Tag Archives: Paddy

RadhaTilak Rice: স্বাদেগন্ধে তুলাইপঞ্জি, গোবিন্দভোগের মতোই সেরা! ভোজনরসিকদের পাতে বাজিমাত রাধাতিলক চালের

মৈনাক দেবনাথ, নদিয়া: রোগব্যাধির কারণে রাসায়নিক সার এবং কীটনাশক দিয়ে হাইব্রিড এবং হাইলিংকের চাষে উৎপাদিত ফসল থেকে ক্রমশই মুখ ঘোরাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাধাতিলকের মতো দেশি ধান আবারও ব্যাপকভাবে চাষ হতে শুরু করেছে।ভারতের খাদ্য উপাদান হিসেবে অন্যতম চাল। তবে বাঙলিদের কাছে ভাত শুধু একটি খাদ্যশস্য নয়, সেটি আবেগ। বাঙালির আবেগে মিশে রয়েছে গরম ভাতের বিভিন্ন ধরনের উষ্ণ গন্ধ।

স্বল্প দিনের মধ্যে অল্প খরচে বেশি ফলন পেতে গেলে কৃষকরা নির্ভর করছেন রাসায়নিক সার কীটনাশক এবং হাইব্রিড বীজের ওপর। তবে এতে যেমন জমির উর্বরতা শক্তি সহ পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে তেমনই রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ আর তার ফলেই আবারও পুরনো দিনের দেশীয় বিজে সম্পূর্ণ জৈব সার ব্যবহার করে দেশীয় পদ্ধতিতে চাষ শুরু হয়েছে ধীরে ধীরে।

একসময় পাঁচ হাজার প্রজাতির ধান থাকলেও তার মধ্যে বর্তমানে তিন হাজার প্রজাতির ধানের কোন অস্তিত্ব আর নেই। এখন হাতেগোনা কয়েকটি প্রজাতি ছাড়া সেই অর্থে বাকি প্রজাতিরও চালের দেখা মেলে না। তবে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু চাল অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়েছে বাংলার মাটিতে। যেমন জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলার কালোনুনিয়া, মালশিরা, উত্তর দিনাজপুরের তুলাইপাঞ্জি ও কাটারিভোগ। ঠিক তেমনই নদিয়া জেলায় বর্তমানে স্বীকৃতি লাভ করেছে রাধাতিলক চাল!

আরও পড়ুন : ঠিক ৪ টে কিশমিশে এটা মিশিয়ে খান দিনের এই সময়ে! অ্যানিমিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য হবে পগারপার!

রাধাতিলক নামের সুগন্ধি এই চাল সর্বভারতীয় স্বীকৃতি পেল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। একসময় নদিয়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় এই চাল অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিল। বিশেষ করে বৈষ্ণবদের কাছে। যে কারণে এই চালের এমন নামকরণ বলে মনে করছেন কৃষি গবেষকরা। ২০১১ সালে এই ধান নিয়ে গবেষণা শুরু করা হয়েছিল বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে। অবশেষে ২০২৪ সালে এসে স্বীকৃতি পেল সেই ধান! বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাধাতিলক নামের এই সুগন্ধি ধান গবেষণা প্রকল্পে স্থান করে নিয়েছে।

এ বিষয়ে কৃষি গবেষক এবং জৈব চাষে কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রক থেকে পুরস্কার প্রাপ্ত শৈলেন চণ্ডী জানান, ২০১১ সালে বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম এই বীজ দেওয়া হয় সত্তর জন কৃষককে। এটি মূলত নদিয়া জেলার একটি দেশীয় বীজ। ২০১১ সালে ১০ বিঘা জমির বীজ পাওয়ার পর সেটি নিয়ে কাজ করা শুরু হয়। বর্তমানে বহু কৃষক এই বীজ বপন করে চাষাবাদ করছেন। ২০১৫ সাল থেকে এই চাষের গতি বাড়তে শুরু করে অতি দ্রুত।

