Tag Archives: Flood

Flood Control in Bengal: বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বদলীয় বৈঠকে সব দলের কাছে আহ্বান মুখ্যমন্ত্রীর

কলকাতা: রাজ্যে বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রাজনৈতিক দলগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাতেই পরিস্থিতি থেকে দ্রুত উত্তরণ করা সম্ভব হবে, এমনই প্রস্তাব ত্রিপুরা প্রশাসনের।

রেকর্ড পরিমাণ ভারী বৃষ্টির কারণে রাজ্যে সৃষ্ট ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায়  রাজ্য অতিথিশালায় আয়োজিত সর্বদলীয় বৈঠকে এই আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। মুখ্যমন্ত্রীর পৌরহিত্যে আয়োজিত এই বৈঠকের শুরুতেই সাম্প্রতিক বন্যায় মৃত ব্যক্তিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়।

আরও পড়ুন- দেখলেও বিশ্বাস করতে পারবেন না! এই মুরগির সঙ্গে সেলফি তুলতে হাজির দূর-দূরান্তের মানুষ! কী আছে মুরগির?

 বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের কাছে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন এবং তাদের মূল্যবান পরামর্শ চেয়েছেন। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য সকলের কাছে সহযোগিতার আহ্বান রাখেন তিনি।

সর্বদলীয় বৈঠক শেষে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মত বিনিময়ে মুখ্যমন্ত্রী জানান, গত ১৯ আগস্ট থেকে সারা রাজ্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয়েছে। শুধু দক্ষিণ জেলার অন্তর্গত বকাফায় ৪৯৩ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বন্যার দরুণ পরিস্থিতি সংকটজনক হয়ে যায়। ত্রিপুরার সব নদী বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সাথে কথা বলার সময় তিনি আমাকে হেলিকপ্টার এবং অতিরিক্ত এনডিআরএফ টিম পাঠানো সহ সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্যের আশ্বাস দেন। আমাদের প্রশাসন অক্লান্ত পরিশ্রম করছে, ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছে এবং উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।

আরও পড়ুন- খেতে ভ্যানিলা আইসক্রিমের মতো! হলুদ নয়, নীল এই কলা দেখলে কী করবেন?

বর্তমানে গোমতী নদী ছাড়া সব নদীই বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, ২ জন নিখোঁজ এবং ২ জন আহত হয়েছেন। এই ২৪ জনের মধ্যে ১৮ জন ভূমিধসে মারা গিয়েছেন, ৫ জন জলে ডুবে মারা যান এবং ১ জনের বাড়ি ধ্বসে মৃত্যু হয়েছে বলে জানা যায়।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন,  “সর্বদলীয় বৈঠকে বিজেপির প্রতিনিধি সহ বিরোধী দল এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নিয়েছেন। আমরা বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেছি। আমি তাদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছি। বৈঠকে উপস্থিত সকল দলের প্রতিনিধিরা তাঁদের পরামর্শ শেয়ার করেন এবং এই সংকটময় পরিস্থিতিতে সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।”

তিনি আরও বলেন, “আমি রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। সর্বদলীয় প্রতিনিধিরা মহকুমা স্তরেও সর্বদলীয় বৈঠক করার প্রস্তাব দিয়েছেন। যা একটি খুবই ভাল পরামর্শ ছিল। এই বৈঠকে আমরা কোনো রাজনৈতিক আলোচনা করিনি। শুধু এই সংকট থেকে দ্রুত উত্তরণে সকলের ঐক্যের উপর গুরুত্ব দিয়েছি। এই বন্যায় রাজ্যে প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৫,০০০ কোটি টাকা। যে পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। এই বৈঠকে আমি ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করার অভিজ্ঞতাও শেয়ার করেছি। বন্যায় যে ছেলেমেয়েরা তাদের বইপত্র হারিয়েছে তারা শিক্ষা দফতর থেকে নতুন বই পাবে।”

এছাড়াও মানিক জানান, রোগ ব্যাধি এড়াতে সমস্ত শৌচালয়গুলির জন্যও ব্লিচিং পাউডার বিতরণ করা হচ্ছে।  তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী আরও জানান, সারা রাজ্যে এখন ৫৫৭টি ত্রাণ শিবির রয়েছে, যেখানে ১.২৮ লক্ষ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। বন্যায় প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সমস্ত দফতর কাজ করছে।

ভারী বর্ষণে প্রায় ১,৬০৩টি বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙে গিয়েছে, ৫০১টি ট্রান্সফরমার নষ্ট হয়েছে এবং ২টি সাবস্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বৈঠকে এ বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। আমরা স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ করছি। বৈঠকের সার্বিক আলোচনা সন্তোষজনক বলেই জানান মুখ্যমন্ত্রী।

