সকালে ঘুম থেকে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে অফিসে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হওয়া, বা বাচ্চাদের টিফিন, বাড়ি থেকে দীর্ঘ সময়ের কাজ… আমাদের জীবন তাড়াহুড়ো এবং ব্যস্ততায় পূর্ণ। এই দ্রুত এবং ব্যস্ত জীবনযাত্রার সবচেয়ে বড় ক্ষতি বা প্রভাব আমাদের স্বাস্থ্য এবং আমাদের শরীরের উপরেই পড়ে। প্রায়শই আমাদের ব্যস্ত জীবনধারা আমাদের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
প্রায়শই আমরা খাবার খাই কিন্তু সঠিক সময় এবং স্বাস্থ্যকর খাবার উপেক্ষা করে এগিয়ে যাই। পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার এবং সুষম খাদ্য সুস্থ শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই সব কিছুর যত্ন নেওয়ার পরেও যে জিনিসটি আপনার স্বাস্থ্যের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলতে পারে তা হল আপনার খাবারের সময়।
দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিল হল ব্রেকফাস্ট। মনে রাখবেন, এটা দিয়েই কিন্তু আপনার দিনের শুরু হয়। ব্রেকফাস্ট সবসময় স্বাস্থ্যকর হওয়া উচিত। এর সময় সকাল আটটা থেকে নটা।
দুপুরের খাবারের আসল সময় বেলা ১২টা থেকে ১টা। তার বেশি কখনওই নয়। দুপুরে ভাত-রুটি মিশিয়ে খেতে পারেন।
সূর্যাস্তের সময় বা সূর্যাস্তের ঠিক পরে রাতের খাবার খাওয়া উচিত। রাতের খাবার দিনের খাবার থেকে অর্ধেক পরিমাণে খাওয়া উচিত। রাতের খাবারের অন্তত অর্ধেক স্যালাড বা কাঁচা আইটেম যেমন শসা, কাচা ছোলা, অঙ্কুরিত শস্য ইত্যাদি গ্রহণ করা উচিত যা স্বাস্থ্যের জন্য সেরা বলে বিবেচিত হয়। Photo- Representative
চেষ্টা করুন রোজ রাতে একই সময় ডিনার করতে। খাওয়ার পর অন্তত ২ ঘণ্টা পর ঘুমোতে যান।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সকালের খাবার হওয়া উচিত ভারী এবং রাতের খাবার খুব হালকা হওয়া উচিত। এতে মেটাবলিজম ও হজম ঠিক থাকে। ভারী খাবার হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে। রাতের খাবারে দেরি করা উচিত নয়। রাতের খাবার ও ঘুমের মধ্যে অন্তত তিন ঘণ্টার ব্যবধান থাকা উচিত।
রাতের খাবারে রুটি, ডাল, তরকারি, স্যালাড এবং সবুজ শাক-সবজি খাওয়া উচিত। সবুজ শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এটি খেলে স্বাস্থ্য ও পরিপাকতন্ত্র দুটোই ভালো থাকে। মসুর ডাল, মসুর ডাল স্যুপ, সবজি, ওটস রাতের খাবারের জন্য ভাল। এগুলো পরিপাকযোগ্য অর্থাৎ সহজে হজম হয়। তাই সামগ্রিকভাবে বলতে হবে খাবার এমন হতে হবে যাতে তা হজম হয়।
সকালে অফিসের তাড়া৷ খাওয়ার সময় মোটেই নেই৷ অথচ সকালে প্রাতরাশ তো করতেই হবে৷ নয়তো এক রাশ অসুখ গ্রাস করবে৷ সমস্যা ওই যে সময় কই! তাহলে প্রায় রান্না ছাড়া চটজলদি কয়েকটা রেসিপি যদি পাওয়া যায়, তাহলে তো আর সকালের না খাওয়া অজুহাত থাকবে না৷