তিনি আরও জানান, এই চাষাবাদের মেয়াদ মূলত ১৩৮ দিনের। বর্ষাকালেই আমন ধানের মরশুমে খারিফ শস্য হিসাবে অর্থাৎ শ্রাবণ মাসে এই ধান চাষ করা হয়ে থাকে। ফসল ওঠে অগ্রহয়ণ মাসে। প্রতি বিঘেতে ১৩ থেকে ১৪ মন ফলন হয়। অন্যদিকে হাইব্রিড ধানের বিভিন্ন ফলন হিসেবে পাওয়া যায় ১৭ মন। সেক্ষেত্রে লাভ থাকলেও স্বাদেগন্ধে পুষ্টিতে ভরপুর নীরোগ থাকার পরিবেশবান্ধব এই চালের দাম বেশি পেয়ে থাকেন কৃষকরা। তাই গড়পড়তায় প্রায় একই পড়ে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে বিষযুক্ত ক্ষতিকারক বিভিন্ন হাইব্রিড ধানের চাল খেয়ে অসুস্থ হওয়ার থেকে কিছুটা দাম বেশি দিয়ে দেশী চাল খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। শান্তিপুরে এইরকমই এক বিষমুক্ত খাদ্য বাজার ক্রমশই জনপ্রিয়তা লাভ করছে আশেপাশের ফুলিয়া এবং বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠছে এ ধরনের বিশেষ বাজার।

রাধাতিলক মূলত গোবিন্দভোগেরই আরও একটি প্রজাতি। খেতেও গোবিন্দভোগ চালের মতোই। এই চাল এখন জেলা ছাড়িয়ে কলকাতা শহরতলিতে প্রচুর পরিমাণে বিক্রি হচ্ছে। বি সি কেভি থেকে পাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, ৮০ টাকা প্রতি কেজি হিসেবে ইউনিভার্সিটির সরকারি স্বীকৃতি পাওয়ার স্টল থেকে বিক্রি করা হচ্ছে এই রাধাতিলক চাল।

কোনও কৃষক যদি এই চালের চাষাবাদ করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাঁরাই বীজ সংগ্রহের ব্যবস্থা করে দেবেন। এমনকি চাষাবাদের প্রশিক্ষণও তাঁরাই দিয়ে থাকেন। এছাড়াও চাষাবাদের পরে এই চাল কীভাবে মার্কেটিং করা হবে, সেটাও তাঁরাই বুঝিয়ে দেবেন কৃষকদের। জানা যায় ২০১৯ সালে এই রাধাতিলক চাল নিয়ে ভারত সরকারের কাছে ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড পান এই চাল-গবেষক ও কৃষি বিশেষজ্ঞ শৈলেন চণ্ডী । তিনি বলেন, সুস্থ থাকতে বিষমুক্ত রাধাতিলক চালের ফেনাভাত খাওয়াও ভাল।

Flood situation: জলে ডুবে জমি, ধানচাষ-সব্জি চাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা কৃষকদের! বাড়তে পারে দামও

পূর্ব বর্ধমান: জলের তলায় ডুবে রয়েছে ধান জমি। সেই সব জমিতে রোয়া ধানের অনেকটাই ক্ষতি হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছেন রাজ্যের শস্য ভান্ডার বলে খ্যাত পূর্ব বর্ধমান জেলার কৃষকরা। বর্ধমান এক ও দুই নম্বর ব্লক, ভাতার, আউশগ্রাম, কালনা, মঙ্গলকোট, মেমোরি, মন্তেশ্বরের অনেক জমি এখন জলের তলায়। তিন-চার দিন ধরে সেইসব জমির ধান জলে ডুবে রয়েছে। এর ফলে ধান চাষে ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন চাষিরা।

কৃষকরা বলছেন, ধারদেনা করে সার দিয়ে জমি তৈরি করা হয়েছিল। এক বিঘে জমিতে দশ জন করে শ্রমিক লাগিয়ে ধান রোয়া হয়েছিল। সেই সব চাষ জলে গেল। সদ্য রোয়া ধানের চারা পচে নষ্ট হয়ে যাবে। নতুন করে আর বীজতলা তৈরি করে ধান রোয়া যাবে না। জমি ফাঁকাই পড়ে থাকবে।

আরও পড়ুন: ১৪ লাখের চাকরি, ৬০০ বর্গ গজ জমি… বড় পুরস্কার পাচ্ছেন সিরাজ, কে দিচ্ছে জানেন?

জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যাচ্ছে, ৩ লক্ষ ৭০ হাজার হেক্টর জমিতে এবার ধান চাষে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে এক লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান রোয়া হয়ে গিয়েছে। সেই ধানের অনেকটাই জলে ডুবে থাকায়, ক্ষতির মধ্যে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা কৃষকদের।

জুন জুলাই মাসে বৃষ্টির যথেষ্টই ঘাটতি ছিল। সেই কারণে বীজতলা তৈরি করে বৃষ্টির আশায় বসেছিলেন অনেকেই। অনেকে আবার বাড়তি খরচ করে সাবমার্সিবল পাম্প চালিয়ে মাটির তলার জল তুলে ধান রোয়ার কাজ শেষ করেছিলেন। অনেকে ডিভিসির ছাড়া জল পেয়ে ধান রোয়ার কাজে হাত দেন। সেই ধান নিয়েই এখন দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।

আরও পড়ুন: মাত্র কয়েক মিনিটের টর্নেডোর মতো ভয়াল ঝড়! লন্ডভন্ড হুগলির একের পর এক গ্রাম

অতিবৃষ্টিতে ক্ষতির মুখে জেলার সবজি চাষও। অনেক সবজি জমিই এখন জলবন্দি হয়ে রয়েছে। কৃষকরা বলছেন, জমা জলে সবজি গাছের গোড়া পচে নষ্ট হয়ে যাবে। ফলনও অনেক কমে যাবে। এই জেলায় ব্যাপকভাবে বেগুন, ঢেঁড়শ, পটল, ঝিঙের চাষ হয়। এইসব সব্জির ফলন অনেকটাই কমে যাবে। তার ফলে বাজারে ফের সবজির দাম বাড়বে। ক্ষতির মুখে পড়েছে জেলার ফুল চাষও। পূর্বস্থলী এক ও দু নম্বর ব্লকে ব্যাপকভাবে ফুলের চাষ হয়। অতিবৃষ্টিতে অনেক ফুলগাছ মরে গেছে। ফলনও কমেছে অনেকটাই।

Less Rain Paddy Seed: কম বৃষ্টিতেও দুর্দান্ত ফলন হবে ধানের!

পুরুলিয়া: বৃষ্টির দেখা নেই দক্ষিণবঙ্গে। বৃষ্টি হচ্ছে না জেলা পুরুলিয়াতেও। অথচ প্রতিবছরই এই সময়টাতেই ধানের বীজ বপন করেন চাষিরা। তাই কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে চাষিদের বীজ বিতরণ করা হয়ে থাকে এই সময়টায়। যদিও এরই মধ্যে এক দুর্দান্ত পথ দেখাচ্ছে কৃষি দফতর। এবার কম বৃষ্টিতেও হবে দুর্দান্ত ধন চাষ।

বৃষ্টির দেখা সেভাবে না মিললেও পুরুলিয়া জেলা কৃষি দফতরের পক্ষ থেকে চাষিদের ধানের বীজ বিতরণ করা হয়েছে। সোমবার বাঘমুন্ডি ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তার উদ্যোগে ধানবীজ বিতরণ কর্মসূচি পালিত হয়। জানা গিয়েছে, এই ব্লকের মাঠা অঞ্চলের পোঁড়া, বান্দুডি ও চাউনিয়া গ্রামের প্রত্যেক কৃষককে ধান বীজ বিতরণ করা হয়েছে।

আর‌ও পড়ুন: প্রত্যন্ত গ্রামে তৈরি পোশাক পাড়ি দিচ্ছে বিদেশে, হাল ফিরেছে তাঁতিদের

এইদিন বাঘমুন্ডি সহ কৃষি অধিকর্তার অফিসের সামনেই এই বীজ বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়। ব্লক সহ কৃষি অধিকর্তা অঙ্কিত কুমার ঘোরাই কৃষকদের হাতে ধানবীজ তুলে দেন।‌ জানান, আগামীদিনে কৃষকদের বিনামূল্যে কৃষিজ যন্ত্রপাতি প্রদান করবে কৃষি দফতর। তিনি আরও বলেন, ধানের যে বীজ কৃষকদের বিতরণ করা হয়েছে সেগুলো মূলত খরা প্রবণ বীজ ফলে বৃষ্টি কম হলেও দিব্যি ফসল উৎপন্ন হবে।

