গ্রীষ্মের দাপট ক্রমেই বাড়ছে। মে মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ দিকে যাচ্ছে। আর এহেন তীব্র গরমের মোকাবিলা করার জন্য আজকাল এসি অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। তবে প্রত্যেকের এসি কেনার সামর্থ্য থাকে না। ফলে ফ্যানের উপরেই ভরসা করেন তাঁরা। তবে অনেকেই গরমের হাত থেকে একটু স্বস্তি পেতে আজকাল কিনে নিচ্ছেন কুলার। photo source collected
কিন্তু কুলারও যে কাঙ্ক্ষিত স্বস্তি দিচ্ছে তা নয়, গরমের মধ্যেই অনেক সময় উত্তপ্ত বাতাস নিক্ষেপ করছে কুলার। এতে স্বস্তির বদলে হচ্ছে অসুবিধা। এখন প্রশ্ন হল, যে কুলার থেকে ঠান্ডা বাতাস পাওয়ার জন্য কী কী করা উচিত? photo source collected
সাধারণত দেখা যায়, কুলার চালাতে গিয়ে ছোটখাটো ভুল করে ফেলেন ব্যবহারকারীরা। আর সেই কারণেই সেখান থেকে নির্গত হয় গরম হাওয়া, এমনকী কখনও কখনও দুর্গন্ধও বেরোতে শুরু করে। তা-ই নয়, কুলারের পাখা থেকে ধুলাবালি আসারও আশঙ্কা থাকে। photo source collected
আসলে কুলার চালানো সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ব্যবহারকারীরা একইসঙ্গে এর পাম্প এবং ফ্যান চালু করে দেন। আর এমনটা হলে যেটা ঘটে সেটাই দেখে নেওয়া যাক। photo source collected
এদিকে ঘাস দীর্ঘ সময় ধরে শুষ্ক হয়ে থাকে। ফলে পাম্পটি চালু করার সঙ্গে সঙ্গেই তার উপর জল পড়তে থাকে। আর একসঙ্গে কুলারের ফ্যান চালু করলেই সামনের দিক থেকে যে হাওয়া আসে, তা শুরুর দিকে বেশ গরম থাকে। আর এখানেই শেষ নয়, হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা অদ্ভুত গন্ধও আসতে থাকে। এছাড়া কুলারের ফ্যান এবং পাম্প একসঙ্গে চালু করলে দ্রুত ধুলোবালি আসার আশঙ্কাও থেকে যায়। photo source collected
ঠান্ডার সঙ্গে বাতাসেও ছড়িয়ে পড়বে সুগন্ধ: কেউ যদি কুলার চালু করার সঙ্গে সঙ্গেই ঠান্ডা বাতাস চান, তাহলে তাকে একটি সহজ কাজ করতে হবে। সেটা কী? photo source collected
যখনই কুলার চালু করা হবে, প্রথমে ৪-৫ মিনিট সময়ের জন্য পাম্প চালু রাখতে হবে। কুলারের ঘাস যতক্ষণ না পুরোপুরি ভিজছে, ততক্ষণ পাম্পটি চালিয়ে রাখতে হবে। এরপর ঘাস সম্পূর্ণ রূপে ভিজে গেলে তবেই কুলারের ফ্যানটি চালু করতে হবে। আসলে যখন ফ্যানের থেকে বাতাসটা টেনে নেবে, তখন তা সামনে দিয়ে শীতল এবং সুগন্ধি বাতাস নিক্ষেপ করবে। photo source collected
বৈশাখের দহনে পুড়ছে গোটা বাংলা৷ গরমের দাপটে হাসফাঁস অবস্থা সকলের৷ তীব্র গরমের দাপট থেকে বাঁচতে সকলের অবস্থা খারাপ৷ এসি ছাড়া যেন একমুহূর্ত টেকা দায়৷
গরম পড়তে না পড়তেই এসি বিক্রিও বেড়ে গেছে হুড়মুড়িয়ে৷ গরম থেকে বাঁচতে দিনরাত এসি চালাচ্ছেন কম-বেশি সকলেই৷ কিন্তু একটানা এসি-তে থাকলে শরীরে কী হচ্ছে জানেন৷
