Tag Archives: Cyclone Dana Update
Cyclone Update IMD:’দানা’ দুর্বল হলেও বিপদ কাটেনি! ১১ জেলায় অশনি সংকেত…! তালিকায় কলকাতাও,কী হবে এর পর?
Mamata Banerjee: ‘‘বাংলাকে বন্যা, সাইক্লোনে এক টাকাও দেওয়া হয় না’’ ‘দানা’ বৈঠকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী
কলকাতা: আগে থেকেই বাংলায় সরকারী সতর্কতা ছিল তুঙ্গে৷ আশঙ্কাও ছিল৷ সকাল হতেই দেখা গেল সেই আশঙ্কা পুরোটাই অমূলক নয়৷ ঝড়ের দাপট সরাসরি শহর কলকাতায় না লাগলেও রাজ্যের বেশ কিছু অঞ্চল থেকে ক্ষয়-ক্ষতির খবর পাওয়া যাচ্ছে৷
সেই কারণেই আজ, ২৫ অক্টোবর শুক্রবার, নয় জেলার জেলা শাসক, জেলা পরিষদ ও অনান্য আধিকারিকদের নিয়ে ভিডিও বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সেখানে ‘দানা’-দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির হিসেব চাইলেন তিনি৷
এ প্রসঙ্গে মুখ্য সচিব তাঁকে জানিয়েছেন, কিছু জেলায় ঝোড়ো হাওয়ার জন্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনও অবধি রাজ্য ২ লাখ ১৬ হাজার লোককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে৷
মমতা জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেন, সব জায়গায় যাতে প্রয়োজনমতো ত্রাণ পৌঁছে যায়, তা নিশ্চিত করতে৷ ‘দানা’ র প্রভাবে কপিলমনি আশ্রমে জল ঢুকে গিয়েছে৷ সেই নিয়েও সাগরের বিধায়কের সঙ্গে কথা বলেন তিনি৷
নামখানার বিধায়কদের সঙ্গেও কথা বললেন মুখ্যমন্ত্রী৷ বাঁকুড়ার জেলা শাসক জানায়, ঘুর্ণিঝড় সেখানে অনেকটাই প্রভাব ফেলেছে৷ জেলা জুড়ে ২৯ টা ক্যাম্প চলছে, আড়াই হাজার মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন৷ অতিবৃষ্টির জেরে প্রায় ২৭টি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ আড়াই হাজার মানুষকে ক্যাম্পে রাখা আছে।
কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও জানতে চেয়েছেন তিনি৷ কৃষি সচিবের কাছ থেকে ক্ষতির তালিকা চেয়েছেন৷ সচিবকে যে সমস্ত জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার একটা তালিকা করার নির্দেশ দেন তিনি৷ ৩১ নভেম্বর, পর্যন্ত বাড়িয়ে দেওয়া হলো বিমার সুযোগ৷
উত্তরচব্বিশ পরগণাতে যাঁদের বাড়ি ডুবে গিয়েছে, তারও একটা তালিকা করে মুখ্যসচিবের কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেন। জেটির কোনও ক্ষতি হয়েছে সেই বিষয়েও খোঁজ খবর নেন মূখ্যমন্ত্রী৷
তাছাড়াও আগে যে বন্যা হয়েছে, তার কাজেরও হিসেব চেয়েছেন৷ এই সময় আরও বেশি করে মেডিক্যাল ক্যাম্প করার পরামর্শ দেন তিনি৷ এইসময় ডেঙ্গু বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তার জন্য আগাম সতর্কতা নেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তাছাড়াও প্রত্যেক হাসপাতালে সাপের ওষুধ অ্যান্টি ভেনাম যাতে থাকে তাও নিশ্চিত করতে বলেন।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম ভাবে পাশে থাকার জন্য জেলা শাসকদের নির্দেশ দেন তিনি৷ তাঁদের কাজের ঢালাও প্রশংসা করে বলেন, ‘‘যাদের বই নষ্ট হয়েছে তাঁদের বই কিনে দিতে হবে। অনেকেরই বাড়ি ডুবে গিয়েছে, তাঁরাও যেন জামা কাপড় পায়, সেই দিকে খেয়াল রাখুন৷ একটা নয় তিনটে করে ত্রিপল দিতে হবে৷ উত্তরবঙ্গে ম্যালেরিয়া বেশি হয় ওঁদের মশারি দিতে হবে।’’
