হাওড়া: হারিয়ে যেতে বসা পটচিত্র আবার ফিরে আসছে শাড়ি-পাঞ্জাবি-জামার মাধ্যমে! বিষয়টা ঠিক বুঝলেন না তো? আসলে পাতলা ক্যানভাসের মত কাপড়ে আঁকা পটচিত্র ক্রমশই হারিয়ে যেতে বসেছিল। বর্তমানে সেই পটচিত্র শাড়ি, পাঞ্জাবি, জামার নকশা হয়ে আবার ফিরে আসছে। এভাবেই রোজগারের নতুন পথ খুঁজে পেয়েছেন পটচিত্রের শিল্পীরা।
আরও পড়ুন: সবিতা, দাশশাল, থুবি এগুলো কীসের বীজের নাম জানেন? এমন ১২১ টি…
মেদিনীপুরের শিল্পীদের পটচিত্রের দারুন চাহিদা, দেদার বিকোচ্ছে হাওড়ার মেলায়। পটচিত্র বলতে আমাদের প্রথমেই মনে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার কথা। পিংলার ঐতিহ্যমণ্ডিত পটচিত্র বিশ্ববিখ্যাত। কিন্তু পটচিত্র এঁকে গান গেয়ে প্রাচীন কাহিনী বর্ননা এখন অতীত। বর্তমানে বিভিন্ন মেলায় শিল্পীরা তাঁদের সৃষ্টি নিয়ে হাজির হচ্ছেন অন্য রূপে। তাতে বিক্রিও হচ্ছে ভাল।
সংস্কৃতে ‘পট’ শব্দের অর্থ হল কাপড়, আর ‘চিত্র’ মানে ছবি। অর্থাৎ সবমিলিয়ে পটচিত্র বলতে কাপড়ের উপর আঁকা ছবিকে বোঝানো হয়। পাতলা কাগজ অথবা বাঁশের বিভিন্ন জিনিসের উপর পটচিত্র আঁকা হোত। এখনও আর্ট পেপারের পিছনে কাপড় আটকে পেপারের উপর পটচিত্র আঁকা হয়। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন শাড়ি, ওড়না, টি শার্ট প্রভৃতি জিনিসের উপরেও পটচিত্র আঁকা হচ্ছে। বর্তমানে পটচিত্র বাজারে বিক্রি করার জন্য এবং মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য ট্রে, টি শার্ট, ওড়না, শাড়ি, পাঞ্জাবি, শাড়ির মধ্যে পটচিত্র এঁকে বাজারে বিক্রি করছেন শিল্পীরা। এতে রোজগার হচ্ছে ভাল।
আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F
পটচিত্র আঁকার জন্য বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রং তৈরি করা হয়। যেমন- গাছের সিম দিয়ে সবুজ রং, ভুসোকালি দিয়ে কালো রং, অপরাজিতা ফুল দিয়ে নীল রং, সেগুন গাছের পাতা দিয়ে মেরুন রং, পান-সুপারি চুন দিয়ে লাল রং, পুঁই ফল দিয়ে গোলাপি রং, কাঁচা হলুদ দিয়ে হলুদ রং, পুকুর খনন করে মাটি বের করে তা দিয়ে সাদা রঙ ইত্যাদি। সাধারণত এই সমস্ত প্রাকৃতিক রঙ দিয়ে, ছাতা, হাতপাখা, হ্যান্ডব্যাগ, মোড়া, লন্ঠন, কেটলি ইত্যাদি আঁকা হলেও শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টি-শার্ট, ওড়নায় তারা ফেব্রিক রঙ করে থাকেন, যার চাহিদা এখন তুঙ্গে।
রাকেশ মাইতি