নদিয়া:রাখি বন্ধন উৎসবে নতুন চমক। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের হাত ধরে এই বাংলায় শুরু হয়েছিল রাখি বন্ধন উৎসব। সাম্প্রদায়িকতার বিভেদ দূর করে ঐকের জয়গান শোনাতে এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন রবি ঠাকুর। সেই পরম্পরা বজায় রেখে এবারের রাখি বন্ধন উৎসবে দেখা গেল নতুন চমক। ভুট্টার খোসা দিয়ে তৈরি হলো পরিবেশবান্ধব রাখি।
নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ পঞ্চায়েতের অন্তর্গত চন্দননগর এল.এস.প্রাই এগ্রি কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সাহায্যে ভুট্টার রাখি তৈরি করেছে। পরিবেশবান্ধব এই রাখির চাহিদা এবার তুঙ্গে।
নদিয়ার চন্দননগরের এই সমবায় সমিতি প্রতি বছরই নিত্য নতুন পরিবেশবান্ধব রাখি তৈরি করে থাকে। ২০২৪ এর রাখি বন্ধন উৎসবকে কেন্দ্র করে এবারও তারা নিত্যনতুন চিন্তাভাবনাকে মাথায় নিয়ে ভুট্টার খোসা দিয়ে রাখি তৈরি করেছে। এর মাধ্যমে তারা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং পরিবেশ দূষণ রোধ করার বার্তা দিয়েছে। সমবায় সমিতিতে থাকা একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা একত্রিতভাবে এই রাখি তৈরির কাজ করছেন।
বর্তমানে এই রাখি বিক্রির চাহিদাও বেড়েছে। এর আগে এই সোসাইটির মহিলারা কচুরিপানার রাখি, পাটের রাখি তৈরি করেছিলেন। তবে এবার আরেকটু নতুনত্ব চিন্তা ভাবনা করে ভুট্টার খোসা দিয়ে তৈরি করে ফেলেছেন পরিবেশবান্ধব রাখি এবং এই কাজ করতে পেরে মহিলারা যথেষ্টই আনন্দিত এবং তাঁরা স্বনির্ভর হতে পারছেন বলেও জানিয়েছেন। যদিও সোসাইটির তরফে জানানো হয়েছে ১০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫ টাকা কিংবা ৩০ টাকা পর্যন্ত রাখির দাম রাখা হয়েছে। যাতে সাধারণ মানুষ তাদের সাধ্যের মধ্যে এই পরিবেশবান্ধব রাখি কিনে রাখি বন্ধন উৎসব পালন করতে পারেন।
উত্তর দিনাজপুর: প্রবল তাপপ্রবাহে মাথায় হাত উত্তর দিনাজপুরের ভুট্টা চাষিদের। ধান ও পাট চাষের পর এই জেলায় সবথেকে বেশি চাষ হয় ভুট্টার। কালিয়াগঞ্জ, রায়গঞ্জ , হেমতাবাদ, ইটাহার সহ জেলার ৯ টি ব্লকেই প্রচুর পরিমাণে ভুট্টা চাষ হয়। কিন্তু অতিরিক্ত তাপপ্রবাহে পুড়ে যাচ্ছে জেলার একের পর এক ভুট্টা ক্ষেত। এই সময় কিছুটা বৃষ্টির দরকার ছিল। কিন্তু তার অভাবে সর্বস্বান্ত হতে বসেছেন ভুট্টা চাষিরা।
এই পরিস্থিতিতে অল্প কিছু সংখ্যক কৃষক পাম্প চালিয়ে সেচের ব্যবস্থা করলেও অনেকেই আর্থিক সঙ্গতির অভাবে সেই পথে পা বাড়াতে পারেননি। ফলে শেষ পর্যন্ত ভুট্টা চাষের কী হাল হবে তা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগছেন সকলে। উত্তর দিনাজপুর জেলার বহু কৃষক ঋণ নিয়ে ভুট্টা চাষ করেছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কীভাবেঋণ শোধ করবেন তা বুঝে উঠতে পারছেন না।
এক কৃষক মোহন মণ্ডল জানান, গত বছর এই সময় বৃষ্টি হলেও এবারে বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে ভুট্টা সহ অন্যান্য ফসলের ভীষণ ক্ষতি হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে পাম্প সেট দিয়ে জল দিতে তিন হাজার টাকার মত খরচ হয়। তাই অনেক কৃষকের পক্ষেই পাম্প সেট দিয়ে জল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে বিঘা প্রতি ভুট্টা চাষে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। সব মিলিয়ে ভুট্টা চাষে অনেক টাকা খরচ হলেও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এবারে লাভ তো দূরের কথা খরচই উঠবে না বলে অনেক কৃষকের আশঙ্কা।