Tag Archives: Potter

Bangla Video: পেশায় মৃৎশিল্পী নন, দেখে শিখেই ঠাকুর বানাতে সিদ্ধহস্ত শান্তিপুরের যুবক

নদিয়া:  শান্তিপুর লেলিন সরণী কুটির পাড়ার বাসিন্দা অরূপ বঙ্গ। বর্তমানে তার একটি ছোট সেলাইয়ের উপকরণের দোকান রয়েছে। তবে তার পরিচিতি এখন একজন মৃৎশিল্পী হিসেবে। প্রথম একবার দোলের সময় নিজের বাড়ির গোপাল ঠাকুরের মূর্তি বানায় সে। এরপরে ধীরে ধীরে সোশ্যাল মাধ্যমেই বানানো মূর্তির ছবি আপলোড করার পর মূর্তি বানানোর বরাত আসতে শুরু করে তার। এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ আট ফুট উচ্চতার নটরাজের মূর্তি বানিয়েছেন অরূপ বাবু। তবে ছোট মিনিয়েচার মূর্তি বানানোর প্রত্যেক বছরই বরাত পান তিনি। এর আগে একটি সরস্বতীর মূর্তি তিনি কুচবিহার জেলায় পাঠিয়েছিলেন।  বিভিন্ন মূর্তি বানালেও তিনি নিজে মনে করছেন তার তৈরি কালী মূর্তি বেশি চাহিদা ।

আরও পড়ুন: বিড়ি শ্রমিকদের জন্য তৈরি হওয়া হাসপাতালে তালা, ভোগান্তিতে রোগীরা!

বাঙালির ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। আর এই ১৩ পার্বণের মধ্যে বেশিরভাগটাই হিন্দু দেবতাদের পুজো। প্রত্যেকটি পুজোতেই অরূপ বাবু, দু একটি করে মূর্তি বানানোর বরাত থাকেই। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি কালি মূর্তি কৌশিকী অমাবস্যার কারণে পাঠিয়েছেন বিভিন্ন জায়গায় অর্ডার অনুযায়ী আর বর্তমানে দুর্গা ঠাকুরের মূর্তি বানাতেই ব্যস্ত অরূপ বঙ্গ।

অরুপ বাবু জানান, বড় ঠাকুরের খরচাটা একটু বেশি হয়। কাঠামো থেকে শুরু করে বিভিন্ন জিনিসপত্রের কারণে খরচের পরিমাণ বেশি হয়ে যায়। কিন্তু ছোট ঠাকুরের ক্ষেত্রে খরচ কম হয় তবে মজুরি হয় বেশি। কারণ এটি অনেক সূক্ষ্ম কাজ, ধৈর্য লাগে অনেক বেশি। আমার বেশিরভাগ ঠাকুরের মূর্তি ছাঁচে হয় না মাটি দিয়ে সম্পূর্ণ হাতে করা হয়।

বর্তমান নেট দুনিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্ভর করে অনেকেই আয়ের বিকল্প কিংবা নতুন পথ খুঁজে বার করছেন। অরূপ বাবু তার ব্যতিক্রম নন। আপাতত সেলাই মেশিনের দোকান কিছুটা বুজিয়ে রেখেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্ভর করেই নিজের ছোটবেলার শখ পূরণ করেই রোজকারের নতুন পথ বের করেছেন অরূপ বঙ্গ।

মৈনাক দেবনাথ

Clay Cup: চা খেতে মাটির ভাঁড়ের চাহিদা আবার বাড়ছে, তবুও হতাশ কুমোররা

পশ্চিম বর্ধমান: একটা সময় বাইরে বেরিয়ে চা খাওয়ার জন্য ভরসা ছিল মাটির ভাঁড়। কিন্তু ধীরে ধীরে সেই জায়গা দখল করে নিয়েছিল কাগজের কাপ। ফলে চাহিদা কমে গিয়েছিল মাটির ভাঁড়ের। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলেন, কাগজের কাপে চা খাওয়ার থেকে মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়া অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর। তাছাড়া চা-প্রেমীদের কাছে মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়ার একটি আলাদা জনপ্রিয়তার রয়েছে।

যে মাটির ভাঁড়ের চাহিদা একেবারে তলানিতে চলে গিয়েছিল, এইসব কারণে সেই মাটির ভাঁড়ের চাহিদা আবার ধীরে ধীরে বাড়ছে। আবার বিভিন্ন চায়ের দোকানে দেখা পাওয়া যাচ্ছে মাটির ভাঁড়ের।ক্রেতাদের চাহিদা মাথায় রেখে আবার মাটির ভাঁড়ে চা বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। ফলে প্রস্তুতকারকদের কাছে আবার বেশি অর্ডার আসতে শুরু করেছে।