জানা গিয়েছে, প্রায় ২০০ জন ইঞ্জিনিয়ার মাঠে নেমে কাজ করছেন। তাছাড়া,  খাদ্যের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে এবং এ পর্যন্ত গোমতী ও দক্ষিণ জেলায় ২০,০০০ খাবারের প্যাকেট এয়ার লিফটিং করা হয়েছে। এই দুর্যোগে মৃতদের পরিবারের জন্য ৪ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ২.৫ লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বাড়ানো যায় কিনা সেটা বিবেচনা করার জন্য বৈঠকে পরামর্শ দেওয়া হয়। এই আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসূ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।                     সর্বদলীয় বৈঠকে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সহ রাজ্য সরকারের সচিব পি কে চক্রবর্তী, রাজস্ব সচিব ব্রিজেশ পান্ডে সহ পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

Central to Aid Tripura: বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্রের তরফে ৪০ কোটি টাকা সাহায্য ত্রিপুরাকে!

কলকাতা:  রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সাপেক্ষে ত্রাণ কার্য সম্পাদনে ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করল কেন্দ্র। একটানা ভারী বর্ষণে রাজ্যে উদ্ভুত বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় চূড়ান্ত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহাও নিজে সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করে প্রতিনিয়ত কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে গিয়েছেন। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে পরিস্থিতি সম্পর্কে আপডেট করে গিয়েছেন।

আরও পড়ুন- দেখলেও বিশ্বাস করতে পারবেন না! এই মুরগির সঙ্গে সেলফি তুলতে হাজির দূর-দূরান্তের মানুষ! কী আছে মুরগির?

এই অবস্থায় এবার রাজ্যে উদ্ভুত বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ত্রান কার্য সম্পাদন করতে এসডিআরএফ খাতে কেন্দ্রীয় সহায়তার অগ্রিম ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ করলো কেন্দ্রীয় সরকার। এর পাশাপাশি কেন্দ্রের নির্দেশে ১১টি এনডিআরএফ টিম, সেনাবাহিনীর ৩টি কলাম, এয়ারফোর্সের ৪টি হেলিকপ্টার ইতিমধ্যেই রাজ্যের ত্রান ও উদ্ধারকার্যে নিয়োজিত রয়েছে।

আর এই সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে রাজ্য সরকারের সাথে ক্রমাগত সমন্বয় সাধন করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহ।  এই নিরলস আন্তরিক প্রয়াসের জন্য আজ রাজ্যবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র ও সমবায় মন্ত্রী অমিত শাহ এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা।মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে বন্যা ত্রাণে গতি এসেছে।

আরও পড়ুন- খেতে ভ্যানিলা আইসক্রিমের মতো! হলুদ নয়, নীল এই কলা দেখলে কী করবেন?

বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে অনুদান প্রদান। বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বন্যা ত্রাণে গতি আসছে। মানবিক মুখ নিয়ে এগিয়ে আসছেন সহৃদয় ব্যক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্বশাসিত সংস্থা, সামাজিক সংস্থা ও সংগঠন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা জানান, আজ মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে ত্রিপুরা ক্রিকেট এসোসিয়েশন (টিসিএ) এবং জি গ্রুপ এর পক্ষ থেকে যথাক্রমে ১০,০০,০০০ টাকা  ও ২,০০,০০০ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়।

মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত নিরসনে সচেষ্ট রয়েছে সকল অংশের নাগরিকগন। কায়িক শ্রমের পাশাপাশি আর্থিক সহায়তায় এগিয়ে এসেছে বহু সংস্থা।  ত্রিপুরা ব্রিক ম্যানুফ্যাকচারার এসোসিয়েশন, এএস সিকিউরিটি প্রাইভেট সার্ভিস এবং ইউনিটি গ্যাস্ট্রো অ্যান্ড লিভার হাসপাতাল থেকে যথাক্রমে ৫,০০০,০০ টাকা, ২৫,০০১ টাকা ও ৫১,০০০ টাকা অনুদান মুখ্যমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে প্রদান করা হয়। আর এই মানবিক উদ্যোগের জন্য তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী।

Flood: ভাসছে গোটা এলাকা! মূল ব্রিজের সংযোগকারী রাস্তায় ফাটল, নতুন আতঙ্ক ভূতনিতে

মালদহ: জলমগ্ন গোটা ভূতনির চর। বন্যা কবলিত এলাকার লক্ষাধিক বাসিন্দা। গঙ্গা নদীর জলে প্লাবিত হয়েছে ভূতনি বিস্তীর্ণ এলাকা। একাধিক জায়গায় ভেঙেছে কালভার্ট থেকে রাস্তা ফলে যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন ভূতনির একাধিক গ্রামে। গ্রামের বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছেন বাঁধের উপর উঁচু জায়গায়।

