Tag Archives: Tree Plantation

Social Work: জীবনের লক্ষ্য ৫০০০ বটগাছ লাগানো! শিক্ষকের অবাক খেয়াল

পূর্ব মেদিনীপুর: সুকান্ত ভট্টাচার্যের ছাড়পত্র কবিতার বিখ্যাত লাইন দুটিকে জীবনের পাথেয় করেছেন কাঁথির শ্যামল জানা। তিনি পেশায় প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক। তাঁর জীবনের লক্ষ্য ভারতবর্ষের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলি মিলিয়ে পাঁচ হাজার বটগাছ লাগানো।

লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে তাই সময় পেলেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন শ্যামলবাবু। সঙ্গে থাকে নিজের তৈরি করা একটি ট্রলি, যার মধ্যে রাখা থাকে বটগাছের চারা এবং মাটি খোঁড়ার জন্য একটি ধাতব গাঁইতি। এ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ, ভুটান সহ প্রতিবেশী দেশগুলিতেও বটবৃক্ষের চারা লাগিয়েছেন।

আর‌ও পড়ুন: ঘুম ভেঙেই যদি এমন দৃশ্য দেখতে হয়…

পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির কুলাই পদিমা নিম্ন বুনিয়াদী বিদ্যালয়ের শিক্ষক শ্যামল জানা। শুধু একজন শিক্ষকই নন, তিনি এলাকায় পরিবেশপ্রেমী হিসাবেও পরিচিত। তাঁর পরিবেশ প্রেম বলতে গাছ লাগানো, গাছের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি সমাজকে প্লাস্টিক মুক্ত করতে একাধিক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। এর পাশাপাশি বিভিন্ন জীবজন্তুদেরও খাদ্যের যাতে অভাব না হয় সেজন্য বাড়িতে তৈরি করেছেন ‘বাপের হোটেল’ নামক একটি পশুপাখিদের খাবার জায়গা। যেখানে পাখিদের জন্য দানাশস্যর পাশাপাশি অন্যান্য পশুদের জন্য খাবার রাখেন তিনি। নানান সমাজসেবামূলক কাজের পাশাপাশি তাঁর স্বপ্ন বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে বটবৃক্ষের গাছ লাগানো।

এ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি জেলার পাশাপাশি অসম, ত্রিপুরা, মনিপুর সহ পাঁচটি রাজ্যে বটগাছের চারা রোপণ করেছেন। এমনকি নেপাল, বাংলাদেশ ও ভুটানেও বট গাছ লাগিয়ে এসেছেন তিনি। তাঁর জীবনের মন্ত্র, ‘থাকব নাকো বদ্ধ ঘরে, বৃক্ষরোপণ বিশ্বজুড়ে।’ এ পর্যন্ত অন্যান্য গাছের পাশাপাশি শুধুমাত্র বটগাছ লাগিয়েছেন ১,০৫৪ টি। শুধু গাছ লাগিয়েই ক্ষান্ত হন না। তাদের পরিচর্যার দিকেও নজর রাখেন।

আর‌ও পড়ুন: ভোটের মধ্যেই দার্জিলিঙে পর্যটকদের ভিড়

বট গাছ লাগানোর বিষয়ে শিক্ষক শ্যামল জানা জানান, বিশ্ব উষ্ণায়ন দিন দিন বাড়ছে। যা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করবে। তাই আগামী প্রজন্মকে বিশ্ব উষ্ণায়নের হাত থেকে বাঁচাতেই বটগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কারণ বটগাছ খুব অল্প পরিচর্যায় বেড়ে ওঠে এবং একটি বটগাছ দীর্ঘদিন বেঁচে থাকে।

সৈকত শী

Lok Sabha Election 2024: থেকে ‌যাবে স্মৃতি, নতুন ভোটারা গাছ লাগাল ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে

নদিয়া: প্রতিটি ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে লাগানো হচ্ছে চারা গাছ। রানাঘাট মহকুমায় অভূতপূর্ব উদ্যোগ। আসন্ন লোকসভা নির্বাচন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষ থেকে চলছে প্রচার। নাওয়া-খাওয়ার সময় নেই প্রার্থীদের। অন্যদিকে প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও বসে নেই। তবে চৈত্রের অন্তিমে তীব্র দাবদাহকে উপেক্ষা করেই সাজো সাজো রব নির্বাচন উপলক্ষে। তবে হাঁসফাঁস করা তীব্র এই গরম থেকে কিছুটা রক্ষা পেতে একটাই ভরসা উপযুক্ত পরিমাণে গাছ লাগানো।

ঠিক এমন অবস্থায় নির্বাচনকে উপলক্ষ করে বৃক্ষরোপণের নিদর্শনের প্রথম দেখা মিলল নদিয়ার রানাঘাট সাব ডিভিশনে। শুধু তাই নয়, নতুন ভোটারদের ভোট বিষয়ে সচেতন করতে ও একাধারে পরিবেশ রক্ষর লক্ষ্যে তাদের হাত দিয়েই বৃক্ষরোপণের অভিনব এই পদক্ষেপ নিল রানাঘাট মহকুমা প্রশাসন। তারই অঙ্গ হিসেবে রানাঘাট মহকুমার শান্তিপুর ব্লকের বিভিন্ন ভোট গ্রহণ কেন্দ্রে নতুন ভোটারদের সঙ্গে নিয়ে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি পালন করল রানাঘাট মহকুমা প্রশাসন।