কার্ড অ্যান্ড ফ্ল্যাটেন্ড রাইস এই রেসিপি দই চিড়ে বলে জানে সাধারণ মানুষ৷ প্রথমে চিড়ে ভাল করে ধুয়ে নিন৷ এবার দই-গুড় ভাল করে মিশিয়ে নিন৷ উপরে কাঠবাদাম ছড়িয়ে নিন৷ তারপর ব্ল্যাকসল্ট,নুন ও চাটমশলা ছড়িয়ে দিন৷
ছাতুর সরবত ছাতুর সঙ্গে জল মিশিয়ে কানিক পাতলা করে নিন৷ এবার তার সঙ্গে অর্ধেক লেবুর রস, পেঁয়াজ কুচি, নুন, কালোমরিচ, ধনেপাতা ছড়িয়ে দিন৷ ভাল করে মিশিয়ে নিন৷ তৈরি প্রোটিন সমৃদ্ধ ছাতুর সরবত৷
পিনাট বাটার টোস্ট একটা ব্রাউন ব্রেড পাঁউরুটি নিন৷ ভাল করে টোস্ট করে নিন৷ তারপর তার উপর ভাল করে পিনাট বাটার ছড়িয়ে দিলেই তৈরি প্রোটিন সমৃদ্ধ ব্রেকফাস্ট৷
এগ প্রোটিন শেক একটা ব্লেন্ডারে দই ও ডিম ভাল করে মিশিয়ে নিন৷ তার উপর ফ্রেশ ফ্রুট ছড়িয়ে দিলেই তৈরি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্ট৷
ফ্রুট স্যালাড একটা বোলে প্রথমে ৩টে মৌসুমি ফল কেটে নিন৷ তারপর কিছুটা নুন ও লেবুর রস ছড়িয়ে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে পছন্দের ফ্রুট স্যালাড৷
সকালের প্রথম খাবার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ এই সময় খাদ্যতালিকায় বেশি পরিমাণে প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেলস সমৃদ্ধ খাদ্য রাখা উচিত৷ আবার এমন কিছু খাবার আছে যে গুলোকে সকালের প্রথমে খালি পেটে একেবারেই খাওয়া উচিত নয়৷
সুগারি সিরিয়ালস: সকালে অনেকেই এই ধরনের সিরিয়ালস খেতে পছন্দ করেন৷ এমনকি অনেকে মনে করেন, এই খাবার বেশ পুষ্টিকরও বটে৷ কিন্তু আসলে ঠিক উল্টো৷ এই ধরনের খাদ্যে প্রচণ্ড পরিমাণে শর্করার আধিক্য রয়েছে৷ এই ধরনের খাবার খালি পেটে খেলে অতিরিক্ত ক্যালোরি শরীরে জমা হয়৷ এর কোনও রকমের পুষ্টিগুণও নেই৷ তাই সকাল বেলা এই ধরনের খাবার এড়িয়ে চলুন৷
প্যানকেক ও সিরাপ : অনেকেই সকাল-সকাল ব্রেকফাস্টে প্যানকেক খেতে ভালবাসেন৷ কিন্তু অনেকেই ময়দা দিয়ে প্যান কেক তৈরি করেন৷ তার সঙ্গে সিরাপ খাওয়া আরও খারাপ৷ সিরাপের অতিরিক্ত শর্করা, ক্র্যাশ ডায়েটের ফলে ওজন বাড়র ঝুঁকি থেকে যায়৷
প্রসেসড মিটস: ব্রেকফাস্টে অনেকেই প্রসেসড মিটস যেমন বেক বা সেসজ খেতে ভালবাসেন৷ আর ইংলিশ ব্রেকফাস্ট মানেই প্ল্যাটারে সসেজকে থাকবেই৷ কিন্তু এই ধরনের খাদ্য কিন্তু সকালে প্রাত রাশের জন্য মোটেও স্বাস্থকর নয়৷ এই ধরনের খাবার উচ্চ সোডিয়াম যুক্ত হওয়ায়, স্বাস্থের জন্য মোটেও ভাল নয়৷
কেক ও পেস্ট্রি: এই ধরনের খাবার উচ্চ শর্করা যুক্ত ও হাই ক্যালোরিতে ভরপুর৷ তা ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকায় হার্টের পক্ষেও একেবারেই ভাল নয়৷ তাই এই ধরনের খাবারের থেকে কেবল সকালে নয়, সব সময়ই বিরত থাকুন৷ কিন্তু সকালবেলাতে খালি পেটে খেলে আরও বেশি ক্ষতির আশঙ্কা থেকে ক্যলোরি কনজ়িউম বেশি হয়৷ তাই খালি পেটে কখনওই এই ধরনের খাবার খাবেন না৷
