দক্ষিণ ২৪ পরগনা: শনিবার সকাল থেকেই সপ্তম তথা শেষ দফার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। তার আগে শুক্রবার সারারাত ধরে বিশেষ পূজো চলল মথুরাপুর লোকসভার একাধিক জায়গায়। বাজল শাঁখ, কাঁসর, ঘণ্টা। পুজোয় অংশ নিলেন মহিলারা।
কিন্তু ভোটের আগের দিন কেন এই পুজোর্চনা? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মথুরাপুরের তৃণমূল প্রার্থী বাপী হালদার যাতে নির্বাচনী লড়াইয়ে জয়ী হোন তার জন্যই এই বিশেষ পুজোপাঠের আয়োজন করেন সেখানকার মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সাধারণ গ্রামবাসীরাও। অনেকেই বাপীকে জেতাতে ভগবানের কাছে মানত করেছেন। প্রত্যন্ত গ্রামগুলির বিভিন্ন জায়গাতেও চলেছে এই পুজো-অর্চনার কাজ।
আরও পড়ুন: বর্ধমানের নদীয়ানন্দন বৈরাগ্যের কাছে আফ্রিকা-অস্ট্রেলিয়া-আমেরিকা থেকে ছুটে আসছে সবাই
একাধিক ঠাকুরথানে এই পুজো করা হয়েছে। মহিলারা রাত জেগেছেন। গণতন্ত্রের উৎসবে যোগ দেওয়ার আগে পুজো করে শুভ কাজে যোগ দেওয়ার উদ্যেশে এই কাজ করেছেন তাঁরা। এই ধরনের উদ্যোগ অতীতের ভোটের সময় বিশেষ একটা দেখা যায়নি। সেই দিক থেকে দেখতে গেলে এবার এক নতুন রীতির সূচনা হল। ভোরবেলায় এই পুজো শেষ হয়। ফলে ভোট পর্ব শুরুর সামান্য কিছু আগে সেখানকার মহিলাদের মধ্যে অনেকে বাড়ি ফেরেন। একটু বিশ্রাম নেন, তারপর আবার ভোট দিতে বেরিয়ে পড়েন।
নবাব মল্লিক
দক্ষিণ দিনাজপুর: এলাকার গৃহস্থ বাড়িগুলির তিনদিন ভাতের হাড়ি পর্যন্ত চাপে না বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে মহাপ্রভুর নাম কীর্তন কে সামনে রেখে। দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে এই রীতি। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের চকভগীরথ গ্রামে চলে তিনদিনের পুজোকে ঘিরে ব্যাপক ভক্তের সমাগম। ২৪ ঘন্টা চলে একই তালে রান্না ও ভক্তের ভোগ বিতরণ। এক জায়গায় সকলে মিলে খাওয়া দাওয়া। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ঐতিহ্যবাহী অষ্ট্রপ্রহর পুজোকে ঘিরে ব্যাপক ভক্তের সমাগম লক্ষ্য করা যায়। স্থানীয় বহু বাসিন্দা রুজি রোজগারের জন্য ভিন রাজ্যে কাজের উদ্দেশ্যে গেলেও বছরের এই কটি দিন তাঁরা নিজের গ্রামে ফিরে আসে।
আরও পড়ুনঃ মে মাসেই ঝড় তুলবে শুক্র! মুখে ফুটবে লম্বা হাসি, রেকর্ড টাকা ৩ রাশির কপালে
পুজোর প্রায় এক দেড় মাস আগে থেকে চলে জোর প্রস্তুতি। পাশাপাশি এই পুজোকে ঘিরে টানা ৩দিন ব্যাপি মেলা হয়ে থাকে। রঙিন আলোকসজ্জা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয় মণ্ডপ। সারাদিন রাত ব্যাপি চলে অষ্ট্রপ্রহর। সঙ্গে ভোগ বিতরণ। বিগত বছরের মত চলতি বছরেও এর কোন ব্যতিক্রম হয়নি।
গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে চলে অরন্ধন। তবে চলতে থাকে সকল মহিলাদের একইসঙ্গে দিন রাত মিলে সবজি কাটা। সঙ্গে রকমারি রান্না। তবে প্রভুকে ভোগ নিবেদন করেই চলতে থাকে ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ। এ যেন এক আলাদা দৃশ্য। যেখানে সারা দিন রাত জ্বলতে থাকে উনুন। তবে টাকা দিয়ে রশিদ কেটে নয়, বিনে পয়সায় চলতে থাকে ভক্তবৃন্দদের প্রসাদ খাওয়ার হিড়িক।
এই পুজোর সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তাই বছরের অন্যান্য সময় যে যেখানেই থাকুক না কেন এই পুজোয় চায় সকলেই তাদের গ্রামের নিজস্ব এই পুজোয় মেতে উঠতে। তিন দিন ব্যাপী অষ্ট্রপ্রহর হওয়ায় সেখানে বিভিন্ন শিল্পীরা অংশ নেন। দিন রাত চলতে থাকে যন্ত্রাংশের তালে তালে প্রভুর নাম জপ। যা দেখতে আশে পাশের গ্রাম থেকেও বহু ভক্তের ভিড় লক্ষ্য করা যায়। স্থানীয় গ্রামবাসীদের পক্ষ থেকে জানা যায়, যত দিন যাচ্ছে এর পরিধি ততই বিস্তার লাভ করছে।
সুস্মিতা গোস্বামী