Tag Archives: Manasa Puja 2024

Manasa Puja 2024: ভাদ্র সংক্রান্তিতে মনসাদেবীর আরাধনায় মেতে ওঠে হাওড়ার এই গ্রাম

রাকেশ মাইতি, হাওড়া: বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজো, আর পুজো মানেই, আপামর বাঙালির খুশির সঞ্চার মনে। পুজো মানেই আনন্দ উৎসব  খুশিতে মেতে উঠা।  নদী লাগোয়া একসময়ের কৃষিনির্ভর হাওড়ার এক  গ্রাম। যদিও বর্তমানে কৃষিকার্যের সঙ্গে অন্যান্য পেশার সঙ্গে যুক্ত মানুষ। দুর্গাপুজোর আগেই গ্রামের এক বড় উৎসব অনুষ্ঠিত হয় প্রতিবছর। এখানে শিশু থেকে বৃদ্ধের কাছে, গ্রামের বড় উৎসব বলতে মনসাপুজোয় মেতে ওঠে। কয়েকদিন ব্যাপী পুজোর অনুষ্ঠান, নতুন পোশাকে মানুষ মনসাপুজোর উৎসবে মেতে ওঠেন।

প্রতিবছর ভাদ্র মাসের শেষ দিন থেকে এই পুজোর সূচনা হয় গ্রামে। প্রায় সপ্তাহব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মনসাপুজো উদযাপিত হয়। পুজো উপলক্ষে গ্রামের অধিকাংশ পরিবারে আত্মীয়-স্বজন আসেন প্রতিবছর। মাতৃপুজোর আরাধনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হরিনাম সংকীর্তন অন্নকূট উৎসবের সঙ্গে কয়েক বছর রক্তদান শিবির আয়োজন হচ্ছে গদাইপুর গ্রামের বড় পুজোয়। পুজোর আয়োজনে গ্রামের সমস্ত মানুষ যে যার মতো সহযোগিতা করেন। আলোকসজ্জা থেকে মণ্ডপসজ্জা-প্রতি বছর গ্রামের মানুষের সামর্থ্য মতো, বেড়ে চলেছে পুজোর বহর।

আরও পড়ুন : সিদ্ধেশ্বরী রূপে পূজিতা দেবী দুর্গা, ২০০ বছরের প্রাচীন মন্দিরে ভক্ত সমাগম দুর্গাপুজোয়

এই গ্রামের মানুষের কাছে ঢের বেশি আনন্দের এই মনসাপুজো।গ্রামে ছোট বড় সকলেই নতুন পোশাকে পুজোর উৎসবে মেতে ওঠেন প্রতিবছর। সারা বছর গ্রামের মানুষ এই পুজোর কয়েকটা দিনের অপেক্ষায় থাকেন।

Manasa Puja 2024: মনসাপুজোর বিসর্জনে ভক্তদের আজব কীর্তি! জানলে চমকে যাবেন

শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়া : বিখ্যাত পুরুলিয়া জেলার মনসাপুজো। এই পুজোকে কেন্দ্র করে মেতে ওঠেন আপামর জঙ্গলমহলবাসী। নানা আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এই পুজো পালিত হয়। এই পুজোয় সবকিছুই থাকে অন্যরকম। তাই এই পুজোর বিসর্জনেও থাকে চমক। ভক্তদের উপর দিয়ে মা মনসার ঘট বিসর্জন হয় জঙ্গলমহলের এই জেলায়।‌

শুনতে অবাক লাগলেও বছরের পর বছর এই ভাবেই ঘট বিসর্জিত হয়ে আসছে পুরুলিয়ার ঝালদার সোনার পাড়া কৈবর্ত কমিটির মনসাপুজোয়। আর এই অভিনব বিসর্জন দেখতে দূরদূরান্ত থেকে বহু মানুষ ভিড় জমান ঝালদায়। কারণ এমন অভিনব বিসর্জন আর কোথাও দেখা যায় না।এ বিষয়ে ওই কমিটির সদস্যরা বলেন , এই বিসর্জন দেখতে বহু দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এখানে আসেন। কারণ এখানে রীতি অনুযায়ী মন্দির থেকে বিসর্জন ঘাট পর্যন্ত রাস্তায় ভক্তরা মাটিতে শুয়ে পড়েন। আর ভক্তদের উপর দিয়েই মায়ের ঘট নিয়ে গিয়ে বিসর্জন করা হয়।

