Tag Archives: Kanchanjunga Express Accident

Kanchanjunga Express Accident: পড়ে রইল কেক, খিচুড়ি-মাছ ভাজা! মেয়ের জন্মদিনেই কাঞ্চনজঙ্ঘা দুর্ঘটনায় চিরঘুমে বাবা

বালিগঞ্জ: বাড়ি ফিরে আর খাওয়া হলো না খিচুড়ি মাছ ভাজা। মেয়ের জন্মদিনের আগেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এ দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল কলকাতার বালিগঞ্জের বাসিন্দা শুভজিৎ মালীর। বর্তমানে তাঁর নিষ্প্রাণ দেহ পড়ে রয়েছে উত্তরবঙ্গ মেডিক‍‍্যাল কলেজের মর্গে। বালিগঞ্জের ১৭ জামির লেনের বাসিন্দা শুভজিৎ মালীর বাড়িতে এখন শোকের ছায়া।

আরও পড়ুনঃ ইঞ্জিনে ছিল ‘ভিজিলেন্স কন্ট্রোল ডিভাইস’, তবুও ঘটল দুর্ঘটনা! ঘাতক মালগাড়ি নিয়ে উঠছে একাধিক প্রশ্ন

বাড়িতে রয়েছে ১১ বছরের ছোট মেয়ে, মেয়ের আবদার ছিল বাবা বাড়িতে এলে জন্মদিনের কেক কাটবে। মেয়ের আবদারের কারণেই তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফেরার জন্য তিনি উঠেছিলেন অভিশপ্ত সেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। এর পরেই ঘটে সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা, যাতে প্রাণ যায় বালিগঞ্জের বাসিন্দা শুভজিৎ মালির।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, শুভজিৎ মালিকে কর্মসূত্রে প্রায়ই যেতে হয় ভিন রাজ্যে। সম্প্রতি একটি চারচাকা গাড়ি চালিয়ে সেই গাড়ি ডেলিভারি দিতে গিয়েছিলেন নাগাল্যান্ডে। সেখানে গাড়ি ডেলিভারি দিয়ে ফিরছিলেন কলকাতায়। এই কাজ তিনি দীর্ঘ প্রায় পাঁচ বছর ধরে করে আসছেন, গাড়ি নিয়ে ভিন রাজ্যে যান, সেখানে ডেলিভারি দিয়ে ফিরে আসেন কলকাতায়। মেয়ের আবদার মেটাতে দ্রুত বাড়ি ফেরার জন্যেই ট্রেনে চেপে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। আর এরপরেই কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় বালিগঞ্জের বাসিন্দা শুভজিৎ মালি। ইতিমধ্যেই তাঁর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে।

সুমন সাহা

Kanchanjungha Express Accident: প্রিয়জনের অপেক্ষায়, ট্রেনের পথ চেয়ে সারি সারি উদ্বিগ্ন মুখের ভিড়ে বিপর্যস্ত নিউ জলপাইগুড়ি

সুরজিৎ দে, জলপাইগুড়ি: উত্তরবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন লাগোয়া রাঙাপানি এলাকায় মর্মান্তিক রেল দুর্ঘটনার পরে কার্যত লন্ডভন্ড ছবি নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের। অসহায় কাতর মুখগুলো দেখলে চোখে জল আসতে বাধ্য। ট্রেনের অপেক্ষায় স্টেশনেই ভিড় অগণিত অসহায় যাত্রীর। একদিকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে জলে ভাসছে পাহাড় থেকে সমতল। পাহাড়ে আটকে থাকা বহু পর্যটকদের ধীরে ধীরে শিলিগুড়ি নিয়ে আসা হচ্ছে।

পাহাড়েও প্রশাসনের তরফে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলছে  আটকে থাকা ব্যক্তিদের উদ্ধারকার্য থেকে শুরু করে সরানোর কাজ। উপরন্তু অবিরাম বৃষ্টির জেরে এখনও প্রতি পদে নানা বিপদের সম্মুখীন হতে হচ্ছে প্রশাসনকে। প্রতিকূল আবহাওয়ার জেরে ক্রমশই পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। কার্যত বন্যা পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গ জুড়ে। তার উপর গতকালের ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস এবং একটি মালগাড়ির সংঘর্ষে ঘটা মর্মান্তিক দুর্ঘটনার জেরে হাজার হাজার যাত্রীর চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট।