প্যাকেটজাত ফলের রস: ফলের রস সে তো খাদ্য পুষ্টিতেও ভরপুর, তা হলে? আসলে বাজারে যে ধরনের ফলের রস পাওয়া যায়, তার মধ্যে বেশিরভাগেরই ফলের পুষ্টিগুণ খুব কম থাকে৷ তার বদলে এই রসগুলোতে উচ্চ মাত্রায় শর্করা থাকে৷ ফলে তা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর৷ এর বদলে গোটা ফল খাওয়ার অভ্যাস করে নিতে পারেন৷
সুস্থ থাকার জন্য জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানো না হয় হল৷ কিন্তু এর পর খাব কী? অনেকেরই এই সময় মনটা একটু ডেজ়ার্ট-ডেজার্ট করে৷ অথচ তার জো নেই৷ সুস্থ জীবনে চিনি তো নৈব নৈব চ৷ কিন্তু যদি বলা যায় স্বাস্থ্যকর ডেজ়ার্ট খাওয়া যেতে পারে৷ তাও আবার যেমন-তেমন নয় লাড্ডু৷ ভাবতে পেরেছিলেন৷ জেনে নিই কয়েকটা স্বাস্থকর লাড্ডুর রেসিপি
বাদামের লাড্ডু: প্রথমে বাদাম ভিজিয়ে রাখুন৷ কিছু ক্ষণ পর খোসা ছাড়িয়ে গ্রাইন্ডারে মিক্স করে নিন৷ মাঝারি আঁচে একটা প্যানে ঘি ও জাগরি (গুড়) গরম করে নিন৷ বাদামের পেস্ট দিয়ে ভাল করে নেড়ে চেড়ে নামিয়ে নিন৷ তারপর লাড্ডুর আকার দিন৷
চিড়ের লাড্ডু: প্রথমে চিড়েকে কাঠখোলায় ভেজে নিন৷ তাতে ঘি ও নারকেল কুরনো করে দিন৷ এবার একটা গ্রাইন্ডারে সবগুলো দিন, এলাচ গুড়ো ও গুড় দিয়ে পেস্ট করে নিন৷ একটা কড়াইয়ে অল্প ঘি গরম করে পেস্টটা দিয়ে কিছু ক্ষণ নেড়ে চেড়ে নামিয়ে নিন৷ একই ভাবে তৈরি করে নিন লাড্ডু৷
রাজগীরার লাড্ডু: প্রথমে একটা কড়াইয়ে গুড় ফোটান৷ গুড় থেকে বের হওয়া জল ফেলে দিন৷ তারপর আর একটা পাত্রে নিয়ে গুড়টাকে অল্প আঁচে ফুটতে দিন৷ একটু জল যোগ করুন৷ গুড় সিরাপের মতো হয়ে উঠলে তাতে রাজগীরা দিন৷ এলাচগুঁড়ো জিন৷ এবার হাতের তালুতে সামান্য ঘি নিয়ে মিশ্রণ থেকে অল্প-অল্প করে নিয়ে লাড্ডুর আকার দিন৷
খেঁজুরের লাড্ডু : প্রথমে একটা পাত্রে আমন্ড, পেস্তা, কাজু নিয়ে কাঠগোলায় ভেজে নিন৷ তারপর ঠান্ডা হলে ব্লেন্ডারে দিন৷ ভেজানো খেঁজুরের বীজ ছাড়িয়ে ব্লেন্ডারে দিন৷ এবার একসঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন৷ অল্প আঁচে ঘি গরম করে পেস্টটা কিছুক্ষণ নাড়চাড়া করে নামিয়ে নিন৷ লাড্ডুর আকার দিন৷
এই রেসিপি গুলো যেমন সুস্বাদু তেমনই পুষ্টিকর৷ তাই শরীর চর্চার পর খেলে তা শরীরের জন্য উপকারি৷ তেমনই মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা মিটিয়ে দেয়৷ ফলে ওজনও কমাতে সাহায্য করে৷ তবে খেয়াল রাখবেন পরিমাণে যেন বেশি না হয়৷
ওজন কমাতে আমাদের তো কত চিন্তা-ভাবনা৷ রোজ-রোজের ডায়েট৷ কী খাব আর কী খাব না, তাই নিয়ে নিত্য মাথাব্যথা৷ বিশেষ করে ব্রেকফাস্টে পুষ্টিকর খাবারের সন্ধান এক নিত্যদিনের ঝামেলা৷ এর জন্য কলা এক অত্যন্ত পুষ্টিকর উপাদান হয়ে যেতে পারে৷ এর মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে৷ এর ফলে ওজন কমায় সাহায্য হয়৷ দেখে নিন কয়েকটা কলার সুস্বাদু রেসিপি৷
