Tag Archives: Flood

Flood Situation in Bengal: ডিভিসির রিপোর্টে বড় ‘তথ‍্য’ ফাঁস! কমেছে জলধারণের ক্ষমতা, তবে কি দক্ষিণবঙ্গে বন‍্যা?

কলকাতাঃ বারবার জল ছাড়ছে ডিভিসি। ডিভিসির জলাধারগুলির জলধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়াই  জল ছাড়ার অন্যতম বড় কারণ বলে মত অনেকের। এই পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ডিভিসির বাঁধগুলিতে পলি জমার ফলে জলধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়া নিয়ে। পলি তুলে জলাধার ­­সংস্কার করা হলে বন্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যেত বলে মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুনঃ দামও কম, স্বাস্থ্যসম্মত! তাই প্রতিদিন চাহিদা বাড়ছে এই মাটির তৈরি বয়ামের 

এক্ষেত্রে ডিভিসির সাফল্য ও ব্য‌র্থতা বিশ্লেষণ করে জিওলজির অধ্যাপক ডঃ কৌশিক মুখোপাধ্যায় একটি রিপোর্ট তৈরি করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, মাইথন, পাঞ্চেত, তিলাইয়া ও কোনার—ডিভিসির এই চারটি বাঁধের জলধারণ ক্ষমতা ১৯৫০ এর দশক থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ২৩ থেকে ৪৩ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। সত্যব্রতবাবু তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছেন, শুরুর সময়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সরকার যদি ডিভিসির আওতায় সাতটি বাঁধই নির্মাণ করত, তাহলে ৩৫৯৬ মিলিয়ন কিউবিক মিটার (এমসিএম) জল ধরে রাখা সম্ভব হতো। কিন্ত চারটি বাঁধ নির্মিত হওয়ায় মোট জলধারণ ক্ষমতা কমে দাঁড়ায় ১৮৬৩ এমসিএম। তবে, জলাধার তৈরির জন্য পরিকল্পনামতো জমি না পাওয়ার কারণে জলধারণ ক্ষমতা বাস্তবে আরও কমে হয় ১২৯১ এমসিএম। প্রকল্প রূপায়ণের আগে যে পরিকল্পনা হয়েছিল, তার মাত্র ৩৬ শতাংশ জলধারণ করতে পারে ডিভিসির বাঁধগুলি।

আরও পড়ুনঃ ফের নিগ্রহের শিকার কলকাতা পুলিশ! নাকা চেকিং-এ দুস্কৃতীদের হাতে আহত ট্রাফিক সার্জেন্ট

তবে, এই রিপোর্টে জলাধারের পলি তুলে ধারণ ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগকে সমর্থন করা হয়নি। বলা হয়েছে, ২০১১ সালে সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, কারিগরি ও আর্থিক কারণে এই উদ্যোগের বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। ডিভিসি কর্তৃপক্ষও এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত। কারণ, শুধু মাইথন ও পাঞ্চেতের জলাধারে এই কাজ করতে ৫০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। তবে কেন ড্রেজিং করা হয় না। সে বিষয়ে নানা মত উঠে আসছে। কেন্দ্রীয় সংস্থার বক্তব্য যথাসময়ে ড্রেজিং করা হয়। তবে, আবহাওয়াগত পরিবর্তন যে ভাবে বারবার ঘটে চলেছে তাতে লাগাতার অতিভারী বৃষ্টি হলে জল ছাড়তেই হয়। সেই ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।

Flood: সাংঘাতিক ভয়ঙ্কর…! সব যেন গিলে খাচ্ছে! ২০১৩ সালের ভয়ানক স্মৃতি আবারও ফিরে এসেছে, এবার কী হবে?

