বেঙ্গালুরু: চায়ের দোকান থেকে সারাদিনে এক দু কাপ চা কিনে না খেলে অনেকেরই ঠিক দিনটা জমে না৷ আবার ধাবাতে বসে ঘন দুধের চায়ে গলা ভেজাতে ভালবাসেন অনেকে৷ কিন্তু এই চায়ের কাপে বা গ্লাসে চুমুক দেওয়ার আগেও এবার দু বার ভাবতে হবে৷ কারণ দোকানে বা ধাবায় যে ধরনের চা পাতা দিয়ে চা তৈরি হয়, সেই চায়ের পাতার মান নিয়ে এবার সংশয় প্রকাশ করেছে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অথোরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)৷
জানা গিয়েছে, এফএসএসএআই-এর সাম্প্রতিক কয়েকটি অভিযানে চায়ের দোকানে ব্যবহৃচ গুঁড়ো চা পাতায় মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণ কীটনাশক এবং রংয়ের অস্তিত্ব মিলেছে৷ যা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকারক৷
আরও পড়ুন: বড় খবর! একাদশের প্রথম সেমেস্টারের দিনক্ষণ জানিয়ে দিল সংসদ! কবে থেকে শুরু? জানুন
এর আগে ফুলকপির মানচুরিয়ান, ফুচকা, কটবন ক্যান্ডি, কাবাবের মতো বিভিন্ন খাবারে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ফুড কালার পেয়েছিলেন এফএসএসএআই-এর বিশেষজ্ঞরা৷ এই ধরনের অস্বাস্থ্যকর রংয়ের ব্যবহার নিয়ে নিষেধাজ্ঞাও জারি হয়েছে৷ রোডামাইন বি, কারমোইসিনের মতো বিষাক্ত উপাদান পাওয়া গিয়েছে এই ধরনের ফুড কালারগুলির ভিতরে৷ চা পাতার ক্ষেত্রে আবার অতিরিক্ত পরিমাণে কীটনাশক এবং রাসায়নিক সার থাকার প্রমাণ পেয়েছে এফএসএসএআই৷ যা থেকে ক্যানসারও হতে পারে৷
যে চা বাগানগুলির বিরুদ্ধে অনুমোদিত মাত্রার তুলনায় বেশি পরিমাণে কীটনাশক এবং রাসায়নিক চা পাতায় ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ,তাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নামতে চলেছে কর্ণাটকের স্বাস্থ্য দফতর৷ এখনও পর্যন্ত উত্তর কর্ণাটক থেকে চা পাতার ৪৮টি নমুনা সংগ্রহ করেছে কর্ণাটক সরকার৷ কারণ রাজ্যের ওই অংশের মানুষ তুলনামূলক ভাবে চা বেশি পান করেন৷ কর্ণাটকের বাগলকোট, বিদার, হুবালি, কোপ্পালের মতো জেলাগুলিতে চা পাতার মধ্যে উদ্বেগজনক মাত্রায় কীটনাশক থাকার প্রমাণ পেয়েছেন ফুড ইনস্পেক্টররা৷
কর্ণাটকের খাদ্যমন্ত্রী দীনেশ গুন্ডু রাও জানিয়েছেন, ‘আমরা নমুনা পরীক্ষা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করছি৷ গোবি মাঞ্চুরিয়ান অথবা কাবাব আমরা নিষিদ্ধ করিনি, কিন্তু তাতে ব্যবহৃত ক্ষতিকারক রং, উপাদান নিষিদ্ধ করা হয়েছে৷ চায়ের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে৷’
কর্ণাটকের খাদ্য দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, তাঁদের সংগৃহীত চা পাতার নমুনাগুলিতে অনুমোদিত মাত্রার তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে কীটনাশক পাওয়া গিয়েছে৷ সেই কারণেই চা পাতার বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে৷ খাদ্য দফতর জানতে পেরেছে, ‘প্রথমে চা পাতা চাষের সময় এবং তার পরে তা প্রক্রিয়াকরণের সময়ও বিপুল পরিমাণে কীটনাশক মেশানো হচ্ছে, যা মানুষের পক্ষে ক্ষতিকারক৷’
কলকাতা: যখন, তখন অতিরিক্ত পরিমাণে চা অথবা কফি পান করা যে শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক, তা অনেকেই জানেন৷ এবার ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্ড বা আইসিএমআর পক্ষ থেকে রীতিমতো গাইডলাইন দিয়ে চা-কফি খাওয়া নিয়ে সতর্ক করে দিল৷
ভারতীয়দের স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে সম্প্রতি ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ নিউট্রিশন-এর সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ১৭টি নতুন গাইডলাইন দিয়েছে আইসিএমআর৷ সেই গাইডলাইনের মধ্যে চা-কফি পান করার অভ্যাসে বদল আনার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷
চা, কফিতে থাকা ক্যাফেইন থাকে৷ আইসিএমআর-এর এই গাইডলাইনে বলা হয়েছে, দিনে ৩০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন শরীরে যাওয়া উচিত নয়৷ পাশাপাশি বলা হয়েছে, চা এবং কফিতে ট্যানিন থাকে৷ যা শরীরের আয়রন শুষে নেওয়ার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়৷
আরও পড়ুন: ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে ১০০ টাকা বাড়বে!’ ঘোষণা অমিত শাহের, ব্যাখ্যা দিলেন শুভেন্দু
এই কারণেই আইসিএমআর-এর এই গাইডলাইনেই আরও বলা হয়েছে, খাওয়ার আগে এবং পরে অন্তত ১ ঘণ্টা চা অথবা কফি পান করা উচিত নয়৷যার ফলে অ্যানিমিয়ার মতো রোগ দেখা দিতে পারে৷ অতিরিক্ত পরিমাণে কফি খেলে উচ্চ রক্তচাপ এবং হৃদরোগের মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে৷
ওই গাইডলাইনেই অবশ্য বলা হয়েছে, দুধ ছাড়া চা পান করলে শরীরের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়৷ শুধু তাই নয় চোখের সমস্যা এবং পেটের ক্যানসারের ঝুঁকিও অনেকটা কমে যায়৷