আরও পড়ুন : সামান্য উপকরণে অসামান্য শিল্প! ষষ্ঠ শ্রেণীর পড়ুয়ার কৃতিত্বে তাজ্জব সকলে

ভক্তদের বিশ্বাস,মায়ের ঘট বিসর্জনের রাস্তায় যে সকল ভক্ত শুয়ে থাকেন তারা বিভিন্ন রোগ জ্বালা থেকে মুক্তি পান। তাই শরীরের রোগ জ্বালা থেকে মুক্তি পেতে মায়ের ঘট বিসর্জনের রাস্তায় ভক্তরা শুয়ে থাকেন। তাদের উপর দিয়ে গিয়ে মায়ের ঘট বিসর্জিত হয়। এই পরম্পরা পূর্বপুরুষ ধরে চলে আসছে। প্রথা মেনে তারাও তা পালন করছেন।গোটা জঙ্গলমহলবাসী মেতে ওঠেন পুরুলিয়ার এই মনসা পুজোকে কেন্দ্র করে।

রাজ্যের অন্যান্য জেলাতে মনসাপুজো হয়ে থাকলেও জেলা পুরুলিয়ার মনসাপুজো দুর্গাপুজোকেও হার মানায়। নানা  অনুষ্ঠানের সঙ্গে মানুষের আবেগ জড়িয়ে থাকে এই মনসাপুজোকে কেন্দ্র করে। তাই শুধু মনসা পুজোই নয়, ঝালদর এই মনসা পুজোর বিসর্জনেও অভিনবত্ব লক্ষ্য করা যায়।

Manasa Pala Gaan: প্রাচীন রীতিতে আজও মনসাপুজোয় কোচবিহারে মদনমোহনবাড়ি ভরে ওঠে মনসাদেবীর পালাগানে

সার্থক পণ্ডিত, কোচবিহার: জেলা কোচবিহারে রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী মদনমোহন বাড়িতে আয়োজন করা হয় মনসাপুজোর। এই মনসা পুজো উপলক্ষে দূর-দূরান্তের বহু ভক্তবৃন্দ ভিড় জমান মদন বাড়িতে। রাজ আমলে সমস্ত রীতি ও প্রথা মেনে এই পুজোর আয়োজন করা হয়। তবে শুধুমাত্র পুজোর রীতি নয়। পুজোর পাশাপাশি আয়োজন করা হয় মনসা পালাগানের।

উত্তরবঙ্গের গ্রামীণ লোকসংস্কৃতিতে এই পালাগান শুনতে পাওয়া যায়। তবে বর্তমানে এই পালাগানের শিল্পীদের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। তবুও বেশ কিছু শিল্পী এই ঐতিহ্যবাহী পালাগান করতে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে থাকেন। কোচবিহার মদনমোহন বাড়ির পুরোহিত শিবকুমার চক্রবর্তী জানান, ‘‘রাজ আমল থেকে হয়ে আসা এই পুজোর সময় তিনদিন ধরে চলে মনসা পালা বা বিষহরি পালাগান। এখনও সেই প্রথা অটুট। মনসামঙ্গল এবং পদ্মপুরাণের মতো কাব্যগ্রন্থ অবলম্বনে পালাগানের আয়োজন করা হয়। এই পালাগান আজও বহু মানুষের মন আকর্ষণ করে থাকে।’’

মনসা পালাগান শিল্পী পরিমল বর্মন জানান, ‘‘এই পালাগান দীর্ঘ সময়ের পুরনো। তিনিও প্রায় ১২ বছর ধরে এই পালাগানের সঙ্গে যুক্ত। বহু মানুষ এই পালাগান ছেড়ে অন্য কাজ করেন ঠিকই। তবে এই পালাগানের মধ্যে এক আলাদা তৃপ্তি রয়েছে। পালাগানের শিল্পীরা ছাড়া এই তৃপ্তি অন্যরা উপভোগ করতে পারবেন না।”

আরও পড়ুন :  চিঠি লেখাই নেশা, দেশবিদেশের বহু বিখ্যাত ব্যক্তিত্বকে চিঠি লিখে উত্তর পেয়েছেন অসিতবরণ