একদিকে পাহাড়ে আটকে থাকা পর্যটকদের উদ্বিগ্ন চেহারা, অন্যদিকে আতঙ্কিত রেল যাত্রীদের ভিড়-সব  মিলিয়ে একেবারে বিপর্যস্ত চেহারা নিয়েছে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন চত্বর। এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনাগ্রস্থ রেল লাইন ক্লিয়ার হয়নি। ফলে উত্তর পূর্ব রেল যোগাযোগ ব্যহত হচ্ছে। এনজেপি স্টেশনের যাত্রী প্রতিক্ষালয় থেকে শুরু করে প্ল্যাটফর্মে ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রেনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছেন যাত্রীরা। কবে, কখন মিলবে বাড়ি ফেরার ট্রেন! তারই অপেক্ষায় চাতকপাখির মতো অসহায় ভাবে অপেক্ষা করছেন প্রত্যেকে।

আরও পড়ুন : অসহ্য গরমে হল এক পশলা স্বস্তির বর্ষণ, গৌড়বঙ্গের জেলাগুলিতে আসছে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি

কখন, কোন ট্রেন, কোন পথে আসবে? আদৌ আসবে কিনা? তা নিয়ে রেলের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও সঠিক নির্দেশিকাও পাচ্ছেন না তাঁরা, এমনটাই অভিযোগ জানাচ্ছেন যাত্রীদের একাংশ। অনেকেই বিকল্প উপায়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন আবার কেউ কেউ দিন যাপনের জন্য হন্যে হয়ে হোটেল খুঁজছেন। কেউ আবার স্টেশনেই দিব্যি কাটিয়ে দিচ্ছেন ট্রেনের অপেক্ষায়। স্টেশনের সার্বিক ছবি দেখে স্বাভাবিকভাবেই বোঝার উপায় নেই যে এটি একটি রেলস্টেশন! তবে, দ্রুত পরিস্থিতির স্বাভাবিক করতে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে প্রশাসনের তরফে। এবার কখন আসে বাড়ি ফেরার ট্রেন, এখন তারই অপেক্ষায় যাত্রীরা।

Train Accident: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের রেশ না কাটতেই ফের অঘটন! দাউ দাউ করে আগুন মালগাড়িতে, বেলদায় হুলুস্থুলু, অল্পের জন‍্য কীভাবে রক্ষা?

বেলদা: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের স্মৃতি এখনও তাজা। তার মাঝেই বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে অল্পের জন‍্য রক্ষা পেল উড়িষ্যা গামী মাল গাড়ি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, খড়্গপুর থেকে উড়িষ্যা গামী একটি চলন্ত মালগাড়িতে আগুন লেগে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা স্টেশনের কাছে।

সূত্রের খবর অনুযায়ী, চলন্ত মালগাড়ির একটি ডাব্বাতে আগুন লেগে যায়। সেই আগুন দেখতে পায় ওই মালগাড়ির চালক। আগুন দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষে দেন ওই মালগাড়ির চালক। খবর দেওয়া হয় স্থানীয় স্টেশন মাস্টারকে।

আরও পড়ুন: বলুন তো কোন জিনিস শুকনো অবস্থায় ২ কেজি, ভিজে গেলে ১ কেজি, আবার পুড়লে ৩ কেজি হয়ে যায়? ৯৯% লোকজনই ভুল উত্তর দিয়েছেন

জানা গিয়েছে, খবর পেয়ে ছুটে আসেন স্টেশন মাস্টার-সহ রেলের কর্মীরা। স্টেশন মাস্টার এবং রেলকর্মীরা সকলে মিলেই আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। পাশপাসি খবর দেওয়া হয় দমকল বিভাগকে।

আরও পড়ুন: ব্রাশ করতেই করতেই বিকট শব্দ, প্রবল ঝাঁকুনি তারপর…আতঙ্কের প্রহর, শিউরে ওঠা অভিজ্ঞতা জানালেন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যাত্রী

দমকলের কর্মীরা এসে কয়লা বোঝায় ওই আগুনকে নিয়ন্ত্রণে আনে বলেই জানা গিয়েছে। যদিও সিনিয়র ডিসিএম জানিয়েছেন ‘‘মাঝেমধ‍্যে এরকম কয়লা গাড়িতে নিজেই আগুন লেগে যায়। খবর পেয়েই দ্রুত আমরা ফায়ার ব্রিগেড খবর দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছি।’’

Shankar Rai

Kanchanjungha Express Accident: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় শিশুর মৃত্যু, রাঙাপানি স্টেশনে এই মুহূর্তে কী চলছে? মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১০