বর্ষার পর নানা রকম রোগের প্রাদুর্ভাব হয়, সেই দিকে লক্ষ রেখে জেলা-জেলায় স্বাস্থ্যপরিকাঠামো ঢালাও সাজানোর নির্দেশ দেন৷ ভাইরাল জিকা বা ডেঙ্গু যাতে না বৃদ্ধি পায় সেই দিকেও নজর দেওয়ার কথা বলেন৷
এইদিনের বৈঠকে তিনি বলেন,‘‘টেলি মেডিসিন কাজে লাগাও। প্রসূতি মায়েদের যত্ন রাখতে হবে৷ ডায়রিয়া ওষুধ,ও আর এস রাখতে হবে’’
বন্যা দুর্গত অঞ্চলে যাতে জলের সমস্যা না হয়, তার জন্য পর্যাপ্ত ট্যাঙ্ক পাঠানোর নির্দেশ দেন৷ ত্রাণ বিতরণে যেন কোনও রকম সমস্যা না হয়, সেই নিয়ে বার বার সতর্ক করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই জন্য জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারদের একসঙ্গে কাজ করার নির্দেশ দেন৷
সুন্দর বনে আরও প্রায় ১৫ কোটি ম্যানগ্রোভ লাগানোর নির্দেশ দেন তিনি৷ দিঘা, হলদিয়া রামনগরের পরিস্থিতিরও খোঁজ নেন তিনি৷ জগন্নাথ মন্দিরের সব ঠিক আছে কি না তাও জানতে চান, বৈঠকে৷ সামনেই ছট পুজো তার আগে ঘাটগুলোকে পরিষ্কার করে ফেলারও নির্দেশ দেন৷
এই বৈঠকে ডিভিসির জল ছাড়া ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আবারও তোপ দাগেন৷ তিনি বৈঠকে অভিযোগের সুরে বলেন, ‘‘বাংলাকে বন্যা, সাইক্লোনে এক টাকাও দেওয়া হয় না।’’
দুর্যোগে রাজ্যের একজনের মৃত্যু বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন৷ মুখ্যমন্ত্রী জানা, ‘‘একজনের মৃত্যুর খবর পেয়েছি৷ সেটাও খুব দুর্ভাগ্যজনক’’ প্রশাসনকে মৃত ব্যক্তির পরিবারের পাশে দাঁড়ানোরনির্দেশ দেন তিনি৷
Puri Sea Beach: আর বোধহয় জীবনে পুরী বেড়াতে যাবে না এই পরিবার, কারণ শুনলে মাথা ঘুরে যাবে!
হুগলি: সপরিবারে পুরী বেড়াতে গিয়েছিলেন ছুটি কাটাবেন বলে কিন্তু সেখানে বাঁধ সাধে ঘূর্ণিঝড় দানা! ইচ্ছা ছিল ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল দেখে বাড়ি ফিরবেন! কিন্তু তাতেও বাধা হয়ে দাঁড়ায় দূরপাল্লার ট্রেন বাতিল হয়ে যাওয়া। তারপরেই মাথায় হাত পড়ে চুঁচুড়ার ধরমপুরের কুন্ডু ও পাল পরিবারের।
অবশেষে সাইক্লোনের ভয়ে পুরী ছেড়ে বাস ধরে বাড়ি ফিরলেন চুঁচুড়ার দুই পরিবার। ঘূর্ণিঝড় দানার ল্যান্ডফল হয়েছে বৃহস্পতিবার রাতে। মূলত ওড়িশায় এই ঝড়ের প্রভাব পড়বে সব থেকে বেশি। ভ্রমণপিপাসু বাঙালি ঘোরার সবচেয়ে প্রিয় জায়গা পুরীতে আগে থেকেই উপস্থিত ছিলেন বহু পর্যটক। তবে সাইক্লোনের কারণে সমুদ্র উপকূল পুরীকে পর্যটক শূন্য করতে চাইছিলেন ওড়িশা প্রশাসন। ঝড়ের কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়, ট্রেন চলাচল।
আরও পড়ুন: ‘দানা’র প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র, নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টিতে আতঙ্কে গাঙ্গেয় সুন্দরবনের বাসিন্দারা
এই পরিস্থিতিতেই পুরীতে উপস্থিত ছিলেন চুঁচুড়ার দুই পরিবারের মোট ৬ জন সদস্য। তাঁরা ভেবেছিলেন পুরীতে ছুটি কাটানোর উপভোগ দ্বিগুণ করবেন ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল দেখে। তবে পারিপার্শ্বিক মানুষজন যেভাবে তাঁদের আমফানের অভিজ্ঞতা জানিয়েছিল তাতে নিজেদের ভয় আর ধরে রাখতে পারেননি ওই দুই পরিবার। আমফানে কীভাবে বালিতে ঢেকে গিয়েছিল গোটা শহর সেই গল্প শুনেছিলেন তারা। ২৮ দিন লেগে গিয়েছিল সমস্ত জায়গা থেকে বালি সরাতে এমনও ঘটনা শুনেছেন ওই পরিবারের লোকজন, তারপরেই তড়িঘড়ি ফিরেছেন নিজেদের বাড়ি চুঁচুড়ায়। ট্রেন না থাকলেও বাস ধরে বাড়ি ফিরেছেন তারা।