পাঁশকুড়া: ১৮ সেপ্টেম্বর ভোররাতে নদী বাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতি পাঁশকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায়। নিম্নচাপের বৃষ্টির জল ও কংসাবতী ব্যারেজের জল ছাড়া ফলে কংসাবতী নদীতে জলের স্তর বেড়েছে। জলের স্তর বাড়ায় পাঁশকুড়া কাঁসাই নদীর বাঁধ ভেঙে পাঁশকুড়া বিধানসভা এলাকার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ফিরে এসেছে ২০১৩ সালের বন্যার স্মৃতি। সেইবার কাঁসাই নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছিল পাঁশকুড়া ও তমলুক ব্লকের বিস্তৃর্ণ এলাকা। আবারও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ২০২৪ সালে।

গভীর নিম্নচাপের কারণে শেষ সপ্তাহের শুক্রবার থেকে চলতি সপ্তাহের সোমবার সকাল পর্যন্ত ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গের জেলায় জেলায়। এর পাশাপাশি নিম্নচাপ থাকা হয়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে ঝাড়খন্ড শহর পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন রাজ্যে। কংসাবতী নদীর অববাহিকায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে নদীতে জল স্তর বৃদ্ধি পায়। তার ওপর কংসাবতী ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া ব্লকের নদী বাঁধ বিভিন্ন এলাকা ভেঙে প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত হয়েছে পাঁশকুড়া পৌরসভার অন্তর্গত ১৫ নম্বর ওয়ার্ড এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের রানিহাটির কাছে নদী বাঁধে বড় ভেঙে যায় এদিন ভোরে। পাশাপাশি সকালে আরও দুই জায়গায় নদী বাঁধ ভেঙে যায়।

আরও পড়ুন-     ১০০ বছরে এই প্রথমবার! দুর্গোপুজোয় বন্ধ থাকবে রঞ্জিত-কোয়েলদের বাড়ির দরজা, কারণটা কী? জানলে চমকে যাবেন!

জল যন্ত্রনা যেন পিছু ছাড়ছে না তাঁদের, কংসাবতী গিলে খেয়েছে তাঁদের বাসস্থান আশ্রয় রাস্তায়।তিন ধাপে ডিভিসি জল ছাড়ায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায়। প্রথম ৩০ হাজার, দ্বিতীয় ৪০ হাজার, এবং তৃতীয় ধাপে ৪৫ হাজার কিউসিক জল ছাড়ায় ফুলে ফেঁপে উঠেছে কংসাবতী নদী, আর তাঁর জেরেই ভেঙে যায় একাধিক জায়গায় নদী বাঁধ। এ বিষয়ে পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুজিত রায় জানান, ” কংসাবতী নদীতে সর্বোচ্চ জলস্তর বেড়েছিল ২০২১ সালে। এবার তার থেকেও বেশি জলস্তর। ধাপে ধাপে কংসাবতী ব্যারেজ থেকে জল ছাড়া হয়েছে। সেই জল আগামী দু-তিন দিন আসবে নদীতে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জায়গায় নদীবাদ ভেঙে পাঁশকুড়া পৌরসভার আঠারোটি ওয়ার্ডের পাশাপাশি পাঁশকুড়া পঞ্চায়েত পঞ্চায়েত সমিতির বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে।”

আরও পড়ুন-         বলুন তো, কোন প্রাণীর রক্তের দাম সবচেয়ে বেশি? ৯৯% মানুষই উত্তর দিতে গিয়ে ডাহা ফেল! চমকে দেবে উত্তর, গ্যারান্টি…!

এদিন সকাল থেকেই জল ঢুকছে পাঁশকুড়ার পৌর এলাকার পাশাপাশি পঞ্চায়েত এলাকায়। পাঁশকুড়া পৌরসভার প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ডেই নদীর জল প্রবেশ করছে। পাঁশকুড়া পৌর এলাকার পাশাপাশি। পাঁশকুড়া ব্লকে প্রায় প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে জল ঢুকছে। এমনকি পাঁশকুড়া ব্লক প্রশাসনের কার্যালয়ে ধীরে ধীরে জল ঢুকেছে। ইতিমধ্যেই পাঁশকুড়ার এই নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত এলাকায় এন ডি আর এফ টিম নামিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষকে অস্থায়ী আশ্রয় হিসেবে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সৈকত শী