*সোমবার সকাল পৌনে ন'টা নাগাদ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে জলপাইগুড়ির ফাঁসিদেওয়ার কাছে৷ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনকে পিছন দিক থেকে ধাক্কা মারে একটি মালগাড়ি৷ প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগ মাথায় নিয়েই সারাদিন ধরে চলে উদ্ধারকাজ৷ রাতে আপ লাইনে মালগাড়ির ট্রায়াল রান করা হয়। তা সম্পন্ন হওয়ার পর সোমবার রাত ১২'টার পর আপ লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে৷ ডাউন লাইনের মেরামতির কাজ চলছে। প্রতিবেদনঃ অনির্বাণ রায়। ফাইল ছবি। 
*সোমবার সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে জলপাইগুড়ির ফাঁসিদেওয়ার কাছে৷ কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনকে পিছন দিক থেকে ধাক্কা মারে একটি মালগাড়ি৷ প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগ মাথায় নিয়েই সারাদিন ধরে চলে উদ্ধারকাজ৷ রাতে আপ লাইনে মালগাড়ির ট্রায়াল রান করা হয়। তা সম্পন্ন হওয়ার পর সোমবার রাত ১২’টার পর আপ লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে৷ ডাউন লাইনের মেরামতির কাজ চলছে। প্রতিবেদনঃ অনির্বাণ রায়। ফাইল ছবি।
*রেল দূর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ১১। মৃত শিবা মণ্ডল (৬) পিকু ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। বাবা ও মায়ের সঙ্গে মালদহে ফিরছিল গোটা পরিবার। মৃত মালদহের কালিয়াগঞ্জের সামসীতে বাড়ি। মৃতের বাবা ও মা চিকিৎসাধীন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। ফাইল ছবি। 
*রেল দূর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ১১। মৃত শিবা মণ্ডল (৬) পিকু ওয়ার্ডে ভর্তি ছিল। বাবা ও মায়ের সঙ্গে মালদহে ফিরছিল গোটা পরিবার। মৃত মালদহের কালিয়াগঞ্জের সামসীতে বাড়ি। মৃতের বাবা ও মা চিকিৎসাধীন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। ফাইল ছবি।
*রেলের তরফে জানানো হয়েছে খুব শীঘ্রই ডাউন লাইনেও ট্রেন চলাচল শুরু হয় যাবে। তবে ইলেকট্রিক তার ছিঁড়ে যাওয়ায় এখন শুরু মাত্র ডিজেল ইঞ্জিন চালানো হচ্ছে। সবমিলিয়ে সোমবার শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৷ ফাইল ছবি। 
*রেলের তরফে জানানো হয়েছে খুব শীঘ্রই ডাউন লাইনেও ট্রেন চলাচল শুরু হয় যাবে। তবে ইলেকট্রিক তার ছিঁড়ে যাওয়ায় এখন শুরু মাত্র ডিজেল ইঞ্জিন চালানো হচ্ছে। সবমিলিয়ে সোমবার শিয়ালদহগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১১৷ ফাইল ছবি।
*সকাল থেকে দু'জনের ছুটি হয়েছে ইতিমধ্যেই। এখন পর্যন্ত মোট চিকিৎসাধীন ৩৬। তার মধ্যে এক শিশু ভর্তি রয়েছে পিকু ওয়ার্ডে। বাকিদের আলাদা ওয়ার্ড করে চিকিৎসা চলছে। গতকাল দুর্ঘটনায় মৃত কলকাতার সোদপুরের ব্যবসায়ী শুভজিৎ মালির পরিবার আজ মৃতদেহ নিয়ে ফিরবে। এ দিন আত্মীয়রা জানান, গুয়াহাটি থেকে কলকাতা থেকে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। কিছু আইনি কাজ শেষ হলে মৃতদেহ নিয়ে ফিরব। ফাইল ছবি। 
*সকাল থেকে দু’জনের ছুটি হয়েছে ইতিমধ্যেই। এখন পর্যন্ত মোট চিকিৎসাধীন ৩৬। তার মধ্যে এক শিশু ভর্তি রয়েছে পিকু ওয়ার্ডে। বাকিদের আলাদা ওয়ার্ড করে চিকিৎসা চলছে। গতকাল দুর্ঘটনায় মৃত কলকাতার সোদপুরের ব্যবসায়ী শুভজিৎ মালির পরিবার আজ মৃতদেহ নিয়ে ফিরবে। এ দিন আত্মীয়রা জানান, গুয়াহাটি থেকে কলকাতা থেকে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়। কিছু আইনি কাজ শেষ হলে মৃতদেহ নিয়ে ফিরব। ফাইল ছবি।
*উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয় আরও একজনের। ইতিমধ্যেই মৃতদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৯ জনের দেহ উদ্ধার হলেও এক যাত্রী চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরবর্তীতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। ফাইল ছবি। 
*উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয় আরও একজনের। ইতিমধ্যেই মৃতদের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল। রেল সূত্রে জানানো হয়েছে, দুর্ঘটনাস্থল থেকে ৯ জনের দেহ উদ্ধার হলেও এক যাত্রী চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরবর্তীতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে মারা গিয়েছেন। ফাইল ছবি।
*আগরতলা থেকে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ও মালগাড়ির দুর্ঘটনায় মৃত ১১ জনের মধ্যে ৭ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। বাকি ৩ জনের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। মৃতরা হলেন শুভজিৎ মালি (৩২), সেলেব সুব্বা (৩৬), আশিষ দে (৪৭)। এ ছাড়া মৃত্যু হয়েছে বিউটি বেগমের (৪১), মালগাড়ির চালক অনিল কুমারের। মৃত্যু হয়েছে শঙ্কর মোহন দাসের (৬৩)। মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃ্ত্যু হয়েছে বিজয় কুমার। ফাইল ছবি। 
*আগরতলা থেকে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ও মালগাড়ির দুর্ঘটনায় মৃত ১১ জনের মধ্যে ৭ জনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। বাকি ৩ জনের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। মৃতরা হলেন শুভজিৎ মালি (৩২), সেলেব সুব্বা (৩৬), আশিষ দে (৪৭)। এ ছাড়া মৃত্যু হয়েছে বিউটি বেগমের (৪১), মালগাড়ির চালক অনিল কুমারের। মৃত্যু হয়েছে শঙ্কর মোহন দাসের (৬৩)। মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃ্ত্যু হয়েছে বিজয় কুমার। ফাইল ছবি।
*রেলের তরফ থেকে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ১৩১৭৪ ডাউন আগরতলা থেকে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪৪ জন, যার মধ্যে ২৩ জন পশ্চিমবঙ্গের৷ ৫ জন ঝাড়খণ্ড, অসম ও ত্রিপুরার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ৪৪ জনের মধ্যে ৭ জন মহিলা এবং ৩৭ জন পুরুষ যাত্রী রয়েছেন। ফাইল ছবি।
*রেলের তরফ থেকে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, ১৩১৭৪ ডাউন আগরতলা থেকে শিয়ালদাগামী কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৪৪ জন, যার মধ্যে ২৩ জন পশ্চিমবঙ্গের৷ ৫ জন ঝাড়খণ্ড, অসম ও ত্রিপুরার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। ৪৪ জনের মধ্যে ৭ জন মহিলা এবং ৩৭ জন পুরুষ যাত্রী রয়েছেন। ফাইল ছবি।