গরম পড়তে না পড়তেই এসি বিক্রিও বেড়ে গেছে হুড়মুড়িয়ে৷ গরম থেকে বাঁচতে দিনরাত এসি চালাচ্ছেন কম-বেশি সকলেই৷ কিন্তু একটানা এসি-তে থাকলে শরীরে কী হচ্ছে জানেন৷
এসি অর্থাৎ এয়ার কন্ডিশনার বাতাসে উপস্থিত আর্দ্রতা দূর করে, যার কারণে চারপাশের বাতাস শুষ্ক হয়ে যায়, যার ফলে আপনার চোখ শুষ্ক হয়ে যায় এমনকি জ্বালাপোড়া হতে পারে।
দিনের বেশিরভাগ সময়টা এসিতে থাকলে ঠোঁট ফাটার সমস্যায় ভুগতে পারেন৷ মুখের ত্বকেও টান ধরতে থাকে বারবার৷
এসি ব্যবহার করার সময়, জানালা এবং দরজা সাধারণত বন্ধ থাকে, যার কারণে আমরা টাটকা বাতাস পাই না এবং যদি আমরা দীর্ঘ সময়ের জন্য তাজা বাতাসের সংস্পর্শে না থাকি তবে আমরা অলস এবং ক্লান্ত বোধ অনুভব করতে থাকি।
অতিরিক্ত এয়ার কন্ডিশনারের মধ্যে থাকলে ডিহাইড্রেশনের সমস্যা হতে পারে৷ তাই বেশি করে জল খেতে হবে৷ বেশিক্ষণ ধরে এসি-তে থাকলে মাথাব্যথার সমস্যা হতে পারে৷
আপনি যদি অনেকক্ষণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জায়গায় থাকেন এবং তারপরে রোদে বের হন তবে আপনার ত্বক খুব দ্রুত শুকিয়ে যেতে পারে এবং চুলকানি জ্বালাও হতে পারে।
আপনি যদি অনেকক্ষণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত জায়গায় থাকেন এবং তারপরে রোদে বের হন তবে আপনার ত্বক খুব দ্রুত শুকিয়ে যেতে পারে এবং চুলকানি জ্বালাও হতে পারে।
দিন যতই এগোচ্ছে গরম ততই বাড়ছে। মাঝে মাঝে এমন অসহ্য গরম পড়ছে যা সহ্য করা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে এসি ও এয়ার কুলার কেনার চাহিদা। কারণ গরম থেকে বাঁচতে এসি বা কুলার ছাড়া এখন উপায় নেই।
তবে সকলের আবার এসি বা কুলার কেনার মত সামর্থ্য নেই। ফলে তাদের কাছে ফ্যানই গরম থেকেস বাঁচার একমাত্র উপায়। কিন্তু গরম কালে সকলেই চায় ফ্যানের স্পিড যদি আরও একটু বেশি হত, তাহলে কত ভাল হত।
অনেক সময় আমরা দেখি আমাদের ফ্যানের গতি অনেক ধীর হয়ে যায়। যদি ফ্যানটি ধীর গতিতে চলতে শুরু করে, তবে ঘরের বাতাস সঠিকভাবে সঞ্চালিত হয় না এবং গরম অবস্থাকে আরও খারাপ করে তোলে। অনেকে মনে করেন তাদের ফ্যান নষ্ট হয়ে গেছে এবং এখন তাদের নতুন সিলিং ফ্যানের জন্য ব্যয় করতে হবে।
কিন্তু এমনটা অনেক সময় হয় না। কারণ ফ্যানে ছোটখাটো কিছু জিনিসের কারণে গতি কমে গেছে তাও হতে পারে। তাই এই প্রতিবেদনে আমরা আপনাকে এমন কিছু জিনিস সম্পর্কে বলি যা আপনার ফ্যানের গতি বাড়াতে সহায়তা করবে।
ক্যাপাসিটর ডিফেক্ট:- ক্যাপাসিটর সিলিং ফ্যানে মোটরকে সঠিক পাওয়ার দেওয়ার জন্য কাজ করে। একটি ত্রুটিযুক্ত ক্যাপাসিটর ৯০ শতাংশের বেশি সিলিং ফ্যানের সমস্যা সৃষ্টি করে। যখন ক্যাপাসিটর খারাপ হয়ে যায়, তখন এটি মোটরে বিদ্যুৎ স্থানান্তর করতে অক্ষম হয়, যার কারণে ফ্যানের গতি যথেষ্ট আস্তে হতে শুরু করে।
