Tag Archives: patachitra

Bengal Patachitra: কাগজ ছেড়ে শাড়ি, কাপ-প্লেটে ফুটে উঠছে পটের ডিজাইন

পশ্চিম মেদিনীপুর: সুন্দর ডিজাইন করা একটি কাঠের প্লেট। তার উপর আরেকটি পটের ডিজাইনের কাপে চা দিয়ে পরিবেশন করা যাবে। তাই নয়, কাগজের উপর পটের নানা ছবি থাকবে আপনার টি শার্টে। শাড়ির আঁচলে থাকবে এই সব ডিজাইন। এমন‌ই সুন্দর সুন্দর কাস্টমাইজ নানা ব্যবহার্য জিনিসপত্র তৈরি করছেন এই বাংলার শিল্পীরা।

কাগজের উপর রং-তুলির আঁচড় কেটে ছবি ফুটিয়ে তোলাই শুধু নয়, এবার শাড়ি, পাঞ্জাবি সহ নানান ব্যবহার্য জিনিসের উপর পটের ডিজাইন ফুটিয়ে তুলছেন শিল্পীরা। মানুষের স্বাদে বদল আনতে এই বিশেষ শিল্প ভাবনা।

আর‌ও পড়ুন: ভেসে যাবে গোটা গ্রাম, বাঁধ বাঁচাতে রাত থেকেই কাজ শুরু

পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলা বিখ্যাত পট শিল্পের জন্য। এখানে প্রায় শতাধিক পটশিল্পীর বসবাস। সকাল থেকেই প্রতিটি বাড়িতে রং-তুলি দিয়ে কাগজের উপর পটচিত্র আঁকার কাজ চলে। কখনও সামাজিক আবার কখনও নানান ধর্মীয় ছবি এঁকে এবং সমার্থক গান লিখে পরিবেশন করেন পটুয়ারা। তবে যত সময় এগোচ্ছে এখানকার শিল্পীরা নিজেদের শিল্পকলাতেও পরিবর্তন আনছেন। মানুষের চাহিদার কথা ভেবে সাদা কাগজে কিংবা ক্যানভাসে পটের ডিজাইন নয়, এবার ছবি এঁকে কাস্টমাইজ করে দিচ্ছেন টি-শার্ট, শাড়ি, কেটলি, প্লেট, কাপ সহ বিভিন্ন জিনিস। বাজারে চাহিদাও রয়েছে বেশ।

পিংলার নয়াগ্রাম বিখ্যাত পট শিল্পের জন্য। এখানে শতাধিক পটুয়া পরিবারের বসবাস। সকাল থেকে তাঁরা বিভিন্ন ছবি এঁকে, বংশপরম্পরায় জীবন জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে মানুষের স্বাদে বদল আনতে পটের ডিজাইন ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে কাস্টমাইজ কাপ, প্লেট, ঘর সাজানোর উপকরণ, টি-শার্ট, শাড়ি সহ একাধিক জিনিসের উপর। বাজারে এই সকল জিনিস বিক্রি হচ্ছে সামান্য দামে। কাগজের পটের চেয়েও ব্যবহার্য এই সকল জিনিস বেশি কিনছে সাধারণ মানুষ।