এই বিষয়ে পরিবারের সদস্যরা জানান, তাঁরা কুড়ি তারিখে পুরী পৌঁছেছিলেন সমুদ্র সৈকত ভ্রমণের জন্য। প্রথম দুদিন আবহাওয়া ঠিক থাকলেও পরের দিন থেকে সতর্কতা জারি করে ওড়িশা প্রশাসন। পরবর্তীতে হোটেলগুলি থেকে বাইরে বেরোনোর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে তাঁরা প্রথমে ভেবেছিলেন হোটেলে থেকেই কাটিয়ে দেবেন। হোটেল মালিকেরাও বলেছিলেন হয় হোটেলে থাকতে, না হলে বাড়ি চলে যেতে। তবে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে ঘূর্ণিঝড়ের আগের অভিজ্ঞতা শুনে নিজেদের ভয়ে ধরে রাখতে পারেননি তাঁরা আর। পর্যাপ্ত পরিমাণ খাবার ওষুধ মজুদ না থাকার কারণে ট্রেন বন্ধ থাকার সত্বেও বাস ধরে কোনওক্রমে বাড়ি ফিরেছেন চুঁচুড়ার কুন্ডু ও পাল পরিবারের ছয়জন সদস্য।
রাহী হালদার
Cyclone Dana: ‘দানা’র প্রভাবে উত্তাল সমুদ্র, নিম্নচাপের ভারী বৃষ্টিতে আতঙ্কে গাঙ্গেয় সুন্দরবনের বাসিন্দারা
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে গতকাল থেকে গাঙ্গেয় সুন্দরবন এলাকায় চলছে বৃষ্টি সঙ্গে রয়েছে দমকা হাওয়া। আর যার জেরে বিপর্যস্ত গাঙ্গেয় সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা।
গতকাল রাত থেকেই ঝড় বৃষ্টির দাপট বাড়তে থাকে জেলাজুড়ে। রাত ১২টার পর থেকে ঝড়ের দাপট বাড়ে। তবে সবচেয়ে বেশি ঝড়ের দাপট ছিল সুন্দরবন এলাকায়। সাগর, নামখানা, পাথরপ্রতিমায় বেশকিছু গাছের ডাল ভেঙেছে। রাতেই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেই গাছ কেটে সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।এখনো পর্যন্ত ভারী বৃষ্টি হচ্ছে সঙ্গে রয়েছে দমকা হাওয়া। শুক্রবার দিনভর ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা আছে। জেলা জুড়ে জারি রয়েছে লাল সর্তকতা।
আরও পড়ুন: পায়ে ব্যথায় জীবন ওষ্ঠাগত? চোখে জল আসে? বাঁচতে হলে জানুন, রইল ডাক্তারের পরামর্শ
দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তার বেলায় গঙ্গাসাগরে আসার সম্ভবনা রয়েছে। ঝড় চলে যাওয়ায় কিছুটা হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন গাঙ্গেয় সুন্দরবনের বাসিন্দারা। কিন্তু বৃষ্টি ও জলোচ্ছ্বাস চিন্তায় রেখেছে তাঁদের। জেলার সব ফেরি পরিষেবা বন্ধ থাকবে আজও। বেলা বাড়লে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র পরিষ্কার হবে।
দুর্যোগের জেরে নদী ও সমুদ্রের জলস্তর বেড়েছে। ফলে জলোচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে বকখালি ও মৌসুনি দ্বীপে। বৃষ্টির জেরে এমনিতেই বেহাল বাঁধের মাটি নরম হয়ে রয়েছে আর এই উত্তাল নদী এবং সমুদ্রের ঢেউয়ে নতুন করে বাঁধ ভেঙে প্লাবনের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সমস্ত পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছে জেলা প্রশাসন।
নবাব মল্লিক
Cyclone Dana: আশঙ্কা ছিল, প্রস্তুতিও; ঘূর্ণিঝড় দানার তেমন প্রভাব পড়ল না সুন্দরবনের এই অংশে! স্বস্তিতে প্রান্তিক মানুষেরা
উত্তর ২৪ পরগনা:বৃহস্পতিবার রাতেই ল্যান্ডফল করেছে ঘূর্ণিঝড় দানা। কিন্তু দানার থাবায় তেমন প্রভাব পড়ল না সুন্দরবন এলাকায়। গতকাল থেকেই ঝড়ো হাওয়া ও তুমুল বৃষ্টিপাত শুরু হলেও দানার তেমন প্রভাব দেখা গেল না এই অংশে ।