তাই ফ্যান থেকে মুক্ত বাতাস চাইলে ক্যাপাসিটর পরিবর্তন করতে পারেন। বাজারে ৭০-৮০ টাকা পর্যন্ত দামে ভালো ক্যাপাসিটর পাওয়া যায়। এটি পরিবর্তন করলে ফ্যানের গতি দ্বিগুণ হতে পারে। যা আপনাকে গরমে অনেকটাই আরাম দেবে।
অনেক সময় ফ্যানের ব্লেডের অ্যালাইনমেন্টে ব্যাঘাতের কারণে ফ্যানের গতিতে ত্রুটি শুরু হয়। ফ্যানের ব্লেড যদি কোথাও ধাক্কা লেগে বা অন্য কারণে বেঁকে যায়, তাহলে ফ্যানের হাওয়া সঠিকভাবে পাওয়া যায়না। সেটি দেখে নিলে বা সারিয়ে নিলে ফের দ্রুত হাওয়া পাওয়া যাবে।
কালনা পৌরসভার ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় ৭২ এর বৃদ্ধ অরূপ কুমার মোদক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার গুলির কথা চিন্তা করে বানিয়ে ফেললেন হ্যান্ড মেড এয়ার কুলার, তিনি জানান তার এই অভিনব উদ্যোগের কারণ হল বেশিরভাগ মানুষের বাড়িতে এখন এসি এবং নামিদামি এয়ার কুলার রয়েছে, এবারে যা প্রচণ্ড গরম পড়েছে এবং তার সঙ্গে বইছে লু, প্রতিদিন যেন গরম একটু একটু করে বেড়েই চলেছে, মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার গুলি অতি কষ্টে রয়েছে, তাদের নামিদামি এসি এবং এয়ার কুলার কেনার ক্ষমতা নেই, এই পরিবারের বাচ্চাগুলির গরমে কষ্ট পায়, সেই কারণে যাদের এসি এবং এয়ারকুলার কেনার সমর্থ্য নেই তাদের কথা চিন্তা করেই অতি অল্প খরচে তিনি একটি এয়ার কুলার বানান, বানানোর সঙ্গে সঙ্গে তিনি আরো অর্ডার পেয়েছেন, অরূপ বাবুর পেশায় একজন মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার , তার বয়স এখন ৭২, ৭২ বছর বয়সে এসে অরূপ বাবু প্রতিদিন নতুন কিছু বানানোর চেষ্টা করে চলেছেন, এয়ার কুলার টি চালাতে গেলে বিদ্যুৎ অনেক কম খরচা হবে l অরূপ বাবু এয়ার কুলার টি বানিয়েছেন একজাস্ট ফ্যান, নারকোলের ছোবড়া, এবং একটি বড় প্লাস্টিকের তেলের জার, তার সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন ইলেকট্রিক্যাল ইন্সট্রুমেন্ট, অরূপ বাবু খুবই খুশি তিনি তার এই বয়সে এসে সাধারণ গরিব মানুষের জন্য কিছু করতে পেরেছেন বলে
দাবদাহে টেকা দায়! শুধু বাড়ি নয়, গাড়িতেও চলছে সমানতালে এসি। অনেকের ধারণা, গাড়িতে বেশি এসি চললে, বেশি তেল পুড়বে, ফলে মাইলেজ কমে যাবে এবং তেলের ট্যাঙ্ক ফাঁকা হবে খুব তাড়াতাড়ি। কিন্তু সত্যিই কি গাড়ি চালানোর সময় AC চালালে পেট্রল বা ডিজেল বেশি খরচ হয় এবং মাইলেজ কমে যায় ?অনেকেই কিন্তু ভুল জানেন–
গাড়ির ইঞ্জিন স্টার্ট না করলে এসি অন হয়না। আর ইঞ্জিন চালানোর জন্য প্রয়োজন তেলের। যত বেশি এসি চলবে, তত বেশি শক্তির প্রয়োজন পড়বে ইঞ্জিনের। অনেকেই মনে করেন, এসি চললে গাড়ির তেল বেশি পুড়বে এবং মাইলেজ কমে যাবে। ফলে এসি বন্ধ রেখে এই গরমে জানলা খোলা রাখেন। এই অভ্যাসে কতটা হীতে বিপরীত হচ্ছে?
