কলকাতা: রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিনই ইন্ডিয়া জোটের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড়সড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এ দিন পার্ক সার্কাস ময়দানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক নিয়ন্ত্রণ করে সিপিএম৷ ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে গিয়ে তাঁকে অসম্মানিত হতে হয় বলেও অভিযোগ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
শুধু তাই নয়, সিপিএমের পাশাপাশি কংগ্রেসকেও এ দিন নাম না করে আক্রমণ করেছেন তৃণমূলনেত্রী৷ তিনি দাবি করেন, কংগ্রেসকে দেশে ৩০০টি আসনে লড়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি৷ বাকি আসনগুলিতে আঞ্চলিক দলগুলি নিজেদের শক্তিতে লড়ুক, এমনই চেয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী৷ কিন্তু কংগ্রেস সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি বলে অভিযোগ করেন তৃণমূলনেত্রী৷
আরও পড়ুন: ২০১৯-এ যা হয়েছিল…মমতার সংহতি যাত্রায় পা মিলিয়ে সতর্ক করলেন অভিষেক
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘জোটের বৈঠক হয় সিপিএম নেতাদের কথায়৷ যে সিপিএমের বিরুদ্ধে ৩৪ বছর ধরে ল়ড়াই করলাম, তাদের কোনও পরামর্শ আমি শুনব না৷ ইন্ডিয়া জোটের নাম দিলাম আমিই৷ আর আমাকেই এখন বৈঠকে গিয়ে প্রচুর অসম্মানিত হতে হয়৷’
তৃণমূলনেত্রী আরও বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম আঞ্চলিক দলগুলি নিজেদের রাজ্যে লড়ুক৷ তোমরা গোটা দেশে তিনশো আসনে একা লড়ো৷ আমরা সাহায্য করব৷ ওরা সেই প্রস্তাব মানেনি, বলে আমাদের যা বলব মানতে হবে৷ শুধু একটা কথাই বলব, বিজেপিকে সাহায্য করো না৷’
বাংলায় জোট হলেও আসন রফা কোন ফর্মুলায় হবে তা নিয়ে সংশয় ছিলই৷ গত শুক্রবার কালীঘাটে মুর্শিদাবাদ জেলার নেতৃত্বকে নিয়ে হওয়া লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি বৈঠকেও মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, এ রাজ্যের সব আসনেই লড়বে তৃণমূল৷ এ দিনও কার্যত সেই খবরে সিলমোহর দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিজেপি-কে আমরা কোনও আসন ছাড়ব না৷
শুধু তাই নয়, এ দিন জোট শরিকদেরও নাম না করে নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় বলেন, আমার হিম্মত আছে আমি ল়ড়তে চাই৷ কিন্তু এরা আমাকে লড়তে দেয় না৷ আজকে তো আমরা রাস্তায় নেমে পদযাত্রা করেছি, কটা দল করতে পেরেছে৷ শুধু মন্দিরে মন্দিরে ঘুরলে হবে?
ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে গিয়ে এর আগে দ্রুত আসন রফার প্রক্রিয়া শেষ করার দাবি জানিয়ে এসেছিলেন তৃণমূলনেত্রী৷ কিন্তু বাংলাতেই তৃণমূল কংগ্রেসকে খুব বেশি আসন ছাড়তে আগ্রহী নয়৷ আবার তৃণমূলের প্রস্তাবে রাজি নন প্রদেশ কংগ্রেস কর্তারা৷ বাংলায় জোটের পথে অন্যতম বাধা সিপিএম-তৃণমূল সম্পর্কও৷ এ দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্টই বুঝিয়ে দিলেন, শক্তির নিরিখেই এ রাজ্যে শরিকদের আসন ছাড়ার বিষয়ে খুব আগ্রহী নয় শাসক দল৷ ফলে এর পর বাংলার জোট ভবিষ্যৎ কী হবে, সার্বিক ভাবে ইন্ডিয়া জোটের ক্ষেত্রে কী প্রভাব পড়বে, তা সময়ই বলবে৷