Kanchanjunga Express Accident: ব্রাশ করতেই করতেই বিকট শব্দ, প্রবল ঝাঁকুনি তারপর…আতঙ্কের প্রহর, শিউরে ওঠা অভিজ্ঞতা জানালেন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যাত্রী

মালদহ: হঠাৎ বিকট শব্দ, তারপর বার কয়েক ঝাঁকুনি। তখন ট্রেনের যাত্রীদের অনেকেই ঘুমিয়ে রয়েছে, আবার কেউ কেউ ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হচ্ছেন। তার মাঝে এমন ঘটনা। যাত্রীরা একে অপরের উপর হুমড়ি খেয়ে পড়ে গিয়েছেন। অনেকেই তাতে জখম হয়েছেন।

সেই সময় ঘুম থেকে উঠে বেসিনের কাছে দাঁড়িয়ে ব্রাশ করছিলেন সুমন সোম। তিনি ওই ট্রেনের এস-৫ কামরার যাত্রী ছিলেন। তার উপর হুমড়ি খেয়ে পড়লেন বেশ কয়েকজন। ক্ষণিকের মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ল ট্রেন জুড়ে। কামরায় মধ্যেই শুরু যাত্রীদের মধ্যে ছোটাছুটি। ট্রেন থেকে নীচে নেমে আসার হুড়োহুড়ি।