রঞ্জন চন্দ

Patachitra: এই ঐতিহাসিক শিল্পে যেন প্রাগৈতিহাসিক যুগের ছোঁয়া

পট শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ 'পট্ট' থেকে। যার অর্থ হল বস্ত্র। পটচিত্র মানে চলতি ভাষায় কাপড়ের উপর অঙ্কিত চিত্রাবলী। সেই রং-চিত্রে উঠে আসে ভারতের পুরাণের কথা।
পট শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ ‘পট্ট’ থেকে। যার অর্থ হল বস্ত্র। পটচিত্র মানে চলতি ভাষায় কাপড়ের উপর অঙ্কিত চিত্রাবলী। সেই রং-চিত্রে উঠে আসে ভারতের পুরাণের কথা।
মুকন্দরামের কবিকঙ্কণে উঠে এসেছে পট জীবিকার কথা। আবার বিশাখদত্তের মুদ্রারাক্ষসে রয়েছে যমপটের কথা। বাণভট্টের হর্ষচরিতেও রয়েছে যমপট ব্যবসায়ীর কথা। এর থেকে বোঝা যায় এই শিল্পের প্রচীনতা এবং বিশালতা।
মুকন্দরামের কবিকঙ্কণে উঠে এসেছে পট জীবিকার কথা। আবার বিশাখদত্তের মুদ্রারাক্ষসে রয়েছে যমপটের কথা। বাণভট্টের হর্ষচরিতেও রয়েছে যমপট ব্যবসায়ীর কথা। এর থেকে বোঝা যায় এই শিল্পের প্রচীনতা এবং বিশালতা।
প্রাচীন শিল্প চেতনাকে বজায় রেখে বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ ব্লকের নয়াডিহি এবং ছাতনার শুশুনিয়ার ভরতপুর ২০২৪ সালেও এঁকে চলেছে এই পট চিত্রগুলি। বাড়ির পুরুষ থেকে মহিলা সকলেই আঁকেন ছবি। প্রত্যেকের নামের পাশে রয়েছে 'চিত্রকর' উপাধি।
প্রাচীন শিল্প চেতনাকে বজায় রেখে বাঁকুড়ার হিড়বাঁধ ব্লকের নয়াডিহি এবং ছাতনার শুশুনিয়ার ভরতপুর ২০২৪ সালেও এঁকে চলেছে এই পট চিত্রগুলি। বাড়ির পুরুষ থেকে মহিলা সকলেই আঁকেন ছবি। প্রত্যেকের নামের পাশে রয়েছে ‘চিত্রকর’ উপাধি।
বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের বিশ্ববরেণ্য শিল্পী যামিনী রায় গোটা পৃথিবীর কাছে চিনিয়েছিলেন পটচিত্রকে। পট শিল্পের বিভিন্ন গ্রহণযোগ্য ঘরানাগুলির মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত ঘরানা হল বাঁকুড়ার পটচিত্র। তবে বর্তমান যুগে এই শিল্পকলা কিছুটা যেন অবহেলিত।
বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের বিশ্ববরেণ্য শিল্পী যামিনী রায় গোটা পৃথিবীর কাছে চিনিয়েছিলেন পটচিত্রকে। পট শিল্পের বিভিন্ন গ্রহণযোগ্য ঘরানাগুলির মধ্যে অন্যতম বিখ্যাত ঘরানা হল বাঁকুড়ার পটচিত্র। তবে বর্তমান যুগে এই শিল্পকলা কিছুটা যেন অবহেলিত।
বাংলার পটচিত্রের অঙ্কনশৈলী ও বর্ণনার রীতি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ঘরানা থেকে এসেছে। মূলত দুটো ঘরানার বিশেষ প্রচলিত, বেঙ্গল স্কুল ঘরানা ও সাঁওতালি অঙ্কনরীতি।
বাংলার পটচিত্রের অঙ্কনশৈলী ও বর্ণনার রীতি পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন ঘরানা থেকে এসেছে। মূলত দুটো ঘরানার বিশেষ প্রচলিত, বেঙ্গল স্কুল ঘরানা ও সাঁওতালি অঙ্কনরীতি।
বেঙ্গল স্কুলের ভাবনায় তৈরি হয়েছিল মেদিনীপুর-তমলুক-কালীঘাট-ত্রিবেণী সামাজিক ঘরানা। বীরভূম ঘরানার মধ্যে ছিল বীরভূম-কান্দি-কাটোয়া। সাঁওতালি অঙ্কনরীতির মধ্যে পড়ে আদিবাসী বা সাঁওতালি পটচিত্র। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায় এই রীতির চর্চা হয়।
বেঙ্গল স্কুলের ভাবনায় তৈরি হয়েছিল মেদিনীপুর-তমলুক-কালীঘাট-ত্রিবেণী সামাজিক ঘরানা। বীরভূম ঘরানার মধ্যে ছিল বীরভূম-কান্দি-কাটোয়া। সাঁওতালি অঙ্কনরীতির মধ্যে পড়ে আদিবাসী বা সাঁওতালি পটচিত্র। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া জেলায় এই রীতির চর্চা হয়।

Lok Sabha Election 2024: ভোটে ফ্লেক্স-ব্যানারের প্রচার অনেক হল, এবার চোখ রাখুন এই মাধ্যমে

পশ্চিম মেদিনীপুর: দেশজুড়ে চলছে গণতন্ত্রের উৎসব। তাতে সামিল হয়েছেন সারা দেশের নানা শ্রেণির, নানা ভাষার মানুষ। এ রাজ্যেও তার ব্যতিক্রম নয়। ইতিমধ্যে প্রথম চার দফার দফার নির্বাচন শেষ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবর‌ও সামনে এসেছে। তবে ভোটকে ইস্যু করে এবার নজরকাড়া ভাবনা বাংলার পট শিল্পীদের।

মানুষকে সচেতন করতে এবং সুস্থভাবে ভোটদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বিশেষ পট আঁকলেন পট শিল্পীরা। লিখলেন গানও। মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে এই ভাবনা শিল্পীদের। যা ইতিমধ্যেই বেশ সাড়া ফেলেছে।

আরও পড়ুন: ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে বন্দি জনমত! চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী

শিল্প সমাজের এক অঙ্গ। মানুষের মধ্যে সচেতনতাবোধ বৃদ্ধি করে শিল্পীর শিল্পকর্ম। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলার নয়া গ্রামে বসবাস বহু পট শিল্পী পরিবারের। গোটা গ্রাম পরিচিত পট গ্রাম হিসেবে। বিভিন্ন সময় নানা চিত্র, পটে এঁকে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করেন তাঁরা। কখনও ধর্মীয়, কখনও সচেতনতামূলক ছবি এঁকে মানুষের মধ্যে নানা ভাবনার বিকাশ করে থাকেন পটুয়ারা। তবে এবার ভোটে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়ে বিশেষ পট আঁকলেন তারা। লিখলেন গানও।

পিংলার পট শিল্পী বাহাদুর চিত্রকরের তত্ত্বাবধানে বেশ কয়েকজন শিল্পী মিলে এঁকেছেন এই পট। শুধু আঁকা নয়, মানুষের মধ্যে গান গেয়ে গেয়ে ভোটকে কেন্দ্র করে শান্তি শৃঙ্খলার বার্তা দিচ্ছেন তাঁরা।

রঞ্জন চন্দ

Bengali News: হারিয়ে যেতে বসা পটচিত্র ফিরছে শাড়ি, পাঞ্জাবির হাত ধরে

হাওড়া: হারিয়ে যেতে বসা পটচিত্র আবার ফিরে আসছে শাড়ি-পাঞ্জাবি-জামার মাধ্যমে! বিষয়টা ঠিক বুঝলেন না তো? আসলে পাতলা ক্যানভাসের মত কাপড়ে আঁকা পটচিত্র ক্রমশই হারিয়ে যেতে বসেছিল। বর্তমানে সেই পটচিত্র শাড়ি, পাঞ্জাবি, জামার নকশা হয়ে আবার ফিরে আসছে। এভাবেই রোজগারের নতুন পথ খুঁজে পেয়েছেন পটচিত্রের শিল্পীরা।

আরও পড়ুন: সবিতা, দাশশাল, থুবি এগুলো কীসের বীজের নাম জানেন? এমন ১২১ টি…

মেদিনীপুরের শিল্পীদের পটচিত্রের দারুন চাহিদা, দেদার বিকোচ্ছে হাওড়ার মেলায়। পটচিত্র বলতে আমাদের প্রথমেই মনে পড়ে পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলার কথা। পিংলার ঐতিহ্যমণ্ডিত পটচিত্র বিশ্ববিখ্যাত। কিন্তু পটচিত্র এঁকে গান গেয়ে প্রাচীন কাহিনী বর্ননা এখন অতীত। বর্তমানে বিভিন্ন মেলায় শিল্পীরা তাঁদের সৃষ্টি নিয়ে হাজির হচ্ছেন অন্য রূপে। তাতে বিক্রিও হচ্ছে ভাল।

সংস্কৃতে ‘পট’ শব্দের অর্থ হল কাপড়, আর ‘চিত্র’ মানে ছবি। অর্থাৎ সবমিলিয়ে পটচিত্র বলতে কাপড়ের উপর আঁকা ছবিকে বোঝানো হয়। পাতলা কাগজ অথবা বাঁশের বিভিন্ন জিনিসের উপর পটচিত্র আঁকা হোত। এখনও আর্ট পেপারের পিছনে কাপড় আটকে পেপারের উপর পটচিত্র আঁকা হয়। তবে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এখন শাড়ি, ওড়না, টি শার্ট প্রভৃতি জিনিসের উপরেও পটচিত্র আঁকা হচ্ছে। বর্তমানে পটচিত্র বাজারে বিক্রি করার জন্য এবং মানুষের কাছে তুলে ধরার জন্য ট্রে, টি শার্ট, ওড়না, শাড়ি, পাঞ্জাবি, শাড়ির মধ্যে পটচিত্র এঁকে বাজারে বিক্রি করছেন শিল্পীরা। এতে রোজগার হচ্ছে ভাল।

আরও খবর পড়তে ফলো করুন
https://whatsapp.com/channel/0029VaA776LIN9is56YiLj3F

পটচিত্র আঁকার জন্য বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে রং তৈরি করা হয়। যেমন- গাছের সিম দিয়ে সবুজ রং, ভুসোকালি দিয়ে কালো রং, অপরাজিতা ফুল দিয়ে নীল রং, সেগুন গাছের পাতা দিয়ে মেরুন রং, পান-সুপারি চুন দিয়ে লাল রং, পুঁই ফল দিয়ে গোলাপি রং, কাঁচা হলুদ দিয়ে হলুদ রং, পুকুর খনন করে মাটি বের করে তা দিয়ে সাদা রঙ ইত্যাদি। সাধারণত এই সমস্ত প্রাকৃতিক রঙ দিয়ে, ছাতা, হাতপাখা, হ্যান্ডব্যাগ, মোড়া, লন্ঠন, কেটলি ইত্যাদি আঁকা হলেও শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, টি-শার্ট, ওড়নায় তারা ফেব্রিক রঙ করে থাকেন, যার চাহিদা এখন তুঙ্গে।

রাকেশ মাইতি