Flood Situation: একবুক জল! ভয়ানক পরিস্থিতি! বাঁকুড়ায় গিয়েই যা করলেন মন্ত্রী…

বাঁকুড়া: লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের তরফ থেকে। এবং তৈরি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতি। দক্ষিণ দামোদরের যে জেলাগুলি রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম বাঁকুড়া। বাঁকুড়ার বড়জোড়া এবং সোনামুখী চলে গেছে এক বুক জলের তলায়। অবস্থা খুবই খারাপ। বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলায় উপস্থিত হলেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক।

সভার মাধ্যমে খতিয়ে দেখলেন কীভাবে বন্যার ত্রাণ এবং বন্যা সামাল দেওয়ার কাজ চলছে জেলা জুড়ে। উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়ার সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী, প্রতিমন্ত্রী জোৎস্না মান্ডি এবং জেলা শাসক সহ সংশ্লিষ্ট দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা।

রাজ্য আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, এখনও পর্যন্ত বন্যায় বিপর্যস্তদের  রিলিফ শেল্টার করা হয়েছে ২০৯ টা। ১২৭০৯ জন বন্যায় বিপর্যস্তদের ক্যাম্পে ইতিমধ্যেই নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাঁকুড়া জেলার মোট ছটি ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত, শালতোরা, বড়জোড়া, পাত্রসায়ের, সোনামুখী, ইন্দাস এবং মেজিয়া। প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী গোটা বাঁকুড়া জেলায় বন্যার কারণে ঘর ভেঙেছে ৬২০টি। এবং আংশিক ঘর ভেঙেছে ২৪০২ টি। ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট এর তরফ থেকে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।

আরও পড়ুন: তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত সন্দীপ-অভিজিৎ? সিবিআই-কে প্রশ্ন বিচারকের! মিলল চমকে দেওয়া উত্তর

বাঁকুড়ার যে ৬টি ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই ব্লক গুলির অধিকাংশ পঞ্চায়েত এলাকা জলের তলায়। রাজ্যের মন্ত্রী বাঁকুড়ায় সভা করতে এসে বলেন ডিভিসি প্রতিবছর রাজ্য সরকারকে না জানিয়ে জল ছাড়ে। এই বছরও সেই একই ঘটনা ঘটেছে। সাম্প্রতিক ডিভিসির তরফ থেকে যে জল ছাড়া হয়েছে, সেই খবর বা আগাম পূর্বাভাস রাজ্য সরকারের কাছে নেই।

রাজ্য এবং কেন্দ্রেীয় কোঅর্ডিনেশন কেন তৈরি হচ্ছে না? সেই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “এর উত্তর একমাত্র কেন্দ্রই দিতে পারে।” কৃষি প্রধান এলাকা গুলিতে প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চাষীরা, কীভাবে তাদের পাশে দাঁড়াবেন সরকার? সেই প্রশ্নের উত্তরে মলয় ঘটক বলেন,  “কৃষকদের জন্য রয়েছে ক্রপ ইনসিওরেন্স। পশ্চিমবঙ্গে এমন একটি রাজ্য যেখানে ক্রপ ইনসিওরেন্স-এর প্রিমিয়াম কৃষকদের দিতে হয় না। এই প্রিমিয়াম রাজ্য সরকার দেয়। যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁরা এই বীমা থেকে নিজেদের ক্ষতিপূরণ পাবেন।” অবস্থা খারাপ। জেলা সাতটি ব্লক রীতিমতো জলের তলায়। এই অবস্থায় কোথায় কতটা ক্ষতি হয়েছে তাও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে এই পরিস্থিতির উন্নতি কখন কিংবা কীভাবে হবে সেই প্রশ্ন বুকে বেঁধে অপেক্ষায় রয়েছেন সাধারণ মানুষ।

—- নীলাঞ্জন ব্যানার্জী

Bihar News: গঙ্গার ভয়ঙ্কর রূপ, মাত্র ২৬ সেকেন্ডে গঙ্গার পেটে তলিয়ে গেল আস্ত বাড়ি