বানানা প্যান কেক একটা বোলের মধ্যে কয়েকটা কলা চটকে মেখে নিন৷ তার মধ্যে একটা ডিম ফেটিয়ে ভাল করে মিশিয়ে নিন৷ প্যানে মাখন গলিয়ে নিন৷ মাঝারি আঁচে মিশ্রণটি অল্প-অল্প করে প্যানে দিন৷ দু’দিক হয়ে গেলে তুলে তার উপর পাম্পকিন সিডস ছড়িয়ে উপর থেকে মধু দিয়ে দিন৷
বানানা স্পিনাচ স্মুদি একটা ব্লেন্ডারে কলা, পালং শাক, বাদাম, আমন্ড মিল্ক, দিয়ে ব্লেন্ড করে দিন৷ তারপর একটা কাঁচের গ্লাসে পরিবেশন করুন৷ উপর থেকে খেঁজুর ছড়িয়ে দিন৷
পানানা পিনাট বাটার আইসক্রিম কলা ফ্রিজে রেখে দিন৷ একেবারে ফ্রিজ হয়ে গেলে তার সঙ্গে কিছুটা ভ্যানিলা এসেন্স মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন৷ এবার একটা বোলে পিনাট বাটার লাগিয়ে বানানা পেস্টটা ঢালুন৷ তারপর তার উপরে কিছুটা রোস্টেড আমন্ড ছড়িয়ে পরিবেশন করুন৷
বানানা ওটস কুকিজ কয়েকটা পাকা কলা চটকে নিন৷ এবার তার সঙ্গে কাঠবাদাম, ওটস, চকোলেট চিপস, পাম্পকিন সিডস দিয়ে একটা ডো বানিয়ে নিন৷ তারপর ফ্রিজে রেখে দিন৷ ডো থেকে অল্প-অল্প একটা বল করুন৷ চ্যাপটা করে বেকিং ট্রে তে কিছুক্ষণ বেক করে নিন৷
মোটা থেকে রোগা হওয়ার সময় আমাদের মধ্যে বেশির ভাগেরই লক্ষ্য থাকে তলপেটের মেদ কমানোর৷ সৌন্দর্য হানির পাশাপাশি কিডনি, হার্ট-সহ একাধিক অঙ্গের জটিল রোগ ডেকে আনে তলপেটের অতিরিক্ত চর্বি৷
দেহের এই অংশের মেদ কমানোর জন্য একাধিক টিপস দিয়েছেন পুষ্টিবিদ কেট প্যাটন৷ সঙ্গে দিয়েছেন ডায়েট চার্ট৷ তাঁর মতে এই টিপস এবং ডায়েট চার্ট মানলেই তলপেটের মেদ কমানোর ক্ষেত্রে আসবে সাফল্য৷
কেটের মতে দিন শুরু করুন স্বাস্থ্যকর ব্রেকফাস্টে৷ খান এক চতুর্থাংশ কাপ ভর্তি বাদাম৷ সেখানে থাকতে পারে আমন্ড, পেস্তা, আখরোট৷ আমন্ড বা কাঠবাদাম খেলে সেটা আগের রাতে ভিজিয়ে রাখতে হবে৷
ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে খান এক চতুর্থাংশ ভর্তি কাপের কুমড়ো বা সূর্যমুখীর বীজ৷ শক্তিবৃদ্ধির পাশাপাশি এই খাবার শরীরে মেটের পরিমাণ বাড়তে দেবে না৷
দিনের শুরুতে খান পছন্দসই একটা ফল৷ সঙ্গে দু’ চামচ ভর্তি বা ১০ টি ভেজানো আমন্ড৷
ব্রেকফাস্টে রাখুন হার্ড বয়েল্ড এগ, গমের আটার তৈরি বিস্কিট৷ প্রক্রিয়াজাত খাবারের তুলনায় তিনি জোর দিয়েছেন অপ্রক্রিয়াজাত খাবারের উপরেই৷
ব্রেকফাস্টে পানীয়ের ব্যাপারে তিনি বলেছেন প্রোটিন শেকের সঙ্গে মিষ্টিছাড়া আমন্ড মিল্ক খাওয়ার জন্য৷ কলা এবং সয়া মিল্কের স্মুদি বানিয়েও খাওয়া যায় চিয়া সিডস দিয়ে৷ দুধের সঙ্গে খাওয়া যায় বেকড করা রাঙা আলুও৷
এই সুষম আহার যে একই দিনে সব খেতে হবে, তার কোনও মানে নেই৷ সপ্তাহের এক এক দিনে বেছে নেওয়া যায় পছন্দসই এক একটি স্বাস্থ্যকর অপশন৷
Just another WordPress site