তবে সুন্দরবন এলাকার বেশ কিছু জায়গায় কৃষি জমিতে জল জমে গিয়েছে৷ বেশ কিছু ফসল দমকা হওয়ার দাপটে নুয়ে পড়েছে। একই রকম ভাবে সুন্দরবন এলাকায় নদীগুলোতে বেড়েছে জলস্ফীতি। নদীর জল কানায়-কানায় জলপূর্ণ।
বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করা গভীর নিম্নচাপটি গতকাল মধ্যরাতে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের সংলগ্ন উপকূলে আছড়ে পড়ছে ‘দানা’। এর ফলে দক্ষিণবঙ্গের উপকূলের জেলা-সহ দঙ্গিণবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বইছে। সাগর রয়েছে উত্তাল।
তবে এখনওপর্যন্ত উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবন এলাকার হিঙ্গলগঞ্জ, সন্দেশখালি, মিনাখাঁ সহ বিভিন্ন এলাকায় তেমন বড় কিছু ক্ষয়ক্ষতি এখনও পর্যন্ত সামনে আসেনি।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কথা আসলেই প্রথমে সুন্দরবনের ভৌগলিক মানচিত্রের কথা মাথায় আসে। বার-বার প্রকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে সুন্দরবনের একাধিক এলাকা।
সুন্দরবন এলাকার ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পিছনে প্রধান কারণ দুর্বল নদীবাঁধ। বিগত দিনে আমফান, ইয়াশ ও আয়লার মতো প্রাকৃতিক রোষে ক্ষতিগ্রস্ত সুন্দরবন অঞ্চল।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নদী বাঁধ। বিপন্ন হয়েছে সুন্দরবনের সামাজিক জীবন। ঘূর্ণিঝড় দানার আগে প্রবল আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছিল নদী পারের বাসিন্দারা। কিন্তু দানার প্রভাব তেমন ভাবে না পড়ায় কিছুটা স্বস্তিতে রয়েছে প্রান্তিক মানুষেরা।
জুলফিকার মোল্লা
Cyclone Dana: দানা-র জের, টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন নিউটাউন থেকে পার্কসার্কাস, কলকাতায় কোথায় কী হাল? কোন রাস্তা এড়াবেন? দেখে নিন শহরের ‘জলছবি’
কলকাতা: ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়েছে প্রবল শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’। গতকাল মধ্যরাত থেকেই তার ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ভোররাত থেকেই টানা বৃষ্টিতে জলবন্দি হয়ে পড়েছে শহর কলকাতা। শহরের বিভিন্ন এলাকায় জল জমার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
টানা বৃষ্টির জেরে জল জমেছে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের বেশ কিছু জায়গায়। এ ছাড়া মহাত্মা গান্ধী রোড, পার্ক স্ট্রিট, থিয়েটার রোড, ক্যামাক স্ট্রিটে জল জমেছে। উত্তর বন্দর থানার কাছে স্ট্র্যান্ড রোডের একাংশ জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। জল জমেছে সায়েন্স সিটির কাছেও। বেলঘরিয়া রোড, বর্ধমান রোড এবং আলিপুরের কিছু কিছু রাস্তায় জল জমেছে।
নাগাড়ে বৃষ্টির জেরে কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুমের সামনের রাস্তায় জল জমার খবর পাওয়া গিয়েছে। পুরসভায় ঢোকার গেট সংলগ্ন রাস্তাতেও জল জমে রয়েছে।
এছাড়াও, পার্কসার্কাস সেভেন পয়েন্টের কাছে বিভিন্ন রাস্তায় জল জমেছে। বিশেষ করে এজেসি ফ্লাইওভারের ওঠার মুখে এবং নামার দিকে জল জমে রয়েছে।
আরও পড়ুন: আপনি কি চিংড়ি ভালবাসেন? বড় খবর, বাজারে অমিল হতে চলেছে চিংড়ি! কেন?