ভাগলপুর: প্রবল বৃষ্টির প্রভাব। ভাগরপুরে গঙ্গার ভয়ঙ্কর রূপ দেখে আতঙ্কিত এলাকাবাসী। গত কয়েকদিন ধরে ভাগলপুরের সবুর ব্লকের মাসাধু গ্রামে গঙ্গার তীব্র ভাঙন অব্যাহত। গত কয়েক বছরের মতো এবারও গঙ্গা ও কোসি নদীর ভয়ঙ্কর জলোচ্ছ্বাসে ভাগলপুর ও নাভাগাছিয়া এলাকায় রীতিমতো ধ্বংসযজ্ঞের সৃষ্টি করেছে। বাড়ি ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ৷

ভাঙনের প্রভাব মারাত্মক৷ গত তিন দিনে নদী তীরবর্তী গ্রামে প্রায় ৪০ থেকে ৪৫টি বাড়িঘর গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে৷ এমন পরিস্থিতিতেও প্রশাসন কার্যত উদাস৷ প্রশাসন বা জনপ্রতিনিধিদের কাউকেই ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় দেখা যায়নি বলে খবর৷

আরও পড়ুন : চা ভালোবাসেন? ঝাড়খণ্ডের এই দোকানে রোজ বিক্রি হচ্ছে ১ কুইন্টাল দুধের চা, একবার খেলে প্রেমে পড়ে যাবেন আপনিও

একটি লাইভ ভিডিয়োতে দেখা গিয়েছে, মাত্র ২৬ সেকেন্ডের মধ্যে তাসের ঘরের মতো একটি কংক্রিটের ঘর কীভাবে গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। ব্যাপারটা শুধু একটি বাড়ি কেন্দ্রিক নয়৷ এলাকার শত শত মানুষ আপাতত ঘর বাঁচাতে ব্যস্ত। কিন্তু, নদী ভাঙন প্রক্রিয়ার সামনে তারা কার্যত অসহায়। অনেক ক্ষেত্রে রুদ্র রূপের গঙ্গা গ্রামবাসীদের বাড়িঘর থেকে জিনিসপত্র সরানোর সুযোগও দিচ্ছে না৷ অসহায়ের মতো দাঁড়িয়ে থেকে বাড়ি ঘর ভেসে যাওয়া দেখা ছাড়া কিছুই করতে পারছেন না তাঁরা৷

আরও পড়ুন : এক দেশ, এক নির্বাচনের প্রস্তাবে ছাড়পত্র কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার, শীতকালীন অধিবেশনেই বিল পেশ?

জেলা প্রশাসন গঙ্গার ভাঙন রোধে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছিল৷ কিন্তু সেগুলি কাজে আসেনি৷ পরিস্থিতি এতটাই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে যে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বাড়িঘর ভেঙ্গে পড়ছে৷ কথা ছিল এই এলাকায় একটি বাঁধ তৈরি করা হবে৷ তা আর এগোয়নি৷ এর ফল ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে৷

ভাঙনের এই মর্মান্তিক ঘটনা গ্রামবাসীর জীবনকে বিপর্যস্ত করেছে। প্রতিদিনই মানুষ দেখছে তাদের পাকা ঘরগুলো ভেঙ্গে পড়ছে, কিন্তু তাঁদের সাহায্যের জন্য প্রশাসনের তরফে কোনও ভূমিকাই নেওয়া হচ্ছে না৷

Birbhum Flood Situation: নদীবাঁধ ভেঙে বানভাসি বীরভূমের ১৫ টি গ্রাম, অসংখ্য গৃহহীনের আশ্রয় এখন অস্থায়ী শিবির

সৌভিক রায়, বীরভূম: দেড় মাস কাটতে না কাটতেই আবারও বিপত্তি।বীরভূমের লাভপুরের বলরামপুর গ্রামের ডোমপাড়ার কাছে কুয়ে বাঁধ ভেঙে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বলরামপুর গ্রাম। বাঁধ ভাঙার ফলে জলমগ্ন রামঘাঁটি, কান্দরকুলা, জয়চন্দ্রপুর, হরিপুর-সহ মোট ১৫টি গ্রাম।সেই খবর পেয়েই আসেন লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিংহ ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।কীর্ণাহার থানার পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে আটকে থাকা মানুষদের উদ্ধার করেন।

