নয়ডা: সকাল থেকে স্কুল। তারপর বিকেলে স্কুল ছুটির পরে সিঙাড়ার ঠেলা লাগানোর তোড়জোড়। তাতেও পেরিয়ে যেত প্রায় ঘণ্টা দুই। তারও পরে ২-৩ ঘণ্টা সেই ঠেলাগাড়িতে করে সিঙাড়া ভেজে বিক্রি করা। বাড়ির ফেরার পরে একটি ফ্রেশ হয়ে খেয়েদেয়ে যতটুকু পড়া। সেই পড়াশোনা আর একাগ্রতা দিয়েই ডাক্তার হওয়ার প্রবেশিকা পরীক্ষা নিট (ইউজি) ক্র্যাক করল নয়ডার এই ছেলে৷
বয়স ১৮৷ ১৮টাই তো স্বপ্ন দেখার বয়স৷ সানি কুমারের নয়ডার এক চিলতে ভাড়ার ঘরে গেলেই চোখে পড়বে দেওয়াল জুড়ে লাগিয়ে রাখা লাস্ট মোমেন্ট রিভিশন শর্ট নোটসগুলো৷ যে আদৌ শর্ট নোটস বলা যায় কিনা , তা নিয়েই মজাচ্ছলে সন্দেহপ্রকাশ করেছে এই ছাত্র৷
একদিকে যখন লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে নিট-এর প্রশ্নপত্র কিনেছে কেউ কেউ, সেখানে সানি কুমারের মতো ছাত্ররাও রয়েছে, যারা চূড়ান্ত আর্থিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও সংসার চালানোর জন্য রাস্তায় সিঙাড়া বেচার পরেও দিনের শেষে নিট-এ ৭২০-র মধ্যে ৬৬৪ নম্বর তুলতে পেরেছে৷
View this post on Instagram
সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা একটি ভিডিয়োয় কুমার জানান, তাঁর এই পড়াশোনায় নিজের বাবাকেই পাশে পাননি তিনি৷ আসলে যেখানে রোজের দু’বেলা খাওয়া জোগাড় করাই দুষ্কর, সেখানে ছেলের ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন, বামুন হয়ে আকাশের চাঁদ ধরার মতো মনে হত সানির বাবার৷
তবে সানি জানিয়েছে, তাঁর এই যুদ্ধে তিনি সবসময় পাশে পেয়েছেন তাঁর মাকে৷ মায়ের পূর্ণ সহযোগিতা ছিল তাঁর সঙ্গে৷
আরও পড়ুন: দিল্লির জরুরি তলব? সুকান্ত, দিলীপের সঙ্গে বৈঠক সেরেই রাজধানীর পথে রাজ্যপাল!
ছেলের গরবে গর্বিত সানির মা বলেন, ‘‘ও সবসময় বলত, আমায় শুধু একটু পড়তে দাও, একটু আমার কাঁধে হাত রাখো৷ কোনও ভাবে একটা আমায় পড়িয়ে দাও, আমি কিছু হতে চাই৷’’
View this post on Instagram
স্কুলের পরে ঠেলায় করে সিঙাড়া ভেজে বিক্রি করা সেই ছেলেটাই এখন ভবিষ্যতে ডাক্তার হতে চলেছে৷
এমন কৃতী ছাত্রের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছে ফিজিক্স ওয়ালার অলোক পাণ্ডে৷ সানির পড়াশোনার স্বার্থে ৬ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি৷ পাশাপাশি, মেডিক্যাল কলেজে সানির যা টিউশন ফিজ লাগবে, তা-ও তিনি বহন করবেন বলে জানিয়েছেন৷