অনেকের ধারণা, জানলা খোলা থাকলে গাড়ির কেবিন ঠান্ডা থাকবে এবং পেট্রলও কম খরচ হবে। কিন্তু এতে হীতে বিপরীত হয়। উল্টে আপনার গাড়ির মাইলেজ আরও কমে যেতে পারে। কারণ সমস্ত জানলা খোলা থাকলে বাইরের গরম হাওয়া সরাসরি ইঞ্জিনের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে, ফলে জ্বালানি দক্ষতা কমতে থাকে।
গাড়ির ইঞ্জিনে যত বেশি চাপ সৃষ্টি হবে তত বেশি জ্বালানির প্রয়োজন পড়বে। জ্বালানি দক্ষতা কমতে থাকলে তেল খরচও বাড়বে এবং গাড়ির মাইলেজ কমবে।
সগাড়ি বিশেষজ্ঞদের মতে, এসি চালু রেখে গাড়ি হাই স্পিডে চালালে ৫-১০ শতাংশ মাইলেজ কমে যেতে পারে।
কিন্তু তাই বলে আপনি যদি এই চাদিফাঁটা গরমে গাড়ির জানলা খোলা রেখে ইঞ্জিন স্টার্ট করেন এবং গাড়ি চালান, তাহলে কিন্তু তেল খরচ দ্রুত হারে বাড়তে শুরু করে এবং মাইলেজের কাঁটাও নীচের দিকে নেমে যায়।
তাই এসি চালিয়ে আপনার যতটা তেল পুড়বে, তারথেকে এসি বন্ধ করে জানলা খুলে গাড়ি চালালে তেল বেশি বই কম পুড়বে না।
উত্তর ভারতে গা পুড়ে যাওয়া গরমে এয়ার কন্ডিশন ছাড়া যেন কোন উপায় নেই৷ গ্রীষ্মকালের কয়েকটা মাস নিজের ও পরিবারের স্বস্তির জন্য এসি যেন বাধ্যতামূলক হয়ে পড়েছে৷ তাই ঘরে ঘরে বসছে এসি৷
শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ করে একটু আরামে থাকার চেষ্টা করছেন শহরবাসী৷ সবস্তরের মানুষই এখন এসি-র সঙ্গে পরিচিত৷ গরমের কটা মাস এসিতে থাকতেই চান সকলে৷ গ্রীষ্মকাল অন্তত রাতে শান্তিতে ঘুমতে ঘরে এসি বসাচ্ছেন বহু মানুষ৷ অর্থের চিন্তা দূরে রেখেই৷
কোন রাজ্যে ঘরে ঘরে এসির বেশি ব্যবহার? এই নিয়ে একটি সমীক্ষা হয়েছিল৷ পঞ্চম ন্যাশনল ফ্যামিলি হেলথ সার্ভে (National Family Health Survey-NFHS)-তে উঠে এসেছে একটি চমকপ্রদ তথ্য৷ জানা গিয়েছে যে দেশের মধ্যে চণ্ডীগড়-এ সব থেকে বেশি এসি-র ব্যবহার হয়৷ চণ্ডীগড়ের প্রায় প্রতিটি ঘরে শীতাতপ ব্যবস্থা রয়েছে৷ ৭৭.৯ শতাংশ বাড়িতে রয়েছে এসি৷
এরপর রয়েছে দিল্লি৷ ৭৪.৩ শতাংশ বাড়িতে এসির ব্যবহার করা হয়৷ তারপর পঞ্জাব, ৭০.২ শতাংশ এসির ব্যবহার হয় সেখানে৷ এবং হরিয়ানায় ৬১.৮ শতাংশ এসির ব্যবহার হয়৷ এরই পাশাপাশি উঠে এসেছে এমন সব শহরের নাম যেখানে এসির ন্যূনতম ব্যবহার হয়৷
চণ্ডীগড় হোক বা দিল্লি বা পঞ্জাব, এসির বাড়বাড়ন্ত ব্যবহারের জন্য তাপমাত্রাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা৷ উত্তর ভারত তথা গোটা দেশ জুড়ে যেভাবে চড়ছে গরমের পারদ, তাতে এসি ছাড়া উপায় থাকছে না বলে মত সাধারণ মানুষের৷ মূলত মে, জুন, জুলাই মাসে দাপট চলে গরমের৷
তবে বেশি মাত্রায় এসি ঘরে থাকার ফলে হাইড্রোফ্লুরোকার্বন এবং ক্লোরোফ্লুরোকার্বন মিশছে বাতাসে, যা ওজন হোলের জন্য দায়ী৷ জানিয়েছেন পরিবেশবিদ পভিলা বালি৷ তাঁর মতে পরিবেশ বান্ধব এসি তৈরির দিকে নজর দেওয়া উচিৎ৷