মালদহের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ভূতনির যোগাযোগের একমাত্র ভরসা ফুলহার নদীর ওপর ব্রিজ। এবার বন্যার জলে ভূতনি অংশের ব্রিজের সংযোগকারী রাস্তায় দীর্ঘ ফাটল দেখা দিয়েছে। যা নিয়ে রীতিমতো আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। সংযোগকারী রাস্তার দুই ধারে প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে এই ফাটল দেখা দিয়েছে।

আরও পড়ুন: জিন্স প‍্যান্টে কেন থাকে এই ‘ছোট্ট পকেট’? রোজই পরেন, তাও ৯৯% লোকজনই জানেন না, আসল কারণ শুনলে চমকে যাবেন

যেকোনও মুহূর্তে রাস্তায় ধস নামার সম্ভাবনা। ভুতনি ব্রিজের সংযোগকারী এই রাস্তায় ধস নামলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। ব্রিজে উঠতে পারবেন না ভুতনির বাসিন্দারা। মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে গোটা ভূতনি। রাস্তার দুই ধারে বন্যার জল। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্কে রয়েছে এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রেম কুমার মন্ডল বলেন, প্রায় ১০০ মিটার এলাকা জুড়ে ফাটল। এই ব্রিজ ভেঙে গেলে ভুতনি শেষ হয়ে যাবে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কী করা হচ্ছে এখনও আমরা জানিনা।

ব্রিজের সংযোগকারী রাস্তার একাংশের ফাটল বেড়ে যেকোনও সময় ভেঙে পড়তে পারে বলে অনুমান।স্থানীয়রা বলেন, ভূতনি ব্রিজের পাশের প্রবেশ করেছে গঙ্গা নদীর জল। যার ফলে সংযোগকারী রাস্তার নিচের মাটি নরম হয়ে এই বিশাল ফাটল দেখা দিয়েছে। যেকোনও মুহূর্তে ভেঙে পড়তে পারে এই রাস্তার একাংশ।এলাকা থেকে জল না কমলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

আরও পড়ুন: বলুন তো কোন প্রাণী চোখ বন্ধ করেও দিব‍্যি সব দেখতে পায়? নামটা খুব চেনা, চার পায়ে হাঁটে, ৯৯% লোকজনই ভুল উত্তর দিয়েছেন

এদিকে গঙ্গা নদীর জল স্তর গত কয়েকদিন ধরে কমতে শুরু করেছে। তবে ভুতনির বিস্তীর্ণ এলাকায় এখনও বন্যার জল কমতে শুরু করেনি। বরং জলমগ্ন এলাকাগুলিতে এখনও জলস্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। সংযোগকারী রাস্তার দুই ধারে জল কমে যাওয়ার পরেও ধস নামার সম্ভাবনা রয়েছে। রাস্তার দুই ধারে ফাটল নিয়ে বর্তমানে ব্যাপক আতঙ্কে রয়েছেন ভুতনিবাসী কারণ এই রাস্তা ভেঙে গেলে একেবারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে গোটা এলাকা।

হরষিত সিংহ

Tripura Flood Update: ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ২৪, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখলেন মুখ্যমন্ত্রী, ত্রিপুরায় আজ ফের বৃষ্টির পূর্বাভাস?

আগরতলাঃ আকাশ পথে গোমতী ও দক্ষিণ জেলার বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে পর্যালোচনা মুখ্যমন্ত্রী মাণিক সাহার। বন্যা দুর্গতদের সহায়তায় সর্বক্ষণের জন্য কাজ করছে রাজ্য সরকার, আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার অক্লান্ত পরিশ্রম করছে এবং বন্যায় দুর্দশাগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য রাজ্য সরকারকে যা যা সহায়তা দেওয়ার প্রয়োজন সেটা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।

ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত ত্রিপুরা। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সেরাজ্যে ফুঁসে উঠেছে বহু নদী। যদিও ধীরে ধীরে কিছু নদীর জল নামছে। সিপাহীজলা জেলার সোনামুড়ায় গোমতী বাদে সব নদীর জল বিপদসীমার নিচে চলে গিয়েছে। এদিকে, গত কয়েকদিনের ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির জেরে ত্রিপুরায় মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের। এখনও পর্যন্ত নিখোঁজ ২ জন। ১.২৮ জন মানুষ এখনও ঘর ছাড়া বন্যার জেরে।