বৃষ্টি কম হলেও এই বীজের মাধ্যমে ফলন যথেষ্ট ভাল হয়। তাই কৃষকেরা যাতে ভালোভাবে ধান উত্তোলন করতে পারেন, সেই চিন্তা করেই এই বীজ প্রদান করা হয়েছে। এতে স্বল্পবৃষ্টিতেও কৃষকেরা ধান চাষ করতে পারবেন। এই বীজ পেয়ে খুশি কৃষকেরা। এতে তাদের অনেকটাই উপকার হবে। কৃষি দফতরের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন তাঁরা।

শর্মিষ্ঠা ব্যানার্জি

Paddy Cultivation: দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢুকতে দেরি, ধানের চাষ শুরুই করতে পারছেন না কৃষকরা

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: আসব আসব করেও দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আর ঢুকছে না। গত ১৫ দিন ধরে উত্তরবঙ্গেই আটকে আছে মৌসুমী বায়ু। ফলে ভয়াবহ আর্দ্রতার অভিঘাতে প্রাণ ওষ্ঠাগত দক্ষিণবঙ্গের মানুষের। শুধু শরীর খারাপ হচ্ছে তাই নয়, বর্ষা দেরিতে আসায় ক্ষতি হচ্ছে কৃষিকাজে। ধানের বীজ রোপণ করতে পারছেন না কৃষকরা।

এখনও বর্ষার বৃষ্টির শুরু না হওয়ায় দুশ্চিন্তায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ধান চাষিরা। এখানে বেশিরভাগ কৃষক ধান চাষের উপর নির্ভরশীল। ফলে আবহাওয়ার এমন তুঘলুকি আচরণে মাথায় হাত ধান চাষিদের। অন্যান্য বছর এমন সময় ধানের বীজ রোপণ করে চাষের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন কৃষকরা। কিন্তু এই বছর ভয়াবহ গরম ও বর্ষা না থাকায় চাষের জমিতে দেখা দিয়েছে বড় বড় ফাটল। কোথাও আবার সামান্য বৃষ্টি হলে সেই সামান্য বৃষ্টির জল ধরে ধান রোপণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন চাষিরা।

আর‌ও পড়ুন: ৬ বছর পর মিটল সমস্যা, কাকদ্বীপে চালু ঘটিহারা সেতু

প্রয়োজন মত বৃষ্টি না হওয়ার কারণে এখনও পর্যন্ত অনেক কৃষক জমিতে ধানের বীজ রোপণ করতে পারেননি। আবার কোথাও জল না থাকায় প্রচুর পরিমাণে টাকা খরচা করেই জল নিয়ে আসছেন। মূলত শ্যালো বা মিনি পাম্পের উপরে ভরসা করতে হচ্ছে ধান চাষের জন্য। এই অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন যদি না ঘটে তবে এই বছর ধান চাষে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে পরবর্তী পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকছে।

সুমন সাহা

Improved Paddy Seed: বন্যায় ডুবে যাওয়া জমিতেও ফলবে ধান! কৃষকের মুখে হাসি ফোটাল কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র

পূর্ব মেদিনীপুর: জেলার ধান চাষিদের পাশে জেলা কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র। ফলে আর্থিকভাবে লাভবান হতে চলেছেন কৃষকরা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার প্রধান অর্থকারী ফসল ধান। তবে নানান সময়ে বন্যা, অতি বৃষ্টির কারণে ধান চাষের যথেষ্ট ক্ষতি হয়। আর তাতে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন চাষিরা। এই পরিস্থিতিতে উন্নতমানের ধান বীজ তৈরি করে জেলার চাষিদের পাশে দাঁড়াচ্ছে কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র। ফলে অতি বৃষ্টির ফলে ধান চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা অনেকটাই কমবে।