আরও এক পরিবেশবিদের মতে, ছাদে চুনের ব্যবহার বা বেশি পরিমাণে গাছ থাকলে স্বাভাবিক নিয়মেই ঘর ঠাণ্ডা রাখা যাবে৷ যাতে এসির ব্যবহার করতে হবে না৷
অন্যদিকে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে মেঘালয়ে মাত্র ০.৭ শতাংশ বাড়িতে এসির ব্যবহার হয়৷ শুধু মেঘালয় নয়, উত্তরপূর্ব ভারতের আবহাওয়া এমন যে সেখানে এসি বেশি ব্যবহার করতে হয় না সাধারণ মানুষকে৷
জলপাইগুড়ি: দিনের পর দিন বাড়ছে তাপের দাপট। গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। এই গরম থেকে বাঁচতে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে চোখে পড়ছে নানান কর্মকাণ্ড। অনেকেই রাত হলেই ছাদ জুড়ে ঠান্ডা জল ঢালছেন। এই মজাদার কীর্তিগুলি বাদ দিয়ে বাইরে গেলেই চোখে পড়ে বাস্তবের করুণ দৃশ্য। বিক্রি নেই চারা গাছের। বরং ইলেকট্রিক্যাল সামগ্রিক বিক্রির দোকানে এসি কেনার জন্য মানুষের উপচে পড়া ভিড়।
দক্ষিণবঙ্গের মত না হলেও উত্তরবঙ্গেও এখন যথেষ্ট গরম। জলপাইগুড়িতে এখন বেলা বাড়তেই তাপমাত্রা পৌঁছে যাচ্ছে ৩৫-৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। মধ্য দুপুরে তাপমাত্রা যখন চরমে তখন জলপাইগুড়ির রাজপথ রীতিমত জনশূন্য হয়ে পড়ছে। উত্তরের বন জঙ্গল, ঝরনা, নদী, পাহাড় পরিবেশিত শান্ত ও শীতল এই শহরের তাপমাত্রাও যে এতটা বেড়ে যাবে তা কেউ কয়েক বছর আগেও কল্পনা করতে পারেননি। গত চার দশকের মধ্যে এই প্রথম তাপমাত্রা এতটা ঊর্ধ্বমুখী এই শহরে। কিন্তু আবহাওয়ার এমন আকাশ-পাতাল তফাতেও যেন হুঁশ ফিরছে না আমজনতার।
আরও পড়ুন: ধান ছেড়ে ‘সুপার ফুড’ কাউনের চাষ, ভাগ্য খুলে গিয়েছে কৃষকদের
দেখা যাচ্ছে ইলেকট্রনিক দোকানের পাশেই খাঁ খাঁ করছে চারা গাছ বিক্রির দোকানগুলো। সরকারি নার্সারিতে লক্ষাধিক টাকার চারা গাছ পড়ে রয়েছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশি বেশি করে গাছ লাগালে তবেই একমাত্র জলবায়ুর হাল ফিরতে পারে। কিন্তু চট জলদি নিস্তার পাওয়ার আশায় সকলে এখন এসি, কুলার ইত্যাদি কেনার দিকে ঝুঁকে পড়েছেন। এর পরিণতি আগামী দিনে ভয়াবহ হতে পারে বলে পরিবেশপ্রেমীদের আশঙ্কা।
সুরজিৎ দে
গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহে প্রাণ ওষ্ঠাগত বঙ্গবাসীর। চাতকের মত আকাশ পানে চেয়ে বৃষ্টির অপেক্ষায়। পরিস্থিত এমন যে বাইরে যাওয়া তো দূরের কথা, ঘরের ভিতরের তাপমাত্রা এতটাই যে থাকা দায় হয়ে উঠছে। যাদের এসি নেই তাদের অবস্থা তো আরও শোচনীয়।
এই পরিস্থিতিতে এসি না থাকলে কীভাবে ঘর ঠাণ্ডা রাখা যায় তার নানা উপায় অবলম্বন করছে দগ্ধ বঙ্গবাসী। এই প্রতিবেদনে ১০টি এমন উপায় তুলে ধরে হল যেগুিল মেনে চললে এই গরমে আপনার ঘর ঠান্ডা থাকবে অনেকটাই।