সব থেকে বেশি জল জমার খবর পাওয়া গিয়েছে নিউটাউন বাসস্ট্যান্ডের কাছে। সেখানকার গোটা রাস্তাই প্রায় জলমগ্ন।
নিউ টাউন নজরুল তীর্থ থেকে নিউ টাউন বাস স্ট্যান্ড যাওয়ার রাস্তা পর্যন্ত প্রায় এক হাঁটু সমান জল জমে রয়েছে।
সকাল থেকে অবিরাম ধারাপাতে জলমগ্ন হয়েছে ভিআইপি রোডের হলদিরাম এয়ারপোর্ট সংলগ্ন রাস্তাও। সেখানেও প্রায় হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখায় ট্রেন চলাচল শুরু, পরিষেবা স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে
রাস্তা থেকে জল বের করার ক্ষেত্রে সচেষ্ট হয়েছে কলকাতা পুরসভা। গতকাল রাত থেকেই কন্ট্রোলরুমে হাজির থেকে গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছিলেন শহরের মেয়র ফিরহাদ হাকিম। তিনিও নির্দেশ দিয়েছেন শহরের কোথাও যেন জল জমে না থাকে সে বিষয়ে সুনিশ্চিত করা। সেই বিষয়েই তৎপর হয়েছে প্রশাসন এবং পুরসভা।
‘দানা’র প্রভাবে কলকাতা এবং সংলগ্ন জেলাগুলিতে শুক্রবার দিনভর ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। শনিবার থেকে বৃষ্টির পরিমাণ কমবে।
Cyclone Dana-local train: ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে বিপর্যস্ত হাওড়া-শিয়ালদহের লোকাল ট্রেন পরিষেবা! চরম দুর্ভোগে যাত্রীরা
Cyclone Dana: দৈত্যের মতো ঢেউ! ‘দানা’র ল্যান্ডফলের পর কী ভয়ঙ্কর চেহারা নিয়েছে বাংলার এই জনপ্রিয় স্থল! দেখলে শিউরে উঠবেন
দক্ষিণ ২৪ পরগনার: বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ল্যান্ড ফল করার পর ভয়ঙ্কর চেহারা ধারণ করেছে প্রকৃতি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে তাণ্ডব লীলা শুরু করেছে প্রকৃতি। রাতে একাধিক এলাকায় দমকা ঝোড়ো হাওয়ার কারণে মাটি থেকে উপড়ে বেশ কিছু গাছ। বিধ্বংসী দৈত্যাকার ঢেউ। আছড়ে পড়ছে উপকূলে। আতঙ্কিত হয়ে রয়েছে এলাকাবাসীরা। দমকা ঝোড়ো হাওয়ার পাশাপাশি শুরু হয়েছে মুষলধারে বৃষ্টি।
আরও পড়ুন- ‘দানা’ বিপর্যয়ে এ কী হাল দেশের বিখ্যাত আশ্রমের? দেখুন সেই ভয়ানক ভিডিও
বৃষ্টি ও তার সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া বইছে। উপকূল তীরবর্তী এলাকার মানুষজনদের নিরাপদ আশ্রয় নিয়ে যাওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। খোলা রাখা হয়েছে ফ্লাড শ্লেল্টার। সেখানে মজুত রাখা হয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানীয় জল এবং শুকনো খাবার। এর পাশাপাশি সুন্দরবনের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র গুলিতে বাড়তি নজরদারি চালানো হচ্ছে ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার উপকূল তীরবর্তী এলাকার মাটির নদী বাঁধ গুলির উপর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নজরদারী চালানো হচ্ছে। যাতে কোন রকম ভাবেই নদী বাঁধ ভেঙে গ্রামে প্লাবিত না হয়।
আরও পড়ুন- ‘এতদিনে খোলাখুলি স্বীকার করে নেওয়ার সময় এসেছে’…, দাম্পত্য নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক?
তবে যেভাবে বৃষ্টি শুরু হয়েছে তাতে বেহাল নদী বাধ গুলি নিয়ে চিন্তিত নদীর পাড়ে বাসিন্দাদের। নদী বাঁধ ভেঙে যে কোন সময় প্লাবিত হতে পারে কুলতলি গোসাবা এই সমস্ত এলাকার বেহাল বাঁধ গুলি। যদিও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার প্রান্তিক এলাকা থেকে মানুষজনদের নিরাপদ আশ্রয়ে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রান্তিক এলাকায় সব ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়ন করা হয়েছে। কোনরকম ভাবে সমস্যা হলেই তারা সাথে সাথেই পৌঁছে যাচ্ছে সেই সমস্ত এলাকায়।
সুমন সাহা