আরও পড়ুন: বলুন তো কোন জিনিস শুকনো অবস্থায় ২ কেজি, ভিজে গেলে ১ কেজি, আবার পুড়লে ৩ কেজি হয়ে যায়? ৯৯% লোকজনই ভুল উত্তর দিয়েছেন

সেই ভিড় সামলে কোন রকমে নিজের ব্যাগ নিয়ে নীচে নেমে আসেন সুমন সোম। নীচে নেমে দেখেন ট্রেনের পেছনের অংশ দুমড়ে মুছড়ে রয়েছে। চারিদিকে যাত্রীদের হা- হা কার। এই দৃশ্য দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন আগরতলার বাসিন্দা ওই ট্রেন যাত্রী সুমন সোম। ভিড়ের মধ্যে নিজের মোবাইল হারিয়ে ফেলেন‌। মোবাইল না খুঁজেই সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। ট্রেনের এমন দৃশ্য দেখে থাকতে পারছিলেন না। দূর্ঘটনাস্থল থেকে টোটো করে ঘোষপুকুরে পৌঁছান।

সেখান থেকে বাস ধরে মালদহের উদ্দেশ্য রওয়না দেন। ত্রিপুরার আগরতলার বাসিন্দা সুমন সোম। তিনি পেশায় গাড়ি চালক। কলকাতায় আসছিলেন গাড়ি নিতে। পথেই ট্রেন দূর্ঘটনার কবলে পড়েন। সুমন সোম বলেন, ট্রেনটি ভাল চলছিল। এদিন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন ছাড়ার পর ট্রেনটি ধীর গতিতে ছিল। তখন বাইরে মুষুলধারে বৃষ্টি পড়ছে। সবে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হচ্ছিলেন সুমন বাবু। ঠিক সেই সময় পেছন থেকে মালগাড়ি ধাক্কা মারে।

আরও পড়ুন: নেট প্রচণ্ড স্লো? বারবার বন্ধ হয়ে যায়? এই ৬ গোপন টিপস শিখে নিন, স্পিড নিয়ে কোনও দিন ভাবতে হবে না, ৯৯% লোকজনই জানেন না

এদিন সন্ধ্যায় বাসে করে মালদহে এসে পৌঁছান তিনি। শুধুমাত্র সুমন সোম নয়, এদিন দূর্ঘটনাগ্রস্থ ট্রেনটিতে থাকা বহু যাত্রী আতঙ্কে বাসে করে মালদহ টাউন স্টেশনে পৌঁছায়। মালদহে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস পৌঁছালে, আতঙ্ক সঙ্গে নিয়েই ওই ট্রেনে ওঠেন যাত্রীরা।

হরষিত সিংহ

Kanchanjangha Train Accident: কাঞ্চনজঙ্ঘা কাণ্ডে দোষ কার? তদন্ত শুরু! ছন্দে ফিরছে রাঙাপানি, ডাউন লাইনে চালু হল ট্রায়াল রান

রাঙাপানি : সোমবারই ঘটে গিয়েছে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা। তারপর থেকে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল টানা প্রায় ২৪ ঘণ্টা। অবশেষে ফের ছন্দে ফেরার চেষ্টায় রাঙাপানি। মঙ্গলবার সকালেই ডাউন লাইনে ট্রায়াল রান শুরু করল রেল। অন্যদিকে আপ লাইনে ওভারহেড তার সারানোর প্রক্তিয়া শুরু হয়েছে। এরইমধ্যে লাইন সারানোর কাজ করতে গিয়ে জখম হয়েছেন ২ রেলকর্মী। দূর্ঘটনাস্থলের পাশেই চলছে তাঁদের চিকিৎসা। রেলের মেডিকেল টিম তদারকি করছে।

এদিকে রাঙাপানি ট্রেন দূর্ঘটনার তদন্ত শুরু করছেন চিফ কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি। আজ মঙ্গলবারই শিলিগুড়ি পৌঁছনোর কথা জনক কুমার গর্গের। বিকেলেই দূর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন তিনি। আগামিকাল বুধবার থেকে শুরু হবে জিজ্ঞাসাবাদ।

স্টেশন মাস্টার, কাঞ্চনজঙ্ঘার মোটরম্যান, পণ্যবাহী ট্রেনের চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। যে কোনও ব্যক্তিও তাঁর মতামত জানাতে পারেন সিসিআরএসের কাছে গিয়ে। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের সঙ্গে মালগাড়ির সংঘর্ষের ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ আগেই দিয়েছে রেল। উত্তর-পূর্ব রেলের মুখ্য সুরক্ষা কমিশনার জনক কুমার গর্গের তত্ত্বাবধানে এই তদন্ত হবে।

আরও পড়ুন: ‘মঙ্গলবার’ থেকেই প্রাক বর্ষার খেলা শুরু দক্ষিণবঙ্গে…! আইএমডি দিল বড় আপডেট! সোমবার বজ্রবিদ্যুৎ-ঝড়-জল কাঁপাবে কোন কোন জেলা?