১. অনেকেই এই গরমে দরজা বন্ধ করে রাখেন। কিন্তু তাতে ঘরের তাপমাত্র আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। দরজা খোলা রাখুন যতটা সম্ভব। তাতে ঘরের ভিতর হাওয়া খেলবে ও ঘরের তাপমাত্রা অনেকটা নিয়ন্ত্রিত থাকবে। ঘরের মেঝে বারার মুছতে পারলেও অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে তাপমাত্রা।
২. দরজার পাশাপাশি ঘরের জানালা খেলা রাখুন। কিন্তু জানালের পর্দা দিয়ে ঢেকে রাখাই ভালো। দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকের দেয়ালে জানালা থাকলে অবশ্যই পর্দা টেনে রাখুন। আর পর্দা যদি একটু ভারী কাপড়ের হয় তাহলে আরও ভালো। পর্দা টেনে রাখলে একদিকে যেমন হাওয়া খেলবে অপরদিকে রোদের হিট ঘরের ভিতর প্রবেশ করতে পারবে না।
৩. গরমে সিন্থেটিক টাইপের চাদর বা মোটা কাপড়ের চাদর একেবারেই বিছানায় পাতা উচিত নয়। কারণ এই সকল কাপড় তাড়াতাড়ি হিট হয়ে ওঠে ও সহজে ঠান্ডা হয় না। তাই এই গরমে বিছানায় সাদা বা হালকা রঙের সুতির চাদর বিছালে বিছানা ঠাণ্ডা থাকবে। সেই সঙ্গে নিয়মিত বেডকভার ও বেডশিট পরিবর্তন করুন। এতে শুধু ঠাণ্ডা নয়, মানসিকভাবেও ফ্রেশও লাগবে।
৪. ঘরে বিপরীত ভেন্টিলেশন রাখা উচিৎ। তাতে ঘরের হাওয়া একদিক থেকে ঢুকে অন্য দিক থেকে বেরিয়ে যেতে সুবিধা হয়। এছাড়া পূর্ব-পশ্চিম এই দুই দিকের জানালায় সানশেড লাগান। এই দুই পদ্ধতি মেনে চললেও ঘরের তাপমাত্রা অনেকটা নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
৫. রান্না ঘরে গ্যাস, ইন্ডাকশন কুকার চলায় রান্না ঘর সবথেকে বেশি হিট হয়ে থাকে। তারউপর এই গরম। ফলে সেই হিট অন্যান্য ঘরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। ফলে রান্না ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য অবশ্যই এক্সহস্ট ফ্যান ব্যবহার করুণ। যাতে গরম হাওয়া বাইরে বেরিয়ে যায়। বাথরুমে ব্যবহার করুণ এক্সহস্ট ফ্যান।
৬. রোদের তাপ খুব বেশি থাকলে যেমনটা এই সময় রয়েছে তাতে ঘরের জানালা দিনের বেলায় বন্ধ করে রাখতে পারেন। তাতে ঘরে হিট কম ঢুকবে। কিন্তু রাতের বেলায় কোনও সমস্যা না থাকলে জানালা খুলে ঘমান। তাতে ঘর ঠাণ্ডা থাকবে।
৭. রান্না তো করতে হবেই। তা তো আর বন্ধ রাখা যাবে না। তবে গ্রিল জাতীয় রান্না এই সময় কম করাই ভালো। সবথেকে ভালো যদি বন্ধ রাখা যায়। কারণ গ্রিল জাতীয় রান্নায় অনেক বেশি পরিমাণে হিট উৎপন্ন হয় যা ঘরের পরিবেশও গরম করে তোলে।
৮. এই গরমে ঘরে অযথা বেশি পাওয়ারের আলো না জ্বালানোই ভালো। তাতে ঘরের তাপমাত্র আরও বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। কম পাওয়ারের লাইট আর যেই ঘরে প্রয়োজন নেই সেই ঘরের লাইট বন্ধ রাখাই শ্রেয়। এলইডি লাইট ব্যবহার করলেও তাপমাত্র কম হয়।