গোমতী ও দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। আগরতলার এমবিবি বিমানবন্দরে একটি এমআই-১৭ হেলিকপ্টারে চেপে বন্যা কবলিত অঞ্চলগুলি পরিদর্শন করতে গোমতী জেলা এবং দক্ষিণ ত্রিপুরার উদ্দেশ্যে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। উদয়পুরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ডাঃ সাহা খিলপাড়া উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও খিলপাড়া মার্কেট শেডে থাকা অস্থায়ী ত্রাণ শিবির পরিদর্শন করেন। কথা বলেন বিপন্ন বাসিন্দাদের সঙ্গে।

আরও পড়ুনঃ দিঘার এ কী সাংঘাতিক অবস্থা! লং উইকেন্ডে পৌঁছে চমকে গেলেন পর্যটকরা, জানলে আশঙ্কায় সিঁটিয়ে যাবেন আপনিও

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বন্যা কবলিত এলাকার পাশাপাশি ত্রাণ শিবিরগুলি পরিদর্শন করছেন। পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মন্ত্রী এবং বিধায়করা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করছেন। আমরা সম্ভাব্য যা যা করার সবকিছু করছি। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকার একটানা কাজ করে চলছে। কেন্দ্রীয় সরকারও আমাদের ব্যাপক সহায়তা করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। বন্যার ত্রাণ এবং উদ্ধার কাজে সহায়তা-সহ আমরা যা যা চেয়েছিলাম তারা আমাদের সবই দিয়েছেন।”

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার লক্ষ্যে অতিরিক্ত এনডিআরএফ টিম, হেলিকপ্টার এবং বোট মোতায়েন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বন্যা-দুর্গত মানুষের মধ্যে খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হচ্ছে। বন্যার দরুণ বিপন্ন মানুষের জন্য সরকার প্রয়োজনীয় সবকিছু করছে।” তিনি জানান, বন্যার কারণে অনেক লোক তাদের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হারিয়েছেন। এতে চিন্তার কোনও কারণ নেই। ইতিমধ্যে প্রশাসনের আধিকারিকদের এই বিষয়ে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছি।

পরিদর্শন কালে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন উদয়পুর পুর পরিষদের চেয়ারম্যান শীতল চন্দ্র মজুমদার, গোমতী জেলার বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত জেলাশাসক রাভেল হেমেন্দ্র কুমার সহ রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকগণ। আকাশপথে উদয়পুর, করবুক, অমরপুর, শান্তিরবাজার, বিলোনীয়া, মাতাবাড়ি, মেলাঘর, চড়িলাম, বিশালগড় ও আগরতলা সহ বিভিন্ন বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর ডাঃ মানিক সাহা। পাশাপাশি বেশ কিছু জায়গায় সরেজমিনে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের নির্দেশ দেন।

সূত্রের খবএর, প্রায় ৫ হাজার কোটির মতো ক্ষতি হয়েছে ত্রিপুরায় বন্যার জেরে। তবে, সূত্রের খবর, গত কয়েক ঘণ্টায় ধীরে ধীরে পরিস্থিতি খানিকটা উন্নতির দিকে গিয়েছে। উল্লেখ্য, শুধু ১৯ অগাস্ট ২৮৮.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে ত্রিপুরার ৮ বন্যা বিধ্বস্ত জেলায়। যা সর্বাধিক বর্ষণ বলে মনে করা হয়। এদিকে, ত্রাণের জন্য ইতিমধ্যে ৪০ কোটি টাকার প্যাকেজ কেন্দ্রের তরফে তুলে দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরাকে।

আবীর ঘোষাল 

DVC water discharge: আবার জল ছাড়ল মাইথন, পাঞ্চেত জলাধার! বন্যার আশঙ্কায় মাথায় হাত মানুষের

আসানসোল, পশ্চিম বর্ধমান : বেশিক্ষণ স্থায়ী হল না স্বস্তি। আবার চিন্তা বাড়াল ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। নতুন করে এদিন বুধবার ফের একবার জল ছাড়া হল জলাধারগুলি থেকে। এদিন মাইথন এবং পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ অনেকটা বেড়েছে। সবমিলিয়ে দামোদরের উচ্চ অববাহিকার দু’টি জলাধার থেকে ছাড়া হয়েছে ৬৫ হাজার কিউসেক জল।

মাইথন এবং পাঞ্চের থেকে জল ছাড়ার পরে ফের দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে যে জল ছাড়া হয়েছে, তা এদিন রাতের দিকে পৌঁছবে দুর্গাপুর ব্যারেজে। দুর্গাপুর ব্যারেজে জলের চাপ সামাল দিতে অতিরিক্ত জল ছাড়া হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে ফের একবার নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষজনের আশঙ্কা বাড়ল।

আরও পড়ুন: তারকেশ্বর গেলে সোনায় সোহাগা! বাড়ছে ৮ জোড়া ট্রেন, দাঁড়াতে হবে না টিকিটের লাইনেও

উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে ভারী বৃষ্টিপাতের পর শুক্র, শনি, রবিবার ব্যাপক মাত্রায় জল ছাড়া হয়েছে দামোদরের এই সমস্ত জলাধারগুলি থেকে। যার ফলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে নদীতীরবর্তী এলাকাগুলিতে। বিশেষ করে দুর্গাপুর ব্যারেজের দুই পাশে অবস্থিত মানাচর, ডিহিরচরের মত জায়গাগুলিতে মানুষজন রীতি মতো ভয় পেয়েছিলেন। কিন্তু সোমবারের পর থেকে ধাপে ধাপে জল ছাড়া কমানো হয়। যা দেখে কিছুটা চিন্তামুক্ত হয়েছিলেন মানুষ। তবে ফের বুধবার সেই চিন্তা বাড়ল।

আরও পড়ুন: আম নিয়ে শিশুদের লড়াই থেকে তিনজনের যাবজ্জীবন… ৪০ বছর পরে কমল শাস্তি

প্রসঙ্গত, দক্ষিণবঙ্গে আগামী কয়েকদিন বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। আসানসোল, দুর্গাপুর-সহ পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত লেগেই আছে। যার ফলে বাড়তি জল এসে ঢুকছে জলাধারগুলিতে। জলধারণ ক্ষমতার কাছাকাছি লেভেলই জল মজুত রয়েছে সেখানে। যে কারণে বাড়তি যে জল ব্যারেজগুলিতে ঢুকছে, চাপ সামাল দিতে সেই জল ছাড়া হচ্ছে। আর জল ছাড়া দেখলেই বাড়ছে চিন্তা।

Flood Blog: ডুবন্ত সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে নিজস্বী! ব্লগারদের উৎসাহ সামলাতে মোতায়েন হল পুলিশ

বীরভূম: অবশেষে বর্ষার দেখা দিয়েছে বীরভূমে। গত বৃহস্পতিবার থেকে গত রবিবার পর্যন্ত বীরভূমের বিভিন্ন জায়গায় কখনও ভারি কখনও মাঝারি বৃষ্টিপাত দেখা গিয়েছে। এই লাগাতার বৃষ্টিপাতের ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বীরভূমের বিভিন্ন এলাকায়। বিভিন্ন এলাকায় স্থায়ী-অস্থায়ী সেতু ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। তবে এই বিপর্যয়ের মধ্যেও ব্লগারদের অতি উৎসাহ চিন্তা বাড়িয়েছে প্রশাসনের।

২০০০ সালের বন্যায় এরকম পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছিল বীরভূমবাসীদের। তারপরে দীর্ঘ প্রায় ২৪ বছর পর এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হল বীরভূমে। সেতু ভেঙে যাওয়ার ফলে বীরভূমের লাভপুরে ডুবেছে একাধিক গ্রাম। যখন জল যন্ত্রনায় ভুগছে গোটা জেলা ঠিক সেই সময় জলোচ্ছাস দেখতে বিভিন্ন নদীর পাড়ে ভিড় করছে সাধারণ মানুষ। এমনকি অতি উৎসাহী ব্লগাররা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তীব্র স্রোতের মুখে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন।

আর‌ও পড়ুন: খাকি পোশাকে রেলগেটে দাঁড়িয়ে সকলের প্রাণ রক্ষা করে চলেছেন বৃদ্ধ, বদলে জুটছে কটুক্তি

বহু মানুষ সেলিফি তুলতে বিপদ উপেক্ষা ভিড় করছেন নদীর স্রোতের মুখে। এর জন্য বিপদ পুলিশের তরফে ২৪ ঘণ্টার নিরপত্তার জন্য সিভিক ভলেন্টিয়ার মোতায়ন করা হয়েছে প্রশাসনের তরফ থেকে। কোথাও কোনও সমস্যা দেখলে তারা পর্যটকদের মানা করছেন সেই জায়গায় যেতে। তবে বীরভূমের অন্যান্য জায়গার থেকে সবচেয়ে বেশি ভিড় রয়েছে বোলপুরের কঙ্কালীতলা মন্দিরে।

এছাড়া বিভিন্ন জায়গা, সিউড়ি তিলপারা ব্যারাজেও যুবক-যুবতী, মাঝ বয়সী সকলের ভিড় রয়েছে। এক কথায় বলা যেতে মোবাইল ফোন হাতে বিপদ উপেক্ষা করে মানুষের ভিড়, আর সেই ভিড়ের জন্য পুলিশকে নিতে হচ্ছে ব্যবস্থা। ডুবে যাওয়া সেতু ও ,বিপদ সীমারেখায় বয়ে যাওয়া জল সেই সমস্ত এলাকায় রাখা হচ্ছে পুলিশ। এর মধ্যে শান্তিনিকেতনের কোপাই নদী অন্যতম। যেখানে সকাল থেকে সন্ধে পর্যন্ত পর্যটক স্থানীয় বাসিন্দাদের ভিড় চোখে পরার মত। যেখানে কোপাই সেতুর একপ্রান্তে পাড়ুই থানা, অন্যপ্রান্তে শান্তিনিকেতন থানা। যেখানে দুই থানাকে পুলিশ মোতায়ন করতে হয়েছে।