আর এক পালাগান শিল্পী ময়না বর্মন জানান, ‘‘ মনসাপুজো উপলক্ষে বিভিন্ন এলাকায় শোনা যায় মনসা বা বিষহরি পালা গান। যদিও গ্রামীণ লোকসংস্কৃতি থেকে এক প্রকার হারিয়ে যেতে বসেছে এই মনসা বা বিষহরি কিংবা সাইটোল গান। তবুও পুজোর তিনদিন প্রতিবছর মদনমোহন বাড়িতে কাঠামিয়া মন্দিরের সামনে মঞ্চ বেঁধে এই বিষহরি পালা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। মনসা মঙ্গল, পদ্মপুরাণ এইসব কাব্য থেকে কিছু কিছু অংশ বাছাই করে এই পালা তৈরি করা হয় থেকে।’’

দীর্ঘ সময়ের রীতি আজও অক্ষুণ্ণ রাখা হয় কোচবিহার মদনমোহন বাড়িতে। প্রতি বছর পালাগান শিল্পীদের দ্বারা এখানে পালা গানের আয়োজন করা হয়। আগামী দিনেও এই প্রথা একই রকম ভাবে বজায় থাকবে। এমনটাই জানিয়েছেন কোচবিহার দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড কর্তৃপক্ষ। যাতে শহরের বুক থেকে রাজ আমলের এই ঐতিহ্য বিলীন না হয়ে যায়।

Jalpaiguri News: সবজি না সোনা! মনসা পুজোয় বাজার আগুন! জেনে নিন আজ কীসের কত দাম

জলপাইগুড়ি: আজ মনসা পুজো। বহু মন্দির থেকে শুরু করে ঘরে ঘরেই রয়েছে পুজোর মেজাজ। কেমন রয়েছে আজকের জলপাইগুড়ির পুজোর বাজার। জিনিসপত্রের দাম কেমন? আসুন জেনে নিই।

সকাল হতেই ভিড় বাড়ছে বাজারে। কিন্তু, দাম শুনে নিরাশ হচ্ছে বাঙালি। অগ্নিমূল্য দামের জেরে হাত পুড়ছে সাধারণ মানুষের। পুজোর দিনেও মন খুলে বাজার করার উপায় নেই। সবজি থেকে শুরু করে ফল কিংবা ফুল, আগুন ঝড়ছে সব থেকেই। আপেল ২০০টাকা কেজি! নাশপাতি ২০০ টাকা, মুসম্বি ৮০, বেদানা ৩০০, আঙুর ২৮০, শসা ৬০, আনারস ৬০টাকা!

আরও পড়ুন-  পরিষেবা চালু হোক! নিরাপত্তা নিশ্চিত করে চিকিৎসকদের আর্জি কেন্দ্রের

ফুলের দামও যেন আঘাত হানছে। অন্য দিকে, ভোগ হিসেবে খিচুড়ির সঙ্গে খানিক লাবড়া না হলে পুজোর মেজাজে ঠিক জমে না। আর লাবড়া করার জন্য প্রয়োজনে নানা রকম সবজির। ক্রেতাদের কথায়, “আজ পুজো। বাড়িতে একটু খিচুড়ি লাবড়া করা হবে বলেই বাজারে গিয়েছিলাম।বাজারের সবজির দাম শুনে মাথায় হাত। মন খুলে বাজার করতে না পেরে অল্প স্বল্পই কিছু কিনে ফিরে যেতে হচ্ছে।”

দামের কথা জিজ্ঞেস করায় জানা যায়, বাজারে আলু বিকোচ্ছে ৩০-৪০ টাকায়! ঝিঙে ৬০ টাকা, পটল ৬০ টাকা এবং স্কোয়াশ মিলছে ৫০ টাকা কেজি দরে। ক্রেতারা আরও জানাচ্ছেন, সাধারণ দামের তুলনায় একটু বেশিই রয়েছে সবজির দাম। তাও সাধ্যের মধ্যেই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

তবে এবার বাঙালির পাতে নেই ইলিশ মাছ। বাংলাদেশের সুস্বাদু রূপালী ইলিশের বদলে ডায়মন্ড হারবারের ছোট ইলিশ দিয়েই স্বাদ মেটাতে হচ্ছে। সেই মাছও বাজারে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মন খুলে বাজার করতে না পেরে স্বল্প কিছু বাজার করেই মুখ বেজার করে বাড়ি ফিরছেন।