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ২৫ টি ব্লকে ধান চাষ হয়। পূর্ব সবচেয়ে বেশি চাষ হয় আমন ধানের। জেলার প্রতিটি ব্লক মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। মূলত বর্ষার জলে এই ধানের চাষ হয় জেলাজুড়ে। কিন্তু অতিবৃষ্টির কারণে বহু ব্লক জলমগ্ন হয়ে পড়ে। ধান চাষের জমিও জলের তলায় চলে যায়। জলের তলায় ধানের চারা পচে নষ্ট হয়ে যায়। ফলে ফসল ঘরে আসে না চাষিদের। তবে জেলা কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের এই উদ্যোগের ফলে আগামী দিনে পরিস্থিতির অনেকটাই উন্নতি হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

আর‌ও পড়ুন: সরকারি হাসপাতালে চালু হিট স্ট্রোক ওয়ার্ড! গরম থেকে বাঁচাতে পদক্ষেপ

কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্র থেকে উন্নতমানের বীজ উৎপন্ন করা হয়েছে। স্বর্ণভূমি স্যাব ওয়ান নামে এই বীজ ধান জলমগ্ন ও বন্যা কবলিত এলাকার ধান চাষকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। এই ধানের চারা রোপনের পর জলে পচে সহজ নষ্ট হয় না। এই ধানের চারা দুই সপ্তাহ পর্যন্ত জলের তলায় থাকার পর জল সরে গেলে আবারও স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে এবং ফসল দেয়।

এই বিষয়ে জেলা কৃষিবিজ্ঞান কেন্দ্রের বীজ গবেষক সুমন মণ্ডল জানান, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় আমন ধান চাষ বর্তমানে অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে চাষিদের ক্ষতি হয়। এই বিষয়টি মাথায় রেখে জলে ডুবে লড়াই করতে সক্ষম, এমন বীজ উৎপাদন করা হয়েছে। জেলায় মোট চার ধরনের উন্নতমানের বীজ ধান চাষিদের দেওয়া হচ্ছে।

সৈকত শী

Paddy Cultivation: কৃষি আরও যন্ত্রনির্ভর, চওড়া হাসি কৃষকের মুখে

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: এই জেলা কৃষি প্রধান। এখানে বিপুল পরিমাণে ধান চাষ হয়। এই ধান চাষ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একাধিক পক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। সেক্ষেত্রে কৃষকের সময় এবং অর্থ ব্যায় হয় অনেকটাই। এর হাত থেকে কৃষকদের রেহাই দিতে এবং তাদের মুনাফার পরিমান বাড়াতে শুরু হয়েছিল কৃষিক্ষেত্রে যান্ত্রীকিকরণ পদ্ধতি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ক্ষুদ্র কৃষি যন্ত্রপাতি ক্রয়ের জন্য এককালীন আর্থিক সহায়তা প্রকল্প, ছোট কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ৫০ শতাংশ ভর্তুকি, শক্তিশালী কৃষি যন্ত্রপাতি কেনার জন্য ৬০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে থাকে সরকার।

ধান চাষের শুরুর সময় থেকে যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে ধানের উৎপাদন শুরু করে কৃষি অফিসগুলি। প্রথমে ভর্তুকিতে ড্রোন দিয়ে তরল ওষুধ, সার ও বিষ স্প্রে করা হয়। পরে ধীরে ধীরে দেওয়া হয় পাওয়ারটিলার, ট্রাকটর, ইলেকট্রিক মটর সহ আরও অন্যান্য যন্ত্রপাতি। যার ফলে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা। কৃষিতে যন্ত্রপাতির ব্যবহারের ফলে সময় ও অর্থ সাশ্রয় হচ্ছে অনেকটাই।

আরও পড়ুন: জল পান করতে এসেও শুকনো গলায় ফিরতে হচ্ছে হাতির দলকে, পরিচিত দৃশ্য দেখতে না পেয়ে হতাশ পর্যটকরা

সবমিলিয়ে কৃষি ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ায় কৃষকদের মুখে ফুটেছে হাসি। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ধান চাষের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব প্রক্রিয়াই সুসম্পন্ন করা যাচ্ছে। আগামীদিনে কম সময়ে আরও বেশি ফসল উৎপাদন করতে এই পদ্ধতি কাজে লাগবে বলে মত কৃষি আধিকারিকদের। এবছর এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে ভাল ফল মিলেছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

নবাব মল্লিক