উত্তর ২৪ পরগনা: সরকারিভাবে পাট্টা পেলেও সেই জমিতে গত ১০ বছর ধরে পরিবার নিয়ে থাকতে পারছেন না আমডাঙার পবন পাল। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তাঁকে রীতিমত উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রশাসনের দুয়ারে মাথা ঠুকেও অধিকার ফিরে পাননি তিনি। তাই অবশেষে বাধ্য হয়ে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনেই সংসার পাতলেন অসহায় পবন।
কাশিমপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের নরসিংহপুর ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা পবন পাল। বাধ্য হয়ে বারাসতে জেলাশাসকের অফিসের সামনে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে রীতিমত সংসার পেতে ধরনায় বসেছেন। পবন পালের রোজগার বলতে কোনও দিন ৫০ টাকা তো কোনও দিন ১০০ টাকা। হকারি করেই বছর দশকের কন্যা সন্তান ও মানসিক ভারসাম্যহীন স্ত্রীকে নিয়েই জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ফের বন্ধ চা বাগানে খাঁচাবন্দি চিতাবাঘ
জানা গিয়েছে, পবনের বাবা কৃষ্ণপদ পাল ১৯৯১ সালে সরকারিভাবে চার কাঠা জমির পাট্টা পান। সেই জমিতে তাঁরা বসবাস করতেন। অভিযোগ, কৃষ্ণপদবাবু মারা যাওয়ার পর ২০১২ সালে ওই পরিবারের সদস্যদের সেই জায়গা থেকে উৎখাত করে দেয় স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য তপন মল্লিক। তারপর বারে বারে প্রশাসনের নানা স্তরে গিয়ে অভিযোগ জানালেও কোনও কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে পরিবার নিয়ে পবন পাল দিন কাটান ভাঙা ছাদের টালির ঘরে। বর্ষাকালে জলে ভেসে যায় গোটা ঘর। কোথাও ত্রিপল টাঙিয়ে, আবার কোথাও এক চিলতে চাদর দিয়ে ঘিরে কোনওরকমে দিন গুজরান করেন।
বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে স্থানীয় প্রশাসনের উপর আজ আর কোনও আস্থা নেই পবনের। তাই শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়া মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে বারাসতে জেলাশাসকের দফতরের সামনে ধর্নায় বসেছেন পবন পাল। এদিকে অভিযুক্ত ইছাপুর নীলগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য তপন কুমার মল্লিক বিষয়টি নিয়ে কোনওরকম প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। পাল্টা সাংবাদিকদের উপরই আক্রমণ করেন তিনি! এমন পরিস্থিতিতে নিজের অধিকার ফিরে পেতে পবন সহ তাঁর গোটা পরিবারের এ হেন অবস্থান-বিক্ষোভে আদৌ প্রশাসনের টনক নড়ে কিনা এখন সেটাই দেখার।
রুদ্রনারায়ণ রায়