সুরজিৎ দে

Manasa Puja 2024: ইলিশ, বোয়াল, চিতল, শোল, পুঁটি-৫ রকম মাছ থাকে এই রাজবাড়ির ৫০০ বছরের বেশি প্রাচীন মনসাপুজোয়! আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু বিষহরির গানও

সুরজিৎ দে, জলপাইগুড়ি: শনিবার মনসাপুজো! জানেন আর পাঁচটি জায়গার তুলনায় খানিক অন্যরকম হয় এখানকার পুজো। নিরামিষ নয় বরং পাঁচ রকম মাছের পদ দিয়ে ভোগ নিবেদন দেওয়া হয় মা মনসাকে! ভাবছেন কোথায়? এ হল জলপাইগুড়ির ঐতিহ্যবাহী বৈকুন্ঠপুর রাজবাড়ীর মনসাপুজো। এর ইতিহাস প্রচুর, রয়েছে নানাবিধ বিশেষত্ব!

সালটা ১৫০৯! জলপাইগুড়ির ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়িতে শুরু হয়েছিল এই পুজো। আজও সুষ্ঠুভাবে সমস্ত নিয়মনীতি মেনে জাঁকজমকপূর্ণভাবে চলছে জলপাইগুড়ির বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসাপুজো। এ বার এই পুজো ৫১৫ বছরে পদার্পণ করল। এই পুজোর সঙ্গে যে শুধু ইতিহাস জড়িয়ে আছে, তা নয়, রয়েছে বিশেষত্বও।

আর পাঁচ জায়গার সঙ্গে বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির মনসাপুজোর পার্থক্য আছে বলে জানান রাজ পরিবারের সদস্যরা। এবার প্রশ্ন, আর পাঁচটি পুজো থেকে কেন আলাদা এই পুজো ? রাজবাড়ির সদস্যদের কথায়, রাজবাড়িতে মা অষ্টমূর্তিতে পুজিত হন। রয়েছে অষ্টনাগের মূর্তি। বেহুলা, লখিন্দর, গোদা-গোদানির মূর্তিও আছে। আর সেই ঐতিহ্যবাহী পুজোর সাক্ষী থাকতে উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ, অসম, বিহার থেকেও প্রচুর মানুষ আসেন এখানে।

আরও পড়ুন : শনিবার শ্রাবণ সংক্রান্তিতে মনসাপুজো! সর্পদেবীকে দিন এই লাল ফুল, ৭ পাতা, এই ২ জিনিস দিলেই ছারখার সংসার

সেইসঙ্গে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে উত্তরবঙ্গের প্রাচীন বিষহরির গান এবং মেলাও। অনেকের দাবি, বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়ির পুজোয় মূর্তির যে চালচিত্র ব্যবহার করা হয়, তাতে মনসামঙ্গলের রীতিনীতির স্পষ্ট ছাপ আছে। বৈকুণ্ঠপুর রাজবাড়িতে যে মূর্তিতে পুজো করা হয়, সেরকম উত্তরবঙ্গের কোথাও নেই বলে দাবি করেছেন অনেকে। পুজোর রীতিনীতিও অন্য জায়গার থেকে আলাদা।

পুজোর তিনদিন ভিন্ন রকমের ভোগ তৈরি করা হয়। পুজো শুরুর দিনে ভোগ হিসেবে থাকে সাদা ভাত। দ্বিতীয় দিনে খিচুড়ি তৈরি করা হয়। শেষদিনে ভোগ হিসেবে দেওয়া হয় মিষ্টি। সেইসঙ্গে ভোগে পাঁচ ধরনের মাছও (ইলিশ, বোয়াল, চিতল, শোল এবং পুঁটি) থাকে। ঐতিহ্যবাহী সেই পুজোর পাশাপাশি বৈকুণ্ঠপুরের রাজবাড়িতে অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হল প্রাচীন বিষহরির গান। পুজোর তিনদিন সেই গান চলে। ভক্তদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো।

Manasa Puja Rituals 2024: শনিবার শ্রাবণ সংক্রান্তিতে মনসাপুজো! সর্পদেবীকে দিন এই লাল ফুল, ৭ পাতা, এই ২ জিনিস দিলেই ছারখার সংসার

