ভেঙ্কটেশ্বর লাহিড়ী, পূর্ব বর্ধমান: কেউ রইলেন বাড়িতে। কেউ জড়ালেন পুলিশের সঙ্গে বচসায়। আরেকজন আড্ডা দিলেন প্রতিপক্ষ দলের ক্যাম্পে। ভোটের দিন নানা মুডে হেভিওয়েটরা। নজরে এল বর্ধমান-দুর্গাপুরে দিলীপ-কীর্তির রাজনৈতিক সৌজন্যের ছবিও। আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে ভোট। এখানে হেভিওয়েট নেতাদের ভোটের দিন দেখা গেল নানা মুডে। পুলিশের সঙ্গে বচসা, ভোট দিয়ে বাড়িতে, প্রতিপক্ষের ক্যাম্পে আড্ডা। আসানসোল লোকসভার অন্তর্গত পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা। পাণ্ডবেশ্বরের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি এখন বিজেপির নেতা। তিনি এদিন সকালে ভোট দেন আসানসোলের ডামড়া এলাকায়।
তারপর তিনি পাণ্ডবেশ্বরে ঢুকতে গেলেই তাঁর পথ আটকায় পুলিশ। পাণ্ডবেশ্বর ঢোকার মুখে হরিপুরের বহুলা মোড়ে পথ আটকালে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিজেপির জিতেন্দ্র তিওয়ারি। শেষপর্যন্ত আসানসোলেই ফিরে আসতে হয় জিতেন্দ্র তিওয়ারিকে। আসানসোলের আরও এক হেভিওয়েট নেতা মলয় ঘটক। রাজ্যের আইনমন্ত্রী। কয়লা কেলেঙ্কারিতে তিনি অনেকদিন ধরেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির আতস কাঁচের তলায়। তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে সিবিআই। একাধিকবার তলব করেছে ইডি। সেই মলয় ঘটক এদিন নিজের এলাকায় ভোট দিয়েই বাড়ি চলে যান। বাড়ি থেকেই খোঁজখবর নিতে থাকেন ভোটের। এদিকে তৃণমূল নেতাকে দেখা গেল বিজেপির ক্যাম্পে বসে থাকতে।
কে তিনি? ভোট চলার মাঝেই একসময় বিজেপির একটি ক্যাম্পে ঢুকে পড়েন পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। খোঁজখবর নেন ভোট কেমন হচ্ছে। তারপর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, ‘‘তিনি সকলেরই বিধায়ক।’’
আরও পড়ুন– প্রচণ্ড ঝড়ে উপড়ে গেল বিলবোর্ড ! মুম্বইয়ে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মৃত্যু ১৪ জনের
আসানসোলে এবার লড়াই ছিল তৃণমূলের শত্রুঘ্ন সিনহা বনাম বিজেপির এসএস আলুওয়ালিয়ার মধ্যে। ২০১৪ ও ২০১৯ লোকসভা ভোটে আসানসোল লোকসভা আসনে বিজেপির টিকিটে জয়ী হন বাবুল সুপ্রিয়। পরে বাবুল ফুল বদলে তৃণমূলে। বাইশের উপ নির্বাচনে আসানসোলে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা। এবারও তিনিই আসানসোলে তৃণমূলের প্রার্থী। উল্টোদিকে বিজেপির এসএস আলুওয়ালিয়া। এদিন তিনি ছিলেন হোটেলে। হোটেলের ঘরেই ওয়ার রুম। সেখানে বসেই খোঁজখবর নেন আসানসোলের পদ্ম প্রার্থী। বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রে যুদ্ধের মাঝেই সৌজন্যের রাজনীতির ছবিও ধরা পড়ল।
বর্ধমান দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপির দিলীপ ঘোষ বনাম তৃণমূলের কীর্তি আজাদ। নাম ঘোষণার হওয়ার পর থেকেই দু’জনে একে অপরকে নিশানা করে বারবার সুর চড়িয়েছেন। ভোটের দিন অবশ্য দেখা গেল অন্য ছবি। মন্তেশ্বরে একে অপরের সঙ্গে দেখা হতেই হ্যান্ড শেক। কোলাকুলি। একে অপরকে বললেন বেস্ট অফ লাক। পরে সাংবাদিকদের দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘‘ওনার সাথে দেখা হল। ওনার সাথে আমার অনেক আগে থেকেই পরিচয়। বয়স হয়েছে, তাই ওনাকে বললাম রোদে ঘুরবেন না। ঘরেই থাকুন।’’ সকালে বর্ধমানের বাড়ি থেকে দিলীপ ঘোষ রওনা হয়ে বিভিন্ন বুথে ঘুরে বেড়ান। তাঁর কনভয়ে দু দুবার হামলার অভিযোগও ওঠে। আক্রান্ত হন দিলীপ ঘোষের চারজন নিরাপত্তা রক্ষী। অভিযোগ, শাসক দলের ইট বৃষ্টিতে ভেঙে যায় নিরাপত্তা রক্ষীদের গাড়িও। কীর্তি আজাদও সোমবার ভোটের দিন বিভিন্ন বুথে বুথে ঘুরে ভোট তদারকি করেন।