নদীর জল গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করায় জল বৃদ্ধি পেয়েছে গ্রামে।অধিকাংশ মাটির বাড়ি ভেঙে পড়েছে।গ্রামে প্রচুর পরিমাণে জল থাকার কারণে স্পিড বোটে চেপে ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য চালানো হয়। মঙ্গলবার বৃষ্টির পরিমাণে ছেদ পড়লেও এলাকার মানুষ কোনওক্রমে প্রাণ বাঁচিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু স্থানে অথবা স্থানীয় স্কুল ঘরে। গ্রামের বাসিন্দারা জানান ‘‘আচমকা বলরামপুর ও কাঁদরকুলা গ্রামে ধারে থাকা কুয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে হু হু করে জল ঢুকতে থাকে গ্রামে। আমরা দ্রুত ছেলেপুলে নিয়ে পালিয়ে কোনওরকমে প্রাণ বাঁচিয়েছি।বাড়ির সমস্ত আসবাসপত্র নষ্ট হয়ে গেছে।’’

জলের স্রোত এখনও সমান তীব্রতায় বইছে এলাকায়।সব চেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থা হয়েছে বিস্তীর্ণ চাষ জমি জলের তলায়।জানা যায়, তিন দিনে প্রায় ২০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে বীরভূমে।লাভপুরের বিস্তীর্ণ গ্রাম জুড়ে বৃষ্টির ফলে হাহাকারের ছবিই ভেসে উঠেছে।প্রশাসনের তরফে এলাকার স্কুলে অস্থায়ী শিবির খোলা হয়েছে।খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আরও পড়ুন : ঠিক কতগুলো রুটির সঙ্গে কতটা ডাল তরকারি খেলে ভুলেও হবেন না মোটা? থাকবেন সুস্থ ও রোগমুক্ত? জানুন

অন্যদিকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর লাভপুরের বিডিও শিশুতোষ প্রামাণিক জানিয়েছেন, ‘‘বেশ কয়েকটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে।খাবার ও পলিথিনের ত্রিপল ব্যবস্থা করা হয়েছে।মোতায়েন করা হয়েছে বিপর্যয় মোকাবিলা দল।’’

লাভপুরের বিধায়ক অভিজিৎ সিনহা জানান, ‘‘কুয়ে নদীর বাঁধ ভেঙে মানুষ খুব সমস্যায়। জেলা প্রশাসন, ব্লক প্রশাসন, ও থানার পুলিশের সহযোগিতায় গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করে একটি স্কুলে রাখা হয়েছে। তাঁদের খাওয়া- দাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’ তবে সব মিলিয়ে পুজোর আগে লাগাতার দুইবার বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হবার কারণে কার্যত মাথায় হাত পড়েছে ১৫ টি গ্রামের বাসিন্দাদের।

‘প্ল্যান করে বাংলাকে ডোবাচ্ছে’, হুগলিতে বন্যা পরিস্থিতি দেখে বিস্ফোরক মমতা

হুগলি: ম্যান মেড বন্যা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত তিন-চারদিন ধরে একই কথা বলে চলেছেন। বাংলার বিস্তীর্ণ এলাকা জলের তলায়। তিন-চার দিনের নিম্নচাপের বৃষ্টি, তার উপর ডিভিসি-র ছাড়ার ফলে প্লাবিত বহু এলাকা। একাধিক জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি। আজ, বুধবার, হুগলির বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

পুরশুড়ায় দ্বারকেশ্বর নদীর উপর ব্রিজের অবস্থা খারাপ। এদিন ওই এলাকায় গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখে ফের ডিভিসির বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভয়াবহ পরিস্থিতি। প্ল্যান করে বাংলাকে ডোবাচ্ছে। ড্রেজিং করে না কেন্দ্র। আরও ২ লক্ষ কিউসেক জল ধরতে পারে। এত জল এর আগে কখনও ছাড়েনি। দেখছেন কেমন স্রোত জলের! ৭০ শতাংশ যখন পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে, তখন কেন জল ছাড়ে না ডিভিসি! বাংলা আর কত বঞ্চনা সহ্য করবে!