সর্পসঙ্কুল অঞ্চল বাংলায় বর্ষাকাল জুড়ে একাধিক বার পূজিত হন সর্বদেবী মা মনসা। ভক্তদের প্রচলিত বিশ্বাস, সাপ-সহ যে কোনও বিষধর জীবের দংশন থেকে রক্ষা পাওয়া যায় মা মনসার পুজো করলে।
সর্পসঙ্কুল অঞ্চল বাংলায় বর্ষাকাল জুড়ে একাধিক বার পূজিত হন সর্বদেবী মা মনসা। ভক্তদের প্রচলিত বিশ্বাস, সাপ-সহ যে কোনও বিষধর জীবের দংশন থেকে রক্ষা পাওয়া যায় মা মনসার পুজো করলে।

 

আষাঢ় থেকে শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত একাধিক দিন ও তিথিতে পূজিতা হন সর্পদেবী। শ্রাবণমাসের প্রতি মঙ্গল ও শনিবার মনসাদেবীর পুজো করা হয়। তবে নাগপঞ্চমী এবং শ্রাবণ সংক্রান্তি তিথি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আষাঢ় থেকে শুরু করে ভাদ্র মাস পর্যন্ত একাধিক দিন ও তিথিতে পূজিতা হন সর্পদেবী। শ্রাবণমাসের প্রতি মঙ্গল ও শনিবার মনসাদেবীর পুজো করা হয়। তবে নাগপঞ্চমী এবং শ্রাবণ সংক্রান্তি তিথি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

 

 এ বছর শ্রাবণ সংক্রান্তি পড়েছে শনিবার, ১৭ অগাস্ট। মনে করা হয় তাঁর পুজো করলে সংসারে সুখ সমৃদ্ধি ও শান্তি বজায় থাকে। কী কী করা হবে তাঁর পুজোয়, জানুন। বলছেন জ্যোতিষ বিশারদ নন্দকিশোর মুদগল।
এ বছর শ্রাবণ সংক্রান্তি পড়েছে শনিবার, ১৭ অগাস্ট। মনে করা হয় তাঁর পুজো করলে সংসারে সুখ সমৃদ্ধি ও শান্তি বজায় থাকে। কী কী করা হবে তাঁর পুজোয়, জানুন। বলছেন জ্যোতিষ বিশারদ নন্দকিশোর মুদগল।

 

 মনসাগাছের শাখা, ঝাঁপি, বিগ্রহে মনসাপুজো করা হয়। কোথাও কোথাও তিনি বিগ্রহেও পূজিতা হন। পুজোর অন্যতম উপকরণ দুধ এবং কলা। নিবেদন করা হয় মাটির পাত্রে।
মনসাগাছের শাখা, ঝাঁপি, বিগ্রহে মনসাপুজো করা হয়। কোথাও কোথাও তিনি বিগ্রহেও পূজিতা হন। পুজোর অন্যতম উপকরণ দুধ এবং কলা। নিবেদন করা হয় মাটির পাত্রে।

 

তবে মনসাদেবীর পুজোয় ধূপধুনো একদমই দেবেন না। পুজোয় মা মনসাকে অবশ্যই নিবেদন করুন পায়েস বা ক্ষীর। অনেক স্থানে এই পুজোয় অন্নভোগ দেওয়া হয়। বলিদানও প্রচলিত কোথাও কোথাও।
তবে মনসাদেবীর পুজোয় ধূপধুনো একদমই দেবেন না। পুজোয় মা মনসাকে অবশ্যই নিবেদন করুন পায়েস বা ক্ষীর। অনেক স্থানে এই পুজোয় অন্নভোগ দেওয়া হয়। বলিদানও প্রচলিত কোথাও কোথাও।

 

মনসাদেবীর পুজোয় অবশ্যই নিবেদন করুন রক্তজবা। পাশাপাশি শালুক ও পদ্মফুলও দিতে পারেন তাঁর পুজোয়।
মনসাদেবীর পুজোয় অবশ্যই নিবেদন করুন রক্তজবা। পাশাপাশি শালুক ও পদ্মফুলও দিতে পারেন তাঁর পুজোয়।

 

