অসুস্থ হয়ে পড়েন মোট ১৪জন পড়ুয়া।
অসুস্থ এক পড়ুয়ার দাবি, মিশনের যে জলের ট্যাঙ্ক ছিল সেই ট্যাঙ্কের জল পান করা হয়। জল পান করেই একের পর এক পড়ুয়ারা তারা অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্কুল কর্তৃপক্ষ সাজ্জাদ হোসেন জানান, গত বুধবার জলের ট্যাঙ্ক ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিস্কার করানো হয়। সেই কারণেই জলের ফিল্টার বন্ধ ছিল, শুক্রবার পড়ুয়ারা ট্যাঙ্কের জল খেতেই ঘটে বিপত্তি। তবে আমাদের প্রাথমিক অনুমান জলের মধ্যে কেউ কিছু দিয়ে দেওয়াতেই জলে বিষক্রিয়া তৈরি হয়েছে।
আচমকাই একসঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়ে ১৪জন স্কুল পড়ুয়া। সকলকেই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। যদিও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অসুস্থ পড়ুয়াদের অবস্থা এখনও পর্যন্ত স্থিতিশীল। তবে সকলেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। কী ভাবে জলে বিষক্রিয়া হল তা জল পরিক্ষা করে দেখতে হবে বলে জানিয়েছেন স্কুল কর্তৃপক্ষ।
কৌশিক অধিকারী
বীরভূম: শ্রাদ্ধবাড়ির খাবার খেয়ে পেটের রোগে আক্রান্ত হল পাঁচটি গ্রামের মানুষ। খাদ্যে বিষক্রিয়ার জেরে এই পরিস্থিতি বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। শনিবার রাত থেকে এখনও পর্যন্ত ৫১ জন শিশু-সহ মোট ১১৮ জনকে সিউড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাতেই হাসপাতালে আসেন অতিরিক্ত জেলাশাসক বিশ্বজিৎ মোদক ও সদর মহকুমা শাসক সুপ্রতীক সিনহা। সকালে জেলা মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ চিকিৎসকদের একটি দল গ্রামে যায়।
আরও পড়ুনঃ দিন ঘোষণা হতেই কড়া নজরদারি! পড়শি রাজ্য থেকে আসা গাড়ির দিকে বিশেষ নজর
হিমাদ্রি আড়ি জানান, “সদরে চিকিৎসা চলছে। গ্রামে যাতে আর পেটের রোগ ছড়িয়ে না পরে তার জন্য মেডিক্যাল টিম রাখা হয়েছে। খাবারের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতায় পাঠানো হয়েছে।” হাসপাতালে আসেন এলাকার বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ ও সিউড়ি বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরি। তাঁরা চিকিৎসা নিয়ে কোনও অসুবিধা হচ্ছে কিনা রোগীদের কাছে জানতে চান। সাঁইথিয়া ব্লকের ধোবাজল আদিবাসী পাড়ায় শ্রাদ্ধের জন্য এসেছিলেন আত্মীয়রা। শনিবার সন্ধ্যায় তাঁরা মুড়ি, বোঁদে ও মিষ্টি খান। রাত ১০টা থেকে বমি-পেট খারাপ শুরু হয়।
ধোবাজল গ্রামের কাকলি কিসকু জানান, তাঁর দিদি সরলা কিসকুর রবিবার শ্রাদ্ধ ছিল। তার আগের দিন রীতি মেনে আশেপাশের গ্রামের অনেকেই সন্ধ্যায় মুড়ি খেতে আসেন। সন্ধ্যায় সেই খাবার খেয়ে রাতে বমি ও পেট খারাপ শুরু হয়ে যায়। সিউড়ি সদরের পাঁচ ও ছ’তলায় আক্রান্তদের জন্য আলাদা করে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ধোবাজল ছাড়াও ভবানন্দপুর, মির্ধাপুর, পাগলডাঙা, তালবোনা আদিবাসীপাড়ার শিশু মহিলা পুরুষেরা ভর্তি রয়েছেন হাসপাতালে। মামনি হেমব্রম জানান, তাঁদের অনুমান, বোঁদে থেকেই খাদ্যে বিষক্রিয়া হয়েছে। বাড়িতেই বোঁদে তৈরি করা হয়েছিল। হিমাদ্রি আড়ি জানান, ‘ আশঙ্কাজনক কেউ নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। অনেকেই বাড়ি ফিরে গিয়েছেন।” বাকি যারা রয়েছে তাঁদের দ্রুত ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানা যায়।
সৌভিক রায়