সৌভিক রায়

West Bardhaman News: বৃষ্টির দোসর ব‍্যারেজের জল! আতঙ্কে রাত কেটে এলাকাবাসীর, শেষমেশ পাঞ্চেত জলাধার নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত

পশ্চিম বর্ধমান: গত দু’দিন ধরে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়া হয়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে। রবিবার বিকেল পর্যন্ত দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে এক লক্ষ কুড়ি হাজার কিউসেকের বেশি জল। রাতে আরও জল ছেড়েছে দুর্গাপুর ব্যারেজ। যা রীতিমতো আতঙ্কিত করে তুলেছে নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষজনকে। বহু মানুষকে সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার মধ্যেই খানিক স্বস্তি।

রবিবার সকালেই জল ছাড়ার পরিমাণ অনেকটা কমিয়ে ছিল মাইথন জলাধার। তারপর রবিবার রাতের দিকে এক ধাক্কায় অনেকটা কমল পাঞ্চেত জলাধার থেকে জল ছাড়া পরিমাণ। জল ছাড়ার পরিমাণ কমিয়েছে ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট ব্যারেজও।

যার ফলে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে এবার ধাপে ধাপে জল ছাড়ার পরিমাণ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। যদিও রবিবার রাত পর্যন্ত যে পরিমাণ জল ছাড়া হয়েছে, সেই জল দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে ছাড়া হবে তারপর ধীরে ধীরে কমবে জল ছাড়ার পরিমাণ।

আরও পড়ুন: স্কুটিতে চেপে যাচ্ছিল বাবা-মেয়ে, সঙ্গে ট্রলি, ব‍্যাগ খুলতেই যা বেরল! পুলিশের চক্ষু চড়কগাছ, গ্রেফতার দু’জনেই

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতি এবং শুক্রবার ভারী বৃষ্টির পর দামোদরের বিভিন্ন জলধারগুলি থেকে প্রচুর পরিমাণে জল ছাড়া হচ্ছিল। তার মধ্যেই ভীষণ ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছিল দুর্গাপুর ব্যারেজ। নদী তীরবর্তী এলাকাগুলি এবং নিম্ন অববাহিকার গ্রামগুলিতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টিও হয়েছে। বহু মানুষকে প্রশাসন তৎপরতার সঙ্গে সুরক্ষিত স্থানে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। বহু জায়গায় জল ঢুকেছে। তেমন অবস্থায় ডিভিসির কাছে জল ছাড়ার পরিমাণ কমানোর দাবি উঠছিল।

শেষ পাওয়া খবর পর্যন্ত জানা গিয়েছে, রবিবার পাঞ্চেত জলাধার থেকে ৬৯ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। অন্যদিকে জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র সচল রাখার জন্য মাইথন জলাধার থেকে ছাড়া হয়েছে ৬ হাজার কিউসেক জল। অর্থাৎ সবমিলিয়ে ৭৫ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। মূলত, দামোদরের উচ্চ অববাহিকায় অবস্থিত ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট জলধার থেকে কমানো হয়েছে জল ছাড়ার পরিমাণ।

আরও পড়ুন: এই প্রথম! বিধানসভায় রাজ‍্য সঙ্গীতে গলা মেলাল বিজেপি, মমতায় ‘সহমত’ শুভেন্দু, কী এমন ঘটল?

যে কারণে পাঞ্চেত থেকেও জল ছাড়ার পরিমাণ কমেছে। উচ্চ অববাহিকা এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত না হলে, এই সমস্ত জলাধারগুলি থেকে আরও কমবে জল ছাড়া। ফলে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকেও ধীরে ধীরে জল ছাড়ার পরিমাণ কমানো হবে। যা স্বস্তির খবর নদী তীরবর্তী গ্রামগুলির মানুষজনের কাছে।

নয়ন ঘোষ

West Bengal flood situation: ফুঁসছে অজয়, দামোদর, ভাগীরথী, ফেরি চলাচল বন্ধের নির্দেশ প্রশাসনের