মনসাদেবীর পুজোয় সাদা ও হলুদফুল নিবেদন করাও শুভ বলে মনে করা হয়।পান সুপুরি, দূর্বা ছাড়াও তুলসিপাতা, বেলপাতা প্রয়োজন হয় মনসাদেবীর পুজোয়। পুজোর ঘটে স্থাপন করা হয় আম্রপল্লব।
মনসাদেবীর পুজোয় সাদা ও হলুদফুল নিবেদন করাও শুভ বলে মনে করা হয়।পান সুপুরি, দূর্বা ছাড়াও তুলসিপাতা, বেলপাতা প্রয়োজন হয় মনসাদেবীর পুজোয়। পুজোর ঘটে স্থাপন করা হয় আম্রপল্লব।

 

পুজোর নৈবেদ্য সাজিয়ে দেওয়া হয় কলাপাতায় বা কচুপাতায়। সব মিলিয়ে এই ৭ রকম পাতা মনসাদেবীর পুজোয় অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।
পুজোর নৈবেদ্য সাজিয়ে দেওয়া হয় কলাপাতায় বা কচুপাতায়। সব মিলিয়ে এই ৭ রকম পাতা মনসাদেবীর পুজোয় অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।

 

মনসাপুজোর দিন সাত্তিক আহার গ্রহণ করুন। আমিষ বা তামসিক আহার গ্রহণ না করাই বাঞ্ছনীয়।
মনসাপুজোর দিন সাত্তিক আহার গ্রহণ করুন। আমিষ বা তামসিক আহার গ্রহণ না করাই বাঞ্ছনীয়।

Manasa Puja 2024: এ যেন বিরল দৃশ্য…! মনসা পুজোর আগে এটা কী ঘটল? তোলপাড় গোটা এলাকা

মনসা পুজোর আগে আশ্চর্যকর দৃশ্য দেখলেন কালচিনি চা বাগানের মানুষেরা৷
মনসা পুজোর আগে আশ্চর্যকর দৃশ্য দেখলেন কালচিনি চা বাগানের মানুষেরা৷
একটি শনি মন্দিরে দেবতার গলায় পেঁচিয়ে থাকতে দেখা গেল কোবরা সাপকে৷
একটি শনি মন্দিরে দেবতার গলায় পেঁচিয়ে থাকতে দেখা গেল কোবরা সাপকে৷
এই দৃশ্য প্রথমে দেখেন এলাকার বাসিন্দা বিমল থাপা। এরপর তিনি সকলকে ডাক দেন।
এই দৃশ্য প্রথমে দেখেন এলাকার বাসিন্দা বিমল থাপা। এরপর তিনি সকলকে ডাক দেন।
এই ঘটনা ভগবানের চমৎকার ভেবে মন্দিরে পুজো দেওয়ার ঘটা দেখা যায় এলাকাবাসীদের মধ্যে৷
এই ঘটনা ভগবানের চমৎকার ভেবে মন্দিরে পুজো দেওয়ার ঘটা দেখা যায় এলাকাবাসীদের মধ্যে৷
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্মীদের খবর দেওয়া হয়। তারা এসে সাপটি কোবরা বলে চিহ্নিত করেছেন। উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের বনকর্মীদের খবর দেওয়া হয়। তারা এসে সাপটি কোবরা বলে চিহ্নিত করেছেন। উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

Manasa Puja: এত এত টাকা দিয়ে কিনে আনা হয় এই পাখি, মা মনসার পুজোয় এই নৈবেদ্য ছাড়া পুজো হয় না

পুরুলিয়া: দোরগোড়ায় মনসা পুজো জঙ্গলমহলে। জঙ্গলমহলের অন্যতম উৎসব এই মনসা পুজো। এ পুজো উপলক্ষে মেতে ওঠে গোটা পুরুলিয়াবাসি। নানান আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে দেবী মা মনসার আরাধনা করা হয়। ‌ মনসা পুজোয় প্রধান নৈবিদ্য হিসাবে দেওয়া হয় হাঁস। প্রায় প্রতিটি ঘরেই এই নৈবিদ্যেই মা মনসা পূজিত হন। গোটা জেলা জুড়ে এই সময় ব্যাপক হারে হাঁস কেনা-বেচা হয়। প্রায় লক্ষাধিক হাঁস বিক্রি হয় এই সময়ে।