বুধবার অর্থাৎ ১৯ জুন থেকে এই তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হবে। এক্ষেত্রে কোনও সাধারণ মানুষের কাছে দুর্ঘটনা সম্পর্কিত কোনও তথ্য থাকলে তাঁরা তা তদন্ত কমিশনের কাছে জানাতে পারবেন বলে জানিয়েছে উত্তর-পূর্ব রেল। নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের এডিআরএম (অতিরিক্ত ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার)-এর অফিসে এই কমিশন বসবে। এ ছাড়াও সুরক্ষা কমিশনারকে সরাসরি চিঠি পাঠিয়েও এই দুর্ঘটনা সংক্রান্ত তথ্য প্রদান করা যেতে পারে বলেও নোটিশে জানিয়েছে রেল।

দুর্ঘটনায় আহতদের চিকিৎসা নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ক্যাম্প করেছে আরপিএফ। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৮জন আহত যাত্রী। অধিকাংশই সুস্থ অবস্থায় রয়েছেন বলেই সূত্রের খবর। এদিন আহত এক যাত্রী ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। তাঁর চোখে মুখে দেখা যায় আতঙ্কের ছাপ। আহত যাত্রী বিএসএফের আধিকারিক। তিনি বলেন “দূর্ঘটনাগ্রস্থ কামরা থেকে বেরিয়ে আহতদের তুলে বের করি। বাড়ি ফেরার পথেই এই দূর্ঘটনা ঘটেছে। এক লাইনে ২ ট্রেন নিয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তবে আতঙ্ক রয়েছে, সারারাত ঘুম হয়নি।

Kanchenjunga Accident: হলদিবাড়ি এক্সপ্রেস না পেয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘায় চেপেছিলেন… আর ফেরা হল না পূর্ব বর্ধমানের বিউটির

পূর্ব বর্ধমান: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পূর্ব বর্ধমান জেলার গুসকরা শহরের বাসিন্দা। মৃতের নাম বিউটি বেগম সেখ(৪৩)।

সূত্রের খবর, মৃতের স্বামী শিলিগুড়িতে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। তিনমাস সেখানেই ছিলেন গুসকরা শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইটাচাঁদা এলাকার বাসিন্দা বিউটি বেগম শেখ (৪৩) নামে ওই বধূ। সোমবার সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে ট্রেন ধরে গুসকরায় ফিরছিলেন। কিন্তু অভিশপ্ত দুর্ঘটনায় কাড়ল তার প্রাণ। দুর্ঘটনার পর হাসপাতালে স্ত্রীর মৃতদেহ সনাক্ত করেন স্বামী হাসমত শেখ।

আরও পড়ুন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃত ৮, পিষে মর্মান্তিক মৃত্যু চালক-গার্ডের, আরও বাড়বে মৃতের সংখ্যা?

 ইটাচাঁদার বাসিন্দা হাসমত শেখের এক ছেলে ও এক মেয়ে। ছেলে কেরলে কাজ করেন। মেয়ে সুনয়নী খাতুনের বিয়ের পর বিউটি খাতুন শেখ তাঁর স্বামীর কাছে গিয়েছিলেন। হাসমত শিলিগুড়িতে ঘরভাড়া করে থাকেন। সেখানেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী।  সকালে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে হলদিবাড়ি এক্সপ্রেস ট্রেন ধরার কথা ছিল। ট্রেনটি আজ না থাকায় কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে চেপেছিলেন।

সোমবার সকালে উত্তরবঙ্গের রাঙাপানি স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে৷ পিছন থেকে মালগাড়ির সজোর ধাক্কায় লাইনচ্যূত হয়ে যায় ট্রেনের একাধিক কামরা৷ ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে ৮ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে, দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে৷ আহতের সংখ্যা ৬০-এরও বেশি৷ আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে৷

Kanchenjunga Express Accident: কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের ভয়াবহ দুর্ঘটনা কীভাবে হল? রেলমন্ত্রী সেখানে গিয়ে কী বললেন দেখুন