আরও পড়ুন- রবীন্দ্রনাথ এখানে এসেছিলেন, আজ প্রাণহীন কাঠামো নিয়ে দাঁড়িয়ে এই সিনেমা হল

দুপুরে হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মমতার। উদয়নারায়ণপুর এবং আমতায় বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পারেন তিনি। এদিন হুগলির পরশুড়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দক্ষিণবঙ্গেল একাধিক জায়গা জলমগ্ন। বহু জায়গায় এক তলা বাড়ির পুরোটাই ডুবে গিয়েছে। ইতিমধ্যে হুগলির খানাকুলে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে এনডিআরএফ।

আরও পড়ুন- ফুঁসছে দামোদর, কাঁসাই! রাতেই হু হু করে ঢুকছে জল, জেলায় জেলায় আতঙ্ক

হাওড়ার নিম্ন দামোদর এলাকায় বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উদয়নারায়ণপুর এবং আমতায় দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরী নদীর জল বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে। বুধবার ভোর থেকে একাধিক গ্রামে জল বাঁধ টপকে ঢুকে পড়েছে। পুজোর আগে দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রশাসনিক তৎপরতা শুরু হয়েছে। তবে সরেজমিনে বন্যাবিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ঘাটালে ফের বন্যা! রাস্তায় চলছে নৌকা, চরম দুর্ভোগে বাসিন্দারা

মূল রাস্তা। যেখানে দুপাশে রয়েছে সারি দিয়ে দোকান। সেখানে বাইক, গাড়ি কিংবা সাইকেলের দেখা নেই। রাস্তার উপর কোমর সমান জলে চলছে নৌকায় পারাপার।

Viral Video: মালদহে ভয়ানক গঙ্গা ভাঙন! ভিডিও দেখলে বুক কাঁপবে! আতঙ্কে স্থানীয়রা

মালদহ: জল কমতেই ভাঙন শুরু। গঙ্গার জল গত কয়েকদিন ধরে কমতে শুরু করেছে। তাতেই নতুন করে শুরু হয়েছে গঙ্গার ভাঙন। চোখের নিমেষে ভাঙছে গঙ্গার পাড়। প্রায় ২০০ মিটার এলাকাজুড়ে এই ভাঙন শুরু হয়েছে। গঙ্গার জল কমলেও নতুন করে ভাঙন শুরু হওয়ায় আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দারা।

মালদহের রতুয়া-১নং ব্লকের মহানন্দাটোলার নয়া বিলাইমারির খাকসাবোনা এলাকায় এই ভাঙন শুরু হয়েছে। সেই ভয়াবহ ভাঙনের ছবি ধরা পড়েছে স্থানীয়দের ক্যামেরায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যাপক গঙ্গা ভাঙনের ফলে বর্তমানে নয়া বিলাইমারির খাকসাবোনায় গঙ্গা নদী থেকে ফুলহর নদীর দূরত্ব প্রায় ৪০০ মিটার।

আরও পড়ুন: মঙ্গলে সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে কী বলবেন জুনিয়র ডাক্তাররা? বড় সিদ্ধান্ত হল দিল্লির বৈঠকে

ভাঙনের ফলে আগামী দিনে এই দুই নদী মিশে গেলে তৈরি হবে ভয়ংকর পরিস্থিতি। দুই নদীর মিলিত ভাঙনে মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে গোটা মহানন্দাটোলা ও বিলাইমারি পঞ্চায়েত এলাকা। গঙ্গার জল কমতেই নতুন করে ভাঙন শুরু হতে আতঙ্কিত হয়ে রয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। ভাঙন প্রতিরোধের কাজের দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।

আরও পড়ুন: এক সময় টেক্কা দিচ্ছিলেন শাহরুখকে, একটি ভুলে সব শেষ! ৪০-এই প্রয়াত বাঙালি নায়ক