এ বিষয়ে এক বিক্রেতা বলেন , প্রতিবছরের মত এবছরও মনসা পুজোউপলক্ষে হাঁসের চাহিদা বেড়েছে। তার দোকানেও অনেকেই হাঁস কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন। ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পিস হিসাবে হাঁস বিক্রি হচ্ছে পুরুলিয়ার শহরকেন্দ্রিক বাজার গুলিতে। চাহিদা যথেষ্টই রয়েছে।

আরও পড়ুন – Tasty Sweets: ঠিক যেন গুপি গাইন-বাঘা বাইনের মন্ডা -মিঠাই হাঁড়িহাঁড়ি, এই জেলায় কত রকমের মিষ্টি জানেন, এখুনি দৌড়বেন

এ বিষয়ে এক ক্রেতা বলেন , প্রতিবছরই পরম্পরা মেনে তাঁরা এই সময় হাঁস কিনে থাকেন। দেবী মনসার প্রধান নৈবেদ্য এই হাঁস। তাদের বাড়িতে ধুমধাম এর সঙ্গে মনসা পুজো হয়। তারা পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে শুনে আসছেন মনসা পুজোর এই সময়তে হাঁসের মাংস খেলে পেটে পাথর হয় না তাই তারা এই নিয়ম মেনেই এই সময়টাতে হাঁস কেনেন। দাম বেশি হলেও রীতি মেনে হাঁস কিনে থাকেন তারা।

পুরুলিয়া জেলাবাসীর কাছে এটি একটি বিরাট পার্বণ। মনসা পুজো উপলক্ষে প্রায় লক্ষাধিক হাঁস নৈবিদ্য হিসাবে মা মনসার চরণে অর্পণ করেন পুরুলিয়াবাসী। এই সময় জেলার বিভিন্ন হাট বাজার গুলিতে ব্যাপক হারে হাঁস বিক্রি হতে দেখা যায়। রীতি মেনে হাঁস কেনেন সকলে।

Sharmistha Banerjee 

Manasa Puja 2024: ঘরে ঘরে সাড়ম্বর আয়োজন, বর্ষায় মনসাপুজোয় মেতে ওঠে জঙ্গলমহল

শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরুলিয়া : কথায় আছে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ‌। কমবেশি সারা বছরই নানা আচার অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন পুজো অর্চনা হয়ে থাকে। বাঙালির অন্যান্য পার্বণগুলির মধ্যে অন্যতম মনসাপুজো‌। পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য জেলাতে মনসাপুজো হয়ে থাকলেও জঙ্গলমহলের বাঁকুড়া পুরুলিয়া জেলার মনসাপুজো বিখ্যাত।

মানভূমবাসীদের অন্যতম পরব এই মনসাপুজো। সারাটা বছর মানভূমের মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে থাকেন এই পুজোর জন্য‌। মূলত শ্রমজীবী মানুষই এই পুজো করে থাকেন। তবে রাজ্যে অন্যান্য জেলাগুলির মধ্যে বাঁকুড়া পুরুলিয়ায় মনসাপুজো এত বিখ্যাত।‌

এ বিষয়ে গবেষক দিলীপ কুমার গোস্বামী বলেন, ‘‘একটা সময় এই ছোটনাগপুর মালভূমি এলাকা পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা ছিল। মনুষ্য বসতিও কম ছিল। সেই সময় এখানে সাপের উপদ্রব অনেকটাই বেশি ছিল। তাই সেই সময় সাপের উপদ্রব থেকে রক্ষা পেতে সাপের দেবী মা মনসার পুজো শুরু করেছিলেন মালভূমির মানুষেরা। আর তারপর থেকেই মহা ধূমধামের সঙ্গে পুরুলিয়ায় এই পুজো পালিত হয়ে আসছে।’’

আরও পড়ুন : প্রথমে স্বাধীন ভারতের অংশ ছিল না কোচবিহার! কীভাবে বাংলার জেলা হল এই রাজন্য স্টেট, জানুন চমকপ্রদ ইতিহাস

এই মনসাপুজো উপলক্ষে মেতে ওঠে গোটা জঙ্গলমহল। ‌ বেশিরভাগ বাড়িতেই এই পুজো আয়োজিত হয়। পুরুলিয়ার মনসাপুজোর কথা সর্বত্র প্রচলিত। ‌ পুরুলিয়াবাসী দুর্গাপুজোর থেকেও বেশি আবেগপ্রণোদিত হয়ে ওঠেন এই মনসা পুজো ঘিরে। আর তাইতো বছরের পর বছর এখানে মহাসাড়ম্বরে পূজিত হচ্ছেন মা মনসা।