উত্তরবঙ্গে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা। দুর্ঘটনাস্থলে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। দুর্ঘটনায় ডাউন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। বাইকে চেপে দুর্ঘটনাস্থলে রেলমন্ত্রী। উত্তরবঙ্গের রাঙাপানি স্টেশনের কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে প্রায় একটা গোটা বেলা৷ ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে ৮ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে৷ আহতের সংখ্যা প্রায় ৬০ জন৷ তাঁদের মধ্যে২০ জন গুরুতর আহত৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই বিমানযোগে রওনা দিয়েছেন উত্তরবঙ্গের উদ্দেশে৷ তাঁর আগেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব৷ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁর মন্তব্যা, ‘‘এটা রাজনীতি করার সময় নয়৷ কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল, তার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত আমরা করব৷’’

Kanchenjunga Accident: মাথা ফেটে গেল একরত্তির, তাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত মা-ও… গায়ে কাঁটা দেওয়া অভিজ্ঞতা শোনালেন অভিশপ্ত ট্রেনের যাত্রী

কোচবিহার:  সোমবার সকালে উত্তরবঙ্গের রাঙাপানি স্টেশনের কাছে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে৷ পিছন থেকে মালগাড়ির সজোর ধাক্কায় লাইনচ্যূত হয়ে যায় ট্রেনের একাধিক কামরা৷ ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল থেকে ৮ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে৷ আশঙ্কা করা হচ্ছে, দুর্ঘটনায় অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে৷ আহতের সংখ্যা ৬০-এরও বেশি৷ আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে৷

যাত্রীরা নিশ্চিন্তেই বসেছিলেন ট্রেনের ভেতর। সিগন্যাল না পেয়ে ট্রেন থামে রাঙাপানি স্টেশন থেকে কিছুটা দূরে। আচমকাই তীব্র ঝাঁকুনি উপলব্ধি করেন ট্রেনের ভেতর থেকে যাত্রীরা। সকলেই শুনতে পান বিকট এক আওয়াজ। মুহূর্তে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে ট্রেনের যাত্রীদের মধ্যে। আতঙ্কিত যাত্রীরা ট্রেন থেকে নেমে দেখেন একটি মাল বোঝাই ট্রেন এসে সজোরে ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে। পিছন দিক থেকে ধাক্কা মারার কারণে পেছনের কামরা উঠে যায় মাল বোঝাই ট্রেনের ইঞ্জিনের উপর। পিছনে থাকা দুটি কামরা রীতিমতো দুমড়ে মুচড়ে যায়।

এই ট্রেনে যাত্রা করছিলেন কোচবিহারের  অমিত বণিক।  জানাচ্ছেন ভয়ঙ্কর উপলব্ধির কথা, দুর্ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই এক তীব্র ঝাঁকুনি । কামরায় থাকা এক ছোট্ট শিশুর মাথা ফেটে যায়। শিশুটিকে বাঁচাতে গিয়ে তাঁর মা আহত হন। দ্রুত আহত এবং গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালের উদ্দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে সেই বিভীষিকা ভোলা যায়নি এখনও।

আরও পড়ুন কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় মৃত ৮, পিষে মর্মান্তিক মৃত্যু চালক-গার্ডের, আরও বাড়বে মৃতের সংখ্যা?

কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনা কবলিত তিনটে বগি গ্যাস কাটারের মাধ্যমে কেটে রেলের বাকি বগি-সহ যাত্রীদের নিয়ে নিরাপদেই শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা দিয়েছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস, এমনটাই সূত্র মারফত জানা গিয়েছে। সাময়িকভাবে দূরপাল্লার ট্রেনের চলাচল থেমে গেলেও পুনরায় স্বাভাবিক হচ্ছে রেলযাত্রা। কলকাতা-শিলিগুড়িগামী দূরপাল্লার রেলগুলিকে ঘুরপথে শিলিগুড়ি জংশন অবধি পৌঁছনোর একটা সম্ভাবনা রয়েছে।

পাশাপাশি, আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাস্থলে সকাল থেকেই ছিলেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্তা। ঘটনাস্থলে আসবেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের তরফে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন। মৃতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের পরিবারদের ২.৫ লক্ষ টাকা এবং সামান্য আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে এখনও পর্যন্ত জানানো হয়েছে।

Kanchanjunga Express Accident update: তদন্তের আগেই মৃত চালকের উপর দায়! কাঞ্চনজঙ্ঘা কাণ্ডে তিন প্রশ্নের মুখে রেল