আর‌ও পড়ুন: রিমল তাণ্ডবে ধ্বংস বাগান, হাহাকারের মধ্যেই ফুল চাষে আশার আলো

কিন্তু বেশি বেশি অর্ডার এলেও মুখে হাসি ফুটছে না এই ভাঁড় প্রস্তুতকারকদের। কারণ চাহিদা বেড়েছে, তবে লাভ বাড়েনি সেই অর্থে। তারা বলছেন, প্রথমদিকে যে পরিমাণ অর্ডার আসত, তাতে লাভ হত ভালই। মাঝে একদম চাহিদা কমে গিয়েছিল। এখন চাহিদা বেড়েছে কিন্তু তৈরি করতে খরচ বেড়েছে অনেক। ডিজাইনার মাটির ভার তৈরি করতে যতটা সময় দিতে হয়, পরিশ্রম করতে হয়, সেই অনুযায়ী দাম পাওয়া যায় না।

মাটির ভাঁড় প্রস্তুতকারকরা বলছেন, চা বিক্রেতারা নিজেদের লাভের কারণে কাগজের কাপে চা বিক্রি করার দিকে মনোযোগ দেন। তবে এখন ক্রেতাদের চাহিদার কারণে মাটির ভাঁড়ও রাখেন। কিন্তু কাগজের কাপের তুলনায় সেই সংখ্যা অনেক কম। তাছাড়াও বিক্রেতারা সেই অর্থে দাম দিতে চান না। পাশাপাশি আগে দইয়ের জন্য মাটির ভাঁড়ের যে চাহিদা ছিল, এখন সেই দইও দেওয়া হয় প্লাস্টিক কাপে। সবমিলিয়ে লাভের মুখ দেখতে না পেয়ে হতাশ এই সমস্ত কারিগররা।

নয়ন ঘোষ

Potter Strategy: টিকে থাকতে ভরসা আধুনিকতা, অবাক ভোল বদল মৃৎশিল্পীর

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: কমেছে মাটির জিনিসপত্রের চাহিদা। আর তাই টিকে থাকতে নতুন জিনিস বাজারে এনে ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা মৃৎশিল্পী ধনঞ্জয় পালের। আধুনিকতাকে হাতিয়ার করে তাঁর চালানো এই প্রচেষ্টা ইতিমধ্যেই সফল হয়েছে।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার বয়ারগদিতে বাড়ি মৃৎশিল্পী ধনঞ্জয় পালের। মাটির হাঁড়ি, কলসি সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করতেন। কিন্তু মাটির এইসব জিনিসের চাহিদা ক্রমশ‌ই কমছে। তাই নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে নিজের বাড়িতেই একটি ওয়ার্কশপ ও ট্রেনিং সেন্টার খুলেছেন এই শিল্পী। সেখানে ইন্টারনেট দেখে নতুন নতুন ডিজাইনের জিনিস তৈরি করা শুরু হয়েছে। বর্তমানে অনলাইন থেকে ডিজাইন দিয়ে অর্ডার দিলে তাঁরা হুবহু সেইরকম জিনিস তৈরি করে দেন। ধনঞ্জয়বাবুর ওয়ার্কশপে তৈরি হয়, মাটির ডিজাইনিং বোতল, ডিজাইনিং টব, ফুলদানি, জালা, পানপাত্র সহ আরও অন্যান্য সৌখিন জিনিসপত্র। এই সমস্ত জিনিসপত্র তৈরি করে এখন অনেকটাই সফল তিনি।

আর‌ও পড়ুন: শিক্ষক-স্বাস্থ্যকর্মীর যুগলবন্দি, বাসন্তী প্রতিমা গড়া থেকে পুজো সবই করবেন দুই বন্ধুতে

আধুনিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন নতুন জিনিসপত্র গড়ে অন্যান্য মৃৎশিল্পীদের থেকে বেশ কয়েককদম এগিয়ে গিয়েছেন ধনঞ্জয় পাল। বর্তমানে তাঁর কাজ দেখতে দূর দূরান্ত থেকে অনেকেই আসছেন। ভবিষ্যতের জন্য ধনঞ্জয়বাবুর মৃৎশিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার মরিয়া প্রয়াসকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সকলেই।

নবাব মল্লিক