৯. ঘরোয়া উপায়তে এসি বানাতে পারেন আপনি। তারজন্য টেবিল ফ্যানের সামনে একটি বাটিতে বরফ রাখুন। পেছন থেকে ফ্যানের হাওয়া যেই বরফে লাগবে সেখান থেকে ঠান্ডা হাওয়া বার হবে। তাতে তাপমাত্রা ঘরের অনেকটাই কমে থাকে। তবে বরফ গলে গেলে তা আর হবে না। ফলে ক্রমাগত বরফের জোগান দেওয়াটা মুশকিল। সামনে ভেজা কাপড়ও রাখতে পারেন।
১০. বাড়ির চারপাশে গাছ লাগান। গাছের ছায়ায় আপনার ঘর অনেক ঠাণ্ডা থাকবে। ঘরের আশপাশে গাছপালা থাকা ঘরে সরাসরি সূর্যালোক প্রবেশ করতে পারে না। ফলে ঘর ঠাণ্ডা থাকে। জানালায় ছাউনি থাকলে প্রায় ৬৫ শতাংশ পর্যন্ত তাপ কমাতে সহায়ক হয়।
গ্রীষ্মের দাবদাহে প্রাণ ওষ্ঠাগত। এখনও দেখা নেই বৃষ্টির। গরমের এমন দাপট খুব কম দেখেছে কলকাতা তথা বঙ্গবাসী। এনমন অসহ্য থেকে বাঁচতে ও স্বস্তিতে থাকতে এসি বা এয়ার কুলার ছাড়া কোনও গতি নেই।
গরমে এসি বা এয়ার কুলার কেনার ভিড় লেগেছে দোকানগুলিতে। যাদের বাজেট কম তারা যাচ্ছেন এয়ার কুলারের দিকে। আর যাদের বাজেট একটু বেশি কিন এসি। কিন্তু কখনও ভেবে দেখেছেন আপনার স্বাস্থ্যের জন্য কোনটা ভাল? এসি না এয়ার কুলার।
অসহ্য গরমের কষ্ট থেকে দ্রুত আরাম চাইছেন সকলেই। আর তাই ঘর ঠান্ডা রাখতে কোনও কিছু বিচার-বিবেচনা না করেই কিনে ফেলেন এসি বা কুলার। তবে স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব রয়েছে এই দুয়েরই।
হাপানি কিংবা অ্যালার্জির সমস্যা থাকলে তাঁদের জন্য কিন্তু সবসময় ভাল হল এয়ার কুলার। কুলারে গ্যাসের পরিবর্তে জল ব্যবহার করা হয়। সুতারাং এটি পরিবেশ এবং মানুষ উভয়ের জন্যই কিন্তু নিরাপদ। ক্ষতিকর কোনও রাসায়নিক না থাকায়, প্রাকৃতিক উপায়েই বাতাস থাকে ঠান্ডা।
ধুলো-বালি বা অতিরিক্ত গরম থেকে বাঁচতে ভাল কাজ করে কুলার। কিন্তু সারা রাত ধরে কুলার চললে ড্রাই আইস এর সমস্যা হতে পারে। বাড়ে বিভিন্ন জীবাণু-ব্যাকটেরিয়া ঘটিত রোগ-জ্বালার প্রভাবও। এছাড়াও প্রভাব ফেলে ইমিউন সিস্টেমে। ফলে ঠান্ডা লাগা বা অ্যাজমা থাকলে কুলার না ব্যবহার করাই উচিত।
এসি দীর্ঘদিন ব্যবহার করলে শ্বাসযন্ত্রের একাধিক সমস্যা আসতে পারে। তীব্র গরমে টানা এয়ার কন্ডিশনারের মধ্যে থাকলে মাথা ব্যথা, সর্দি, জ্বর একাধিক সমস্যা আসতে পারে। শরীরে দ্রুত ক্লান্তি আসতে পারে। অত্যধিক ঠান্ডা ঘরে বসে কাজ করেন তাঁদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্টের সমস্যা আসে খুব শীঘ্রই।
Disclaimer: এসি ও এয়ার কুলার কোনটি স্বাস্থ্যের জন্য বেশি ভাল তা এই প্রতিবেদনে তুলে দরা হয়েছে । তবে এই প্রতিবেদনটি শুধুমাত্র তথ্যের জন্য। কোনও ওষুধ বা চিকিৎসা সংক্রান্ত নয়। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আপনার চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলেই আপনার সিদ্ধান্ত নিন।
Posts navigation
Just another WordPress site