কলকাতা: বার বার দুর্ঘটনা, আর প্রতিবারই সামনে আসে একগুচ্ছ প্রশ্ন৷ অবশ্য ভারতীয় রেলে এই প্রশ্নগুলি নতুন কিছু নয়৷ গত বছর এই জুন মাসেই ওড়িশায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস৷ সেই দুর্ঘটনার পরও রেলের ভূমিকা নিয়ে যা যা প্রশ্ন উঠেছিল, আজ উত্তরঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনার পরও সেই প্রশ্নগুলি সামনে আসছে৷

একনজরে দেখে নেওয়া যাক, কাঞ্চনজঙ্ঘা কাণ্ডের পর রেলের ভূমিকায় কী কী প্রশ্ন উঠছে-

১) তদন্তের আগেই কী করে জানিয়ে দেওয়া হল মালগাড়ির চালক সিগন্যাল দেখতে পাননি?

২) বারবার বলার পরেও এখনও বদল হল না কোচ? সেই আইসিএফ কোচ দিয়েই চলছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের মতো গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন। ফলে দুর্ঘটনা ঘটলেই বাড়ছে হতাহতের সংখ্যা৷ এখনও সব মেল, এক্সপ্রেস ট্রেনে কেন নেই এলএইচবি কোচ?

৩) স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থায় কী ভাবে এক লাইনে চলে এল অত্যন্ত দ্রুত গতির আর একটি ট্রেন? রেলের একটি সূত্র বলছে, এ দিন সকাল থেকেই রেল পথের ওই অংশে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যালিং ব্যবস্থা খারাপ হয়ে যায়৷ এক্ষেত্রে যে অংশে সিগন্যাল খারাপ থাকে, সেখানে ট্রেনের চালকদের লাল সিগন্যাল পেরিয়ে যাওয়ার জন্য হাতে লেখা একটি কাগজ দেন স্টেশন মাস্টাররা৷ রেলের ভাষায় যার নাম টিএ ৯১২৷ সূত্রের খবর, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ওই অনুমতি দিয়েছিলেন রানিপাত্র স্টেশনের স্টেশন মাস্টার৷ প্রশ্ন উঠছে, কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ওই অংশ পেরিয়ে না যাওয়ার আগে মালগাড়ির চালককেও একই লাইনে ট্রেন নিয়ে এগনোর অনুমতি কে দিল?

আরও পড়ুন: সেই জুন, করমণ্ডলের মতোই দুর্ঘটনায় কাঞ্চনজঙ্ঘা! দুই বিপর্যয়ে অবাক করা মিল

কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটল? রেলের প্রাথমিক অনুমান, লাল সিগন্যাল দেখতে পাননি মালগাড়ির দুই চালক। সেই কারণেই একই লাইনে এসে যায় সেটি। সাধারণত যে লাইনে এক্সপ্রেস ট্রেন চলে, সেই লাইনে মালগাড়ি চালানো হয় না। মালগাড়িকে দাঁড় করিয়ে পাস করানো হয় এক্সপ্রেস। এ ক্ষেত্রে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনেই ছিল মালগাড়িটি। একই লাইনেই দু’টি ট্রেন পাস করানোর পরিকল্পনা ছিল রেলের। তবে আগে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে শিয়ালদহের উদ্দেশে রওনা করিয়ে দিয়ে তার পর মালগাড়িকে পাস করানোর কথা।

সেই কারণেই মালগাড়িকে লাল সিগন্যাল দেওয়া হয়েছিল। রেলের অনুমান, মালগাড়ির চালক ওই সিগন্যাল দেখতে পাননি। ফলে একই লাইনে এসে পড়ে মালগাড়িটি। ধাক্কা মারে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে। এ ক্ষেত্রে আরও একটি প্রশ্ন প্রকাশ্যে আসছে। এখন যে কোনও রেল ইঞ্জিনে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা থাকে। ইঞ্জিনের সামনে নির্দিষ্ট কোনও দূরত্বে যদি কোনও ট্রেন বা অন্য কিছু থাকে, তবে স্বয়ংক্রিয় ভাবেই ওই ট্রেন দাঁড়িয়ে পড়বে। এই প্রযুক্তিকে ‘কবচ’ বলা হয়। কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার পর রেল বোর্ডই স্বীকার করে নিয়েছে, যে রেল পথের উপরে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে সেখানে কবচ প্রযুক্তির ব্যবহার শুরুই হয়নি৷