পূর্ব বর্ধমান: ফুঁসছে দামোদর। বন্যার আশঙ্কায় গলসী, খন্ডঘোষে মাইকিং শুরু করল প্রশাসন। নিচু এলাকাগুলি থেকে বাসিন্দাদের ত্রাণ শিবিরে উঠে যেতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। দামোদরে এক লক্ষ চোদ্দ হাজার কিউসেক জল ছাড়া হচ্ছে দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে। তার জেরেই বন্যার আশঙ্কায় বাসিন্দাদের সতর্ক করছে প্রশাসন। ভাগীরথী তীরবর্তী এলাকাতেও প্রচার চালানো হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে পূর্ব বর্ধমান জেলায় ফেরি চলাচল বন্ধ করল প্রশাসন। ভাগীরথী, দামোদর, অজয়-সহ সব ঘাটে ফেরি পরিষেবা বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলেন জেলাশাসক। পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক কে রাধিকা আইয়ার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া ও নদীগুলিতে জলস্তর বাড়তে থাকায় এই নির্দেশ দিয়েছেন। রবিবার বিকেল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ফেরি চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেন তিনি। জরুরি প্রয়োজনেও চালানো যাবে না ফেরি। সেই ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা করবে প্রশাসন।

আরও পড়ুন: মাইথন, পাঞ্চেত থেকে বিপুল পরিমাণে জল ছাড়ল ডিভিসি, বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা

এদিন বর্ধমানের বড়শুলের পুতুন্ডা গ্রামের কাছে বাঁকা নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এলাকার প্লাবিত মানুষজনকে আশ্রয় শিবিরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক জানিয়েছেন। বড়শুল ১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত পুতুন্ডা গ্রামে বাঁকা নদীর বাঁধ ভেঙে যায়। খবর পাওয়া মাত্রই পুতু্ডা গ্রামে কাজের তদারকিতে যান বর্ধমান উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক নিশীথ কুমার মালিক।
তিনি বলেন, “দ্রুত বাঁধ মেরামতির কাজে  হাত দেওয়া হয়েছে। সাহায্য করছেন গ্রামবাসীরাও। গ্রামের সাধারণ মানুষের সহযোগিতায় বাঁধ মেরামতের কাজ চলছে”।

জানা গিয়েছে, বিধায়ক নিশীথ মালিক জেলাশাসক এবং সেচ দফতরকে বিষয়টি জানিয়েছেন। গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সকালে বাঁধ ভেঙে যাবার পর থেকে তাঁরা মেরামতের কাজে হাত লাগিয়েছেন, কিন্তু পুরোটা করা যায়নি, এখন প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: রিলস বানাতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি! জলের তোড়ে ভেসে গেল কিশোর

অন্য দিকে, জলের তোড়ে ভেঙে গিয়েছে আউশগ্রাম থেকে কালিদহ যাওয়ার রাস্তা। একটি কালভার্টের দু’দিকের রাস্তা ১০-১৫ ফুট করে ভেঙে গিয়েছে। গ্রামবাসীরা নিজেদের উদ্যোগে বাঁশ দিয়ে রাস্তা তৈরি করেছেন। খবর পেয়ে এলাকায় গিয়ে গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়েন বিডিও। দ্রুত ওই রাস্তা সারানোর আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন।

East Bardhaman News: বানের জলে বন্ধুদের সঙ্গে স্নান করতে গিয়ে তলিয়ে গেল স্কুল পড়ুয়া

পূর্ব বর্ধমান: দু’দিনের বৃষ্টি আর ডিভিসির জলে জলমগ্ন পূর্ব বর্ধমান জেলার একাধিক জায়গা, কৃষিজমিও জলের তলায়। জলে উপচে পড়েছে ছোট-বড় নদী, পুকুর সব কিছুই। সব মিলিয়ে কার্যত যেন বানভাসি অবস্থা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায়। আর এবার সেই বান দেখতে গিয়েই তলিয়ে গেল এক স্কুল পড়ুয়া।

ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বরের দেনুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধেনুয়া গ্রামে। নিখোঁজ এই স্কুল পড়ুয়ার নাম সূর্য ঘোষ। তার বাড়ি মন্তেশ্বরের ধেনুয়া গ্রামেই। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার এই পড়ুয়া সূর্য ঘোষ স্থানীয় ১৫, ১৬ জনের সঙ্গে গ্রামে জল দেখতে যায়। এর কিছু সময় পর, আচমকাই গ্রামের ফুটবল মাঠ থেকে কিছুটা দূরে থাকা একটি খালের কাছে চোখের নিমিষে সে জলের স্রোতে তলিয়ে যায়।

আরও পড়ুন: মাইথন, পাঞ্চেত থেকে বিপুল পরিমাণে জল ছাড়ল ডিভিসি, বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা

এই প্রসঙ্গে মন্তেশ্বরের ধেনুয়া গ্রামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “গ্রামের মাঠে বন্যা এসেছে। অনেক ছেলে সেই বন্যায় চান করতে এসেছিল। ৭-৮ জন একসঙ্গে সাঁতার কাটছিল, হঠাৎ করেই ছেলেটি ভেসে যায়। পরে আমরা সারা গ্রামের মানুষ ওই জায়গায় সন্ধান করেও তার কোনও খোঁজ পায়নি। আমাদের ধারণা জমির মধ্যেই ওই ছেলে ডুবে গিয়েছে।”

রবিবার দুপুর নাগাদ এই ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় ওই এলাকায়। সূর্য ঘোষ নামে এই স্কুল পড়ুয়া স্থানীয় ভুরকুন্ডা হাই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্র বলে জানা গিয়েছে। স্নান করতে গিয়ে আচমকা এইভাবে তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় কার্যত হতবাক সকলে। চোখের সামনে বন্ধু কে তলিয়ে যেতে দেখে, তার বন্ধুরা বাঁচানোর চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয়নি।

আরও পড়ুন: ১৪ লাখের চাকরি, ৬০০ বর্গ গজ জমি… বড় পুরস্কার পাচ্ছেন সিরাজ, কে দিচ্ছে জানেন?

এই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় মন্তেশ্বর থানার পুলিশ প্রশাসনের কর্তারা। উদ্ধারকার্যের জন্য নামানো হয় নৌকা। পাশাপাশি এই স্কুল পড়ুয়ার খোঁজে জলে নামেন স্থানীয় লোকজনও। কিন্তু এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি সূর্য ঘোষকে। তাকে উদ্ধারের জন্য কালনা থেকে ডুবুরি আনা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে স্থানীয় সূত্রে। মর্মান্তিক এই ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে গ্রাম জুড়ে।

ঘাটালে এবার বর্ষাতেও একই অবস্থা! আশঙ্কায় এলাকাবাসী, ছবি আর বদলাল না!

পশ্চিম মেদিনীপুর: ধীরে ধীরে জল বাড়ছে ঘাটালে। টানা কদিনের বৃষ্টিতে ফুলে ফেঁপে উঠেছিল ঘাটালের ঝুমি নদী। কচুরিপানার চাপে এবং জলের প্রবল বেগের কারণে ভেঙে যায় ঝুমি নদীর উপরে থাকা অস্থায়ী বাঁশের সাঁকো।

স্বাভাবিকভাবে দুই পাড়ের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। তবে শুক্রবার রাত থেকে ক্রমশ জল বাড়াতে শুরু করে। শনিবার ঘাটালের মনসুকা এলাকায় জল প্রবেশ করে। তবে ধীরে ধীরে ঘাটালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রবেশ করছে জল।

রাস্তার উপর কোথাও হাঁটু সমান জল, কোথাও বইছে স্রোত। স্বাভাবিকভাবে ফের বন্যা পরিস্থিতি রূপ নিচ্ছে ঘাটালে। প্রসঙ্গত ঘাটাল এবং বন্যা সমার্থক। বর্ষাকাল এলেই ঘাটালের বন্যা হবে এটা ধরাবাঁধা রুটিন।

ঘাটালবাসী দীর্ঘদিন দাবি করেছিল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান-এর বাস্তবায়ন। তবে সেই কাজ চলছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। অন্যদিকে, বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া থেকে জল ছাড়ার কারণে ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা ক্রমশ জলমগ্ন হয়ে পড়ছে।

আরও পড়ুন- মহিলা রেঞ্জারকে হুমকি! মমতার নির্দেশে কারামন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ অখিল গিরির

ঘাটালের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন জায়গায় প্রবেশ করেছে জল। গৃহস্থের ঘরে প্রায় গোড়ালি সমান জল। বর্তমানে যোগাযোগের মাধ্যম ডিঙি নৌকো।

ঘাটাল মহকুমায় রয়েছে একাধিক নদী। শিলাবতী জমি এবং কংসাবতী নদীতে জল বাড়লে প্লাবিত হয় ঘাটালের বিস্তীর্ণ এলাকা। প্রতিবছর ঘাটালে বন্যার কারণে ক্ষয়ক্ষতি হয় প্রচুর।

স্বাভাবিকভাবে বন্যা পরিস্থিতি রুখতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। তবে সম্প্রতি জল বাড়ছে। ফের ভয়াবহ রূপ নেওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয় মানুষজন। ক্রমশ ভয় বাড়ছে। নদীতে বাড়ছে জল। আরও প্লাবনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় মানুষজন। তবে বর্তমানে সবকিছু ভুলে নিজেদের বাঁচানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। নিত্য প্রয়োজনীয় বাজারে বের হতে গেলে ভরসা ডিঙি নৌকো।

রঞ্জন চন্দ