Manasa Puja 2024: অর্ধেক সাপ, অর্ধেক নারী, বৃষ্টিভেজা শ্রাবণসকালে নেমে এলেন যেন ‘জীবন্ত মা মনসা’

নীলাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়, বাঁকুড়া: জীবন্ত মা মনসা। নেমে এলেন বাঁকুড়ায়। দেখুন অর্ধেকটা সাপ অর্ধেকটা মানুষ। মূর্তিটা দেখে মনে হচ্ছে যেন মা জীবিত রয়েছেন? আসলে এই মূর্তি জীবন্ত মূর্তি। এই মা মনসা জীবন্ত মা মনসা। আসলে একজন মেয়েকে মা মনসা সাজানো হল বাঁকুড়াতে। ভাববেন না জিনিসটা খেলার ছলে হয়েছে। রীতিমত৫-৬ জন মেকআপ আর্টিস্ট মিলে, প্রফেশনালি একটি মেয়েকে ১৫ ঘন্টার কঠিন পরিশ্রমের পর মা মনসার রূপ দিতে পেরেছে। প্রায় ১৫ ঘণ্টা একইভাবে হাঁটু গেড়ে বসে রয়েছেন জীবন্ত মা মনসা। বলছেন না কথা! খাচ্ছেন না কিছুই। চোখ দুটিও নকল। আসলে গোটা দেহের উপর মাটির প্রলেপ দিয়ে তার উপরে রং করে শুকিয়ে তৈরি করা হয়েছে মা মনসাকে, যার অর্ধেকটা সাপ অর্ধেকটা দেবী। প্রায় ১৫ ঘণ্টা চোখ বন্ধ করে রয়েছেন মডেলটি।

বাঁকুড়ার স্কুলডাঙ্গার বাসিন্দা চৈতালি বিশ্বাস পেশায় মেকআপ আর্টিস্ট। মেকআপ করার পাশাপাশি মেকআপ করা শেখানও তিনি। নিজের ছাত্রীদের সঙ্গে নিয়ে জীবন্ত মা মনসা তৈরি করলেন তিনি। উদ্দেশ্য ছিল একটি ফটোশুট করা। প্রতিবছরই বিভিন্ন উৎসবের আগে নতুনত্ব মেকআপ করে মডেল তৈরি করে তাক লাগান বাঁকুড়ার এই গৃহবধূ তথা মেকআপ আর্টিস্ট। বাঁকুড়া পুরুলিয়ার মনসা পুজো এক অন্য মাত্রা পায়। সেই কারণেই মনসা পুজো উপলক্ষে, জীবন্ত মা মনসা বানানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। সহযোগিতা করেছেন প্রায় পাঁচ জন ছাত্রী। ১৫ ঘণ্টার অক্লান্ত পরিশ্রমের পর মিলেছে সুফল।

চৈতালি বিশ্বাস বলেন, ” প্রথমে খড় আর মাটি দিয়ে একটা প্রলেপ তৈরি করা হয়েছে, যে প্রলেপ দিয়ে কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যবহার করে মুড়ে ফেলা হয়েছে। এরপর মাটির প্রলেপ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে নকল চোখ। তারপর রং করে শুকিয়ে নেওয়া হয়েছে ড্রায়ার দিয়ে। এভাবেই তৈরি হয়েছে জীবন্ত মা মনসা।”

আরও পড়ুন : টাকা খরচ করে একগাদা অ্যান্টাসিড বাদ! এই ৫ ঘরোয়া টোটকায় মুক্তি পান গ্যাস, অম্বল, বদহজম থেকে

প্রায় ১৫ ঘণ্টা একইভাবে বসে থেকে যে তনয়া মা মনসা সেজেছেন তাঁর নাম হল নিশা। নিশা বলেন, প্রায় ১৫ ঘণ্টা বসে আছি। প্রথম যখন চৈতালি দি বিষয়টি বলেন তখন এক্সাইটেড লেগেছিল। সেই কারণেই পরিশ্রম করছি যাতে ফটোশুটটা করা যায়। আমার খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না। ভবিষ্যতে এরকম সুযোগ পেলে আবারও করব আমি।