আর‌ও পড়ুন: ২০০ জনের বেশি নয় রামনবমীর মিছিলে

ফুলিয়া শিক্ষা নিকেতন স্কুলে নতুন ভোটারদের হাত দিয়ে বৃক্ষ রোপন করা হয়। মূলত প্রত্যেক বছরই প্রশাসনের তরফে নতুন ভোটারদের সচেতন করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়। এবার সেই উদ্যোগে বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি যোগ হওয়ায় গোটা বিষয়টি একটি অন্য মাত্রা পেল বলে মনে করছেন সাধারণ মানুষ। নতুন ভোটারাও খুশি। কারণ তাঁদের প্রথম ভোটদানকে স্মরণীয় করে রাখবে এই গাছ। এই প্রসঙ্গে শান্তিপুরের বিডিও সন্দীপ ঘোষ জানান, রানাঘাট সাব ডিভিশনের মোট ৭৫৩ টি বুথ। তবে শান্তিপুর ব্লক অফিসের অন্তর্গত ১৭২ টি পোলিং স্টেশন অর্থাৎ ৩৪০ টি বুথ এর আওতায় এসেছে। তবে এগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিদ্যালয়। তাই আগামীতে চারা গাছের বেড়ে ওঠা এবং রক্ষণাবেক্ষণের যাবতীয় দায়-দায়িত্ব তাদের উপর অর্পণ করার কথা বলা হয়েছে।

মৈনাক দেবনাথ

Charak Puja: স্বাধীনতার আগে শুরু, বহু যুগ পর নতুন চড়ক গাছের প্রাণ প্রতিষ্ঠা

মালদহ: বাংলা নববর্ষের আগের দিন চড়ক পুজো গ্রাম বাংলার বহু পরিচিত এক রীতি। যদিও শহর ঘেঁষা এলাকায় ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে এই প্রাচীন প্রথা। এরই মধ্যে মালদহের এক গ্রামে নতুন চড়ক গাছের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হল। এখানকার চড়ক পুজোর সূচনা হয়েছিল দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে।

স্বাধীনতার আগে থেকে হয়ে আসছে এই চড়ক পুজো। মালদহ শহরের সর্বমঙ্গলাপল্লী এলাকায় কিছু গাজন সন্নাসী এই চড়ক পুজো শুরু করেছিলেন। তারপর থেকে নিষ্ঠার সঙ্গে হয়ে আসছে এই চড়ক পুজো। এই বছরেও ধুমধামে সঙ্গে অনুষ্ঠিত হবে চড়ক পুজো। তার আগে থেকেই শুরু হয়েছে প্রস্তুতি। তবে এখানকার চড়কগাছটি দীর্ঘদিনের পুরনো। প্রায় ৬০ বছর ধরে একটি গাছেই চড়ক হয়ে আসছে। তাই এই বছর সেই গাছ পরিবর্তন করা হল। বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও পুজোর মধ্য দিয়ে নতুন চড়ক গাছের প্রাণ প্রতিষ্ঠা‌ করা হয়।

আর‌ও পড়ুন: পয়লা বৈশাখের হালখাতাতেও স্বাস্থ্য সচেতনতার ছাপ, ‘কম মিষ্টির’ সন্দেশের চাহিদা বেশি

মালদহ শহরের সর্বমঙ্গলাপল্লী এলাকায় চড়ক পুজো কমিটির উদ্যোগে পুরনো জরাজীর্ণ চড়কগাছ থেকে নতুন গাছে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। স্থানীয় মহিলা ও গাজন সন্নাসীরা বাদ্যযন্ত্র সহযোগে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। মহানন্দা নদী থেকে কলসিতে জল ভরে নিয়ে আসেন। এরপর নিয়ম নিষ্ঠার সঙ্গে পুজোপাঠের মধ্য দিয়ে প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয় নতুন চড়ক গাছের।চড়ক পুজো কমিটির সভাপতি জয়দেব ঘোষ বলেন, স্বাধীনতার আগে থেকে সর্বমঙ্গলা পল্লী এলাকায় চড়ক পুজোর আয়োজন হয়ে আসছে। জায়গা কম থাকার কারণে চড়ক ঘোরানো এবং মেলার আয়োজন করা হয় রবীন্দ্র সংঘ ময়দানে। আগে এই চড়ক পুজো উপলক্ষে মালদহ শহরে মেলা বসত। বর্তমানে মালদহ শহরের সর্বমঙ্গলাপল্লী এলাকায় জায়গা কমে এসেছে। চারিদিকে বাড়ি ঘর তৈরি হয়েছে। তাই পুজো এক জায়গায় হয়, সেখান থেকে কিছুটা দূরে মেলা বসে থাকে। স্থানীয় রবীন্দ্র সংঘ ক্লাবের মাঠে এখন মেলা বসে। তবে এখনও নিষ্ঠার সঙ্গে এই চড়ক পুজো হয়ে আসছে।

হরষিত সিংহ