গঙ্গার জল এখন অনেকটাই কমেছে। এমন পরিস্থিতিতে নদী ভাঙন মোকাবিলার কাজ শুরু হলে অনেক টাইপ প্রতিরোধ সম্ভব বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আগামীতে এই ভাঙন অব্যাহত থাকলে দিয়ারা অঞ্চলের অধিকাংশ গ্রাম জলের তলায় তলিয়ে যাবে। এমনকি গঙ্গা ও ফুলার নদী মিশে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল রয়েছে।

হরষিত সিংহ

Paschim Medinipur News: বিপদসীমার উপরে নদীর জলস্তর! ঘাটালে ফের বন্যা, রাস্তায় চলছে নৌকা, বিরাট দুর্ভোগ

পশ্চিম মেদিনীপুর: মূল রাস্তা। যেখানে দু’পাশে রয়েছে সারি দিয়ে দোকান। সেখানে বাইক, গাড়ি কিংবা সাইকেলের দেখা নেই। রাস্তার উপর কোমর সমান জলে চলছে নৌকায় পারাপার। সেই দৃশ্য দেখে হয়তো হতবাক হতে পারেন। তবে চমকে যাওয়ার কিছুই নেই। প্রতি বছর বর্ষা এলেই এমন চিত্র দেখা যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটালে। চলতি মরশুমে একাধিকবার বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও জলস্তর ছিল বিপদসীমার নীচে। তবে দু’দিনের টানা বৃষ্টিতে ক্রমশই বেড়েছে নদীর জল। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে শিলাবতী, ঝুমি নদী। স্বাভাবিকভাবে একাধিক বসতি এলাকা প্লাবিত হয়েছে ইতিমধ্যে। জনবসতির মধ্যে দিয়ে চলছে জলস্রোত। খাওয়াদাওয়া তো দূর, নিজেদের জীবন বাঁচাতে জল পেরিয়ে এদিক থেকে ওদিক যাতায়াত করছেন সাধারণ মানুষ।

শুক্রবার বিকেল থেকে নিম্নচাপের কারণে লাগাতার বৃষ্টি হয়েছে জেলা জুড়ে। বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি ক্রমশই জটিল পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে ঘাটালের বন্যা। প্রতি বছর বর্ষাকাল এলেই বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় ঘাটালে। তবে এবার বেশ কয়েকবার বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও, জলস্তর বিপদসীমার নিচেই ছিল। তবে ঘণ্টায় ঘণ্টায় লাফিয়ে বাড়ছে জলস্তর। একাধিক জলধার থেকে জল ছাড়ার কারণে ইতিমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে ঘাটাল, চন্দ্রকোণা, দাসপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। এছাড়াও প্রবল বৃষ্টিতে জলমগ্ন হয়েছে সবং, পিংলাও।

হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস মত, মঙ্গলবার থেকে আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ার আশা থাকলেও উপরের জেলাগুলির জলাধার থেকে জল ছাড়ার কারণে ক্রমশ প্লাবিত হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে ঘাটালের মানুষ। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন যোগাযোগের রাস্তায় উপর কোমর সমান জল। যাতায়াতের মাধ্যম নৌকো। শুধু তাই নয়, ঘাটাল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষের জমি প্লাবিত হয়ে চাষে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা।

নজরদারি রাখা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। বিভিন্ন জায়গায় মোতায়েন রয়েছে প্রশাসনের একাধিক টিম। প্রশাসনের তরফে যদিও বিভিন্ন জায়গায় সতর্ক করা হচ্ছে। জেলা জুড়ে চালু করা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। বিভিন্ন ব্লক এলাকায় চালু হয়েছে জরুরি পরিষেবাও। স্বাভাবিকভাবে পুজোর আগে বন্যা পরিস্থিতিতে নাজেহাল ঘাটালের মানুষ। আর কতদিন এই বন্যা যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে ঘাটালের মানুষকে, সে প্রশ্ন এখন প্রত্যেকের।

রঞ্জন চন্দ